এক.
আলগোছে খুলি। মৃদু শব্দ। যদিও অল্প, তাও ওপরের আংটাতে হাত রাখি। যেন আরও মৃদু হয়ে আসে শব্দ। লোহার আংটায় একটি রেশ থেকেই যায়। শব্দের কিংবা বাতাসের। সবাই চলে যায় বাড়ির ভেতর। দোতলায়। আমি রইলাম দাঁড়িয়ে আরও কিছুটা সময়। কতবার এসে যে এভাবে দাঁড়িয়েছি দরজাটার পাশে, কতবার! অথচ আজ অন্য রকম লাগছে। আরেকবার ছুঁয়ে দেখি হাতলটা। চকচকে সিল্কের মতো। আঙুল পিছলে যেতে চায়। চেপে ধরে রাখি আমি। দরজাটার এদিক-সেদিকে মরচে পড়লেও হাতলটা এখনো চকচকে! রাস্তার টিমটিমে আলোয় এই রাতেও দেখতে পাই একজোড়া হাতল। অনেকটা ওভাল-শেপ।
মনে পড়ে ছোটবেলায় একবার আলতা ফুফু একটা নীল ফিতা বেঁধে রেখেছিল হাতলটায়। আমি এসে খুলে ফেলেছিলাম বলে একটা চড় আমার গালে দিয়ে বলেছিল, তুই কেন ফিতাটা খুললি সিমলা?
—হাতলাটা এমনি এত্ত সুন্দর ফুফু, তুমি কেন ফিতা বেঁধে রেখেছ!
—আচ্ছা, তুই এই গেইটের পাশে ঘুরঘুর করিস কেন সারাদিন, বল তো ? এ বাড়িটার বাইরে কত্ত বড় একট মাঠ, যা শিমুলদের সঙ্গে খেলতে যা!
আমি সেদিন যাইনি কোথাও। সেই লোহার দরজার পাশেই ছিলাম সারাটা বিকাল। বোগেনভিলার ঝোপ থেকে টুপটাপ যে ক’টা ফুল মাটিতে পড়েছিল, আমি তুলে নিয়ে ফ্রকে জমা করেছিলাম। এই রাতে মনে পড়ে গেলো আলতা ফুফুর কথা। সেদিন আমার সাদা ফ্রকে ফুলগুলো তুলে নিয়ে মার কাছে দোতলায় উঠে যেতে সিঁড়িতেই সবক’টা ফুল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে যায়! আলতা ফুফু পেছনে। আমি আর হাঁটতে পারছিলাম না। ফুফু দুই-একটা করে ফুল তুলে দিতে থাকে। আমি ফ্রকটা মুঠ করে ধরি।
—সিমলা। এরপর আমার সঙ্গে ঝুড়ি নিয়ে আসবি। আমরা অনেক ফুল তুলে নিয়ে ঘর সাজাবো, কেমন?
সেদিন আর আজকের এ দিনের অনেক তফাৎ। আলতা ফুফু নেই। তার কথাগুলো তাও গানের মতো আমার কানে বেজে ওঠে। ভাবছি আজ ফ্রকের স্মৃতি মনে করে না হয় ওড়নাতেই কিছু ফুল তুলে নেবো। বসে পড়ি মাটিতে। দরজার বাম পাশে আমি। আবছা আলোয় তুলে নেই কয়েকটা ফুল। ওড়না মুঠো করে ধরে ওপরে উঠে যাই। ঢাকা থেকে আনা আমাদের জিনিসপত্রগুলো এক এক করে কারা যেন দোতলায় নিয়ে যাচ্ছে। দুই-একজনকে চেনা লাগে। মুচকি হেসে একজন বললো, তোমারে চিনতেই পারতেসি না, তুমি সিমলা মা না?
—হুম, আপনি রতন কাকু?
—চিনতে পারসো? শিমুলরে দেখি না কেন? আসে নাই?
