মা আমাকে বুকের ভেতরে নিলেন তারপর নির্লিপ্ত দূরাগত অভিমানী কণ্ঠে বললেন, তাহলে কাঁদ।
দরোজাটা খুলে গেলো। ওপারে মা দাঁড়ানো। এপারে আমি। আমার মুখের ওপর মার চোখ পড়তেই তিনি আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন। মার আনন্দিত মুখের এক অনাবিল আভা এসে আমার মুখে পড়তেই লক্ষ করলাম, তাঁর চোখের কোণে বহুদিনের সুপ্ত বেদনার ঝিলিক।
এই আনন্দ এই বেদনার মিশ্রণে মা যেন এক সফল অভিনেত্রী হয়ে গিয়েছিলেন। বহুদিন আগে, ঠিক কতদিন আগে এ রকম চিকচিক আনন্দ দেখেছিলাম মায়ের মুখে, তা আজ আর মনে পড়ে না। মনে পড়ে না। মনে পড়ে না মা সর্বশেষ কতদিন আগে হেসেছিলেন। সুপ্ত বেদনার ওই অংশটুকু বাদ দিলে আজ এই মুহূর্তে মায়ের এরকম এক মুখ দেখতে পেরে মনে হচ্ছিল জীবনের চরম মূল্য দেওয়ার মধ্যেও এক ধরনের সুখ আছে। কিন্তু এরকম হলো কেন। কেন চরম মূল্য না দিয়ে মায়ের আনন্দিত মুখ দেখার সৌভাগ্য হলো না আমার! মা আমার তুমি কি জানো তোমার মেয়ে জীবনের কঠিন এক খেলায় চরম পরাজিত হয়ে আবার তোমার সামনে এসে হাজির হয়েছে!
তবু তো তোমার হাসি দেখতে পেলাম! আর স্মৃতিকাতরতার বাতাসে কাতরাতে কাতরাতে যখন বাস্তবে ফিরে এলাম তখন যে চোখে শুধু ঝাপসা দেখি। মা, তোমার মুখ এত ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে কেন? একটু আগেই তো আনন্দ-বেদনার মিশেলে এক মায়াবী আভা ছিল তোমার মুখে! তোমার মেয়ের অশ্রুরুদ্ধ চোখের রঙ কি দেখতে পাচ্ছ তুমি? না কি এই মুহূর্তে আমার চোখে দেখা তোমার ঝাপসা ঝাপসা মুখের মতোই আমাকেও তুমি ঝাপসা দেখছ?
এবার আর ধরে রাখতে পারলাম না নিজেকে। বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে জড়িয়ে ধরলাম মায়ের গলা। তখনই কণ্ঠ চিরে বের হতে লাগলো বহুদিনের সুপ্ত হাহাকার। হাহাকারগুলো কান্না হয়ে এলো কণ্ঠে। ঝাপসা চোখের বাষ্পগুলো হতে লাগলো বৃষ্টি। আমার কান্নার শব্দ বাড়তে থাকে অন্যদিকে মার হাসির শব্দও সমানতালে বাড়তে থাকে। আমি কেঁপে কেঁপে উঠি স্রোতের মতো । মা কেঁপে কেঁপে ওঠেন ভূমিকম্পের মতো।
তারপর মার আনন্দিত চিৎকার কণ্ঠ চিরে কয়েকটি শব্দ বের করে আনে, কে কোথায় আছ, দেখে যাও, আমার অথৈ ফিরে এসেছে।
আমি জানি কেউ কোথাও নেই। কেউ আসবে না এখানে। কিন্তু মার এই ডাকে অনেকেই আসতে পারতো। যেমন বাবা। কিন্তু বাবা আসবেন না। তিনি আজ অনেক দূরে। দূরে আজ বাবা। দূরত্বে, মনেও। মার এই ডাকে আরেকজন আসতে পারতো । সে আমার ভাই। কিন্তু কী আর বলার আছে। ভাই আমার, ছোট ভাই। অনেক আদরের। অনেক আদরের মতোই সেও আজ অনেক দূরে। সে অবশ্য দূরত্বে থেকে দূরে নেই, সে কাছে থেকেই দূরে। কাজের বুয়া আসতে পারতো। কিন্তু সে যে কোথায়!
