হাসছেন? আমি জোনাকিকে পাখিই বলি। পাখি বলতে ভালো লাগে। ছোট ছোট আলোর পাখি। মিষ্টি আলোর পাখি। ছোট ছোট আলোর টুকরো। ছোট ছোট আগুনের ঠাণ্ডা টুকরো উড়ে বেড়াচ্ছে। আর এ সবের মধ্যে আপনার হাসি—খুবই দারুণ ব্যাপার। কেমন বিলি কেটে চলে যাচ্ছে অন্ধকার নদীর জলে। আরে না, আমি কবি না। কথা শুনে কবি মনে হচ্ছে? হা-হা, হাসালেন। আমারো হাসি সুন্দর? এই প্রথম কেউ আমাকে বলল। ধন্যবাদ আপনাকে। কী আর করব—বেকার—পড়াশোনা শেষ করে ঘুরে বেড়াচ্ছি। আমার এক বন্ধু ছিল, ও কী বলতো জানেন? ও বলত—এতদিন পড়ালেখা করে কী লাভ হলো বল, ২০ বছর ধরে পড়লাম বাপের গাঁট খসিয়ে। তারপরেও চাকরি হয় না ঘুষ দিতে পারি না বলে। ওর জীবন দুর্বিষহ হয়ে গেছিল। বাপটা অক্ষম ছিল প্রায়। সে একটা ছোট চাকরির জন্য কত ঘুরে বেড়িয়েছে, হয়নি। মরে গেছে দুবছর আগে না খেতে পেয়ে, অসুখ বাঁধিয়ে বিনা চিকিৎসায়। ওর একটা চমৎকার হিসাব ছিল, হিসাবটা এমন–দিন তিনশ টাকা হিসেবে ২০ বছর প্রায় ২০-২২ লক্ষ টাকা কামাতাম যদি ইটের ভাটা বা কোনো কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতাম। পড়ালেখার জন্যও ৮-১০ লাখ টাকা খরচ না হয়ে, বেঁচে যেত। এতদিনে প্রায় ৩০ লাখ টাকা জমা হতো। এছাড়া চাকরির পেছনে ঘুরতে গিয়ে যে পোস্টাল অর্ডার করতে হয়েছে, যাতায়াত করতে হয়েছে আর জুতার তলা ক্ষয় হয়েছে তাও কম নয় নেহাত। যদি ‘সম্মান বা পড়াশোনার আলাদা একটা গুরুত্ব আছে’ বলতাম তাকে, ও রেগে যেত ভীষণ—রাখ তোর সম্মান, মানুষ টাকা ছাড়া সম্মান করে না। আমারও এখন তাই মনে হয়। তার হিসাবটাকে ঠিক মনে হয়ে। ওর হিসাবটা দারুণ না? অন্ধকারে অবশ্য দেখতে পাচ্ছি না তবে আমার মনে হয় আপনি মিটিমিটি হাসছেন। চাঁদ উঠতে আর দেরি নেই। তখন আপনার হাসি দেখতে পারব। বাহ্ দারুণ বাতাস দিচ্ছে, সুন্দর। শুধু শুধু হাসবেন না। আমার বন্ধুটির হিসাবটা ভালো না? আমিও কত ঘুরে বেড়াচ্ছি একটা চাকরির জন্য। হচ্ছে না।
একটা কথা আছে—ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। মাথার ঘাম পায়ে ফেলা—এটা তো সহজ, পায়ের ঘাম মাথাতে উঠিয়েও একটু সুখের মুক্ত বাতাস কই পেলাম। অথচ ‘ওদের’ উপায় হচ্ছে অনায়াসে। