বাঁশখালীগামী বাসে পথ অতীত হতে থাকে সোঁ সোঁ করে। আমার কেবলই মনে পড়ে বন্ধু রোমানের মুখ। অমন চঞ্চল তরুণটি কি মারা যেতে পারে টুপ করে! কী আর করা? উপরঅলার খেল তো বোঝার সাধ্য নেই আমাদের। বাস চলতে থাকে তার গন্তব্যে, আমি উল্টাতে থাকি রোমানের ডায়রি—যেটা গতবার শহরে আমার বাসায় থাকতে সে ভুলে ফেলে গিয়েছিল। কই, এতদিন তো ডায়রিটা পড়িনি! একজন মানুষ অতীত হলেই কি ভেসে আসতে থাকে তার স্মৃতিচিহ্ন! আমি পড়তে থাকি—
মা,
আমি জানি তুমি কষ্টে আছ। কয়েকদিন ধরে আমারও মন খারাপ খুব। রোগ তোমাকে ঘিরে ধরেছে—বয়সকালে যা হয় আর কী! বয়স বলে এড়িয়ে যাওয়া ছাড়া কোনো অজুহাত খোলা আছে আর, বলো! অথচ তোমার চেয়েও বেশি বয়সের মহিলারা দিব্যি আরামে আছে শারীরিক কী মানসিকভাবে। বাবা চিরদিনই উঁচু বৃক্ষটির মতোন। তার যত ব্যথা, দিনান্তের যত বেদনা, সবই যায় তোমার ওপর দিয়ে। বাবা বলে যায়, তুমি শুনে যাও নিঃশব্দে। তার সামনে মুখ খোলার সাহস আমাদের শিশুকালে দেখিনি, এখনো নিশ্চয়ই নয়। বাবা জানে, আমাদের যত ব্যর্থতা—সবই তোমার। কিছুটা উজ্জ্বলতা—এই ধরো, ভালো রেজাল্ট কিংবা দশজনের মতো পাড়ার দোকানে বসে আড্ডা দেওয়ার অভ্যেস, মুখ খারাপের ব্যাপারগুলো যা নেই, সবই বাবার কাছ থেকে পাওয়া। ফলে রক্তে হয়ে সন্তানদের সবটুকু ব্যর্থতা তোমার, সাফল্যের যতকিঞ্চিৎ—সবই বাবার। তখনো আমার জন্ম হয়নি। পরে বড়মার মুখে শুনেছি, তোমার একটা সন্তান হয় কোনো এক দৈব কারণে সে আর বাঁচে না। তার দায়ও তোমার কপালে ওঠে! বাবা মন খারাপ করে, তারই ভাবী আমাদের বড়মাকে বলে—তোমার জা বুঝি অলুক্ষণে। তিন তিনটা ছেলে মানুষের মরে! খুব কম বয়সেই তোমার বিয়ে হয় মা। তোমার কিশোরী সইরা যখন স্কুলে মধুর দিন কাটাচ্ছে, খেলে বেড়াচ্ছে তখন তুমি আমার মেম্বার নানার সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে আমাদের ঘরে। তারপর থেকেই রান্নাঘরে কাটে তোমার সময়, তোমার সংসারজীবনের বয়স, আমার বড় ভাইয়ের বয়স হিসেবে ধরলে প্রায় বত্রিশ বছর। আমারই বুদ্ধিকাল থেকে দেখে আসছি, চুলা থেকে তোমার মুক্তি মেলেনি। বছয়ে দুয়েকবার বাপের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ আসে দুদিনের জন্যে। তখন তোমার মুখ কত উজ্জ্বল হয়ে যায়! তখন একমাত্র ফুফি আসতেন আমাদের বাড়িতে। দুটো দিন তার হাতের রান্না খেতাম আমরা। অনেকবার ফোনে বলেছো, রান্নাঘর তোমার কাছে নিয়ে আসে বেদনার ভার, তা আর সইতে পারছ না। তবু নিরুপায় দেখতে হচ্ছে বড়ছেলের বউ থাকা সত্ত্বেও, তুমিই আমাদের চিরপরিচিত রান্নাঘরের একমাত্র রাঁধুনী।
