কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে মোতালেব মিয়া-কয়ডা ছাগল ছাড়নের দরকার আছিল না বাইছাব?
ওমা, ছাগল কেন?
-তদারকির জন্য। ব্যাঙগুলারে দেইখাশুইনা রাখনের জন্যও তো কাউরে না কাউরে দরকার। কথাডা কি খারাপ কইলাম? পাহাড়া দেওনেরও তো দরকার আছে। কী কন?
মোতালেব মিয়ার কথায় যুক্তি আছে। অবজ্ঞা করতে পারে না হাসিনুর রহমান। মোতালেব মিয়া গলির দোকানে চা বেঁচে আর সারা দুনিয়ার জ্ঞান বিলি করে বেড়ায়। রাজনীতি নিয়ে তার কথাবার্তা শুনলে মনে হয় ভুল করে চা দোকানদার হয়েছে। আসলে হওয়ার কথা ছিল মন্ত্রী-মিনিস্টার। অবশ্য মন্ত্রীদের মতো না তার গতরডা কালা, না মনডা। ফলে আফ্রিকায় গিয়ে সভ্যতা শেখানোর বেহায়াবাজি তারে দিয়ে হতো না। হতো না ঘাসকাটা দেখতে সদলবলে উগান্ডা যাওয়ার আগে বেলাজ হেসে সেলফি খেচা। খিচুরি রান্না শিখতে জার্মানিতে আশি সদস্যের ট্যুর আয়োজনের ‘বাজি রে বাজি’ সে না। বেহায়া না হলে বিবেক বিক্রির ব্যবসা চলে কি করে! চামচিকা চামবাজ বা আমলাবাজি সবাইকে দিয়ে হয় না। সুতরাং চা বেচাই পারফেক্ট। গলিতে গলা পানিতে, মশা-মাছিতে গলাগলি করে একটা প্রতিভা শেষ!
মোতালেব মিয়ার কথা শুনবে বলে এই দোকানে নিয়ম করে আসে হাসিনুর। চা খাওয়াটা তার উপলক্ষ মাত্র। আসল কথা হচ্ছে মোতালেব মিয়ার চোখে দেশের হালহাকিকত জানা। আজ যেমন আসতেই কৌতূহলী চোখে প্রশ্ন ছুড়ে দেয় মোতালেব।
-খবরডা কি হুনছেন বাইছাব?
কী!
-ডাকা শহরে হাজারে হাজারে ব্যাঙ ছাড়া অইছে। এ শহর এখন ব্যাঙেরও শহর।
এই শহর, ব্যাঙের শহর, প্রাণের শহর আহারে। মাশাল্লাহ।
ব্যাঙ কেন?
-মশা মারতে বাইছাব। মশা মারতে ব্যাঙ দাগান। এইবার মশারা বুজব ঠেলা কারে কয়।
হাসিনুর রহমান টিভি দেখা, পত্রিকা পড়া কোনোটাই করে না। রাজনীতি ফাজনীতি এসব নিয়ে বাৎচিতও না। তবু মাঝেমধ্যে শুনতে ইচ্ছে হয়। মানুষ রাজনৈতিক জীব বলে কথা। মোতালেব মিয়া বলে যায়, হাসিনুর রহমান শুনে যায়। হাসিনার কথা, খালেদার কথা। বর্ষাকালে উন্নয়নের জোয়ারে ঢাকা শহর ডুবে গেলে তার কথা আরও বেড়ে যায়। কথা যেন মিরপুর থেকে কদমতলী ভেসে ভেসে বেড়ায়।
গলা খাকারি দেয় মোতালেব মিয়া। মুখে হাসি হাসি ভাব-বাইছাব তাইলে ব্যাঙের বিষয়ডা লাইক করছেন।
হু। করবো না কেন। সিটি করপোরেশন অনেক ভাবনা-চিন্তা করেই মশা নিধনে ব্যাঙ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখেন কী ফল হয়। মশা-মাছির জ্বালায় তো জীবন জারবার। এখন ব্যাঙ ছেড়ে যদি মশামুক্ত হওয়া যায় মন্দ কী? এক কাজে দুই কাজ হয়। ব্যাঙ তো আর মহাসড়কে ছাড়বে না। ব্যাঙের জন্য পানি দরকার। পানির জন্য পুকুর, খাল, নদী-নালা এসব দরকার। এই উছিলায় কিছু খাল উদ্ধার হলে আমাদের আর যখন তখন বৃষ্টির পানিতে সাঁতার কাটতে হবে না। আমার তো ব্যাপারটা ভালোই মনে হচ্ছে।
বাইছাব জানার খুব ইচ্ছা। গায়ে প্রজাপতি বসলে নাকি বিয়ে অয়, ফড়িং বইলে অয় প্রেম। তাহলে যাদের গায়ে মশা বসে তাদের কী অয়?
