[রঘু লৈশাংথেম, কবিতায় দূর্বোধ্য শব্দ খুব একটা প্রয়োগ করেন না। সহজিয়া শব্দেই আস্থা রাখেন। প্রতিটি কবিতাই একটি অন্তর্নিহিত গল্প থাকে। চেতন থেকে অবচেতনে ঢুকে পড়েন অনায়াসেই। একইসঙ্গে উঠে আসে সমাজ, জাতি, জাতিস্বত্ত্বা, ভঙ্গুর পরিবেশ, পঁচনশীল রাজনীতি, খর্বিত মানবাধিকার; সবই। সবকিছু ছাপিয়ে হতাশার এক চিত্র। যেনবা মৃত ঈশ্বর! তাই কবিতাও হয়ে ওঠে প্রতিবাদমুখর। বেশ ক’বছর ধরেই নয়া দিল্লির সাহিত্য অ্যাকাদেমি অ্যাওয়ার্ডের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকার পর ২০০৯ সালে অ্যাকাদেমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। আর দিল্লিস্থ সাহিত্য পরিষদের ভাষ্যটি ছিল এমন— the poet deplores the increasing self-centeredness and loss of human values among the people of Manipur. The poems are beautifully crafted and the use of refreshing imagery, startling turns of phrase and evocative metaphors and symbols make it a truly important collection.
১৯৫৯ সালে, মনিপুরের রাজধানী ইম্ফালে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় একজন সরকারি কর্মকর্তা। সমসাময়িক লিখিয়েদের তুলনায় রঘু নিজস্ব ভাষা ও নির্মাণকৌশলে অনেকাংশে এগিয়ে। প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো—পুন্সি তেলেঙ্গা (কবিতা, ১৯৯১), লানবু লৈ ওইনা শান্নরিবা (কবিতা, ১৯৯৫), নুং অসি লাইনি লৈ অসি ঈনি (কবিতা, ১৯৯৯), হনুবীগী ঈশিং পুন (কবিতা, ২০০২), অতিথি উচেক (শিশুতোষ গল্প, ২০০৩), খুঙ্গংগী চিঠি (কবিতা, ২০০৫), তেঞ্জৈ অমসুংঙা মমী (শিশুতোষ গল্প, ২০০৫), চীংশাং নাপোম্না কপ্লি (কবিতা, ২০০৭), পা’পানগী থোইবী (শিশুতোষ গল্প, ২০০৯), বসন্ত ওইগেরা নাকেন্থা ওইগেরা (কবিতা, ২০১১), শৈরেংগী খুঙ্গং (কবিতা, ২০১৫)।
‘হনুবীগী ঈশিং পুন’ কাব্য গ্রন্থের জন্য মনিপুর সাহিত্য পরিষদ কর্তৃক প্রবর্তিত তেলেম আবির এওয়ার্ড পান ২০০৫ সালে এবং ‘খুঙ্গংগী চিঠি’ কাব্য গ্রন্থের জন্য ভারতের সাহিত্য আকাদেমি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ২০০৯ সালে। প্রতিবাদী এ কবির কবিতা বাংলায় খুব একটা দেখা যায়নি। তাই বাংলাভাষী পাঠকদের জন্য আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। কবিতাগুলো লেখকের অনুমতিক্রমে মনিপুরি ভাষা থেকে অনূদিত।]
এই রাত্রি
পাখির আর্তস্বর ধ্বনিত
এই রাত্রিই
আমাদের আহতির মূল কারণ।
ছোট পৃথিবী
পৃথিবী ছোট।
এর চেয়েও ছোট পৃথিবী দেখতে চাইলে
আমার চোখে তাকাও
ভিন্ন আরেক পৃথিবী গচ্ছিত রেখেছি
আমার চোখের কোটরে।
কাঁসাই
বাজাও জোরে-শোরে
কাঁসাই।
হা-ভাতে শীর্ণ দু’হাতে
যেন জেগে উঠবে তোমাদের ঈশ্বর
দীর্ঘদিন হয়ে গেলো ঈশ্বরের ঘুমপর্ব।
বসন্তের প্রজাপতি
বসন্তের এক প্রজাপতি
আচমকা ঢুকে পড়ে আমার চোখে।
অত:পর
এই মরমরা-শুকনো গাছে
দেখি ফুটে ওঠে এক সুবাসিত ফুল।
প্রতিবাদ
ইতিহাসের সত্যভূমে
দাড়িয়ে প্রতিবাদ জানায়
সকল সময়ে
সকল মুহুর্তে
এই আকাশ আমাদেরও অংশ আছে।
মন্তব্য