উঠোনের মধ্যে এটেলমাটির স্তূপ এনে জমা করে রেখে দিয়েছে সদানন্দ পাল। এখন জৈষ্ঠ মাস। রোদের মধ্যে থেকে ‘দুরমুশ’ দিয়ে চাকামাটি ভেঙে ভেঙে গুঁড়িয়ে রাখে। এরপর সেই গুঁড়ো মাটি বড় চালুনির মধ্যে ঢেলে তার থেকে আবর্জনা ফেলে একেবারে মিহিন ধুলোর মতো করতে হবে চলতি গ্রীষ্মের মধ্যেই।
সদানন্দ পালের ছেলে উপজেলা পরিষদের পাশের কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেছে গতবছর। তারপর থেকে বাজারের একটা মনোহারি দোকানে চাকরি করে দিনের বেলা, রাতে বই পড়ে। সদানন্দ পালের ছেলে শ্যামলের ইচ্ছা বিএ পরীক্ষাটা দেবে। তাই দোকান বন্ধ করে রাতের বেলা দোকানেই ঘুমায় ও বিএ ক্লাসের বই পড়ে।
মনোহারি দোকানের মালিক সুবিমল সাহা। এক সময়ের বনেদি বিশাল পরিবার হলেও আস্তে আস্তে তারা এক-এক করে বাংলাদেশের জমি-জমা বিক্রি শুরু করে নব্বই দশকের শুরুতে। কিছু কিছু জমি বিক্রি করে প্রথমে সুবিমল সাহার বড় ছেলে নকুল চন্দ্র সাহা পশ্চিমবঙ্গের বারাসতে পাকাপাকিভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। তারপর মেজো ছেলে মানিক সাহাও পশ্চিমবঙ্গে পাড়ি জমান। অথচ নকুল সাহা, মানিক সাহা একসময় এই গ্রামের বনেদি পরিবারের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত ছিলেন। সুবিমল সাহা দুই ছেলেকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে তার তৃতীয় অটিস্টিক রূপক সাহাকে নিয়ে পড়ে থাকেন তার জন্মভূমি বাংলাদেশের মাটিতে।
নব্বই দশকের শুরুতে নির্বাচনে ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের সংখ্যালঘু নির্যাতনের শিকার হয়ে গ্রামের বনেদি ধনী সাহা পরিবারের সদস্যরা বারাসাতে বসবাস শুরু করেন। সব সম্পত্তি সরকারি দলের নির্বাচিত নেতার জবরদস্তিতে দশ কোটি টাকার সম্পদ প্রাণের ভয়ে পঞ্চাশ লাখ টাকার সাফ কবলা দলিল করে দিতে হয়।
সুবিমল শুধু তার অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে ফাঁকা ক্ষয়িষ্ণু বাড়ি আর বাজারের একটা দোকান রেখে বাকিসব রাঘব বোয়ালের পেটে চলে যায়।
এই সুবিমল সাহার দোকানে কাজ করে সদানন্দ পালের ছেলে শ্যামল পাল।
দুই.
আষাঢ়ের বৃষ্টির জলে গুঁড়ো করে রাখা মাটি ভিজে গেলে বৃষ্টির মধ্যে পা দিয়ে মাটি মিশিয়ে নরম করে মাটির তাল তৈরি করে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখে পুরো বছর মূর্তি বানান সদানন্দ। সদানন্দের মা-মরা মেয়ে মালতী। সে বানাতে পারে টেপা পুতুল, বৈয়াম, কলস, ছোট হাঁড়ি, ফুলদানি, মাটির তৈজসপত্র—এসব। শ্যামল পাল তার বাবার সঙ্গে দেবীমূর্তি তৈরি করতে সাহায্য করে পূজা শুরুর আগে আগে। ভাদ্র মাসের শুরুতে এসব মাটির প্রতিমা তৈরির কাজ। আশ্বিনের মহালয়ার পরে শুরু হয় পুরোদমে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করতে হয়। আগে সারা বছর ধরে প্রতিমা