[আমেরিকান কবি অ্যানি ফিঞ্চের জন্ম ১৯৫৬ সালের ৩১ অক্টোবর নিউইয়র্কের নিউ রাচেল-এ। তিনি কবিতা, কাব্যনাট্য, অনুবাদ কবিতা, কাব্যতত্ত্ব, কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধ নিয়ে বই লিখেছেন। সম্পাদনা করেছেন কবিতার এন্থলজি ও একটি কবিতা লেখার নির্দেশনা। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯০ সালে রবার্ট ফিটজেরাল্ড পুরস্কার এবং ২০১০ সালে স্বরস্বতী পুরস্কার পেয়েছেন।]
পরিবর্তমান নারী
আমরা যদি বদলে যাই যেমন সে বদলে যাচ্ছে,
সে যদি বদলে যায় যেমন আমরা বদলে যাই
(সে যদি বদলে যায়, আমি বদলে যাচ্ছি)
কে বদলে যাচ্ছে, যেমন আমি বেঁকে যাই
আকাশ আমাদের পাঠিয়েছে যার দিকে
(সে কি বদলে যাচ্ছে, নাকি আগের মতোই?)
নারীর শৃঙ্খল
এ সকল মৌসুমি পুষ্পদল প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
যেমন সে তার পায়ের মুড়ির ওপর ঘুরে দাঁড়ায়—
যখন সবুজ আর আমার অনুভূতিকে আবৃত করে না, অন্ধকার নেমে আসে।
এখন স্বর্ণবিন্দুর স্পর্শ বৃক্ষশাখা চিত্রিত করে,
দৃঢ় সংকল্প সময়ের সপ্তাহগুলো
তার ফেলে যাওয়া পদচ্ছাপ ধীরে লীন করায় মগ্ন ,
যখন সে গাছ বেয়ে উঠতে শুরু করেছে।
পোকা
সেই ঘণ্টাঘড়ি ফিরেছে,
পুষ্পশোভিত পা-অলা,
ভারী-মাথায় চালিত,
সভাঁজ-কাগজ,
কীলক-কুঞ্চিত
অসভ্য-হননে আকুল—
পেছানোর কালে টানছে পেছনে
ধনুক সদৃশ বেঁকে যাচ্ছে
এখনো সুদৃঢ় উঁচু-পা,
হাঁটু-ছোঁয়া গভীরে নেমে গেলে
পালকেরা নিম্নমুখ,
সবুজ ইচ্ছে,
দৃঢ়-শুঁড়—সৎ
সুতো—নিম্নগামী
আচ্ছাদিত দক্ষতার প্রায়
কেন্দ্রবিন্দু বদলে যাচ্ছে
প্রশান্তি সমাগত
চিহ্ন রেখে রেখে, ইচ্ছাকে হননে রত।
আগন্তুক
স্বর্ণের দিকে ফিরেই প্রেমে পড়ে গেলো সে।
জীবনকে ওপর-নিচ নাচালো।
সে তার ডাগর চোখ ফের উন্মীলিত করে
আর ভেতরে ডাকলো কিছু আগন্তুক
আগন্তুকগণ তাকে অন্তরে-বাইরে পুরোপুরি অনুভব করে
তারা দেখে তার ক্ষীণকায় বাইরের অবয়ব
যদিও তার হৃৎপিণ্ড ইস্পাত কঠিন
তারা তার ভেতরটায় কড়া নাড়লো
হেমন্তের চূড়ান্ত
মেপলের পাতাগুলো কালো হয়ে আসে আঙিনায়।
ক্রমশ ঝাপসা হয় আলো, আর এক নীলকণ্ঠ
আমাদের শীতল স্মৃতিকে ঠেসে বের করে দেয় রোদ থেকে,
যতবার তোমার সে পদচিহ্ন ছায়াকে মাড়িয়ে আসে, আর
ঘুরে যায় আমার আয়না তুলে ধরার আঙুলে,
ততবারই সূর্যকে ঢেকে দেয়।
এসো—তোমাকে খুঁজব আমি সুন্দর এক হেমন্তে,
আর তুমি খুঁজতে পারো গতবার বাড়িতে ফেরার চিহ্ন
বরফে অথবা রৌদ্রে।
আরেকটি আলসেমি
চেস্টনাট ঝরে দগ্ধ ঋতুতে,
পুরোপুরি ঝরে, বাতাসে খুঁজেছে ঠাঁই
পুরনো খোলস খোলার জন্যে।
তবেই তারা সে সন্ধ্যাবেলার আবছা আঁধারে
স্বর্ণালী পাতা কিরণ ছড়াবে,
যেখানে পড়েছে ঝরে।
তাদের দেখতে যাই,
শীতের জন্যে প্রতীক্ষারত,
তাদের খোলস খুলে আর লেগে থাকে।
জংধরা সব রিমগুলো দৃঢ় শক্ত
আর বাদামি রঙকে জড়িয়ে ধরে রাখে।
আর পড়ন্ত সূর্য সহসা ডুবে যায়,
এবং দিবসের টেনে নেয় অন্ধকার পরিণতির দিকে,
আর পা-গুলো ধুসর হাঁটা ত্যাগ করে
একটুও দেরি না করে , আলো অন্তর্হিত,
আর আমি এখানে এবং বাড়ি ফিরি না।
শীতল শিশুদের গর্তঅলা উপহারগুলো:
তারা চেস্টনাটগুলো গোপন ভাণ্ডারে লুকিয়ে রাখে।
গর্ত লুপ্ত, চকচকে ভাব বিদূরিত
শস্যকণা নিখোঁজ, এবং শিশুরা ফিরেছে ঘরে।