—আসছে কাকু। দোতলায় গেসে মনে হয়।
চুল সাদা হয়ে গেছে রতন কাকুর। আব্বার চেয়ে কাকু বয়সে কিছুটা ছোট। শুনেছি সেই কিশোরবেলা থেকে এ বাড়িতে কাজ করেন তিনি। আমার জন্ম এখানেই, ময়মনসিংহে। অসংখ্যবার এসেছি দাদাবাড়ি। কিন্তু সবকিছুই অন্যরকম এখন। দাদা চলে যাওয়ার পর এবারই প্রথম এলাম বোধহয়। দোতলায়। হ্যাঁ, দোতলার বারান্দায় বসে থাকতেন দাদাভাই। আমিও পাশে গিয়ে বসতাম। চুপচাপ। মাঝে দুই-একটা কথা বলতেন। শিমুলটা কাঁদতো খুব। আমার ছোট ভাই শিমুল। ওর ভালো লাগতো না এই বাড়ি। কোথাও না।
এবার আব্বার পোস্টিংটা এখানে হয়েছে বলে আমরা সবাই অবাক কিন্তু খুশি! অথচ শিমুলের একদমই ভালো লাগছে না! এখানে কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ওর। আব্বার কথা অমান্য করার উপায় আমাদের কারও নেই। আমারও কি নেই? কী জানি! সারাদিন বাড়িতেই থাকি আমি। পড়াশোনা আর ভালো লাগে না। বিএ পাস করার পর আর ভর্তি হইনি কোথাও।
দোতলার এ ঘরটা আমার পছন্দ। আলতা ফুফু থাকতো এ ঘরে। এখন আমি থাকি। এখান থেকে লোহার দরজা দেখা যায়। জানালা সরিয়ে বোগনভিলার ঝোপটা একবার দেখি। কেমন মলিন হয়ে আছে! আহা! যত্নের অভাব হয়তো। এ বাড়িতে আর তেমন কেউ থাকে না। কে আর যত্ন নেবে! রাস্তার অল্প আলোয় দরজাটাকেও চেয়ে চেয়ে দেখি। জং ধরেছে ওর শরীরের কোথাও কোথাও। ভাবছি। আমি ভাবছি। এখন থেকে আমিই যত্ন নেবো।
দুই.
কুয়াশায় ঢাকা সব। ঘুম থেকে উঠে দেখি। এ বাড়ি, বোগনভিলা, রাস্তা, এমনকি দরজা। স্নিগ্ধ , শান্ত একটা সকাল। আমি কী স্বপ্ন দেখছি। নাহ! এত ভোরে উঠি না কখনো! শীতের সকাল। একটা শাল জড়িয়ে নিচে নামছি। সিঁড়িতে দেই ‘তিনটা ফুল, টুকরো বোগনভিলা। কাল রাতে আমি কি ফেলে গেছি? হয়তো ওড়না থেকে খসে পড়েছে। দরজার পাশে এসে দাঁড়াই।
ওপাশে কেউ কি আছে? এ কথা ভাবতে ভাবতেই দরজা খুলি। হাতলটা কী হিম হয়ে আছে এখনো! কুয়াশা কাটেনি। অল্প একটু পরিষ্কার হয়েছে আকাশ। দরজা খুলে বাইরে তাকাই, কিসের এই শব্দ! ছিঃ! কি দেখছি? হুডি পরা এক ছেলে কি না এখানে দাড়িয়েই? তাও এই দরজার এক পাশে! আমি কিছু বলতে গিয়েও গলা শুকিয়ে যায়। জোর করে কথা বলি, এই যে, কী করেন এখানে? খবরদার!
আমি আর কিছু বলার আগেই লোকটা মুখ ঘুরিয়ে নেয়। তাও আমি ওর মুখটা দেখি। দাড়ি আছে অল্প, নাক টিকালো, গভীর চোখ। আমি পেছনে হাঁটতে থাকি।
—এই যে, এই যে আপনে, এটা কী করসেন? দাঁড়ান!
