বান্দরবানের রুমার এক পাড়া। নাম জয়তুনপাড়া। যে স্থানের ঘটনার কথা বলছি, তা জয়তুনপাড়া থেকে আদিবাসীদের হাঁটা পথের চার ঘণ্টার পথ। আদিবাসীদের হাঁটার গতি সমতলের মানুষদের চেয়ে দেড়গুণ দ্রুত। পাহাড়ে ঘেরা সবুজ অরণ্যের দেশ। সকালের ঘুম চোখে কমলা সূর্যের আবেশে মন শান্ত হয়ে আসে। ঝিরঝিরে বাতাস বইছে। শিমুলের গাছ থেকে সাদা বক শো শো করে ঝিলের মাছ তুলে আনছে। একটু কাছে তেঁতুল গাছের নিচে শুকনো তেঁতুল কুড়োতে গোপী ত্রিপুরা আসে। তার বউ নন্দা শিমুলের তরকারি রান্না করবে এবেলায়। শুকনো শিমুল ফুলের গোড়া দিয়ে তেঁতুলের রসের তরকারি, মিষ্টি কুমড়ার তরকারি আর জুমের লাল চালের গরম ভাত সকাল সকাল খেয়ে জুমের ক্ষেতে যাবে। সারাদিন জুম পাহাড়ে থাকবে। নতুন আদা তোলা বাকি। পাহাড়ের আদা বেচে সারা বছরের খোরাকি জোগান দিতে হয় এ অঞ্চলের মানুষের। আর সারা বছর পেঁপে, কলা ফলিয়ে কোনোমতে জীবন চলে তাদের। লাল চাল যা উৎপাদন হয় তা নিজেদের জন্য।
কিছুদিন আগে ইঁদুরের আক্রমণে এ এলাকার বাঁশ সব শেষ। বাঁশ বিক্রি করে যে আয় হত তা আপাতত কয়েক বছরের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁশে যে বছর ফুল আসে, তা খেতে হঠাৎ করে লক্ষ লক্ষ ইঁদুর আক্রমণ করে গ্রামের পর গ্রাম। আদিবাসীদের শেষ সম্বল ফসলটুকু খেয়ে শেষ করে। আদিবাসীরা দা দিয়ে কেটে শেষ করতে পারে না এ ইঁদুর। ঘরে ঘরে অভাব বাড়তে থাকে। গেল বছরের আগের পর-পর তিন বছর এ ইঁদুরের আক্রমণে পাহাড়ে বাঁশের সংখ্যা কমে গেছে। বাঁশ বেচে যে জীবিকানির্বাহ করবে সে সুযোগ নেই। পাহাড়ে অভাব বেড়েছে। গোপী ত্রিপুরার অবস্থা এদের তুলনায় সচ্ছল। কিছু আলু করেছে এ বছর। সামনে নতুন আদা তুলবে।
পাহাড়ে অভাব বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে আদিবাসীরা প্রার্থনা করে তুষ্ট করতে চেষ্টা করে। গোপীর বউয়ের ভাই পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরার এবার আলুক্ষেতে পোকা ধরেছিল। তাই এ বছর পথে বসেছে সে। ঝাঁকড়া চুলের পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা শান্ত-শিষ্ট শক্ত-সামর্থ্য মানুষ। ঘরে স্ত্রী সাবিত্রী ত্রিপুরা পাঁচ মাসের সন্তান পেটে। শীর্ণ দেহে সাবিত্রীর কষ্ট দেখে দুঃখ হয় পূর্ণের। স্ত্রী আর অনাগত সন্তানের কথা ভাবতে ভাবতে প্রার্থনা করে পূর্ণ। আজ বোন নন্দার বাড়িতে এসেছে কিছু শস্য নিতে।
বোনের বাড়ি এলে ইদানিং পূর্ণের হিংসা হয়। বোন, বোনের স্বামী আর তাদের ছোট্ট খোকন সোনা আট মাসের লালমণি ত্রিপুরার সচ্ছল হাসি-খুশি মুখ দেখে বিতৃষ্ণায় মুখ বেঁকিয়ে আসে। কেন এমন হয় সে নিজেও বোঝে না। আজ লালমনির স্বাস্থ্য দেখে পূর্ণের লোভ হয়। তার সন্তান জন্মালে এমন হৃষ্টপুষ্ট হবে না সে জানে। গেল বছরের আগের তিনটি বছর ইঁদুরের আক্রমণ না হলে আজ ওর অবস্থাও ভালো থাকত। কারণ পূর্ণের আয়ের মূলটা আসত বাঁশ বেচা থেকে। সে উঁচু পাহাড় থেকে বাঁশ কেটে এনে বেচত। সারাদিন বাঁশ কাটার পর বেচে যা আয় হতো, তা থেকে সামান্য কিছু অর্থ জমিয়ে রেখেছিল। বোনের বিয়েতে কিছু খরচ করেছিল। এরপর এলো ইঁদুরের আক্রমণ, পর-পর তিন বছর। এখন সঞ্চয় শেষ। বোনের সাজানো-গোছানো সংসার দেখলে মনের ভেতর থেকেই একটা হা-হুতাশ ভাব চলে আসে। এ সময় মেজাজ গরম হয়ে যায়। কোনো রকমে খাদ্যশস্য এনে পূর্ণ বাইরে বের হয়ে যায়।