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়, কথাটা ওপর আমার সন্দেহ আছে। দেখেছি, উপায় থাকলেই উপায় হয়, উপায় থাকলে ইচ্ছে হয়। তখন সে ইচ্ছা দিয়ে আরো উপায় হয়। ‘ওদের’ মানে বুঝলেন না। বলছি, ট্রাফিক জ্যাম দেখেননি কখনো? দেখেছেন, বেশ তবে! বোঝানো সুবিধা হবে। ট্রাফিক জ্যামে কী দেখতে পান? দেখতে পান, যেন একটা বিশাল কারের মিছিল হঠাৎ থেমে গেছে অপর পাশ হতে আরো একটা কারের মিছিলকে পার হতে দেওয়ার জন্য। তখন কি মনে হয় না—এগুলোর দাম আর কত হবে, হলো পাঁচ টাকা বা ছটাকা। কিন্তু দোকানে যান মনে হবে ছুঁলেই হয়তো টাকা চেয়ে বসবে। এইসব যাদের তারাই ‘ওদের’। এই ‘ওদের’ হাতেই সমস্ত দেশ, সমস্ত চাকরি, সমস্ত মানুষের সমস্ত ভবিষ্যৎ বাঁধা। তারা যেটাকে বলে উপায়, তা উপায়। যাকে বলে নিরুপায় তা নিরুপায়। আমাদের আর কী করার আছে, ট্রেনের সমান, ট্রেনের গতির সমান দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া! হাসালেন আমাকে। কেন হাসছি, আবার প্রশ্নও করছেন? এই আপনি বললেন—আমাদের চারপাশে প্রচুর সংখ্যক মই থাকে। ব্যক্তিভেদে মইগুলো বড় এবং ছোট। আপনার চারপাশে যে মইগুলো তার সবই বড়। মানুষের প্রচুর সংখ্যার মইয়ের মধ্যে সবগুলোই মিস চলে যায় মাত্র একটাতে উঠতে পারে মানুষ। একটা বড় মইয়ে আপনিও উঠবেন। কেমন করে যে বলতে পারছেন, আমিও একটা মইয়ে উঠতে পারব, তাও আবার বড় মইয়ে সে আপনিই জানেন। তাই যেন হয় কিন্তু কতদিন আর অপেক্ষা করব, অপেক্ষা আর প্রতীক্ষাতেই জীবন শেষ হয়ে গেল। যাক এসব। ভারী ভারী কথা বলে অযথা ভারী হয়ে যাওয়ার মানে হয় না। দেখুন, কেমন সুন্দর চাঁদ উঠেছে। চাঁদের মুখ থেকে জোছনার মধু ঝরছে। এসব আমার ভালো লাগে খুব। ভালো লাগা বলতে তো এগুলোই। যদিও এগুলো মানুষের জন্য এক ধরনের ফাঁদ, ধরে রাখার ফাঁদ, বাঁচিয়ে রেখে যন্ত্রণা দেবার কায়দা। আবারও ভারী কথা শুরু হয়ে গেল। থাক এসব। দেখুন, পার্কের সমস্ত কিছু কেমন নীরব অথচ কতটা সরব। সরবভাবে নীরব রয়েছে চারদিক। সরবে তাদের নীরবতা আর সৌন্দর্য বিলিয়ে দিচ্ছে।
সবকিছু মাখছে জোছনার যাদু। কেমন নদীর মত মনে হচ্ছে না? জোছনা জলের নদী। আপনার কী গান গাইতে ইচ্ছে করছে? আমার তো খুব ইচ্ছে করছে। আসুন দুজন মিলে গান গায়—চাঁদের হাসি বাঁধ ভেঙেছে …। কই গাইছেন না তো, আমার সঙ্গে গলা মেলান, সুর মেলান, কথা মেলান। কী বললেন, আমি একাই গাইব? থাক তবে গান। কিছু মনে করবেন না, একটা সিগারেট জ্বালাই আমি? ঠিক আছে তাই হবে সেভ করব, ধোঁয়া ওদিকে যাবে না। না, খুব বেশি সিগারেট খাই না দিনে কত আর হবে ১১-১৩ টা মত। এটাই খুব বেশি!? নেপোলিয়ান ৫০-৫৫টা খেতেন প্রতিদিন। আমাদের গ্রামের মন্টু মামাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল—রমজান মাসে রোজার মধ্যে নিশ্চয় আপনার সিগারেট কম খাওয়া হচ্ছে? উত্তর