(পর্ব-৩)
চা-নাস্তা নিয়ে রুমে কাফির রুমে ঢোকে সোমা। কাফি সেদিকে কোনো আগ্রহ না দেখিয়ে ভাবে, নাসের ভাই পরিশ্রম করে এত বড় হয়েছে। তাহলে আমি পারি না কেন ! আবার ভাবে, একসময় তো মনে হতো সোমা আমাকে ভালোবাসে। হয়তো তুলির কারণে তার প্রকাশ ঘটেনি। মনে তো ঠিকই ছিল। এখন তো ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে আমাকে চেনেই না। কেন যে এখানে এলাম!
কী ভাবো? নাও, নাস্তা করো। একমুখ হাসি দিয়ে সোমা বলতেই কাফি ভাবে, এ কয়দিনে তো এরকম সোমাকেই আমি মনে মনে খুঁজছিলাম। কিন্তু আজ এত সোহাগ ঢেলে কথা বলছে! এ কয়দিনে তো মনে হলো আমাকে চেনেই না।
মন খারাপ করে আছো কেন? ঠিকঠাক মতো কথা বলিনি, কাছে কাছে থাকিনি সে জন্য! তোমার নাসের ভাই যে জিনিস! তাকে ঠিক করতেই তো এ কয়দিন চলে গেছে। আর তোমার নাসের ভাইও তো তোমাকে এ কয়দিন তার লেজের সাথে সব সময় বেঁধে রেখেছে।
কাফি অবাক হয়। মনের কথাটা কিভাবে ধরলো সোমা! কাফি কথার পাশ কাটিয়ে বললো, তা নয়। আসলে ভাবছি কাল পরশু চলে যাবো।
কোথায় যাবে?
জানি না। তবে যাবো।
কেন যাবে?
তাও জানি না।
এতদিন কোথায় ছিলে?
ঢাকায়।
চাকরি করছো?
না।
তাহলে কি করতে?
টিউশনি করে।
চেহারা এত খারাপ হয়ে গেছে কেন?
হয়ে গেছে কী আর করা।
টিউশনি করে কি জীবন চলে!
চলে না। চালাতে হয়।
আমাকেও বিয়ের আগে একজন পড়াতো। রোজ রোজ বাসায় এসে পড়িয়ে যেতো। বুঝতাম টিউশনি করেই পড়ালেখা চালায়।
আমিও তো বাসায় গিয়ে গিয়েই পড়াই। নিজের কাছে নিজেকে অনেকটা পোষা কুকুরের মতো লাগে। একসময় তো এখানেও টিউশনি করেছি। জীবনের দায়ে মানুষ তো কতকিছুই করে! তাই কখনো করি আবার কখনো করি না। ছেড়ে দেই। দুদিন পরে আবার খুঁজি। সবকিছুই এলোমেলো।
বিয়ে করোনি?
বিয়ে! নিজেই নিজেকে চালাতে পারি নে। আবার বিয়ে!
প্রেমও করেনি?
হয়তো করেছিলম!
হয়তো কী? বললেই তো হয় করেছিলাম। প্রেম করা তো আর অপরাধ না। বললে কি জেল-জরিমানা-ফাঁসি হবে!
মিথ্যে বলবো কেন? কেউ হয়তো ভালোবেসেছিল, আমিও হয়তো বেসেছিলাম। বাস্তবতার প্রবল ঢেউয়ে সে সব কখন কোথায় আছড়ে পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে! সে সব কি আর হিসাবে থাকে!
ঠিকই বলেছ। হিসাবে কি আর সব থাকে! জীবন তো ঢেউয়ের মতোই।এক ঢেউয়ে জাগে, আর এক ঢেউয়ে ডোবে!
সোমা ছোট একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে আবার বললো, এতদিন পরে কী মনে করে এলে? আমাকে মনে ছিল?