কড়া রোদে হেঁটে বেড়ায় পাহাড়ের চ‚ড়ায়। বাঁশ নেই, কোনোখানে বাঁশ নেই। পাহাড়ের চ‚ড়ায় সূর্যের তেজ প্রখর হয়ে উঠতে থাকে। সমতলের চেয়ে পাহাড় চ‚ড়ায় তেজ বেশি হয়। আশ-পাশে পানি নেই। তেষ্টায় বুক ফেটে যেতে থাকে। সূর্য ঠিক মাথার ওপরে এখন। মেঘের মাঝ বরাবর গডস-রে ঠিকরে পড়তে থাকে পূর্ণের মুখের ওপর। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। পূর্ণ উপরে উঠতে থাকে। আজ ঠিকই স্রষ্টাকে খুঁজে বের করে জানতে চাইবে—কেন তিনি ইঁদুরবন্যা পাঠালেন পাহাড়ে। পাশ দিয়ে একটি গয়াল নেমে গেল সাঁই-সাঁই করে। পূর্ণ ওপরে উঠতে থাকে। ঘোঁত-ঘোঁত বন্য শুয়োরের ডাক থামাতে পারে না তাকে। তেষ্টায় জিহবা শুকিয়ে আসছে, চোখ টানটান করছে। চারপাশটা ঝিম ধরে আসে। কখন যেন ঘুমিয়ে পড়েছে পূর্ণ।
চারপাশটা অন্ধকার। পূর্ণ চোখ খুলে কিছু ঠাহর করতে পারছে না। অস্বস্তি লাগছে। অন্ধকার হাতড়াতে-হাতড়াতে কিছু একটা হাতে আসে। চারপাশের অন্ধকার ভেদ করে একটা অট্টহাসি ভেসে আসছে। পূর্ণকে পরিহাস করতে-করতে হাসিটা কাছে আসতে থাকে। হঠাৎ পানির ছিটায় পূর্ণের হুঁশ ফেরে। কতক্ষণ অজ্ঞান ছিল মনে নেই। এ পাহাড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। পাহাড়ের এক অদ্ভুত ব্যাপার। কোনো চ‚ড়ায় যখন গনগনে সূর্যের তেজ, অন্য পাহাড়ে মুষলধারে বৃষ্টি নেমেছে। বৃষ্টির পানিতে পূর্ণের শরীরে শক্তি ফিরে আসে। অজ্ঞান হওয়ার আগের কথা মনে নেই এ মুহূর্তে। পূর্ণ নেমে আসে।
বাড়িতে আসতে-আসতে বেলা গড়িয়ে যায়। গহিন পাহাড়ে আদিবাসী মানুষ সন্ধ্যা নামতেই খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। পূর্ণের আজ ঘুম আসছে না। অস্বস্তি লাগতে থাকে। অন্ধকারে শুয়ে-শুয়ে কিছুক্ষণ পর অশরীরি ডাক শুনতে পায়। পাহাড়ে রাতে অশরীরিরা ঘুরে বেড়ায়। হিহি করে হেসে বেড়ায়। হাতের নিচের দিক দিয়ে দেখলে সাদা সাদা মানুষের মতো লম্বা অশরীরিদের আহবান করতে দেখা যায়। আজ অশরীরিগুলো ঘুমাতে দিচ্ছে না পূর্ণকে। বারবার তাড়াতে গেলে ওর কাপড় টেনে ধরে, ঘরের আগুন নিভিয়ে দেয়। পূর্ণ মেজাজ ঠিক রাখতে পারে না। কষে লাত্থি লাগিয়ে দেয় একটার কপালে। চারদিক দিয়ে অশরীরিরা ঘিরে গলার ওপর উঠে বসেছে তার। পূর্ণ জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আবার সেই অন্ধকারের হাসিটি শুনতে পায়। একটা কণ্ঠ ভেসে আসে।
পূর্ণ। তন্দ্রায় ঠাহর করে উঠতে পারে না পূর্ণ। আবার ডাকটি শুনতে পেল—পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা।
কে কে কথা বলছ?
