মাত্র বিয়ে হয়েছে বন্যার। বিয়ের দুই দিন পরই বরের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি ঘুরে হলে চলে এসেছে। অনার্স ফাইনালের তেইশ দিন আগে বিয়ে করলে হানিমুন ফেলে বই নিয়ে বসা ছাড়া আর উপায় কী! ওর হবু শ্বশুর অসুস্থ হয়ে পড়লেন, আর তার মনে হলো, ছেলের বউ না দেখেই মরে যাবেন। ওদের প্রেমটা তখনো ভালো করে হয়ইনি। তারপর আমাদের পরীক্ষা সামনে। বাপের বড় ছেলের সঙ্গে প্রেমের খেসারত এভাবেই দিতে হবে ভাবেনি ও। আমারাও ভাবিনি। প্রেমিকের কাঁদো কাঁদো মুখ দেখে গাছেদের বৈজ্ঞানিক নাম ভুলে যেতে লাগলো ও। আর আমরা ওর বন্ধুরা হবু উদ্ভিদবিজ্ঞানী একেকজন, গাছ বুঝি, মানুষ ভালো বুঝি না।
বিকেলে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস থাকে। ক্লাস শেষ করে হুড়মুড়িয়ে হলে ফিরি। কোনোরকম খেয়ে একটু গড়িয়ে আবার ছুটি ডিপার্টমেন্টে। সেদিন দুপুরে রুমে ফিরতেই বন্যা বললো, কী হবেরে এখন?
বন্যা আমাদের ফার্স্ট গার্ল। খালি ফার্স্ট নয়, প্রায় ফুল মার্কস পাওয়া ফার্স্ট। অনার্সেও ওই ফার্স্ট হবে, জানা কথাই। কিন্তু আচার-আচরণ গাধার মতো। সে কারণেই ও আমাদের বন্ধু। নাহলে ফার্স্ট গার্ল-বয়দের বন্ধু-বান্ধব তেমন থাকে না।
আমরা পইপই করে মানা করছিলাম—রতন ভাইয়ের সঙ্গে প্রেম করিস না। এখন বন্ধুর দুর্দিনে সে কথা মনে করিয়ে বদলা তো নেওয়া যায় না। তার সুচিত্রা সেনের মতো ব্যাকুল চোখ উপেক্ষাও করতে পারি না। বুদ্ধি দিলাম, রতন ভাইকে বল, তোদের বাড়িতে কাউকে পাঠাতে, বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
বন্যা লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে বললো, বাড়িতে এখনো আমার প্রেমের খবরই জানে না, ধুম করে বিয়ের কথা বলা যায়?
ওর এসব ন্যাকামি কানে তুললাম না। প্রেম যখন করেছ, বিয়ে তো করতেই হবে বাপু। ওকে বাদ দিয়ে আমরা রতন ভাইয়ের সঙ্গেই বৈঠকে বসলাম। ঠিক হলো, রতন ভাইয়ের ফুফাতো ভাইকে পাঠানো হবে প্রস্তাব নিয়ে। পাঠানোর পর বন্যার চাচারা প্রায় ঘাড় ধরে বের করে দিলেন সেই ফুফাত ভাইকে!