আহা, এমন করে ভালোবাসতো সে মাকে! ডায়রির পৃষ্ঠা উল্টাই আরেকটা। আমার কাছে কেমন জানি অপরিচিত লাগে ক্রমশ, রোমানকে। হায় খোদা! তুমি মানুষকে এমন বেদনাময় উপহার দিয়ে রাখো, নীরবে? পড়তে থাকি পরের পৃষ্ঠায়—
তোমার অভিযোগ একেবারেই অমূলক নয়, মা। জানি আমার শহরবাসের দিন পনের যাওয়া মানেই তোমার কাছে দুই মাস। ছোট্টটি হয়ে তুমি ফোনে অভিযোগ দাও—তোর মা নেই ঘরে। আসার দরকারও নেই তোর। বিশ্বাস করো মা, তখন আমার কলজে ছিঁড়ে যায়। কেবলই মনে পড়ে প্রথম দিন, এসএসসি পাসের পর ভীরুপায়ে উপজেলার বাস কাউন্টারের দিকে যাত্রা। সঙ্গে পাড়াতো মামা রিদোয়ান। তুমি কাঁদছ, কাঁদছ আর চোখ মুচছো। আমিও কাঁদছি। এই প্রথম ঘরের বাইরে যাওয়া। পড়শীরা মনে মনে ব্যথিত। কেউবা হেসেটেসে বলেই দিলো—মেয়ে না তো তোমাদেরটা, ছেলেদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। চাটগাঁ শহর আর কদ্দুর। ওই তো দেখা যায়। গাড়িতে দুই ঘণ্টার মামলা। সেদিন একটু একটু বৃষ্টি হচ্ছিল। বিকেলে মেঘমেদুর প্রকৃতি সাক্ষী রেখেই আমার শহরযাত্রা। তোমাকে দেখিনি মা, সকাল থেকে দুপুর—প্রতিটা ক্ষণই ছিল যন্ত্রণাদায়ক। পড়ার টেবিল, শোবার রুম, পুকুরঘাটের পেয়ারা-আমলকি গাছ সবই আমাকে ডাকছিল, কী সব বলে যেত কানে কানে। বন্ধু তৌহিদ সকাল থেকে আমার সঙ্গে—কত রকমের সান্ত্বনা সেদিন ওর মুখে ছিল! ভেতরে ভেতরে সেও কাঁদছিল। সেই জন্মগ্রাম—যেখানে সবকিছু; কেন যেতে চাই না মা, জানো? প্রতিদিনই তোমার সঙ্গে কথা হয় তো! তোমার যেমন চুলোঘরে ঢুকতে মন চায় না মা, আমারও মন চায় তালইবাড়িতে বেড়াতে যেতে। তোমার আদরের ছেলে, তিন তিনটা সন্তান মারা যাওয়ার পর যার আগমন, সে কি আর মুখ রাখলো আমাদের! পিরিতি করে বিয়ে অনেকেই করে, তারটা আলাদা। গেল তো চামারের ঘরে, বউটা তার সংসারী হলে হতো। তা আর হলোটা কই? তাহলে কি তোমার রান্নাঘরে যেতে হয় মা? বরাবরের মতো বাবা এ বিষয়েও দোষ দেয় তোমাকে। বলে, তোমার ছেলে কাম এক্কান করছে! গ্রামে