মোতালেব মিয়া আবার গলা খাকারি দেয়।—বাইছাব আমারও পছন্দ অইছে ব্যাপারডা। মশা মারতে ব্যাঙের চাষবাষ। ব্যাঙরা ভিআইপি মর্যাদায় অনেকটা গভার্নমেন্ট চাকুরের জীবনযাপন করবে। সরকার তাদের থাকা-খাওয়া সব দিবো। আর তারা মনের সুখে মশা মারব। আজিব!
তয় সরকারি দলের নেতাদের মশা দমনে লাগাই দিলেও মন্দ অইত না বাইছাব।
হাসিনুর কিছুটা অবাক হয়। কী বলেন মোতালেব মিয়া। তারা কি ব্যাঙের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মশা মারবে নাকি!
-ব্যাঙ ব্যাঙের মতো থাকুক বাইছাব। তেনাদের পিডাইয়া মশা তাড়ানোর দায়িত্বডা দিলে কিন্তু জমতো খেলা। বেহুদাই মানুষরে পিডায়। নিজেরা নিজেরা পিডাপিডি করে। এক গ্রুপের আরেক গ্রুপরে ফাডাফাডি চলতেই থাহে। এইবার মশারে পিডা। দেখতাম মশার কয়দিনে বছর যায়। কি বলেন বাইছাব?
কিছু বলে কী লাভ মোতালেব মিয়া।
মোতালেব মিয়া মাথা চুলকায়।—বাইছাব, মিছা কওনের জন্য কোনো পুরস্কার নাই?
এই পুরস্কার দিয়া আপনি কী করবেন?
—না, থাকলে আমাদের জাতীয় সংসদ প্রতিবছরই চ্যাম্পিয়ন অইত। সারা দুনিয়ায় দেশের গৌরব বাড়ত। ‘সংসদে নাটক’ নিয়ে দুনিয়ায় কোনো কম্পিটিশন অইলেও কিন্তু আমরা ফার্স্ট অইতাম। কী এক আজিব রঙ্গশালা। নাচা গানায় ভরপুর। বাবা তোর দরবারে সব পাগলের খেলা আর কি বাইছাব।
বাবা হরেক রকম পাগল দিয়া মিলাইছে মেলা
বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের খেলা
মোতালেব মিয়া লাজুক হাসে। তার মুখ পানে লাল। হেসে হেসে চারপাশে দৃষ্টি দেয়। হয়তো তার চোখ অন্য কোনো আগ্রহী শ্রোতা খুঁজে। এই হলো মনুষ্য স্বভাব। আজ মানুষজনের আনাগোনা কম। সন্ধ্যার পর থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি।
হাসিনুর রহমান কথা বলে না। তার দৃষ্টি চায়ের কাপে। একটা পিঁপড়া ভাসছে। মানুষের কত দম্ভ, কত অহং। অথচ একটা পিঁপড়ার সঙ্গে লড়াই করে জিততে পারে না। সামান্য মশার কাছে পুরো শহর কেমন বন্দি। রাতে শুতে গেলে মশার গর্জনে মনে হয়, এই বুঝি পাগলা ঝড় উড়িয়ে নিয়ে উপড়ানো গাছের ডালের মতো কোথাও ফেলে দেবে। অবুঝ মানুষ বড় অসহায়। তাদের রাতে আ-মশায়, তা-মশায় কামড়ায়। আর দিনের বেলা মশার ভাই টসারা অত্যাচার চালায়। সৎ ভাই ঘসারা ঘুস ছাড়া ফাইল ছাড়ে না। যানজটে জীবন যেন চলে না। নিজেরে গরু গরু লাগে। রাজনীতি কেমনে কেমনে এমন অসভ্য আর অপদার্থ মানুষের দখলে চলে গেল ভেবে পায় না। একটা দেশের বুদ্ধিজীবীদের সিংহভাগ কী করে এমন উদোম পাঠা হয়!