করেছিল—হ্যাঁ কমে গেছে, ২৫টির বেশি হয় না। অথচ তিনি সিগারেট খেতে পেতেন সন্ধ্যার পর থেকে ঘুম এবং শেহেরি খেতে ওঠার পর থেকে ফজরের আজান পর্যন্ত। আমরা হেসেছিলাম খুব। এক্ষেত্রে ১১-১৩ টা সিগারেট খুব কম নয় কি? ও হ্যাঁ, ষোল সতের বছর থেকে খাই। বাহ্! আপনি তো বেশ বুদ্ধিমান। এর মধ্যেই হিসাব করে ফেলেছেন, চার লাখ টাকার সিগারেট খেয়ে ফেলেছি। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, এখন বয়স ৩৩ ক্যালেন্ডার দুছক প্রায়। কী জিজ্ঞেস করলেন? জন্মদিন? ১২ জুন। হ্যাঁ, জন্মদিনের তারিখ সবাইকে বলি, সে দিনের দিনও সবাইকে বলি—আজ আমার জন্মদিন। কেন বলি? কারণ তো নিশ্চয়ই আছে। প্রতিটি জন্মদিন জানিয়ে দেয়—পৃথিবীর এত প্রতিকুল অবস্থাতেও আমরা আর একটা নতুন ক্যালেন্ডারের দিকে এগুলাম। বেঁচে থাকাটা এখন বিরাট ব্যাপার। প্রতিকুলতার প্রতি অনুসাড়া দিয়ে আমার সে বন্ধুতো মরেই গেল। এই যে দেখেন, বাতাস বইতে শুরু করেছে। বুকের কাছের কয়টা বোতাম খুলে দিলাম, প্লিজ, ডোন্ট মাইন্ড! গরম সহ্য করতে পারি না আমি। মাঝে মধ্যে রাতেতো পোশাকই রাখতাম না। এখন পারি না। মেসে একটা রুমে তিন চারজন থাকি, কী করে সম্ভব! বাড়িতে একটা রুমে আমি একাই থাকি। আরে না, পোশাক খুললে স্বাধীন স্বাধীন লাগবে কেন? মানুষ স্বাধীন কখনোই নয়। পেটের ভেতর নাড়ির বাঁধন, বাইরেও সে নাড়ি যুক্ত থাকে। নাড়ি কেটে মুক্ত করা হয় বটে কিন্তু চারপাশের অসংখ্য সমস্যাগর্ভের নাড়ি বেঁধে রাখে মানুষকে। মানুষের স্বাধীন হবার যো নেই। আমাদের ভাগ্য দেশচালকের হাতে বাঁধা, চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে তারা। মৃত্যুর পরেও কী শান্তি আছে? পোড়াবে, নাকি কবরে দেবে, নাকি জলে ভাসাবে তা নিয়ে এক মহাযুদ্ধ।
আরে দেখুন, দেখুন, চাঁদটা মাঝ আকাশে থেকে নিচ দিকে পিট পিট করে তাকাচ্ছে শান্তভাবে, গিরগিটির চোখের মতো চাঁদ। আর দেখুন পুকুরটার দিকে। খুব ছোট ছোট ধীর ঢেউ, যেন আলোর পুকুর। তরল আলোর ঢেউ ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে কালো মাটির দিকে। আসুন কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থাকি।