জানি না কেন এসেছি! এসেছি এটাই এখন সত্য। মনই হয়তো টানতে টানতে নিয়ে এসেছে । দুদিন পরে আবার চলে যাবো দূর কোথাও।
যদি যেতে না দেই!
কাফি এবার সত্যি অবাক হয়। যে সোমাকে সে চিনতো, এ সোমা তো সে সোমা নয়! এতটা শক্তি দিয়ে আগের সোমা তো কোনোদিন কিছু বলেনি। কাফি বলে—আমার তো যেতেই হবে। ইচ্ছে করলে হয়তো আরো কিছুদিন থাকা যাবে, কিন্তু একটা সময় তো যেতেই হবে। তার থেকে আগেই যাওয়া ভালো না! তোমার স্বামী আছে, সংসার আছে। আর আমি তো তোমার পরিবারের কেউ নই। এ বাড়ির প্রাক্তন প্রাইভেট টিচার! তাও তো কবেকার কথা। পুরনো হয়ে গেছে। সব পুরনো হয়ে গেছে। পুরনো পুকুরে শ্যাওলা জমে পরিত্যক্ত ঘাটের মতো।
সবই পুরনো হয় না। সবই পরিত্যক্ত হয় না। পুকুরঘাটের সঙ্গে এ তুলনা চলে না। মনের ঘাট বলেও তো একটা ব্যাপার থাকে—সেখানে কোনোকালেই শ্যাওলা জমে না—মনের মানুষ কখনোই পরিত্যক্ত হয় না। বলো তো নিজের নিঃশ্বাস কি কখনো পুরনো হয়! হলে বন্ধ হয়। তখন একদম শেষ। তুমি আমার কাছে আমার নিঃশ্বাসের মতো। আগে তো তোমাকে বলতে পারিনি। বলার পরিবেশও পাইনি। তুমি যেদিন এ বাড়িতে তুলিকে প্রথম পড়াতে এলে, সেদিনই আমার সর্বনাশটা হয়েছে। তুমি এই সর্বনাশটা করেছো।
আমি! কিভাবে?
কিভাবে করেছ— তা কি আমি জানি। তোমার দু চোখকে জিজ্ঞেস করো।
কাফি ঠিক বুঝে উঠতে পারে না। কী বলবে—কিভাবে বলবে! মুখটা মেঝের দিকে করে। মেঝেটা কি সুন্দর। শ্বেত পাথরের দামি টাইলসে চোখ আটকে যায়। যেন জল খেলা করছে!
সোমা আবার বললো, তুলিকে তুমি পছন্দ করতে। হয়তো এখনো করো। সেকারণে আমি নিজেকে তোমার কাছে প্রকাশ করিনি। হাজার হলেও তুলি তো এ বাড়িরই মেয়ে। ভাসুরের মেয়ে। সে ও তোমাকে পছন্দ করে, আমিও করি—ব্যাপারটা কেউ বুঝতে পারলে দুর্গন্ধ ছড়াতো—এসব ভেবেছি তখন। ফলে অফোটা কুঁড়ির মতোই থেকেছি তোমার কাছে। আমি তো তোমার মতো অত পড়ালেখা জানিনে। আমার রূপই তো আমার কাল হয়েছিল। বাবা তাড়াতাড়ি করে বিয়ে দিয়ে দিল। আর নাসেরও টাকার ক্ষমতা খাটালো। ওর টাকা দেখে বাবা ভাবলো—ওখানে বিয়ে দিলে মেয়ে সুখেই থাকবে। বিয়েতে আমার মত ছিল না। নাসেরের চেহারাও পছন্দ ছিল না। কিন্তু টাকার কাছে এসব চেহারা সুরত আর পছন্দ-অপছন্দের কোনো মূল্য নেই। কোরবানির পশুর মতো আমার অবস্থা হয়েছিল। শিক্ষিত ভদ্র সুন্দর চেহারার একটা ছেলেকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখতাম। আমার বাবাও টাকার মানুষ। নাসেরের টাকা দেখে ভাবলো, এখানে বিয়ে দিলে মেয়ে সারাজীবন সুখের পালকিতে চড়ে থাকবে। এরা তো ভাবে, টাকা থাকলেই সব হয়। এরা তো টাকা দিয়েই সুখ কিনতে চায়—টাকা দিয়ে মন কিনতে চায়!