আমি কেঁদেই চলেছি। কান্না থামানোর চেষ্টা করছি। পারছি না। মাকে ছেড়ে দিয়ে মার মুখের দিকে তাকাচ্ছি, মা একইভাবে বলে যাচ্ছেন, তোমরা কে কোথায় আছ দেখে যাও, আমার অথৈ ফিরে এসেছে। মাকে আবার জড়িয়ে ধরছি। কেঁপে উঠছি কান্নায়। কিন্তু কী আশ্চর্য আমার কান্না মার চোখে লাগছে না। আমার কান্না মার চোখে পড়ছেই না। আমার উপস্থিতিই তার কাছে বিশেষ অর্থময়। অন্য কিছু নয়। আমার উপস্থিতি তার ভেতরে যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সেখানেই সব কিছু থেমে আছে যেন। তার আগে পরের বিশাল ও ক্ষুদ্র ঘটনা তাকে স্পর্শ করতে পারছে না। অতীত ও বর্তমানের মধ্যে ঘটে যাওয়া সময়টা মাকে কোনোভাবেই স্পর্শ করছে না। বুঝলাম। স্পর্শ করছে না বলেই বাবার অস্তিত্ব নিয়ে মাকে কোনো প্রশ্ন করলে কোনো কিছুই বলতে পারবেন না। ভাইটির কথা বললেও তাই করবেন। সে অনেক কথা । কিন্তু এই মুহূর্তে যা বুঝলাম তা হলো আমার শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া মার কাছে আর কোনো কিছুরই গুরুত্ব নেই। স্মৃতিও নেই।
কান্না থামছে না আমার একটুও। মা বলেই যাচ্ছেন, কে কোথায় আছ দেখে যাও আমার অথৈ ফিরে এসেছে।
একটু ধাতস্থ হয়ে বুঝতে পারলাম মা এই বাক্য ছাড়া আর কিছুই বলছেন না। মাকে ধরে এনে সোফায় বসালাম। তাঁকে এখন খানিকটা বিমর্ষ আর কিছুটা ক্লান্ত দেখাচ্ছে। নির্লিপ্ত আর পলকহীন ভাবলেশহীন চোখে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে মুখস্ত বলার মতো মা আবারও নিচু কণ্ঠে ধীর গতিতে বললেন, তোমরা কে কোথায় আছ, দেখে যাও, আমার অথৈ ফিরে এসেছে।
একটু পর হন্তদন্ত হয়ে বুয়া এলো। মনে হয় ছাদে গিয়েছিল কাপড় শুকাতে। সেও চোখ কপালে তুলে বলল, আরে আফামনি কহন আইলেন? জামাই আহে নাই?
আমি একটু ধমকের সুরে বললাম, মাকে এভাবে একা রেখে গেছিস কেন?
কথাটা কি আমাকেই লাগলো না? বাবা যখন অনেক দূরে দূরত্বের মাপকাঠিতে, ততোধিক দূরে সংসার থেকে, তার নিজের মন থেকে, ছোট ভাই যখন বখাটে হতে হতে… আমি যখন কিছুটা বুঝে কিছুটা না বুঝে মার একটু কাছাকাছি কিংবা নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছি তখন.. তখনও কি মা অ-নে-ক একা ছিলেন না? তখন অবশ্য খানিকটা আমি ছিলাম মার সাথে, আর মাস মাস বাবার পাঠানো সামান্য কিছু টাকা ছাড়া কে ছিল তার সাথে! ছিল ওই সামান্য কিছু টাকা দিয়ে সংসার চালানো, আমাদের লেখাপড়া চালানোর পরিকল্পনা করা আর ক্রমাগত নিজের ভেতরে গুটিয়ে যাওয়ার এক জটিল স্তর অতিক্রম করা। এগুলো চরম পর্যায়ে যাচ্ছিল, মা আরো নিজের ভেতর গুটিয়ে যাচ্ছিলেন, আমি আমার ভেতর গুটিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন বুঝতে পারিনি আমি যতই নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছিলাম ততই মা আরও একা হয়ে যাচ্ছিলেন। একা হতে হতে আমি যখন আর পারছিলাম না, তখন সজীবের ভেতর খুঁজে পেলাম এক পরম নির্ভরতা। একা একা একাকার হতে হতে আমি যখন আর পারছিলাম না, তখন মার কথা একটুও চিন্তা করিনি। এই আমিই তখন সবার মুখে চুনকালি আর থুতু দিয়ে সজীবের হাত ধরে চলে গেলাম। রাগ জিদ অভিমান আর নিজের ওপর প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আজ দেখি মা আমার আরও অসুস্থ হয়ে গেছেন। নিজের শান্তি খুঁজতে গিয়ে দেখি—আমি আমার মাকেই শাস্তি দিয়ে ফেলেছি।