উহ্ কয়েক মিনিটও যায় নি আর চুপ থাকতে ইচ্ছে করছে না। থাকগে, আসুন কথা বলি। হ্যাঁ, হ্যাঁ বলুন। ও ছাত্রজীবনের কথা? শুনুন তবে—ছাত্রজীবনটা অবহেলায় কাটিয়াছি, রেজাল্ট ভালো করা যায়নি কোনো পরীক্ষাতেই। আড্ডাতে বহু তত্ত্ব, বহু তর্ক, মত-বেমত, বেমত-মত। আমরা চাইতাম আড্ডার টেবিলে বসে সমস্ত কিছু নাড়িয়ে দিতে। কিন্তু …হা হা হা…। স্বাধীনতার আগে কী ছিল দেখিনি, শুনেছি, পড়েছি মাত্র। যুদ্ধের বছর জন্ম বলে বাবা মা নাম রেখেছিল সমর, সমর উদ্দীন। যুদ্ধ হবার পেছনে শোনা কারণগুলোর কাছে যুদ্ধটাকে অহেতুক মনে হয় অথবা মনে হয় যুদ্ধ হয়নি কোনোদিন। সে সমস্ত কারণতো অহরহ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তখনো শোষণ, এখনো শোষণ, তখনো ধর্ষণ এখনো ধর্ষণ, তখনো দুর্নীতি, এখনো দুর্নীতি। তখনো গোলাগোলি এখনো তাই। পার্থক্যটা বুঝি না। একটা মানুষের চায় বাঁচার অধিকার এবং মৃত্যুর অধিকার। এখানের মানুষেরা বাঁচতে পারছে না, মরতে পারছে না। ওদের যতক্ষণ ইচ্ছে, প্রয়োজন, ততক্ষণ বাঁচিয়ে রাখছে, যখন ইচ্ছে মেরে ফেলছে। কী করে কিছু লোকের শোষণের মাত্রা, ধর্মের মাত্রা দশমিকের ডানে থাকতে থাকতে বামে চলে আসছে তা আর বুঝতে বাকি নাই। এরা কারা জানেন? এইতো বেশ বুঝেছেন। হ্যাঁ, এরা মানুষকে মিথ্যা কথা বলে, হত্যা করে, জেলে পাঠায়, শোষণ করে, বিচারালয়ে হাত খেলায়। এরা মানুষকে ভালোবাসে না। সার চাইলে গুলি করে। নিজেরা কাউকে ভালোবাসে না, কাউকে ভালোবাসতেও দেয় না।
ভালোবাসা দিবসেও হরতাল করে। আচ্ছা বলেন তো, হরতালগুলোও তো জোরতাল বলে মনে হয়, হয় না আপনার? লোকদের কাছে শুনে, বইয়ে পড়ে রাজাকারদের ওপর এমন ঘৃণা জন্মেছিল যে—একজন বলেছিল, রাজাকাররাই একদিন ক্ষমতায় যাবে—একথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে তাকে এমন একটা ঘুষি মেরেছিলাম। সেদিন বলেছিলাম—যেদিন তারা ক্ষমতায় যাবে সেদিন আমি দেশ ছেড়ে দেব। হা হা হা আপনি আমার দিকে তাকাচ্ছেন কেন! আমি যখন কথা বলছি, তখন বুঝতেই পারছেন আমি আছি, চোখ তুলে দেখার কোনো দরকার নেই। হ্যাঁ, দেশ ছেড়ে যেতে পারিনি। টিভি খুলেই দেখি মাননীয় কৃষিমন্ত্রী, মাননীয় শিল্পমন্ত্রী গেলেন স্মৃতিসৌধে, শহীদ মিনারে। দর্শনটা একটু চেঞ্জ হয়েছে। লোকদের মুখে শুনেছিলাম যে কথা, বইয়ে রাজাকার সম্পর্কে পড়ে যে ঘৃণা জন্মেছিল—তা মিথ্যা। তাদের মন্ত্রী-এমপি হওয়া দেখে দারুণ বেদনা পাই। ওই লোকের কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে নেব কখন গিয়ে। কী বললেন? বুঝলাম না। ও আড্ডার কথা? হ্যাঁ, এখনো আড্ডা দিই সব বেকারগুলো, সন্ধ্যা পার হলেই। মনিচত্বরের সোহাগের চায়ের দোকানে আড্ডা জমে ওঠে রোজ। প্রতিদিন এক টেবিল করে গল্প করি, চা খাই গল্প গল্প। আগে কত কষ্ট পেতাম মানুষের আর্তনাদে, দুঃখে, কষ্টে। এখন আর তা হয় না। কষ্ট পায় না