ছেলেটা আরও দ্রুত হাঁটে। আমি যাই পেছন পেছন। ছেলেটা দৌড়ায়! আমিও যাই! দ্রুত! আর পারি না। পায়ে কী একটা বিঁধলো! হায়, আমি তো খালি পায়ে দৌড়াচ্ছি! ছেলেটা একবার পেছন ঘুরে তাকালেও মুখটা স্পষ্ট নয়। আমি চিৎকার করি। মোড় ঘোরে সে। নিমিষে হারিয়ে যায়। আমি হাঁপাচ্ছি। ফিরে আসি বাড়িতে। দরজার সামনে এসে দাঁড়াই। রতন কাকু আসেন। নিচের বাথরুম থেকে বালতি ভরে পানি আনেন। মগ দিয়ে দরজার পানি ঢালি।
—রতন কাকু , এইখানে দেন পানি। অসভ্য লোক, আর জায়গা পেলো না!
—সিমলা তুমি ঘরে যাও তো মা , আমি ধুইয়া দিবো।
—ব্যটার ঘর বাড়ি নাই? মানুষের বাড়ির সামনে পেশাব করে?
—এই রকম কত মানুষ আছে, কতজনরে পাহারা দিমু, কও!
বাথরুমে পা ধুতে গিয়ে দেখি খানিকটা কেটে গেছে। আগে টের পাইনি। বসে আছি। ঘরে। বিদ্যুৎ নেই। ব্যথা লাগে পায়ে।
এক পা, দুই পা হাঁটি। ব্যথা পাই তাও। পায়ে। বিদ্যুৎ এলো এই মাত্র। পুরনো একটা অ্যালবাম পড়ে আছে। হাতে ধূলা লাগে।
টেবিলে যে ধূলার পাহাড়! অনেকদিন হয়তো আসেনি এই ঘরে কেউ। ছোট মেয়েটাকে চিনি আমি। আর পাশের ছেলেটাও। এ তো আমি আর শিমুল! আচ্ছা, ছবিতে পাশের মেয়েটা বোধ হয় আলতা ফুফু! ইস্ কী সুন্দর ছিল দেখতে! স্টুডিওতে তোলা আরেকটা ছবি আলতা ফুফুর। কিন্তু ছেঁড়া! পাশ থেকে কারও ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে! মার কাছে নিয়ে যাবো দেখাতে। কাল ভোরে। পাশের ছবিটা কার হতে পারে? ভাবছি।
আব্বা-আম্মার বিয়ের ছবি। আরও পাতা ওল্টাতেই দেখি আমার ছবি, লোহার দরজার পাশে। বোগানভিলা পড়ে আছে, আর আমি তাই তুলে নিচ্ছিলাম। সাদাকালো ছবি, ফুলগুলোকে বিন্দুর মতোই দেখাচ্ছিল। সম্ভবত আব্বা তুলেছিলেন ছবিটা। পাতা উল্টাই আবারও। দাদা-দাদি আর বড় আব্বা। একটা গ্রুপ ছবি। পরিবারের সবাইকে নিয়ে। এখানে অনেকে বেঁচে নেই। কিন্তু আলতা ফুফু? আলতা ফুফু কোথায়? কার কাছে বলবো, কার কাছে জানতে চাইবো?
তিন.