গেলে, বন্ধুরা ঠাট্টাছলে জানতে চায়, ভাবীর হাতের রান্না কেমন? তাছাড়া আমাদেরই বাড়ির পাশের কুচক্রী মানুষগুলো দেখলে কেমন যে লাগে! সম্প্রতি যোগ হয়েছে বেকারত্বের বিবমিষা। এমএ পাস করে কেউ বসে আছে গত দেড় বছর যাবত, তাও তো তোমাদের প্রিয় ছেলেটি, নিশ্চয়ই তোমাদের গ্লানিতে লাগে, মা? পাশের বাড়ির মোজাম্মেলের চাকরি হলো আমারই হাতেগড়া ভাগিনার সুপারিশে এবং তার চাকরিজনিত আনন্দ কতটা বেপরোয়া, তা আমি ভালোই জানি, মা। মোজাম্মেলের বাপ, শালা জনমভর তিলকে তাল বানানোর ধান্ধায় থাকে। ছেলের বেতন যা হোক, পোস্ট যা হোক—এমনকি তার থার্ডক্লাসকেও সে বানিয়ে ফেলে এলাকার সেরা গসিপ। ভাগিনার সুপারিশটা কেমন বোঝোনি, মা? বড়মার সবচেয়ে ভালো মেয়েটি—শানুপা, তার ছেলে জিকু—যাকে শহরে আনা, কলেজ ভর্তি, পড়ানো সবটাই ছিলো আমার অলিখিত দায়িত্ব, সে আঙুল ফুলে বটগাছ, রীতিমতো সাহেব। শিল্পপতি গ্রুপের খাস খাদেমের খাদেম ভাগিনা আমাদের। শিল্পপতির আবার বেশুমার প্রভাব। ওখানেই মোজাম্মেলের চাকরি। আমিও কি ভাগিনাকে বলতাম, দেখো মামার একটা… অ্যাও কি হয় মা! আমার পোলাতুল্য ভাগিনাকে আমার সুপারিশ করতে বলবো! তারচে, বাবাকে দেখিনি কোনোদিন ভেঙে পড়তে, তার সন্তান হয়ে আমি কিভাবে ভেঙে পড়ি? দুয়েক জায়গায় আমাকেও ডেকেছিল, যাইনি। প্রিয়দের কেউবা ডেকেছিল তাদের ফার্মে, যাইনি। যে ব্যথা মোজাম্মেলের বাপ গালের গুণে দিয়েছে তোমাদের তা সরানোর দায়িত্ব আমার, আমি ভালো করেই জানি মা। এজন্যই অপেক্ষা। বাড়ি না-যাওয়া, অনেকটা অসামাজিক হয়ে ওঠা।
মনের পর্দায় গাঢ় হয়ে দেখা দেয় বন্ধুর মুখ। সেবার যখন আমার বাসায় রোমান আসে, তাকে জিজ্ঞেস করি—তোকে ফোনে পাই না কেন? কিসে এত ব্যস্ত থাকস? সে হাহাহা হাসি দিয়ে বলে, জানোস না, আমার চাকরি এখন চাকরি-খোঁজা! সারাদিনটা চাকরি খোঁজাতেই খতম। হাহাহা, কিসের ফোন, কিসের প্রেম! ছেলেটা এমন করে বলতো, না হেসেই পারা যায় না! আবারও চোখ দেই তার ডায়রির পাতায়—