মানুষের কষ্টে। মানুষের রক্তে সময় পান করি, সিগারেটের ধোঁয়ার মতোই ভুলে যাই মানুষের আর্তনাদ। তাছাড়া মানুষকে দেখে কষ্ট পাওয়ার সময় কই? সারাদিন হাঁটাহাঁটি করি। রাতে রুমে ফিরে মোজা শুঁকে দেখি কালকে আবার মোজাটা পরা যাবে কিনা। জুতার তলাটা কতদূর আর আমাকে নিয়ে যেতে পারবে। ওহ হ্যাঁ হ্যাঁ, রাত তো প্রায় শেষ হয়ে এলো, বুঝতেই পারিনি। আপনাকে আমি চিনি না, নাম জানি না, আপনি কী করেন জানি না, আপনিও জানেন না আমার ব্যাপারে তারপরেও কত কথা হয়ে গেল। ভালো লাগল। আমার নামতো আগেই জেনেছেন, দয়া করে আপনার নামটা বলবেন? ও দারুণ নামতো আপনার—জোনাকি! আমি আপনাকে কিন্তু জোনাকি পাখি বলে ডাকব আগেইতো বলেছি, আমি জোনাকিকে পাখি বলি, তখন কিন্তু জানতাম না আপনার নাম জোনাকি।
আপনি তো জেনেছেন আমি কী কাজ করি, আপনি কী করেন বলবেন প্লিজ? আমি কেন এখানে রাত পার করে দিলাম সেটা জানার পর বলবেন? না না, তার আগে আপনি বলেন আমাকে, আপনি কেন এখানে সারারাত আমার সঙ্গে গল্প করে পার করে দিলেন আর কেনই বা এসেছিলেন? কী! আশ্চর্য কাণ্ড তো, আপনি বেশ্যা! আমিতো বুঝতেই পারিনি, অন্য দশটা নারীর থেকে আপনাকে তো আমি আলাদা করতেই পারছি না। তাহলে তো আপনার আজকের সব কাজ আমি মাটি করে দিলাম, ভোর তো হয়ে এলো জোনাকি পাখি, আপনাকে তো এখন চলে যেতে হবে, আপনার কী ক্ষতিই না করলাম আমি। মাফ করবেন। আর হ্যাঁ, আমি এসেছিলাম একজন বেশ্যার কাছেই। মানুষ মানুষকে টাকা ভিক্ষা দেয়, কাপড় ভিক্ষা দেয়, পরামর্শ বা উপদেশ ভিক্ষা দেয়। আমার দরকার হলো যৌনতা ভিক্ষা। আমি কোনো বেশ্যার কাছে যৌনতা ভিক্ষার জন্য আজ রাতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু আপনার সঙ্গে কথা বলতে বলতে ভুলেই গেছিলাম। তাছাড়া আপনি বলার আগে বুঝতে পারিনি আপনি বেশ্যা। আর এখন তো ভোর হয়ে এলো আর আপনার ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে গেল। আপনার কাছে যৌনতা ভিক্ষা তো এখন আর চাওয়া যাবে না। কী বললেন! আমাকে যৌনতা ভিক্ষা দিতেন না? কিন্তু কেন? ও আচ্ছা ঠিক আছে। মনে ব্যথা পেলাম আপনার কথা শুনে, ভিক্ষা পেলাম না বলে। তারপরেও আমি আপনার কথা মনে গেঁথে নিলাম—জোনাকি পাখি নামে এক মহান বেশ্যা আমাকে বলেছেন—যৌনতা কেউ কাউকে ভিক্ষা দেয় না। যৌনতা কিনে নিতে হয় অর্থ দিয়ে বা শাসনিক বা প্রশাসনিক বা অন্যকোনো ক্ষমতা দিয়ে বা রূপ দিয়ে—পুরুষের ক্ষেত্রে এটা খুবই কম সময় বা ছলনা করে যৌনতা নিতে হয় বা জোর করে নিতে হয়। যৌনতার ভিক্ষা হয় না।