সকালে রতন কাকুর সঙ্গে দেখা। চা খাচ্ছেন। হাতে সাদা একটা মগ। ছোটবেলার কথা হঠাৎ মনে পড়ে যায়। দাদারও এমন একটা মগ ছিল। ধোঁয়া ওঠা চা খেতেন সকালে। আমি আর শিমুল পাশাপাশি বসে থাকতাম। দাদার পাশে।আমাকে আর শিমুলকে দিতেন মাঝে মাঝে এক-দুই চুমুক। রতন কাকুকে দেখে অনেকদিন পর মনে হলো সেই দিনগুলোর কথা।
একটু আগে আম্মাকে নিয়ে বাইরে গেলো শিমুল। সকালে হাঁটতে পছন্দ করেন আম্মা। ক্যাচচচ! দরজায় একটা শব্দ হলো আম্মা বেরিয়ে যাওয়ার সময়। আম্মার কালো শালটা কাঁধে তুলতে গিয়ে কী করে যেন আংটায় আটকে গেছে। শিমুল উঁচু হয়ে খুলে দিলো শালের সুতোটুকু। দরজাটা খোলে রেখেই চলে গেলো শিমুল। দরজা বন্ধ করে রতন কাকুর পাশে গিয়ে বসি আমি। চায়ের শেষ চুমুক দিয়ে কাপ নিচে রেখেছেন কেবল। আমি জিজ্ঞেস করি, রতন কাকু, একটা কথা জানতে চাই, আপনি হয়তো জানেন।
—বলো মা।
—আলতা ফুফুর কথা।
—কী শুনতে চাও?
—আপনি যা জানেন।
—তোমারে কেউ কিছু কয় নাই?
—না। যখন ছোট ছিলাম, তখন বলতো আছে আলতা ফুফু, বেড়াতে গেছে। চলে আসবে। এখন আর কিছু বলে না কেউ।
—তোমার আম্মা?
—না। জানতে চাইলে আম্মা আর আব্বা কষ্ট পান, এটা বুঝি। আপনি বলবেন রতন কাকু?
—তুমি আর শিমুল না আলতার সাথে ঘুরে বেড়াইতা? আমার মনে আছে। আহা রে মাইয়্যাটা! তুমি জানো মা, ওই গেইটের আংটার মধ্যে বেলিফুলের মালা পাইসি আমি কয়দিন। আলতারে দেখসি সকালে আইসা নিয়া যাইতে। চুপচাপ নিয়া যাইতো।
—বলেন আমি শুনতেসি।
—আলতার বইয়ের ভিতর চিঠি পাইসিলো তোমার দাদি। নয়াপাড়ার এক পোলার সাথে সম্পর্ক আসিলো। তোমার দাদা প্রথমে কিছু কয় নাই। দাদি বকাঝকা করসে অনেকবার। কথা শুনে নাই। পরে তোমার দাদা দুজনরে একসাথে দেখসে সিনামা হলের সামনে, কলেজ পলায়া গেসিলো। উনি বাড়ি আসার পর অনেক রাগ করসিলো আলতার সাথে। মারসে ওরে অনেক। (রতন কাকু চুপ করে থাকেন)।
—বলেন, তারপর?
—দৌড়ায়া নিচে নামে আলতা, তোমার দাদাও।আলতা লোহার গেটটা খুইলা বাইরে যাইতে গেলে তোমার দাদা ওরে থামাইতে গেলে আলতার মাথায় বাড়ি লাগে অনেক জোরে। তরতর কইরা রক্ত পরতাসিলো। আলতা কানতে কানতে বাড়ি থেকা বাইর হয়া যায়। আর কোনোদিন ফিরা আসে নাই।
—ওই ছেলের কোনো খোঁজ?
—নাহ, ওর ওইখানে যায় নাই, আমরা খোঁজ নিসিলাম। মানুষে কয় অনেক রক্ত পরতাসিলো, মাথায় ওড়না পেচায়া একটা বাসে উঠসিল আলতা। আর কিছু জানতে পারি নাই!
—আমাদের কাছে এই কথাটা সবাই লুকালো কেন কাকু? শিমুল আর আমার কাছে!
—কষ্ট দিতে চায় নাই তোমাগো। আলতা ফুফুরে কত ভালোবাসতা তোমরা সিমলা মা, আমিতো দেখসি।
—কাকু, আলতা ফুফু ফিরে আসে নাই কেন আর?