আসলে টাকা দিয়ে যে এসবের কিছুই কেনা যায় না—তা এদের কে বোঝাবে! ফলে আমার যা হবার হলো। আমার স্বপ্ন গড়াই নদীর প্রবল স্রোতে ভেসে কোথায় যে হারালো! আরো শুনতে চাও? আামার এখন বড় পরিচয় কী জানো? না।
আমার বড় পরিচয় আমি বড়লোকের সুন্দরী বউ। এটা ভাবতে গা ঘিনঘিন করে। আবার বাইরে লোকের সামনে নিজেকে সুখী সুখী একটা ভাব নিয়েও থাকতে হয়। মন চাক আর না-চাক স্বামীর প্রতি দরদ দেখাতে হয়।এই তো আমি! আমি কত করে নাসেরকে বললাম, আমি আবার পড়বো। আমাকে পড়াও। বিএটা পাস করি। বিয়ের পরেও তো কত জন পড়ে। কিন্তু তার একই ভয়—সুন্দরী বউ! যদি কেউ দখল করে নেয়! বউও যেন চর দখল হওয়ার মতো কোনো জিনিস! তা নিলে তো ঘর থেকেও নিতে পারে। এটা তো নির্জন কোনো দ্বীপ না যে এখানে আর কোনো মানুষ নেই। তাকে এসব বোঝাবে কে! আর এটাও তো ঠিক, আমার মনে তো একটা অপূর্ণতা ছিলই, মনভরা বর তো আমি পাইনি। তারপর আবার বন্দি করে রাখার মতো করে রাখে। আমার নিজের কাছে এটা খুব অপমান লাগে। সারাক্ষণ সন্দেহের ভেতর থাকি। এসব কারণেই তোমাকে দেখে মনের ভেতরে কল্পনার মানুষটা জেগে উঠেছিল। মুক্তির একটা বাতাস বুকের ভেতর পানসি নৌকার পালের মতো দুলে উঠেছিল। তোমাকেও তা বলতে পারিনি। মনের কথা মনের সাধ— মনের চিতাতেই পুড়েছে। উজানের উনানেই জ্বলে যাচ্ছি।
খুব মন দিয়ে কথাগুলো শুনছিল কাফি। বললো, আমি যে তোমার বাসায় আছি— নাসের ভাই যে আমাকে এভাবে রেখে ঢাকায় গেলেন—এসব নিয়ে আবার তোমাদের ঝামেলা-টামেলা হবে না তো!
আমি ওকে বলেছি, তোমাকে আমি ভাই বানিয়েছি। আর ও নিজেও এখন আগের থেকে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। প্রথম প্রথম খুব জ্বালাতো। অতিষ্ঠ করে ফেলতো। একসময় ভেবেছিলাম, ওর সাথে ঘরই করবো না। পরে আর এসব ভাবিনি। তোমার ক্ষেত্রে ওর আচরণটা অদ্ভুতরকমের আলাদা। তোমাকে আগেও কিন্তু নাসের পছন্দ করতো। তুলিকে তুমি যখন পড়াতে, ও পছন্দ না করলে তো আমি তোমাকে তখন চা-নাস্তাই দিতে পারতাম না। হয়তো পড়াতেও পারতে না।
তারপরও মানুষের মন! আর পাতানো ভাই-টাই—এসব কেউ মানে নাকি! কত আছে পাতানো ভাই বোন একসাথে শুয়েছে—বিয়ে করে সংসার পেতেছে। আবার পেট বাঁধিয়ে দিয়ে ধর্মের ভাই পালিয়েছে। এসব সম্পর্কের ভেতর কত কিছু ঘটে। নাসেরও তো এ সমাজেরই একজন। ওর ও তো এসব অজনা নয়। সন্দেহ তো থাকতেই পারে। ঝামেলা তো বাঁধতেই পারে। আর আমি তো মন থেকে তোমাকে ভাই বানাইওনি। তোমাকে এখানে রাখার জন্য একটা নিরাপদ সম্পর্কের আবরণমাত্র।
তোমার যদি কোনো সমস্যা হয়!