মোতালেব মিয়ার ডাকে সম্বিত ফিরে পায় হাসিনুর।
—বাইছাব
হু, বলেন।
—ব্যাঙ ছাড়ার বুদ্ধিটা আমারও বালই লাগছে। তয় কিঞ্চিত শংকা আছে আর কি।
কী?
—ধরেন সরকারি কর্মচারীদের তো বুদ্ধির শেষ নাই। দেহা গেলো, পরে ব্যাঙ মারতে ইঁদুর ছাড়ব। ইঁদুর ধরার জন্য হাপ। পরে হাপ সামাল দিতে লাখ টাকায় চাইনিজ এক্সপার্ট ভাড়া কইরা আনব। ইন্ডিয়া ভেটো দিলে তাদের খুশি করতে আস্ত সড়কে মস্ত খাল কাইটা দিব। যারে যেমনে দিয়া খুশি রাখন যায়। এইভাবে নাটক চলতেই থাকব।
চলুক। আপনার কী সমস্যা!
—না আমার কিছু না। তয় মাঝখান দিয়া দেশের পয়সার গুয়ামারা আর কি। কথা শেষের আগেই জিভে দাঁত কাটে মোতালেব।
হাসিনুর কিছু বলে না।
মোতালেব মিয়া আবার বলে—বাইছাব।
জি।
—সারাদিন চিন্তা-ভাবনা করলাম। না জানি মশার অভিশাপে আবার আমাদের ডংস।
—কী বলেন এসব।
—না বাইছাব। ব্যাঙতো ছাড়লো ঠিক আছে। কিন্তু ঢাকায় জলাশয় কই! আছে শুধু মলাশয়। মলাশয়ে আমরা মানুষরা আছি ঠিক আছে, কিন্তু ব্যাঙ কি পারবে এই নোংরা পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে! ব্যাঙ জাতি কি বাঙালি জাতির মতো সর্বসহা?
মোতালেব মিয়া বকে যায়—তাদের কী আয়-যায় কন? তারা চুরি করে, সে প্রায়শ্চিত্ত আমরা গরিবরা করি। তারা এক টুকায় হাজার হাজার কোটি টেকা লাপাত্তা কইরা দিয়া বলে এইডা কোনো টেকাই না। আর আমরা পাঁচ টেকার জন্নি পথে পথে ঘুইরা মরি। ঠিক কি না, কন বাইছাব। দিনরাত চা বেইচ্চা কেশে চাইয়া দেহি ৫০টা টেহাও নাই। কিস্তির জ্বালায় জীবনডা শেষ।
এত ঠিক-বেঠিক দিয়ে হাসিনুরের কাজ নেই। সে উঠে দাঁড়ায়।
মোতালেব মিয়া হাসিনুরকে থামায়।
—বাইছাব আমি ভাবতেছি ব্যাঙের জ্বালায় মশা না আবার আলাদা বিভাগ চাইয়া বসে।
মানে কী?
—দেখেন না বিভাগ নিয়ে কি কাণ্ডকীর্তিই না হইতেছে এই পুচকা একটা দেশে। কত নাটক। আর নেতাদের যা চরিত্র। আজ যে পশ্চিমে কাল সে পুবে। আজ যে ম্যাডামের কাল কিভাবে আম্মাজানের। মশার জন্য রাজ্য-মশা মশার জন্য। মানুষ মানুষের জন্য বলে আমরা মানুষরা যেভাবে একজন আরেকজনের পাছায় লাইগা থাহি। মশারাও এমন করে নাকি? মশাদের চরিত্রও কি মানুষের মতো সুবিধাবাদী বাইছাব?