চাচাদের ধারণা, তাদের ভাতিজি মিনা কার্টুনের মিনা। বিদূষী গার্গী। লেখাপড়া ছাড়া মাথায় কিছুই নেই, বিয়ে-শাদি কখনো করবে না। বন্যাকে ক্লাসের নোট নেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে আমরা চারজন চলে গেলাম সিলেট, ওদের বাড়িতে। চাচাদের হৃদয় ভেঙে দিয়ে আমাদের বলতে হলো, রতনকে বিয়ে করবে বন্যা এবং সাত দিনের মধ্যেই। সময় বেঁধে দেওয়ায় চাচিদের মনে গভীর সন্দেহ উপস্থিত হলো, প্রেগনেন্ট হয়ে পড়ে নাই তো! আমরাও আর চাচিদের সেই ভুল ভাঙালাম না—এই ভয়ে যদি বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়, ভালোই হয়।
বন্যার বাবা-মা নেই। না মানে বেঁচে আছে, কিন্তু তারা এখন অন্য কারও স্বামী-স্ত্রী ও বাবা-মা। তারা বিদেশে থাকে। বিয়ের কথা শুনে টাকা পাঠিয়ে দিলো। টাকা নয় পাউন্ড। সে পাউন্ড সিলেট পৌঁছে একবস্তা টাকা হয়ে গেলো। তাদের বাচ্চাদের পরীক্ষা তাই আসতে পারবে না।
সিলেটের লোক পড়তে ইংল্যান্ড যায় কখনো শুনিনি। কিন্তু বন্যার বাবা গিয়েছিল। এই গল্পে বন্যার বাবাকে আমরা তিনি-টিনি বলে সম্মান করবো না। করেছিলেন-গিয়েছিলেনও বলব না। আপনারা আমাদের বেয়াদব ভাবলে ভাবুন। সম্মান করব না এই কারণে নয় যে, সে বন্যাকে ফেলে দিয়েছে, কারণটা বয়সের। আমাদের কাছে তার বয়স বাড়েনি। বন্যার কাছে ওর বাবার একটাই ছবি আছে। সেটা তার উনিশ বছর বয়সের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে তোলা হাস্যোজ্জ্বল এক যুবকের ছবি।
আমরা দুই দিনের জন্য সিলেট চলে গেলাম, চাচারা রাজি হওয়া মাত্র রতন ভাইকে জানালাম। সেদিন রাতেই চিটাগং থেকে রওনা দিলো রতন ভাইয়ের বাবা-মাসহ পনের জনের দল। রতন ভাইয়ের বাবাকে দেখে মোটেই যেকোনো সময় মরে যাবেন মনে হলো না। পাকা হয়ে গেলো বিয়ে। বন্যা তো নেই, আংটি কাকে পরাবে? সবাইকে বাড়ি রওনা করিয়ে রতন ভাই আর আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে এলাম। সবাই মিলে হইহই করে ক্যাম্পাসেই তাদের আংটি বদল করালাম।
আসার সময় বন্যার চাচারা আমাদের টাকার বস্তা দিয়ে দিলো। আমরা ঢাকায় দৌড়ে দৌড়ে ওর বিয়ের শপিং করলাম। ডিপার্টমেন্টের স্যার-ম্যাডামরা অনার্স ফাইনালের আগে আগে ফার্স্ট গার্লের বিয়ের খবরে খুব অখুশি হলেন। আমরা বন্যার বন্ধুরা ওর হয়ে খুব দালালি করলাম, মাত্র তিনদিনের ব্যাপার। যত যা-ই ঘটুক, ওর রেজাল্টের ওপরে তার আঁচড় বা আছর কোনোটাই পড়বে না।
বন্যার বাবা-মা ছাড়া বড় হওয়ার ব্যাপারটা খোলাসা হওয়া দরকার না? এইবেলা বলে ফেলি, পরে বিয়ের উত্তেজনায় আর বলা হবে না।