তৈরির কাজ করতে হতো কিন্তু এখন আর তত চাহিদা নেই কাজের। বিভিন্ন জায়গায় মন্দির ভাঙচুর আর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার পরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে একধরনের ভীতি তৈরি হয়। বনেদি ধনী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন তো জমি জমা তুলনামূলক কম দামে বেঁচে দিয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশ বিভূঁইয়ে।
এ বছরের তেমন চাহিদা নেই প্রতিমা তৈরির। এছাড়া গ্রামে-গঞ্জে এখন আর পর্যাপ্ত পূজার চাঁদা পাওয়া যায় না। তাই প্রতিমা বিসর্জনের পর পরেই নদী থেকে তুলে এনে আবার মন্দিরে স্থাপনা করে বাধ্য হয়ে। শুধু মহালয়ার পরে সামান্য ঘষেমেজে রঙ করে পূজার কাজ সারা হয়। সদানন্দ পালের তাই আজকাল প্রতিমা তৈরির কাজ অনেক কমে গেছে। পেটের দায়ে সে আজকাল মাটির ঘড়া, কলস, মটকা, পুতুল, হাঁড়ি ও বাসন-কোসন তৈরি করে। এসব কাজ চৈত্র মাসের মধ্যে শেষ করতে হয় কারণ যতটুকু চাহিদা, সেটুকু ওই পহেলা বৈশাখের মেলা উপলক্ষে। বাদবাকি বছরের কুমার বাড়ির উঠান থাকে ফাঁকা। বর্ষাকালে তো চাকতি বন্ধ হয়ে পড়ে থাকে এক কোনে। সদানন্দ তখন মাঝে মাঝে শ্যামলের সঙ্গে দোকানে গিয়ে বসে। এক কোনে বসে ঝিমোয়।
বাজারে বিজলি বাতি জ্বলে। বিজলি বাতি সদানন্দ পালের বাড়ির বাইরেও জ্বলে শুধু তার উঠানটুকু ছাড়া। দুই বেলা পেট ভরেনা তার মধ্যে ঘরে সোমত্ত মেয়ে। বিজলি বাতি জ্বালানোর মতো আর্থিক অবস্থা তার নেই। আর কী যেন বিদ্যুতের খুঁটি না খাম্বা, সেটা আনতে যে টাকার কথা শ্যামলের কাছে শুনেছিল, তা দিয়ে মনে মনে হিসাব করে দেখলে মেয়ে মালতীর বিয়ের অর্ধেক খরচ হয়ে যাবে ভবিষ্যতে। জাত-কূল-গোত্র মিলিয়ে একজন পাত্র পাওয়া কপালের জোর। পাত্র যদিও মিলেছিল গতবছর, তাদের দাবি-দাওয়া শুনে সদানন্দ চোখের জল মুছে না করে দিয়েছিল। সদানন্দ পালের ঘরে তাই আজও মাটির পিদিম জ্বলে।
তিন.
বাজারের কাছেই পাল পাড়া। আজকাল পাল পাড়া না বলে পাল বাড়ি বলাই বাহুল্য। পাল পাড়ায় এখন শুধু সদানন্দ পালের বসবাস। বাদবাকি কুমার সমাজ বাড়ি ঘর বিক্রি করে পাড়ি জমায় দেশের বাইরে। সেবারে মন্দিরে রাতের বেলা আগুন লাগে। হুড়োহুড়ির করতে করতে কারা যেন পাল বাড়িতে ঢুকে সদানন্দ পালের জ্যাঠতুতো ভাইদের ঘরে রাখা প্রতিমা ভাঙচুর করে। জ্যাঠা শিবানন্দকে মারধর করলে মেয়ে শঙ্করী দৌড়ে আসে বাপের কাছে। তখন শিবানন্দে ছেড়ে শঙ্করীকে তুলে নিয়ে যায় কারা যেন। তিনদিন পর শঙ্করীর বিক্ষত লাশ খালের জোয়ারে ভেসে আসে। শঙ্করীর মৃত্যুর পরে ধীরে দধীরে পাল পাড়ার জনসংখ্যা কমে আসতে শুরু করে। ক্ষয়িষ্ণুতা শেষ পর্যন্ত পাল পাড়ায় মাত্র তিনটি মানুষে এসে পৌঁছায়। সদানন্দ শ্যামল ও মালতি।
বাজারের দোকানে বসে ঝিমুচ্ছিল সদানন্দ।
কী রে সদা? কী খবর? কবে যাবি?