এই শহরে সুবিধাবাদের অনেক মিছিল আমার সামনে দিয়ে গেছে, মা। চাইলে অনায়াসেই ভিড়তে পারতাম। ওসবে আমার আস্থা নেই। ফলে লাভালাভের হিসাবে যেতে হয়নি, বেদরকারি কথা আর ওয়াদার মাধ্যমে নষ্ট করতে হয়নি ব্যক্তিত্ব। তোমরাই তো বলো, মা—ছেলেটি একরোখা। ওটাই আসলে আমার শক্তি। ওটার জোরেই পরাজিত হয় সাময়িক যত রঙঢঙ। এই শহরে বাবার কিংবা মায়ের কোনোদিক থেকেই কোনো আত্মীয় ছিল না আমার—নিজের একটা পরিচয়ের জন্য নিরন্তর সংগ্রাম আর শ্রমের ভেতর দিয়ে যাওয়ার বিস্তার শহুরে রাস্তাটায় করে দিয়েছে। কাউকে অবিশ্বাস করলেও ওই সড়কে, ওই বন্ধুত্বে, ওই শ্রমে আমার দারুণ শ্রদ্ধা। তবু ফোনকলে তোমরা জেনে গেছ, কেউ একজনকে ভাইয়া বলে ডাকি। প্রবাসী বড় ভাইয়ের চেয়েও বেশি শোনো তার কথা—আমার মুখ থেকেই। মোহ দিয়েই দুনিয়াযাত্রা আদমের। মোহের নানান ক্ষেত্র হা-মুখে ডাকে আমাদের। তার ব্যক্তিত্ব, তার সরলতায় আমি মুগ্ধ আছি বরাবরই; সোনালি সময়ের ক্ষয় কি এমনে করে, মা? বন্ধুদের অনেকেই বলেছে—ফিরে এসো, তোমার যোগ্যতা আর সময় কোনোটাই ফেলনা নয়। কোনোটাই নয় ধার দেওয়ার মতোন। চাকরি ধরে নিয়ে কেউ কেউ নানান কথা বলে, তাও আমার অগোছরে নয়, তবু বারবার কানে বাজে তোমার সেই বাণী—যাকে বুক দিবি, তাকে পিঠ দিবি না। অকস্মাৎ অস্বীকার করতে পারি সব, ওটা আমার জায়গাও নয়। ভাইয়ার পরিবারে আমার যে অবস্থান, তা সন্দেহাতীত। তার কাছে স্নেহ অফুরান। মানুষ কি এতই সৎ হয়, মা? আমারও একটা কিছু আছে বৈকি! ওই যে, তোমাকে পলে পলে অপমানিত হতে হয় মোজাম্মেলের প্রতিতুলনায় তারই শোধ চাই, জানি ভাইয়ার সে ক্ষমতা আছে। তিনি পাইয়ে দিতে পারেন সোনার হরিণ। অথবা তিনিও ব্যর্থ হতে পারেন সমসাময়িক অসুবিধা আর আলসেমিতে। তখন ফিরে পাবো না এসব সময়, ক্যালেন্ডারের এতটা দিন। কাউকে দোষারোপ করার সুযোগ আমার নেই, হয়তো আরও অসামাজিক হবো তখন। সন্ন্যাস ব্রত নিয়ে দূরে ঠেলে দেব তোমাদের স্বপ্ন। একটা ছেলে নষ্ট হলে সমাজের কী-ইবা আসে যায়? একটা ছোটভাইয়ের আবদারে গুরুত্ব না দিলে বড়লোকদের কোনো ক্ষতি হয় না, মা! তারও হবে না হয়তো। প্রতিদিনই কাগজে পড়ি আত্মহত্যার খবর; বংশে পূর্বপুরুষদের রেকর্ডে আত্মহননের গৌরব নাই জেনে গেছি। ঠুনকো বেদনাভারে আত্মহত্যা করে অসীম গ্লানির অধিকার আমি নিতে চাই না বলেই এড়িয়ে যাই বেহিসাবী মনের পাগলামিটুকু। ওতে আস্থা নেই আমার। তারচে বেঁচে থাকাটাই জরুরি। এক জীবনে কী আছে, কী পারি, তা দেখিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায়ে থাকুক না হয় আগামীটা, কী বলো মা!