বন্যার বাবা গিয়েছিল পিএইচডি করতে লন্ডনে। সেখানেই বন্যার মায়ের সঙ্গে প্রেম বিয়ে। লন্ডনে তো সিলেটির অভাব নেই। ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনের ওয়েটারের সঙ্গে প্রেম হলো, বিয়েও। চার বছরের পিএইচডি শেষ হতে হতে ক্যান্টিন গার্ল নিজের কফিশপ খুললো, এক মেয়ের জন্ম দিলো এবং বিয়ে ভেঙে গেলো। বন্যার যখন তিন, তখন তাদের আবার প্রেম হলো এবং দুইটা আলাদা বিয়ে ঘটে গেলো। চারজনের জন্যেই বন্যা হয়ে গেলো উপদ্রব। বন্যার দাদি তখন বেঁচে ছিলেন। তিনি বড় ছেলেকে পাঠালেন নাতনিকে নিয়ে আসতে। ক্লাস ফাইভে উঠে দাদিকেও হারালো সে। তারপর থেকে সে বই নিয়ে পড়লো। স্কুলে যায় আসে আর সারাদিন পড়ে।
এসব গল্প আমরা বন্যার কাছে শুনিনি। সিলেটে ওর পাড়ার আরেকটা মেয়ে জাহাঙ্গীরনগরে পড়ে, আমাদের ব্যাচেই, ওরা স্কুলে একসঙ্গে পড়তো। সে-ই বলেছে। আমরা যে বন্যাকে এত ভালোবাসি, তার পেছনে এসব গল্প কাজ করেছে কি না, জানি না।
বিয়ের বাজার, বন্যা, ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে ইয়ং স্যার প্রিন্স এবং বন্ধু-বান্ধবের বিশাল দল নিয়ে আমরা সিলেট পৌঁছলাম গায়ে হলুদের দিন ভোর বেলা। ধুমধাম করে স্টেজ সাজালাম, কনে সাজালাম, খুব হলুদ মাখামাখি হলো।
বিয়েরদিন সকাল বেলা বন্যার বাবা-মা এসে হাজির! তাদের দেখে এত মায়া লাগলো আমাদের! আহারে হাজার হোক প্রথম সন্তান! বন্যা খুশি হলো কি না, বোঝা গেলো না।
তারা দুই জন বন্যার কাছে বেশি গেলেন না, তবে আমাদের খুব আদর করলেন। এইবার তো আর গেলো-করলো বলা যায় না। তারা আর আমাদের চেয়ে বয়সে ছোট সাদাকালো ছবি রইলেন না যে!
পরদিন বরযাত্রী বিদায় করে আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে এলাম। ছুটিছাটায়ও সে বাড়ি যায় না। বড় ছুটিগুলোয় ওকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য পালা করে বাড়ি যাই আমরা। মানে কেউ না কেউ ওর সঙ্গে হলে থাকি। বন্যাকে ছাড়া আমাদের মন কেমন করতে লাগলো।
পরদিন বিকেলে ক্লাস থেকে রুমে ফিরে দেখি চলে এসেছে বন্যা। দেখে হইহই করে উঠলাম আমরা! এ কী! আজই চলে এলি! এরপর ভাবলাম, পরীক্ষা বলে চলে এসেছে, ফার্স্ট গার্ল বলে কথা! আমরা ওর ফুলশয্যার কাহিনী শুনবো বলে আয়োজন করে বসলাম।
কিছুদিন আগে আমাদের হলের আরেক বন্ধু শেফুর বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর হলে এসে ও ছটফট করতো। বলত, দ্যাখ তো সেই একই তো পোলা, আগে তো কত কত দিন দেখা না করে থাকছি, এহন ক্যান এমন লাগে? আমরা ওর গায়ে পড়ে চাপ দিয়ে জিজ্ঞাসা করতাম, কেমন লাগে? ও বলতো চুমু না খাইতে পারলে গলা শুকাইয়া যায়। পরে ওর বর ক্যাম্পাসের কাছাকাছি বাসা নিলো। রাতে আসতো মোটর সাইকেল চালিয়ে ওকে নিতে, ও দৌড়ে দৌড়ে চলে যেতো, আমরা পেছন থেকে চিল্লাই, ওই প্রোটেকশন লইছসনি? পাস করার আগে পেট বাঁধাইছ না! টিউটোরিয়ালের আগের দিন রাতে হলে থাকে শেফু, আমার গোল হয়ে ওরে ধরি, বলি ক্যামনে কী করিস ক। ও বলে, ওই তোরা আমার মশারির মধ্যে ঢুইকা পড়বি! পরে অবশ্য বলে অত বড় ভারী জামাইকে হাত-পা ব্যালান্স করে ক্যামনে সামলায়। শেফুর গল্প শুনে সেই রাতেই আমাদের মধ্যে যারা প্রেম করে তারা বয়ফ্রেন্ডকে ফোন করে, যারা করে না, তারা ভালো করে মুখে মাথায় পানি দিয়ে পড়তে বসে।
