মরে যাওয়া দিনগুলো নিয়ে ভাবতে ভালো লাগে কারও-কারও। তবে আমি অতটা স্মৃতিকাতর নই। হতে পারে ভাবনায় ডুবে থাকার মতো কোনও যুৎসই স্মৃতি আমার নেই; কিংবা অম্লধুর যেটুকু আছে, সেটুকু সামনে টেনে আনতে চাই না। আমি নতুন নতুন স্মৃতি তৈরি করার মধ্যেই আলাদা আনন্দ অনুভব করি। আবার সেগুলো ভুলে গিয়ে পৃথক সুখও পাই। আমার কাছে সুখ আর আনন্দের পৃথক ব্যাখ্যাও আছে। তবে এই ব্যাখ্যা নিতান্তই ব্যক্তিগত। এ নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহ কম। জীবন যেখানে চলমান, গতিশীল; সেখানে পুরনো ঘটনায় বুদ হয়ে থাকার মানসিকতা আমার নেই। অথচ, আগস্টের বৃষ্টিমুখর ভরসন্ধ্যায় শাহবাগ মোড়ের দৃশ্যটি বার বার কেন যে তাড়িত করছে! পৌলমী কেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজছিল সেদিন, সন্ধ্যার অঝোর বর্ষণে? সে কি অপেক্ষমাণ, কোনো সতীর্থের!
একটি দৃশ্য বৃষ্টিবাচক
বিকাল থেকেই রাজধানীবাসী যেন উড়ছে! অফিস ফেরত কেরানি, টিউশন মাস্টার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, ঘুরতে আসা যুগল, ভ্রাম্যমাণ পতিতা, চা বিক্রেতা—সকলেরই যেন অপ্রতিরোধ্য গতি। কারও ফুসরত নেই কথা বলার, এ-দিক ও-দিক তাকানোর। বিকাল গড়াতেই শ্যাম-রঙের মেঘ গোটা ঢাকা শহরের ওপর টুপির মতো জেঁকে বসেছে—কারণ কি এটাই?
ঘরে ফেরার তাড়া আমারও ছিল। বাংলা একাডেমি থেকে বেরিয়ে খুব একা লাগছিল। বাইরে ঘোর লাগা অন্ধকার। এই মুহূর্তটা আমার বেশ প্রিয়। এ-সময় নস্টালজিক হতে ইচ্ছে করে খুব। আমি স্মৃতি হাতড়িয়ে তেমন কোনো উজ্জ্বল দৃশ্যের সন্ধান পেলাম না। শুধু সূর্যগ্রহণের একটি দৃশ্য ভেসে উঠল মনের পর্দায়। তখন আমি সদ্য যৌবনে পা রেখেছি। সেদিন কলেজ থেকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সময়টা আশ্বিনের কোনও এক দুপুরে। হঠাৎ টিনের চালে কিছু একটা পড়ার শব্দে ঘুম ছুটে যায়। বিকালে সুমিতদের পুকুরে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার পূর্ব-পরিকল্পনা মুহূর্তেই চঞ্চল করে তোলে আমাকে। আমি ঘর থেকে বাইরে এসে দেখতে পাই সমাচ্ছন্ন অন্ধকার, ঠিক আজকের মতোই। বাইরে বের হতেই মা সতর্ক করলেন—আকাশের দিকে একবারের জন্যও তাকাবি না, সূর্যে গ্রহণ লেগেছে। তখন সূর্যগ্রহণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আমার জানা নেই। আমি দেখলাম, উঠোনে জলভর্তি পাথরের বাসন। আমার ছোটভাই, দিদি, মা এবং পাশের বাড়ির কয়েকজন গৃহবধূর জটলা। সকলেই জলভর্তি ওই পাথরের বাসনে সূর্যগ্রহণ দেখার প্রস্তুতি নিচ্ছে। জটলার মধ্যে সেদিন সম্ভবত একজোড়া তরুণী চোখের সতর্ক-কৌতূহলী চাহনি ছিল। সেই চোখজোড়া আজকের পৌলমীর কি না, এখন মনে করতে পারছি না। তবে আমি অনেক খুঁজেও আট টাকা দিয়ে বারুণী মেলা থেকে কেনা কালো-চশমাটা উদ্ধার করতে না পেরে স্রোতে গা ভাসালাম।