ভয় পাও কেন? সমস্যা হলে হবে। তোমার সাথে চলে যাবো। নিয়ে যেতে পারবা না?
পারবো না কেন! অবশ্যই পারবো।
তা হলে তো হলোই। নাসের ভালোভাবে নিলে ভালো, না নিলে আরও ভালো। আমি ওকে আমার মতো করে বলেছি। বলেছি, আমার তো কোনো ভাই নেই, ও-ই আমার ভাই—মনে করো আপন ভাই। নাসের তো মেনেছে। আর না মানলে কি তোমাকে দৈনিক সাথে করে অফিসে কারখানায় নিয়ে ঘুরতো!
কিন্তু এটা তো মিথ্যে দিয়ে একটা বিশ্বাস কেড়ে নেওয়া।
এ ছাড়া তোমাকে আর কোনো উপায়েই এখানে রাখার শক্তি আমার নেই।
যখন সত্যটা জানবে?
যখন জানবে তখন বুঝবো। এখন বুঝে কাজ নেই। একটা কথা বলি, তোমার এই ফিরে আসাটা আমার কাছে সবচেয়ে বড় আনন্দের। এ যে আমার কাছে আমার মনের মানুষের ফিরে আসা। এখানে আমার মন থাকে না, কাফি।
এত সুন্দর বাড়ি— সাজানো গোছানো ঘর— কত সম্মান—স্বামীর যত্ন আদর—সবই তো আছে। এর বাইরে একটা মেয়ে আর কী চাই বলো!
যদি বলি এর বাইওে তোমাকেই চাই। ভয় পেয়ে গেলে! ভয় পেতে হবে না। শোনো আমার সব আছে। শুধু নেই মনটা। একথা ঠিক আমি নাসেরের কোনো ইচ্ছেকে কখনো অপূর্ণ রাখিনি। বিয়ে করলে একটা অভ্যস্ত জীবন হয়ে যায়। আমার ক্ষেত্রেও তাই। এখানে মন আছে কি নেই—এ ধার কে ধারে। রাতে স্বামীর শরীর দরকার শরীর পাচ্ছে। খাবারের সময় পাশে থাকা দরকার পাশে পাচ্ছে। যখন যা দরকার সবই পাচ্ছে। মনের ব্যাপারটিই শুধু নেই। হয়তো সেটা শুধু আমার ক্ষেত্রেই। ওর মনটা হয়তো ঠিকই আমার জন্য আছে। আমার মন ও পেলো কি পেলো না—মন নিয়ে ওর এত সব হিসাবের সময় বা বোধ কোনোটাই নেই। আসলে মনের গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা ওর নেই। আবার একদিকে ও কিন্তু সরল। যেটা বিশ্বাস করে সেটা করেই। বলেছি তোমাকে ভাই বানিয়েছি, তা বিশ্বাস করেছে। না হলে অনেক সমস্যা করতো। তুমি এ কয়দিন থাকতে পারতে না। আসলে সে একটা টাকার মেশিন—টাকা বানাতে পারে। নিজে বেশি দূর লেখাপড়া করতে পারেনি বলে, সে চেয়েছিল সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েকে তার বউ বানাবে। সে তা করেও ছেড়েছে। জেদি আছে খুব। কিন্তু সেই সুন্দরী বউ কী চায়, তার যে একটা মন আছে—তা জানতেও চায়নি, ভাবেওনি। হয়তো তার অতদূর ভাবার ক্ষমতাও নেই। ভেবেছিলাম, তুমি হয়তো আমাকে বোঝো! একসময় বুঝলাম, তাও ভুল। সব পুরুষই খুব ভাব দেখায়—অনেক কিছু বোঝে। আমার কী মনে হয় জানো পুরুষ মানুষ মাত্রই ঘুমের ভেতর ঘুমিয়ে থাকে। এই ঘুমটা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। একটু ঢুকলেই টের পাওয়া যায়।