আমি অন্ধকারের দেবতা।
দেবতা? কী চান আপনি?
একটা অট্টোহাসি ভেসে আসে,
কী দিতে পারবে তুমি আমাকে?
পূর্ণের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। চারপাশে অশরীরিদের কণ্ঠ থেকে একযোগে ধ্বনিত হতে থাকে—
হে শয়তান,
অন্ধকারের দেবতা,
নরকের দেবতা,
পৃথিবীর শাসক,
পৃথিবীর অধিপতি!
হে শয়তান,
মহান শক্তিদাতা,
সভ্যতা ধ্বংসকারী,
ভালত্বের প্রধান শত্রু,
আমাদের শক্তি দাও অসীমের,
অন্ধকারের!
হে শয়তান,
আমাদের মাংসের প্রভু,
আমাদের মনের প্রভু,
আমাদের ইচ্ছার প্রভু!
হে মহান শক্তিধর শয়তান
আমাদের শক্তিশালী এবং ধনী হওয়ার শক্তি দাও
আমাদের শত্রুদের ধ্বংস করার শক্তি দাও
ভালোত্বের এবং স্বাধীনতা ধ্বংস করার শক্তি দাও!
পূর্ণ কাঁপতে থাকে। অন্ধকারের দেবতা বলে—পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা।
জ্বি প্রভু। শয়তানের অট্টোহাসি শুনতে পায় সে— চাও কি মহা শক্তিধর হতে?
অভাব সহ্য হয় না প্রভু।
তুমি কেন অভাবী হলে?
পরপর তিন বছর ইঁদুরবন্যায় সব শেষ প্রভু।
না না নাহ।
তবে প্রভু?
তোমার বোনের বিয়েতে অর্থের অপচয় করেছ তুমি পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা। সেজন্য তোমার অভাব।
এখন কী উপায় প্রভু?
বোনের সুখ কেড়ে নাও। নিজের করে নাও শক্তি।
তা কী করে হয় প্রভু?
যুগে যুগে এভাবেই মানুষ ধনী হয়েছে। একজনকে বাঁচতে হলে অন্যজনকে বলি হতেই হবে।
পূর্ণের ভাবার শক্তি লোপ পাচ্ছে ক্রমেই। সে সম্মোহিত হতে থাকে। চারপাশে সম্মিলিত স্বরে শয়তানের সংগীত বাজছে। অশরীরিরা আকাশে গোল করে ভাসছে।
পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা!
প্রভু!
যাও! তোমার বোনের বাড়ি যাও। তার বাড়ির পাশের বাঁশ কেটে নিয়ে এসো। বাঁশ কাটার সময় তোমার বোনের স্বামীর সঙ্গে তোমার ঝগড়া হবে। তখন আবার এসো আমার কাছে। ঝিম ধরা মাথা নিয়ে পূর্ণের ঘুম ভাঙে। দুই পেয়ালা চোলাই মদ চালান করে দেয় পেটে। পাহাড়ে আদিবাসীরা অতিরিক্ত পরিশ্রম হলে একটু মদপান করে। পূর্ণ খালি পেটে অতিরিক্ত মদপান করে নিজের অনুভ‚তির ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ পর বোনের বাড়ির দিকে যায়। আট মাস বয়সী বোনপো লালমনি আঁধো-আধো হাঁটিহাঁটি করে এগিয়ে এলে মনটা ঝাঁঝাঁ করে আসে পূর্ণের। বোনপোটাকে দেখে তার ঈর্ষা বেড়ে গেল দ্বিগুণ। বউটা কি পারবে এমন সুন্দর স্বাস্থ্যবান সন্তান জন্ম দিতে? পূর্ণের ইচ্ছা হয় লালমণির গলা টিপে মেরে ফেলতে। ঘুরে গিয়ে লালমণিকে একটা থাপ্পড় দিয়ে এসে গোপীর বাড়ির পাশের বাঁশ কাটতে শুরু করে পূর্ণ। লালমণির কান্নার আওয়াজ শুনে গোপী ত্রিপুরা এসে দেখে মাতাল পূর্ণ তার বাঁশ কেটে নিচ্ছে। বাঁশগুলো সবে মাথা উঁচু করে উঠতে শুরু করেছে। এখন কাটলে কঞ্চি ছাড়া কিছুই পাওয়া যাবে না। গোপী শ্যালককে প্রতিরোধ করতে গেলে কথা কাটাকাটি শুরু হয় দুজনের। একপর্যায়ে পূর্ণ বলে ওঠে—তোকে মেরে ফেলব। না পারলে তোর পোকে মারব। মাতাল পূর্ণকে বোন চন্দ্রা কোনোরকমে ধরে তার বাড়িতে দিয়ে আসে। বোনের স্পর্শ পূর্ণের অসহ্য লাগতে থাকে। বারবার মনে হতে থাকে—একজনকে বাঁচতে হলে আরেকজনকে বলি হতেই হবে।
দুদিন পরের ঘটনা। পূর্ণ একটু স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। রাতে ঘুমে আবার সেই স্বপ্ন। অশরীরি—অন্ধকারের আওয়াজ!