আমাদের উঠোনজুড়ে লাউয়ের মাচান। লাউয়ের ফলনও বেশ ভালো। মাচানের ফাঁক গলে ঝুলে রয়েছে লাউয়ের সারি। ভাদ্র মাসে ‘লাউ-ভক্ষণ’ শাস্ত্রমতে নিষিদ্ধ থাকায় লাউগুলো এবার পুষ্ট হয়েছে। লাউপাতার ফাঁক গলে গ্রহণবিদ্ধ সূর্যের লালিমা উঠোনে পড়ে এক অপরূপ দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় জ্বলে থাকা সোডিয়াম আলোর সঙ্গে কিছুটা মিল রয়েছে সেই অপরূপ রঙের। যার নিচে দাঁড়ালে প্রকৃত রঙটাই বদলে যায়। আমি অবশ্য গ্রহণ চলাকালে মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে সটকে পড়েছিলাম। বাড়ির উঠোনে ভিড়ের মধ্যে একঝলক দেখা সেদিনের ওই কৌতূহলী জোড়া চোখের স্মৃতি আজ আবার পৌলমীকে দেখে কেন সামনে আসছে! পৌলমী কিংবা তার গভীর রহস্যময় চোখ, যত্ন করে পুষে রাখার কারণও নেই। তাহলে এ কি আমার অবচেতন মনের কারসাজি? হঠাৎই আমি সতর্ক হয়ে উঠি। পৌলমীর ভেজা দৃশ্যের চেয়ে আমাকে বেশি টানছে পরবর্তী ঘটনার দিকে। এর পর পৌলমীর গন্তব্য কোথায়—এমন কৌতূহল মাথায় নিয়ে আমি তার পেছন দিয়ে রাস্তা পার হয়ে পূবালী ব্যাংকের শেডে দাঁড়ানো মানুষের ভিড়ে নিজেকে সঁপে নিশ্চিন্ত হতে চেষ্টা করি।
মেয়েটির দিকে চোখ পড়তেই আমার পৌলমীর কথা মনে পড়ে। বুকে হাতুড়ির ঘা অনুভব করি।
বৃষ্টিভেজা সবুজ আর একজোড়া চোখ
বাংলা একাডেমির বর্ধমান হাউজ পেরোনোর সময়ই শিউলি গাছটির দিকে নজর পড়ে। সবুজ পাতায় ভরে উঠেছে গাছটি। মাসখানিক পরই গাছে ফুল আসতে শুরু করবে। প্রাক-প্রস্তুতি হিসেবেই বোধ করি গাছটি সতেজ ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। আমি এখানে এলেই গাছটিকে ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করি। আজও ছুঁয়ে দেখি। গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিই। নির্ভেজাল বাতাসে ফুসফুস ভরে ওঠে। কিন্তু প্রকৃতির বিরূপ পরিস্থিতি বিবেচনা করে বেশিক্ষণ থাকতে পারলাম না। টিএসসি হয়ে শাহবাগ যেতেও মন সায় দিলো না। আমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূবের গেট দিয়ে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। রমনা উদ্যানের ভেতর দিয়ে কাকরাইল মোড় হয়ে গেলে বাসায় তাড়াতাড়ি পৌঁছানো সম্ভব। এ পথে অনেক বার যাতায়াত করেছি। রমনা কালী মন্দির ডানপাশে রেখে আমি যখন উদ্যান অতিক্রম করছি, তখনই ইলশে গুড়ি বৃষ্টি শুরু হলো। যদিও বর্ষাতি রয়েছে কিন্তু ভারি বর্ষণ হলে নির্ঘাত ভিজতে হবে, এ আশঙ্কা নিয়ে আমি জোরে পা চালাই। মাথার ওপরে ঝুলে পড়া মেঘ দেখে মনে হলো, আজকের ভারী বর্ষণে গোটা রাজধানী তলিয়ে যাবে। আমি দ্রুত হেঁটে সোহরাওয়ার্দী পেরিয়ে রমনা উদ্যানের সামনে, রাস্তার এ-পারে থমকে দাঁড়াই। পেছনে বৃষ্টিভেজা সবুজ রমনা রেখে একাকি একটি মেয়ে রাস্তায় উঠে আসে। মেয়েটির দিকে চোখ পড়তেই আমার পৌলমীর কথা মনে পড়ে। বুকে হাতুড়ির ঘা অনুভব করি। চার বছর পর এইভাবে পৌলমীর মুখোমুখি হতে হবে আমাকে! আমি বর্ষাতি দিয়ে নিজেকে আড়াল করে, মেয়েটি পৌলমী কিনা তা শনাক্তের চেষ্টা করি। আমার বাসায় ফেরার গতিপথ পরিবর্তিত হয়। মেয়েটির পিছু নিয়ে শাহবাগের পথে হাটি, ততক্ষণে শুরু হয় অঝোর বর্ষণ।
পৌলমীসন্ধ্যায় সবুজ বাতি