—মাইনষে কয় অনেক রক্ত পরতাসিলো, ওই সময় স্টেশনে আমার এক ভাতিজা আসিলো, ও দৌড়ায়া আইসা খবর দিসে আমারে, আমি গিয়া দেখি বাসটা নাই! সিমলা মা, তুমি কষ্ট পাইও না, আমার কাছে লাগে আলতা আর বাঁইচা নাই। এত রক্ত ঝরসে মাগো! ও বাঁচবো কেমনে! আমাগো আলতা!
—আমার বুকটা ভার হয়ে আছে রতন কাকু! কাকু, দাদা কি একটুও?
—অনেক আফসোস করসে পরে! কানসে অনেক দুই জন। তোমার দাদি তো পাগল হয়া গেসিলো। আলতা উধাও হওনের পর নয়াপাড়ার পোলাটা মাঝে মাঝে আসতো, এই গেইটের সামনে দাঁড়ায়া থাকতো। অনেক ভোরে আসতো। তোমার দাদা দেখসে ওরে, কিছু কইতো না। একদম চুপ হয়া গেসিলো তোমার দাদাভাই। একবার দেখি আংটাতে বেলিফুলের মালা। আলতার জম্মদিন আসিলো ওইদিন। সারাদিন দাঁড়ায়া থাকলো পোলাটা।
চার.
জানালায় বসে আছি। পরদা সরাতেই নিচে দেখি ছেলেটাকে। সেই হুডিপরা ছেলেটা। টিকালো নাক-গভীর চোখ, তবে আজ দাড়ি নেই। আমি চিনতে পারি। দাঁড়িয়ে থাকে সে। কিছুক্ষণ। তারপর একবার ওপরে তাকালে আমাকে দেখে সে। চোখের দেখা। তবে ক্ষণিকের জন্য।
নিচে নেমে আসি আমি। দরজা খুলি। চলে গেছে সে।
হাতটা হাতলে রাখি। কুয়াশায় ভিজে আছে। ঠাণ্ডা আঙুল ভেদ করে রক্তে জমাট বাঁধে। তারপর গলা, কাঁধ বেয়ে মাথায় এসে থমকে দাঁড়ায়। তাও হাতল ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বিশাল এ দরজায় কী এক নেশা আছে আমার! আমি জানি না। একবার আলতা ফুফু আম্মাকে বলেছিল, ভাবি, তুমি কি জন্মের পর ওর নাড়ি এই লোহার গেইটের নিচে পুঁতে রাখসিলা? সিমলা তো সারাদিন এই গেইটের আশপাশেই থাকে।
—কী জানি? আম্মা জানে! ও তো এই বাড়িতেই হইসে। আমার শাশুড়ি আম্মা কি করসেন, সেটা কি আর আমি জানি?
আমি তখন অনেক ছোট, আম্মার আঁচল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, কথাটা আজও মনে পড়ে।
এ বাড়িটা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। গতকাল বিকালে আব্বা অফিস থেকে ফিরে এসে জানালেন। নতুন বাড়ি তৈরি হবে পাশেই। আব্বার সঙ্গে কথা হয় না আমার। তবে আজ একটা আবদার করলাম। লোহার এই দরজটা খুলে নিয়ে নতুন বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে। ওখানে নতুন কোনো সদর দরজা আমি চাই না! শুধু একবার কারণ জানতে চাইলো আম্মা, বললাম, আলতা ফুফু।
ছুঁয়ে দেখি আরেকবার হাতলটা। চকচকে সিল্কের মতো। আঙুল পিছলে যেতে চাইলেও আমি চেপে ধরি। আংটাতে হাত রাখি। এখানেই বছর পুরনো শুকিয়ে যাওয়া একটি বেলিফুলের মালা কতদিন জড়িয়ে জাপটে ধরে আছে, কে জানে!