আমার বাস্তবমাখা মনটিও কেমন যেন বিষিয়ে ওঠে—নিজেকে আবিষ্কার করতে থাকি অসহায় গুহায়! কী হয় এক জীবনের চালাকিতে? কী এমন পাওয়া যায় ধুরন্ধরপনায়? এই যে, রোমান চলে গেল, তার যে হাহাকারে ভরা ডায়রির পৃষ্ঠা তার কী এমন মূল্য আছে সমাজের বিষে! আমার চোখের জলে ভিজতে থাকে বন্ধুর ডায়েরির পাতা। তবু মন বলে পড়ো, পড়তে থাকি এতদিনের অনাবিষ্কারের ধূলোমাখা পরিচয়ে—
আমার মন চায়—মা-বাবার সঙ্গে ঘুমাতে, একসঙ্গে বসে খেতে। আশৈশব যে দূরত্ব বাপ-বেটায় তা কি আর সহজে পার পায়? কিন্তু বাবার সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য খুব ভালো না। জোয়ান ছেলে তার ওষুধ খরচ দিতে পারি না—এ গ্লানি মাটিতে মিশিয়ে দেয় আমাকে। এত বড় পাথর বুকে নিয়েও হাসতে হয় আমাকে, চালিয়ে নিতে হয় অনেকানেক দায়িত্ব। ওসবের সামাজিক মূল্য নেই, আর্থিক যোগ নেই। তবু কী এক নেশা আমাকে পাইয়ে বসেছে, মা। তার জন্যও তোমাকে কম শুনতে হয়নি কটুকথা—বাবার মুখ থেকে। প্রায়ই ডিম-আলুযোগে রাতের খাবার গ্রহণ করি বলে অভিযোগ করো—ছেলেটা এভাবেই নষ্ট করলো শরীর। আসলে জানো কি মা, ছোটবেলা থেকে ভালোটুকু খাইয়েছো বলেই অমন লাগে তোমাদের; শহরবাসে ব্যাচেলর মাত্রই জানে, আলু আর ডিমের চলমান ফ্যাক্টরি নিয়েই তার চলাচল, জীবনধারণ। এরচেয়ে বেশি অনেক সময়েই সম্ভব হয় না, যেমনি হয় না প্রতিদিন মশারি টাঙানো। কেবলই মনে পড়ছে ছোটভাইটার মুখ। কিছু একটা গতি হলেই সে বলতে পারবে তার মেজোভাইয়ের কথা। তার যতসব চাহিদার কথা তখনই বলতে পারবে আধোশরমে। মা, টেবিলে, খাটে, ফ্লোরে রাখা বইগুলোই জানে আমার বেদনা, ওরাও মাঝরাতে কাঁদে আমার চোখজোড়ার সাথী হয়ে।
মানুষের মায়েরা শিক্ষিত, অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। আমার অক্ষরজ্ঞানহী মায়ের উজ্জ্বল বিভায় আরও ভিজতে চাই আমি। ঘড়ির কাঁটা চেনো, তবু কতবার রাত একটাকে বলেছি সাড়ে দশটা! সময়ের জ্ঞান তোমার ছিল, হয়তো ছেলেকেই দিতে অবারিত স্বাধীনতা। বাড়িতে রাখা বইগুলো ভালো আছে মা? জালালী কবুতর আর চড়ুইয়ের বাসা এখনো আছে? পুকুঘাটে আমার হাতে রোপণ করা গোলাপ, রজনীগন্ধা গাছগুলোর কেমন হলো, তা-ও জানি না। কী আর করা! এই চিঠি কর্ণফুলীতে ভাসিয়ে দেবো, সাকিনহীন। প্রথম প্রথম শহরবাসে বিকেলে খুব বিষণ্ন লাগতো আমার। অশ্রুরা জলে মিশে হয়তো চলে যেত বঙ্গোপসাগর কিংবা আমাদের জলকদরে। জলকদরে যাওয়া মানে তোমার কাছে যাওয়া, মা। চিঠিটাও যাবে তোমার কাছে। নোনাজলে ছিঁড়ে যাবে কাগজ, মুছে যাবে লেখা কিন্তু এক সন্তানের আকুতি কি কখনো মুছতো পারে, মা! শিগগিরই তোমাদের দুঃখ অবসানের চেষ্টা করছি। দোয়া করো, মা!
সালামসহ
তোমার রুমো।
রোমান কি তবে কবি ছিল, গল্পকার না কি! এভাবেই লিখে যায় কেউ জীবনের পরাজয়! এভাবেই চলে যায় বড় অকালে কেউ কেউ? বাস চলছে, চলুক। ডায়েরিটা না হয় আমার কাছেই থাক, ব্যাচেলর বাসায় রাখা কাপড়ের ট্রাংকে। শুনেছি রোমানের যখন প্রাণপাখি উড়ে যেতে প্রস্তুত, তখনো তার হাতে ধরা ছিল একটা আবেদনপত্র। হয় চাকরির, নয় ওপারের…