খুব ভারি কথা। তবে তুমি যে আমাকে পছন্দ করো আমি কিন্তু তখন বুঝেছিলাম। তুলিকে আমি পছন্দ করতাম, এটাও ঠিক।
আমি ওটুকু তখন বুঝেছিলাম। আমি বিবাহিতা বলে নিজের ভালোলাগাকে চাপা দিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত হয়েছিলে তাই না? আমি অবিবাহিতা হলে তুমি কখনোই তুলিকে পছন্দ করতে না, আমাকেই করতে—চেহারা সৌন্দর্যে আমার পাশে যে সহজে কেউ দাঁড়ানোর নেই, তা তুমি কেন যে কেউই মানবে। আমি বিবাহিতা, তাই তোমাকে কখনো মুখ ফুটে কিছু বলিনি। আমি আমার ভেতরেই বন্দি থেকেছি। শুধু মনের আগুনটা নেভাতে পারিনি। উজানের উনুনে পোড়া যে কত ভয়াবহ, যে পুড়েছে সেই জানে।
আমি তা একটু হলেও বুঝেছিলাম।
তাহলে যেতে চাইছো যে!
ইচ্ছে করলেই কি থাকা যায়! থাকার মতো সম্পর্ক কি আমাদের! কী অধিকারে কিসের শক্তিতে আমি এখানে থেকে যাবো!
ঠিকই তো। অধিকার তো একটা লাগেই। অধিকার কেউ দেয় না, নিতে হয়। সোমার কণ্ঠ একটু ভেজা লাগলো কাফির। সোমা উঠে গেলো।
কাফি অমনি বসে থাকে। ভাবে, যে সত্যটা চার বছর আগে অনুভব করেছিলাম, তা আজ আলোর মতো ফুটে উঠলো। তুলিকে নিয়ে অভিমানের তীক্ষ্মকাঁটা যে তার বুকে বেশ শক্ত হয়ে বিঁধে ছিল, তা আজ খসে গেছে। কিন্তু আমার কী শক্তি আছে তাকে ভালোবাসার! আমার কী শক্তি আছে তাকে অধিকার খাটানোর! আমার কি আদৌ কোনো শক্তি আছে! যার স্বামীর রাজপ্রাসাদের মতো বাড়ি! বিত্ত-বৈভবে ভরা জীবন! যার অফিস-কারখানায় আমার মতো কতজন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে! সার্টিফিকেটগুলো ছাড়া তো আমার কিছুই নেই। ওসব সার্টিফিকেট দিয়ে কী হয়! কী মূল্য আছে! ও দিয়ে তো কিছুই হয় না। টাকা না থাকলে এসবের কী মূল্য! নাসের সাহেবের তো সার্টিফিকেট নেই বললেই চলে। চেহারাও তো তাকানোর মতো নয়। সে তো টাকার জোরে সোমার মতো সুন্দরী মেয়েকে অনায়াসে ঘরে তুলে রেখেছে। ভাবে, এখানে এভাবে থাকার চেয়ে ছেঁড়া কাগজের মতো পথে পড়ে থাকাও ভালো। সোমা আমাকে ভালোবাসে। এ হয়তো একরকম মোহ্। মোহ্ আজ আছে কাল নেই। সোমার মোহের জাল যখন ছিঁড়ে যাবে, তখন কী হবে! নাসের সাহেব যদি কখনো সম্পর্কটা টের পায়, তখন ব্যাপারটা কি বাজে রকমের হয়ে যাবে। কাফি সকালে চলে যাবার কথা ভাবে।
চলবে…