জানি না। হাসিনুর দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
—কিন্তু বাইছাব চাইয়া বসলে তো মুশকিল। তখন দেখা গেলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ব পুরুষের দেশের মানুষদের সঙ্গে তারা একটা সংঘাতে চলে গেলো। মশায়-মানুষে সংঘাত। দুইপক্ষই তেইড়া আইসা কইলো আই কিচ্চি। তারপর হরতাল, জ্বালাওপোড়াও। দুনিয়ার জামেলা। আর এইদিক দিয়া আমার ব্যবসা লাটে। রাজনীতিবিদরা রাজনীতির প্রয়োজনে হরতাল করে। আর আমরা গরিব বইলা কতদিন না খাইয়া থাহি কেউ কি সেই খবর রাহে!
বাইছাব হুনেন।
—জি। বলেন।
—গায়ে প্রজাপতি বসলে নাকি বিয়ে অয় কথাডা কি সত্যি!
—জানি না।
—আজ-কালকার পুলাপান ফেসবুকে কিসব লেখে। বাইছাব জানার খুব ইচ্ছা। গায়ে প্রজাপতি বসলে নাকি বিয়ে অয়, ফড়িং বইলে অয় প্রেম। তাহলে যাদের গায়ে মশা বসে তাদের কী অয়?
মোতালেব মিয়া আবার কী যেন বলতে চায়।
হাজার কোটি টাকার ব্রিজ বানাইয়া উদ্বোধনের আগেই বৃষ্টির পানিতে ভাসায়। সারা দেশে যা পায় তাই খাইয়া সাবার কইরা ফালায়। মশা টসা খাওন যায় কি না এইডা দেখতে কোথাও যাইতে পারে না!
হাসিনুর তাকে থামায়। তার বকবকানি আর সহ্য হচ্ছে না। হাসিনুর কথা শুনতে আসে সত্য তবে বড় সত্য হলো আজকাল মোতালেব মিয়া বড্ড বেশি বকে। তারে মনে হয় কথা রোগে ধরেছে। শুনেন মোতালেব মিয়া। আপনি চা বেচেন আমি গিয়ে ঘুমাই। সকালে কামে যাই, রাতে কাম থেকে ফিরে আবার সকালের অপেক্ষায় থাকি। এটাই আমাকে মানায়। এর বেশি কোন কথায় সার্থকতা নাই।
মোতালেব মিয়া হাত কচলায়।—বাইছাব হুনেন।
দ্রুত বলেন—আমি বহুৎ মুসিবতে আছি বইলাই আপনার সাথে এতো কথা কইতেছি। মশার কামড় একদম সইতে পারি না।
কয়েল জ্বালান। মশারি টানান। এসবে কাজ না হলে মশার ওষুধ ছিটান।
—এসবে কিছু অয় না ছাব। আমার শরীরে নাকি মিষ্ট জাতীয় কী এক জিনিস আছে। মশা-পিঁপড়া আমারে একা পাইলেই খাবলা মাইরা ধরে। যেন অহনই টাইনা নিয়া কোনো এক গর্তে ডুকাইব।
বলেন কি! ডাক্তার দেখান তাড়াতাড়ি।
—ডাক্তার, কবিরাজ সব দেহানো শেষ ছাব। কিন্তু কোনো কাম অয় না। তাই মশার খবর দেখলেই পড়ি।
—ব্যাঙের বিষয়টা আমার বুঝে আসে নাই। শহরে ব্যাঙ ছাইড়া দিলে কেমনে মশার উৎপাত কমে যাবে আমি বুঝি না। তিনাদের বড় মাতা। তিনারা বুজলেই অয়। আমি গরিব মানুষ। বুজে আসার দরকারও নাই। তারা দরকার অইলে মশা মারতে রাস্তায় অ্যাটম বোমা ফাটাক। কিন্তু আমি মশা থেকে রেহাই চাই বাইছাব।
—একটা কথা বিশ্বাস করবেন বাইছাব!
—কী?
—মশার জ্বালায় গত তিন মাস ধইরা রাইতে টাট্টিঘরে যাই না। গেলেই ওরা আমারে খাবলা দিয়া ধরে। যেন চিল্লাইয়া চিল্লাই কয়, শালা তোর এইহানে কি। পাইছি এইবার। শালা বাটপার। ধইরা লাগা তারে। সামনে পেছনে লাগা। এরপর হমানে কামড়ায়।
বলেন কী!