বন্যাকেও ঘিরে ধরি আমরা। রতন ভাই অবশ্য ছোটখাটো পাতলা লোক। আমাদের ক্যাম্পাসের না। মাস তিনেক আগে আমরা গেছিলাম আমাদের এক বন্ধুর বড় বোনের বিয়েতে। রাতের ট্রেনে চট্টগ্রাম যাচ্ছি। আট সিটের এক বার্থের সাতটা টিকেট পাঠিয়েছিল আপা। আমরা পনের জন সেই কামরায় উঠেছিলাম। কমলাপুর থেকে ট্রেন ছাড়ার একঘণ্টা পরে দরজায় ঠকঠক। ধুম আড্ডা চলছিল আমাদের। খুলে দেখি, একটি ছেলে দাঁড়িয়ে, টিকিট দেখিয়ে বললো, আমার সিট কই? আমরা টিকিট হাতে নিয়ে উল্টে-পাল্টে দেখলাম। হ্যাঁ, আমাদের সাতটা আর তার একটা। আমরা চিৎকার করে বললাম, এতক্ষণ কোথায় ছিলেন? ঢুকে গেলেন রতন ভাই আমাদের কামরায়। আমরা চেপে চুপে তাকে বসার জায়গা দিলাম। তারপর তাকে ভুলে আমাদের আড্ডা ফের শুরু হলো। একসময় দেখা গেলো, আমাদের শয়তানি দেখে হো হো করে হাসছেন তিনি। বন্যা বললো, এই আপনি আমাদের গল্প শুনে হাসেন কেন? তিনি গম্ভীর হয়ে বলেন, কানের তো আর চোখের মতো পাতা নাই যে বন্ধ করে ফেলব! বন্যা বলে, ঠোঁটে তো তালা দেওয়া যায়!
তারপর বিয়ে বাড়িতে বরযাত্রী এলে দেখা গেলো রতন ভাই বরের ভাগ্নে! ফিরে এসে ফোনাফোনি বন্যার সঙ্গে রতন ভাইয়ের। মাসখানেক বাদে বন্যা আমাদের বললো, আমার তো রতন ভাইয়ের সাথে প্রেম! আমরা হায় হায় করে উঠলাম! আমাদের ফাস্ট গার্ল প্রেমে পড়েছে বিএ পাস গার্মেন্টসের কাটিং মাস্টারের! আমরা ভিলেনের মতো বাধা দিলাম, এ কিছুতেই হতে পারে না! বন্যা রতন ভাইকে ক্যাম্পাসে ডাকলো, আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলো ফের! রতন ভাই হাসতে হাসতে বললেন, হৃদয় চিরে দেখাবো বন্যাকে কত ভালোবাসি? বুঝলাম, শয়তান পোলা এসব বলেই পটিয়েছে গাধা বন্যাকে। কী আর করা, মেনে নিলাম আমরা।
আমরা বন্যার ওপর চেপে পড়ে বললাম, বল বাসর ঘরে কী হইলো? আমাদের ঠেলে সরিয়ে পানি খেলো। মুখে মোটেই হাসি নেই! বল? লজ্জার কী আছে? আমরাই তো, শেফু কত বলছে না? বন্যা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, সর্বনাশ হইছে! এবার আমরা ভালো করে বন্যার দিকে তাকাই, হ্যা সামথিং রং! আমরা দম বন্ধ করে অপেক্ষা করি বন্যা কী বলবে, তা শোনার জন্য! বন্যা ওর রুমমেট শিলাকে বললো, তুই কয়টা দিন সামিরার রুমে গিয়ে থাক, আমি একা থাকতে চাই! তোরা এখন যা, বলে আমাদের সবাইকে রুম থেকে বের করে দি্যে দরজা বন্ধ করে দিলো!
আমাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো! সারারাত নিজেদের মধ্যে বৈঠক করলাম, কী হতে পারে! পরদিন মলিন মুখে ক্লাসে গেলাম, বন্যাও গেল। কারও সঙ্ কথা বললো না, চুপচাপ ক্লাস করলো। দুপুরের দিকে রতন ভাইকে ফোন দিলাম, বেজে গেলো ধরলেন না! আবার ফোন দিলাম, বন্ধ! দুই দিন দমবন্ধ করে থেকে আমরা ঠিক করলাম শেফুকে পাঠাব বন্যার রুমে, হাতে-পায়ে ধরে হলেও জেনে আসতে, কী হয়েছে! বন্যা ক্লাস থেকে এসে রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেয়। শেফু গিয়ে অনেক সোনা-টোনা বলে দরজা খোলালো। বললো, তোর পায়ে ধরি কী হইছে বল!
শেফু ফিরে এসে যা বলল, আমরা সেটা শোনার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। বলতে গিয়ে শেফুর মতো সাহসী মেয়েও অনেকক্ষণ সময় নিলো। বন্যা বলেছে, বাসর ঘরে গিয়ে রতনকে জড়িয়ে ধরার পর ওর মনে হয়েছে ও আসলে লেসবিয়ান! আমরা একসঙ্গে বললাম, মানে কী? ওরা যে এতদিন প্রেম করলো চুমু-টুমু খায় নাই? তখন নাকি বন্যার মনে হয়েছে, বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে!
হায়রে আমরা এখন কী করি! প্রীতিলতা হলে আমাদের সিনিয়র এক লেসবিয়ান কাপল আছে। গেলাম তাদের কাছে! কী করবো, বুদ্ধি চাইলাম। কাপলের প্রমিন্যান্ট আপু বললেন, আচ্ছা দেখতেছি, চিন্তা কইরো না তোমরা। আপা পরদিন বন্যার রুমে এসে বললেন, আজ আমি তোমার রুমে থাকব।
পরের দিন সকালে রূম্পা আপা আমাদের বললেন, বন্যা লেসবিয়ান নয়, সমস্যা অন্য কোথাও!
আমাদের ঘাড়ের ওপর ফাইনাল পরীক্ষা, তবু দুই জন গেলো রতন ভাইয়ের অফিসে। অফিস শেষে বেরুতেই রতন ভাইকে ধরলো ওরা। কী হইছে রতন ভাই?
রতন ভাই ওদের কী বলেছে, সেটা বলতেও ওরা অনেক সময় নিলো।
এসব করতে করতে লেখাপড়া কিছুই হয় নাই। পুরা ক্লাস ধরে ফেল করবো, এমন অবস্থা। প্রিন্স স্যারকে গিয়ে ধরলাম, একটা সপ্তাহ পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে চেয়ারম্যান স্যারকে রাজি করাতে। একটা সপ্তাহ হাতে পেয়ে জান দিয়ে পড়লাম আমরা। পরীক্ষা শেষে সবাই দুই চারদিন বাড়ি ঘুরে এলো। বন্যা গেলো না। বন্যাকে নিয়ে দল ধরে কক্সবাজার ঘুরতে চলে গেলাম। সমুদ্রের পারে বন্যা আমাদের বললো, তোরা সবাই প্রতিজ্ঞা কর, বিয়ের আগে পার্টনারকে একবার অন্তত ন্যাংটা করে দেখবি। আমরা সমুদ্রকে সাক্ষী রেখে প্রতিজ্ঞা করলাম!