ধড়ফড় করে উঠে চোখ খুলে দেখে সামনে বদিউর মওলা দাঁড়িয়ে আছেন। বর্তমানে তিনি এ এলাকার বিশিষ্ট সমাজসেবী ও সরকারি দলের নেতা। একসময়ের বাজারের কুলির কাজ করতে দেখেছে তাকে সদানন্দ। আজ বরাতের জোরে কোটিপতি বণিক। বাজারের অনেক গুলো দোকানের মালিক। পাল পাড়ার জমিও অনেকাংশ তার দখলে। সদানন্দকে আজকাল প্রায়ই চাপ দিয়ে পাল পাড়ার অবশিষ্ট জমিটুকু লিখে নিতে চাইছে অবশ্য মাগনা নয় কিছু টাকা দেবার কথা বলেছে। শ্যামল আর মালতির মুখের দিকে তাকিয়ে সদানন্দ মানসিক জোর এনে বদিউরের মুখের ওপর না বলে দিছে এতকাল কিন্তু এখন বোধহয় আর না বলা সম্ভব হবে না। সদানন্দ বদিউরের কথায় চুপচাপ বসে থাকে কোনো উত্তর দেয় না। বদিউর আবার তাকে বোঝায় বাড়ি বিক্রি করে যে টাকা পাবে, সে দিয়ে মালতির বিয়ের খরচ শ্যামলের চাকরির ঘুষ দিয়েও হাতে বাড়তি টাকা থাকবে। সদানন্দ সব কিছু শোনার পরে বলে, ‘মিয়াজি আমি পরে আপনাকে জানাবো। দুদণ্ড ছেলে মেয়ের সাথে কথা বলে নেই। আমাকে একটু সময় দিন। ’ শ্যামল সদানন্দের কথায় চিৎকার করে ওঠে—‘বাপু বলেছি না, জমি ভিটে বেচবো না? তুমি আবার কেন বলচো দুদণ্ড কথা বলে দেখি? চেয়ারম্যান সাব আমরা ভিটেবাড়ি বেচবো না। ’ কথা কটি বলেই মাথা নিচু করে রাগে ফুঁসতে থাকে সে।
মাথা নিচু না করে বদিউরের চোখে চেয়ে থাকলে হয়তো শ্যামল ভস্মীভূত হয়ে যেতো লোভ আর ক্রোধের আগুনে।
চার.
শ্যামল দোকানের ঝাপ বন্ধ করে চাবিটা পকেটে রাখে। আকাশে একাদশীর চাঁদের আলো। একসময়ে বিধবা পিসি ও জেঠিমা উপবাস পালন করতেন। সারাদিন নির্জলা উপবাসের পর সন্ধ্যায় শ্যামলের মা বারো রকম নিরামিষ ব্যঞ্জনে থালা সাজিয়ে জেঠিমা আর পিসিকে খেতে দিতেন। শ্যামল তখন ছোট পাশে গিয়ে বসলে পিসিমা মুখের ভেতরে গুঁজে দিতেন পাকা পেঁপে বা কলার টুকরো। আজ কেউই বেঁচে নেই তারা। হয়তো স্বর্গে বাস করছেন। স্বর্গ নরক বেহেশত দোজখ হ্যাভেন হেল—জান্নাত, জাহান্নাম—এই দুটো স্থানের কথা সব ধর্মে বিশ্বাস করে। কিন্তু বিশ্বাস অনুযায়ী স্থান দুটোর পরিবেশ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে ফুটে ওঠে এক-এক জনের হৃদয়ে আলাদা আলাদা ধর্মীয় বিশ্বাসে। শ্যামলের মনে হয় আসলে মৃত্যুর পর কী আছে? কারও শরীর পুড়ে ছাই হয়ে যায়, কারও শরীর মাটিতে পচে গলে মিশে যায়। তাহলে পুনর্জন্ম বা পরকাল আসলে কী? আদৌ কিছু আছে, না কি সবটাই ধর্মীয় বিশ্বাস। প্রতিটি ধর্মের মধ্যে প্রধান বিষয়ে তেমন কোনো অমিল নেই, ভাষাগত পার্থক্য ছাড়া। যেমন বাংলায় স্বর্গ, ফারসিতে বেহেশত, আরবিতে জান্নাত আর ইংরেজিতে হ্যাভেন। সবাই বিশ্বাস করে ভালো, সৎকর্মের জন্য স্বর্গীয় স্থান আর অসৎ-মন্দ কাজের জন্য নরকবাস হবে মৃত্যুর পরে। তাহলে পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে কেন এত ধর্মের বিভেদ? রক্তের তো কোনো পার্থক্য নেই। চাল ফুটিয়ে যে ভাত সেতো সবই সাদা তাতে তো কোন পার্থক্য নেই। তাহলে ধর্মের নামে মানুষের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন? ভাবতে ভাবতে শ্যামল বড় দিঘির পাড়ে চলে আসে। বাজারের সীমান্তে দিঘি আর তারপরেই পালপাড়া শুরু। এখন আদি পালপাড়ার সামনে মওলাবাড়ির বিশাল একটা সাইন বোর্ড জ্বলজ্বল করে। শ্যামল সাইনবোর্ডের কাছে আসতেই কয়েকজন লোক ওর সামনে এসে দাঁড়ায়। শ্যামল প্রথমে চিনতে পারে না কিন্তু চাঁদের আলো মুখে পড়লেই বুঝতে পারে—বদি মওলার পোষা গুণ্ডা এরা। এরমধ্যে দুই জনের নামও জানে সে। একজন সোহেল অন্য জনের নাম মহসীন। শ্যামলের বুকের ভেতর হাজার রাক্ষসের চিৎকার টের পায়। শ্যামল মনে মনে নিজের অজান্তেই ভগবানের নাম জপে ‘রক্ষা করো ভগবান।’ কিন্তু সেই একাদশীর রাতে চাঁদের আলোয় শুধু প্রকৃতি যেন মুখ থুবড়ে পড়ে থাকে দিঘির পাড়ে। ভেজা ঘাসের ভেতর শ্যামলের শরীর থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় শিশির বিন্দুর মতো রক্ত ঝরে পড়ে দিঘির জলে।
পাঁচ.