গভীর রাতে বাসার পাশের অধিকাংশ ঘরের আলো নিভে যায়। তবু একটি কক্ষে প্রায়ই বাতি জ্বলতে থাকে। সবুজ বাতি। আমি দেখেও যেন দেখি না। শব্দ করে কবিতা পাঠ করতে থাকি। তবু সবুজ বাতি আমাকে টানে। অজান্তে চোখ চলে যায়। আলোকিত ঘরে আবছায়া একটি পোট্রেট ঝুলে থাকতে দেখি। কার পোট্রেট দূর থেকে তা স্পষ্ট নয়। হতে পারে চে গুয়েভারা কিংবা জীবনানন্দ। মাঝেমধ্যে মনে হয় দেয়ালে একজোড়া চোখ ঝুলছে। বিমূর্ত ওই চোখজোড়া কি পৌলমীর? আমি দক্ষিণের জানালার পর্দা টেনে দিই।
আমার বাসার উত্তরের জানালা দিয়ে হাতিরঝিলের রাতের দৃশ্য চোখে পড়ে। মায়াময় ওই দৃশ্য সামনে রেখে কবিতা পাঠে ভিন্ন অনুভূতি টের পাই। এই দৃশ্যে চোখ রাখলেই পৌলমীর সঙ্গে হাতিরঝিলে কাটানো সন্ধ্যার কথা মনে পড়ে। আমি ওই সন্ধ্যাগুলোর নাম দিয়েছি ‘পৌলমীসন্ধ্যা’। পৌলমীও জানে। আমি লক্ষ করেছি, বাসায় ফিরে কবিতা পাঠে মনোনিবেশ করতে গেলেই পৌলমীর সঙ্গে শেষ কথোপকথন খুব মনে পড়ে।
—এই ওয়েটার, থাই সুপ আর চিকেন ফাই সার্ভ করুন, হাফ করে।
—আজ শুধু কফি হলেই চলবে। ঠোঁট বাঁকিয়ে পৌলমী ঝটপট বলে।
হাতিরঝিলের নন্দন কেএফসিতে মুখোমুখি আমি আর পৌলমী। আজ যেন ওর সব কিছুতেই বিতৃষ্ণা। পৌলমীকে এমন বিক্ষিপ্ত স্বভাবে আগে কোনওদিন দেখিনি। আমার ভেতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে।
হঠাৎ পৌলমী আমার হাত চেপে ধরে বলে, তোমাকে একটা মজার ঘটনা বলতে চাই।
আমি পৌলমীর চোখের গভীরে হারিয়ে যেতে যেতে বলি, বলো, আমি তো শুনতেই চাই।
পৌলমী বলতে শুরু করে—আমি বাবা ওদের মতো পারব না। নিজের মতোই থাকব। ওরা ওদের মতো থাক, আমি ওদের প্রাইভেসি নষ্ট করতে চাই না। প্রয়োজনে বাসা ছেড়ে দেব। ছাড়ব কি! আমি তো মুখের ওপর বলেই দিয়েছি, সামনের মাস থেকে আমি নেই। বাসাও দেখছি। উঠে যাব। তারপর তোমাকে সব জানাব। প্লিজ রাগ করো না।
আমি ভীষণ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকাই। ক্যান্টিনের আসা মানুষগুলোও যেন বাঁকা দৃষ্টিতে আমাদের দেখতে থাকে। আমি ওর হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে প্রসঙ্গ পরিবর্তনের চেষ্টা করি। ভেবে পাই না, এসব কী বলছে পৌলমী! ক্যান্টিন থেকে বের হতে সেদিন বেশ দেরি হয়। এরপর পৌলমীকে পৌঁছে দিয়ে আমি বাসায় ফিরি। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার দেখা অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
মানুষের ভিড়ে পৌলমীর মুখ
চেনাজানা অনেকেই পৌলমীকে মানুষের ভিড়ে আবিষ্কার করে মাঝেমধ্যে। তার বেশভূষা, চলাফেরায় পরিবর্তনের কথা জানায়। কেউ বিষোদগারও করে। এদের মধ্যে কেউ কেউ যে তার ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেনি, সে নিশ্চয়তাও নেই। কিন্তু আমার আগ্রহ একেবারে শূন্যের কোটায়। পৌলমী ছাড়া আমি এক শূন্যতার সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছি। কোনও আড্ডা আগের মতো আমাকে আর টানছে না। অফিস যাই আর বাসায় ফিরি; কবিতায় গভীরভাবে ডুবে থাকি। তখন খুব করে পৌলমীর কথা মনে পড়ে। জীবনানন্দের বনলতার মতো তার চোখ, কথায় কবিতার স্ফূরণ—সবকিছু ফ্রেমে বাঁধানো ছবির মতো যেন চোখে ভাসে। মাঝে মাঝে ভাবি, টেক্সট বইয়ের বাইরে কারও কবিতা না পাঠ করলেই বোধ করি ভালো হতো। কবিতা যে কেন এত সংক্রামক!