কিন্তু কী-ই বা করতে পারতাম আমি। আমার কোনো ধুলোয় জড়ানো শৈশব নেই। জীবনে বাবার আঙুল ধরে একটুখানি নির্ভরতা খুঁজে নেওয়ার সুযোগ হয়নি কখনোই। বাবা আমার কাছে শুধু একজন মানুষই ছিলেন। পৃথিবীর যেকোনো মানুষের মতোই আক্ষরিক। মা তখন এতটা অসুস্থ ছিলেন না। নির্লিপ্ত উদাসীনতা দেখে দেখে আমাদের গা সওয়া হয়ে গিয়েছিল ছোট বেলা থেকে। এই নিস্তরঙ্গতা দেখে দেখে আমরাও অভ্যস্ত হয়ে গেছি । আমার কোনো ঘুম পাড়ানি গ্রীষ্মের দুপুর নেই। বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে উদাসী চোখের দিকভ্রান্ততা আছে। চোখ দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশ না-কি অন্যকিছু দেখতে দেখতে একসময় দেখতাম আমিই ভেসে বেড়াচ্ছি আকাশে আকাশে। দেখছি ঠিকই তবু হাতড়াচ্ছি আমি আমার মাকে। হাতড়াচ্ছি আমার বাবাকে। বাবা নেই। বাবার ছায়া আছে। বাবা নেই। বাবার হাতের নির্ভরতা নেই। মা কোথায়! মার ছায়া আছে তবু। ভেসে বেড়ানোর এই আনন্দেই বিভোর থেকেছি কতদিন! মনে পড়ে না।
এভাবে বেড়ে উঠতে উঠতে একসময় আবিষ্কার করি আমার চোখে মাত্র দুটো রঙই খেলা করে। সাদা আর কালো ছাড়া কোনো রঙই আপন করে নিতে পারে আমার চোখ কে। পৃথিবীর বহুবর্ণিলতাকে আমার চোখ ধারণ করতে পারে না। যখন ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গেলো তখন বাবা ধমক দিয়ে বললেন, চোখে সাদা কালো দেখাই ভালো। রঙিন আলো মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
মা তখন একটু সুস্থ। অনেক বড় প্রতিবাদ করতে গিয়েও থেমে গেলেন। ওই যে থেমে গেলেন আর উঠলেন না। আমার সাদাকালো জীবনে একমাত্র রঙিন সুতা হয়ে ছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলেন ঠিকই আমার একমাত্র রঙিন সুতার মৃত্যু হলো।
আত্মীয় স্বজনের পক্ষ থেকে জোরালো চাপ এলো চিকিৎসা করানোর। তারপর কী এক অজ্ঞাত কারণে সবাই চুপ হয়ে গেলো। আমি তখন অতশত বুঝি না।
অনেক পরে যখন আমি সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি রোদ এসে আমার সমস্ত কিছু এলোমেলো করে দিলো। রোদ- যার মধ্যে সবগুলো রঙই থাকে। রোদ- যার জন্য পৃথিবীর সবকিছুই রঙিন হয়ে ওঠে। সেও আমার সাথে কেমন করে উঠলো। কলেজ থেকে ফেরার সময় একদিন আমি রোদের ভেতরে ঝাপসা দেখা শুরু করলাম। রোদ—যা সবকিছুকেই আলোর পরশে এনে প্রকাশিত করে তার নিজস্বতাকে। সেই রোদই আমার সবকিছুকে অন্ধকারাচ্ছন্ন করে ফেলল। প্রথমে ঝাপসা দেখতে থাকি, তারপর কুয়াশা কুয়াশা, কুয়াশার সাদা অন্ধকার ভেদ করে আগুন গরম এক হাওয়া এসে আমার চোখে-মুখে বিশাল ঝাপটানি দিলো। তারপর ছায়া ছায়া লাগতে লাগতে সবই ছায়া হয়ে গেলো। আমি আর কিছুই মনে করতে পারলাম না।
ডাক্তার বলল, কালার ব্লাইন্ডনেসের পাশাপাশি লাইট অ্যাডজাস্টমেন্টেরও প্রোবলেম শুরু হয়েছে। এখনই উন্নততর চিকিৎসা করানো দরকার।
হায় বর্ণান্ধতার অভিশাপ যখন কুরে কুরে খায় অহর্নিশ তখন আলোও আমার সাথে এরকম শুরু করে দিলো? যে আলো সবকিছুকে আলোকিত করে সেই আলোই আমার জীবনে আরেক অন্ধকার রচনা করছে?