হে শয়তান,
আমাদের মাংসের প্রভু,
আমাদের মনের প্রভু,
আমাদের ইচ্ছার প্রভু!
হে মহান শক্তিধর শয়তান
আমাদের শক্তিশালী এবং ধনী হওয়ার শক্তি দাও
আমাদের শত্রুদের ধ্বংস করার শক্তি দাও
ভালোত্বের এবং স্বাধীনতা ধ্বংস করার শক্তি দাও!
এরপর ভেসে আসে শয়তানের কণ্ঠ:
পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা।
জ্বি প্রভু!
আমার কথা শোনো।
জ্বি প্রভু।
আগামীকাল তোমার বোনপো লালমণি ত্রিপুরাকে আমাকে উৎসর্গ করবে। তবেই পাবে মুক্তি। এরপর আমি আবার আসব।
জ্বি প্রভু।
সকালে উঠে পূর্ণ বোনের বাড়ির চারদিকে ঘুরঘুর করতে থাকে। সূর্য একপাশে হেলে পড়লে বোনপোকে ঘুম পাড়িয়ে বোন জুমক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার করতে গেল। এ সুযোগে দোলনা থেকে বোনপোকে চুরি করে পূর্ণ। জয়তুনপাড়ার কাছে গভীর পাহাড়ে ঢুকে যাচ্ছে সে। পথে জয়তুনপাড়ার গঙ্গারাম আর নিমাই ডাকলে বলে দেবতার কাছে যাচ্ছে। সাঁঝের বাতি নিভে আকাশে তারা ফুটে উঠছে একটি-দুটি। অন্ধকারে চোখ সয়ে যেতে যেতে হাজার হাজার তারা জ্বলে উঠছে। জঙ্গলে জোনাকিরা জ্বলে উঠছে। আট মাসের লালমণি ত্রিপুরা কেঁদে ওঠে। পূর্ণের বুকের মধ্যে হাহাকার করে ওঠে। আকাশটা মেঘে ঢেকে যেতে থাকে। অন্ধকারে অশরীরির চিৎকার ভেসে আসে। পূর্ণ শক্তি সঞ্চয় করে। লালমণি চিৎকার করে কাঁদছে। লালমণি ত্রিপুরাকে উল্টো করে শুইয়ে গলার পেছনে একটা বাঁশ দিয়ে চেপে ধরে পূর্ণ। আস্তে-আস্তে কান্নার আওয়াজ, লালমণির শরীরের কাঁপন থেমে আসে। লালমণির নিথর দেহ জঙ্গলের পাতা দিয়ে ঢেকে দিয়ে পূর্ণ পালিয়ে যায় এলাকা থেকে।
সেদিন সারা এলাকা খুঁজে লালমণিকে না পেয়ে এবং পূর্ণের হঠাৎ গায়েব হয়ে যাওয়া দেখে গোপী ত্রিপুরার মনে সন্দেহ হয়। ঘটনার দুদিন পর পূর্ণ বাড়ি ফিরে আসে। সবাইকে বলে— সে বাঁশের খোঁজে পাহাড়ের উপরে গিয়েছিল। থানা থেকে পুলিশ তদন্তে আসে। জয়তুনপাড়ার গঙ্গারাম আর নিমাই ত্রিপুরা পূর্ণের সঙ্গে তাদের শেষ দেখার কথা খুলে বলে। সন্দেহ ঘনীভ‚ত হতে থাকে। পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা একেক সময় একেক কথা বলতে থাকে। প্রচণ্ড জেরার মুখে সে সব স্বীকার করে। জঙ্গলের গভীর থেকে পাতায় ঢাকা মৃত লালমণির অর্ধগলিত লাশ বের করে দেয়।
পূর্ণচন্দ্র ত্রিপুরা বোনপোকে বলি দিয়ে জেলখানায় বসে অপেক্ষা করে দেবতার পরবর্তী নির্দেশের।