—প্রতিদিন দুপুর বেলা একবার টয়লেটে যাই। তাও বউরে সাথে নিয়া। সে মোমবাতি ধরে দাঁড়াই থাহে। আগুনরে মশারা ভয় পায়। টয়লেটের ভয়ে খাওন দাওন ছাইড়া দিছি।
আপনার ওয়াইফ বেচারী। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে হাসিনুর।
—আমার জন্য তার কষ্টের কোনো শেষ নাই। রাতে তারে ধরে ঘুমাইতে অয়। একা ঘুমাইলেই মশার সাঁড়াশি আক্রমণ। মশারি টশারিতে কোনো কাম অয় না। তার বাপের বাড়ি যাওন বন্ধ। অথচ তাইনের বাপ লুঙ্গা। চলাফেরা করে আরেকজনের ঘাড়ে ভর কইরা। বাপের কাছে যাওন দরকার।
হাসিনুরের দীর্ঘশ্বাস বেড়ে যায়।
তার আর কথা বলতে ইচ্ছে হয় না। শরীরটা যেন শক্ত হয়ে আসে। প্রতিদিন নানা কারণে তার মন খারাপ হয়। অনেক হাসির মধ্যেও এখন মনে হচ্ছে মন খারাপ হয়ে যাবে। মন খারাপ হলে বুকে ব্যথা হয়। একদিন দেখা যাবে এ ব্যথা বুক থেকে হৃদযন্ত্রে। তারপর যন্ত্রবন্ধে মৃত্যু। বুকে ব্যথা হয় বলেই ফেসবুক, টিভি, পত্রিকা কোথাও নেই সে। কলিগদের সঙ্গেও সমাজ নিয়ে, রাজনীতি নিয়ে আলাপ করতে চায় না। তবু তার কানে খবর চলে আসে। মোতালেব মিয়াদের মতো কেউ এসে দিয়ে যায়। কখনো নিজে যেচে গিয়ে নিয়ে আসে। হাসিনুর কাউকে বলতে পারে না এসব খবর শুনে তার বুকে ব্যাথা হয়।
এ কথা সে বলার কে। এটা বলবে মন্ত্রী সাহেবেরা, আর তাদের অন্ধ, বোবা ও কালা সাঙ্গপাঙ্গরা। অথবা যারা ভবিষ্যতে আরেক সরকারের মন্ত্রী হবে তারা। দেশপ্রেম আজকাল রাজনীতির বিষয় হয়ে গেছে। একই সঙ্গে এটা হয়ে গেছে আমজনতার সতীন। দেশপ্রেম হয়ে গেছে চুরি-ডাকাতিকে হালাল করার মহামন্ত্র। এরা কথিত পতাকা প্রেমের আবেগে নিজেদের সব অবৈধ কাজকাম বৈধ করে নিতে চায়। এইসব সস্তা আবেগের পেছনে থাকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের কাহিনি। কেউ তলাইয়াও দেখে না। উল্টো নিজেরা নিজেরা মারামারি করে মরে। আর নেতা পেছনে থেকে তালিয়া বাজায়।
মানুষ আছে এমনই নেশার ঘোরে। এদের আজকাল মানুষ ভাবা দায়। হাসিনুর আর শুনতে চায় না। আজকাল তার সবকিছু অসহ্য লাগে। সবকিছু।
হাসিনুর বাসার পথে হাঁটা ধরে। মোতালেব মিয়া দৌড়ে আসে।
—বাইছাব, বাইছাব।
বলেন।
—ওরা তো কল দিয়ে পানি তোলা শিখনের জন্য দল বাইধা কঙ্গো যায়। ঘাস কাটা শিখতে যায় সুইজারল্যান্ড। হাজার কোটি টাকার ব্রিজ বানাইয়া উদ্বোধনের আগেই বৃষ্টির পানিতে ভাসায়। সারা দেশে যা পায় তাই খাইয়া সাবার কইরা ফালায়। মশা টসা খাওন যায় কি না এইডা দেখতে কোথাও যাইতে পারে না!
এমন যদি একটা খবর বাইরইত মশার মুকডাত দুইন্নার প্রুডিন!