জহির চাচা আমাকে চেন্নাই নিয়ে গেলো। ডাক্তার কী বলেছে, জানি না। জহির চাচা ডাক্তারের চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকলো কিছুক্ষণ। তারপর দু’চোখে চুমু খেতে খেতে বলতে লাগলো, তোর চোখ ভালো হয়ে যাবে রে মা। চিন্তা করিস না।
আমার চোখে পানি ছিলো কি না, মনে করতে পারি না। কিন্তু জহির চাচার চোখে পানি দেখে বলতে ইচ্ছে করেছিল, চোখ ভালো হয়ে যাবে তো তুমি কাঁদছ কেন চাচা?
বলিনি। কত কথাই তো বলা হয় না। এই জীবনে কত কথাই তো বলতে হয়, কারণে অকারণে। আবার কত কথাই তো বলা হয় না প্রয়োজনেও। কত জিজ্ঞাসা কুরে কুরে খায়। জীবন কেটে যায় উত্তরের অপেক্ষায়।
যেমন মা কেন এমন অসুস্থ। প্রশ্নটি কেবল মনের ভেতরেই থেকে গেলো। কেন তার উন্নততর চিকিৎসা হয় না? এই প্রশ্নটিও মনের ভেতরেই থেকে গেলো। কেন বাবা এরকম থেকেও নেই। সেটাও অজ্ঞাত। আত্মীয় স্বজনরাও কেন যে এত নির্লিপ্ত? তাও জানা হলো না কোনো দিন। হঠাৎ জহির চাচা কেন এতো আগ্রাসী আর প্রতিবাদী হয়ে উঠলো তাও অজ্ঞাত। হায়! এই জীবনে বাবা মার একটু কাছাকাছি হওয়ার একটা দৃশ্যও যদি চোখ পড়তো তাহলে আমার বর্ণান্ধতার সকল কষ্ট দূর হয়ে যেতো।
একসময় নিজের ওপরেই রাগ হতে থাকলো। যদি প্রশ্নগুলো করতে পারতাম কাউকে। যদি উত্তরগুলো পেতাম তাহলে হয়তোবা এভাবে ভেতরে ভেতরে নিঃশেষ হয়ে যেতাম না। নিঃশেষ হতে হতে যখন শেষতম অবস্থানে চলে এসেছি তখন খড়কুটোর মতো সজীবের হাতটি আমার জীবনে এক পরম নির্ভরতা হয়ে হাজির হলো। আমি দেখলাম তার চোখে আমি সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাচ্ছি। তার চোখ দিয়ে আমি দেখতে পাচ্ছি সব রঙ, সব আলো। আলো তখন আমার জীবনে অন্ধকারের খড়্গ হয়ে আসছে না। আহা জীবনে ফিরে এসেছে যেন জীবন।
কিন্তু না, যে জন্ম থেকেই রঙ-অন্ধ তার জীবনে রোদও তো অভিশাপ। তাইতো সজীবের মতো ভুল রোদের ভেতরে পড়ে কোনো আলো দেখিনি আমি। তাই যে প্রশ্নের উত্তর পেতে চলে গিয়েছিলাম, তা আর না খুঁজে আগের রহস্যময় প্রশ্নের মহাসমুদ্রেই চলে এসেছি।
একসময় নিজের ওপরেই রাগ হতে থাকলো। সজীবের হাতটি আমার জীবনে এক পরম নির্ভরতা নিয়ে হাজির হলো। আমি সজীবের হাত ধরলেই সবকিছু রঙিন দেখি। আমার সাদা-কালো কোথায় যেন দূর হয়ে যায়। রোদের আলোকে মনে হয় চাঁদের জোসনা।
সজীবের হাত ধরে পালিয়ে গেলাম। চলে যাবার আগের রাতে মায়ের কাছে গিয়ে বললাম, মা আজ আমি তোমার সঙ্গে ঘুমাব। মা প্রথমে খুব অবাক হলেন। তারপর খুশিতে ঝলমল করে উঠল তাঁর মুখটা।
রাতে শুয়ে কোনো কথা বলছি না। খুব কান্না পাচ্ছিল। কারণ মার সাথে শেষ সাক্ষাৎ। কাল সকালে চলে যাচ্ছি সজীবের সঙ্গে।
কিছুক্ষণ পর মা খুব শান্ত কণ্ঠে বললেন, কাঁদছিস কেন?
আমি বললাম, কাঁদলে চোখ ভালো থাকে। অশ্রগ্রন্থি সজীব থাকে।
মা আমাকে টেনে তুললেন, তারপর মুখটা বুকের ভেতর নিয়ে খুব নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বললেন, তাহলে কাঁদ।
মা এখনো চিৎকার দিয়ে বলছেন, তোমরা কে কোথায় আছ? দেখে যাও আমার অথৈ ফিরে এসেছে।
আমি অথৈ। আমি কি আসলেই ফিরে এসেছি!