এক সন্ধ্যায় অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে হাতির ঝিলের রাস্তা পার হওয়ার সময় পেছন থেকে একটি মেয়ের ডাক শুনতে পাই। তাকিয়ে দেখি, পাশের ফ্ল্যাটের মেয়েটি আমাকে ডাকছে।
—দাদা, ও দাদা, দাদা গো!
বৃষ্টি কমতেই সে রাস্তা পেরিয়ে এদিকটায় সরে আসে। তারপর মোবাইলে কথা বলতে থাকে। মানুষের দিগ্বিদিক চলাচল আর সোডিয়াম আলোর নিচে পৌলমীর মুখ অস্পষ্ট।
মেয়েটি আমাকে এমন করে ডাকল কেন? একদম বুকের ভেতর লেগেছে! জানতে চাইলাম, এমন ব্যাকুল হয়ে ডাকছ কেন মেয়ে! তারপর টুক টুক করে অনেক কথা হয় আমাদের মধ্যে। পৌলমীর সহপাঠী মেয়েটি সরাসরি কিছু বলে না। তবে ওর ভেতরের দহন আমি ঠিকই টের পাই। পৌলমীর লিভ টুগেদারের ব্যাপারে ওই মেয়েটিই আমাকে প্রথম জানায়। আমি ওর সঙ্গে কথা বলতে বলতে সেদিন যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়েছিলাম কি না এখন সে প্রসঙ্গ থাক। চার বছরে পৌলমী কতবার হাত বদল হয়েছে, কিংবা আদৌ হয়েছে কি না, তাও আমার জানা নেই। কিন্তু শাহবাগের বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যায় কথাটি কেন আর্তনাদ হয়ে বাজল, বুঝে উঠতে পারলাম না।
অতপর সবটুকুই অন্ধকার
মানুষ সবসময় নিজের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করবে, এমনটি নাও হতে পারে। পৌলমীর ওপর আমার কোনও অভিযোগ সেদিন ছিল না। আর আজ তো সে যোজন যোজন দূরের বাসিন্দা। পরিবর্তিত জীবন নিয়ে পৌলমী ভালো থাক। ভালো থাক তার নিজের জন্য, পরিবারের জন্য। আমি যখন নিজেকে এই ভাবে সান্ত্বনা দিচ্ছি, ততক্ষণে সন্ধ্যা আরও সঘন হয়ে উঠেছে। বৃষ্টির ব্যাপকতা কমে এলেও একেবারে থামেনি। ঘরমুখো মানুষ যানবাহনের সন্ধানে রাস্তায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ভ্রাম্যমাণ দোকানিরা পণ্যের পসরা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। সড়কবাতিগুলো জ্বলে উঠেছে বেশ আগে।
বৃষ্টি কমতেই সে রাস্তা পেরিয়ে এদিকটায় সরে আসে। তারপর মোবাইলে কথা বলতে থাকে। মানুষের দিগ্বিদিক চলাচল আর সোডিয়াম আলোর নিচে পৌলমীর মুখ অস্পষ্ট। পৌলমী ব্যাগের মধ্যে মোবাইল রাখতে না রাখতেই কাটাবনের দিক থেকে নীল রঙের একটি প্রাইভেট কার তার সামনে এসে ব্রেক কষে। পেছনের দরজা খুলে পৌলমী কারের ভেতর উঠে পড়লে কারটি দ্রুতবেগে মৎস্যভবনের সড়ক ধরে মিলিয়ে যায়।
আমি অদৃশ্য হওয়া কারের দিকে তাকিয়ে থাকি আর এক জোড়া চোখ কৌতূহল বুনে চলে মননে, ক্রমাগত। ভাবতে থাকি, কেন আমার কোনও স্মৃতি হয়নি। আর কেনই বা আমার ব্যক্তিগত অনুভূতি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করব! আমি শাহবাগ মোড়ের হালকা বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে ভাবি, প্রত্যাশিত ভারী বর্ষণ হলে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের সীমা থাকত না। তবে এই সামান্য বৃষ্টিতে বর্ষাতির প্রয়োজন বোধ করি না। ছাতাটা হাতে নিয়ে শেড থেকে রাস্তায় বের হই। এর পর ফার্মগেটের দিকে দ্রুত পায়ে হাঁটতে থাকি।