সদানন্দ পাল স্তব্ধ হয়ে মাটির ঘরের দাওয়ায় বসে আছে। মালতী ভেতরের ঘরে ঢুকরে ঢুকরে কাঁদছে লক্ষ্মী প্রতিমার সামনে বসে। প্রতি বৃহস্পতিবার মালতী সন্ধ্যায় এই প্রতিমার সামনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে পুজো করতো। আজ মালতী রক্ত-কাদামাখা অবস্থায় বাসি কাপড়ে লক্ষ্মী প্রতিমার সামনে উপুড় হয়ে কাঁদছে। লক্ষ্মীর তাতে কোনো বিকার নেই। মালতী আছড়ে-পাছড়ে বিলাপ করতে করতে ভাইয়ের জন্য কাঁদছে।
উঠানে চেয়ার পেতে থানার ওসি বসে আছে। তার পাশে দুইজন স্থানীয় সাংবাদিক। একটু দূরে দু’জন পুলিশ ঘুরে ঘুরে সদানন্দ পালের বাড়িঘর দেখছে।
সদানন্দ ওই সদানন্দ! ওসি হাঁক দিয়ে ডাকে। লাশ তো পোস্টমর্টেম করতে নিতে হবে। তা তোর কিছু বলার আছে না কি?
সদানন্দ স্থানুর মতো চুপচাপ বসে থাকে। দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। শ্যামলের লাশ নিয়ে চলে যায় থানার লোকজন। বলে যায় আগামীকাল বিকেলে থানায় এসে সাক্ষ্য দিতে। দুপুরে পোস্টমর্টেম হয়ে গেলে লাশ এনে যেন থানায় রিপোর্ট করে তারপর অনুমতি দিলে দাহ করা যাবে। একজন চুপিচুপি কানের কাছে বলে, ‘এমনি এমনি কিন্তু হবে না রে মালু। কিছু মালপানি নিয়ে এসো। ’ সদানন্দ তার দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে।
আকাশে দ্বাদশীর চাঁদ ঝিলমিল করছে। সারাদিন ধরে না খাওয়া দুটো শরীর মাটির দাওয়ায় বসে আছে। দূরে বাজারের বড় মসজিদ থেকে এশার আজান ভেসে আসছে। মালতী উঠে দাঁড়ায়। ঘরের ভেতর গিয়ে চালের মটকা উপুড় করে চাল ঢালে মেঝেতে কাপড় বিছিয়ে। তারপর যতটুকু ডাল ছিল সেটুকুও ঢেলে মিশিয়ে নেয়। একটা হাড়িতে চাল-ডাল সেদ্ধ বসায় উঠোনে প্রতিমা পোড়ানোর উনুনে। মরার ঘরে চুলা জ্বলতে নেই। তাই ঘরের পাশের চুলা জ্বালায় না মালতী। উনুনের আঁচে প্রতিমার সঙ্গে সঙ্গে সেদ্ধ হয় চাল-ডাল-আলু। মালতী ঘরের ভেতরের যা কিছু অস্থাবর সম্পত্তি দুখানা কাপড় থালা বাসন আর রুপোর একজোড়া কানপাশা বেঁধে নেয় পুটলিতে। উনুনের আগুন নিভিয়ে খিচুড়ির হাড়িটা বের করে আনে। কলাপাতায় বেড়ে এনে সদানন্দের সামনে ধরে। সদানন্দ সম্বিত ফিরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। মালতী চুপচাপ খিচুড়ির দলা পাকিয়ে খেতে বসে। দুই-একটা দলা বাপের মুখে তুলে ধরে। সদানন্দ হতবিহবল হয়ে মালতীর কাণ্ড দেখে। রাত বাড়তে থাকে। দ্বাদশীর চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে সদানন্দের আঙিনা। মালতী এক হাতে পুটলি অন্য হাতে বাপকে জড়িয়ে ধরে উঠোনে নামে। সদানন্দ কিছু বলার আগেই মালতী বলে, ‘বাপু আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। চলো এখান থেকে পালিয়ে যাই। পৃথিবীটা শুধু ওদের একলার না। পৃথিবীটা আমাদেরও। সদানন্দ মালতীকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করে। শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদ ওদের পথ দেখায়।