কোন কথাটা কখন কোথায় বলতে হবে, সেটা বোধ হয় লুবনার জানা নেই। সে গ্রামের মেয়ে। একবছরও হয়নি শহরে এসেছে। এরইমধ্যে অনেক কিছু শিখে ফেলেছে না কি আগে থেকেই তার সবকিছু শেখা ছিল তা বোঝার উপায় নেই। কেউ এসব বিষয় নিয়ে কখনো মাথা ঘামায়নি। প্রয়োজনও ছিল না। কিন্তু সে এমন একটি ঘটনা ঘটিয়ে ফেললো বা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়লো তা সবার কল্পনারও বাইরে ছিল। সবাই তাকে সাদাসিধে সরল মেয়ে জানতো। কিন্তু তার সরলতায় কত চাতুর্য ছিল তা উদ্ধার করা রীতিমতো রহস্যগল্পের হার মানা অধ্যায় বলতে হবে। রাসিক আহমেদের সঙ্গে যখন লুবনার বিয়ে হয়, তখন তাকে গ্রামের একটি সাধারণ কিশোরীর সঙ্গে তুলনা করা যেতো। রাসিক তাকে দেখে এতটাই পছন্দ করেছিল বা ভালোবেসে ফেলেছিল যে, বিয়েটা করতেও বিলম্ব করেনি। বিয়ের পর শহরে এনেই রাসিক বুঝে নিলো এত সহজ সরল মেয়ে পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি নেই। কথায় কথায় লুবনা বলে, এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে। এটা তার মুদ্রাদোষ। তার কথার শেষে ও মাঝখানে এমন একটি সংলাপ সবাইকে আনন্দ দেয়। বিরাট একটি বিশ্রী ঘটনা ঘটিয়েও লুবনা যখন বলে, এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে—তখন বুঝতে হবে সমস্যা আছে। সমস্যা তার মাথায় অথবা মনে। রাসিক শুধু একটি তোয়ালের গন্ধ থেকে আবিষ্কার করলো সমস্যা না কি অভ্যাস। বাথরুমে হাত মুখ মোছার একটি সাধারণ তোয়ালে এত অসাধারণ হয়ে উঠলো যে, তোয়ালেটি একনজর দেখতে সবারই ইচ্ছে জাগবে।
রাসিকের বড় বোন স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে এসেছে বাসায়। লুবনা তার নিজের ঘরে নিয়ে আপার সঙ্গে নতুন শহর দেখার গল্প করতে লাগলো। রাসিক তার ভগ্নিপতি ও ভাগনেকে নিয়ে বাইরের ঘরে কথা বলছে। লুবনা গল্প করতে করতে সাজসজ্জা বিউটি পার্লার কোনোটাই বাদ রাখছে না। আপাও মনোযোগ দিয়ে তার গল্প শুনছেন। নতুন বউ, শহরে নতুন—এই নতুনের মাঝে অন্যরকম আনন্দ আছে। লুবনা জিজ্ঞেস করে, আপা আপনি কি মুখে ক্রিম লাগান? আমি তো ও-লে ক্রিম লাগাই।
‘ওলে’ শব্দটা ‘হোলে’র মতো উচ্চারিত হওয়ায় আপা হেসে খুন। বলেন, ওখানে তুই কেমন করে ক্রিম লাগাস? মেয়েদের কি ওটা থাকে নাকি?
—ছি ছি আপা, আমি ওইটার কথা বলছি না। আমি বলতিছি ক্রিমের নামই ও-লে।
এবারও আপা হাসি থামাতে পারেন না। উচ্চারণটা একইভাবে করা হয়েছে।
—হাসতিছেন ক্যান আপা? আমি ভুল কিছু বলিছি?
—না না, ভুল বলিসনি। তবে আস্তে আস্তে সব শিখে যাবি।
আপা লুবনার ড্রেসিং টেবিল থেকে একটি পারফিউমের বোতল হাতে করে বলেন, তুই দেখছি এত দামি ডিওর পারফিউম ব্যবহার করছিস।
—এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে আপা?
আপা হেসে কুটিকুটি। বলেন, আমার ভাইটা যে তোকে খুব ভালোবাসে বুঝতে পারছি।
—কী যে বলেন আপা, এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে? আপনার ভাই তো আমাক ছাড়া ভাতটাও মুখে তুলতি পারে না।
লুবনার কথা শুনে আপা আবারও হাসেন। সহজ-সরল এমন একটি বউ ঘরে থাকা মানে যেন ঘরটাই আলোকিত থাকা। আপা লুবনার থুতনি ধরে আদর করেন। আদর পেয়ে লুবনা আপার বুকে মুখ গোঁজে। এরপর সবাইকে নিয়ে যত্ন করে নিজ হাতে রান্না করা খাবার খেতে দেয়।
সেই লুবনা এমন একটি কাজ করতে পারে ভাবাই যায় না। আজ আপা অবাক হয়ে অন্য এক লুবনাকে দেখতে থাকে। সেই লুবনা আর এই লুবনার মধ্যে পার্থক্য অনেক। একবছরও হয়নি অথচ এত পরিবর্তন কল্পনাও করা যায় না। অপকর্ম ধরা পড়ার পরও তার চেহারায় এতটুকু বিষাদ বা মলিনতা নেই। দুলাভাই উচ্চস্বরে বকাঝকা করছেন কিন্তু সে নির্বিকার। এই লুবনাকে কেউ আর ভালোবাসতে পারবে না।
ব্যাপারটা প্রথম প্রথম অবিশ্বাস্য ছিল। যে কারণে রাসিক অতটা গুরুত্ব দেয়নি। যখন গুরুত্ব দিলো, তখন তোয়ালের রহস্য উদ্ঘাটনে অন্য এক আবহ তৈরি হলো। একদিন অফিস থেকে ফিরে রাসিক পোশাক পরিবর্তন করে ওয়াশ রুমে গিয়ে চেঁচিয়ে ডাকলো লুবনাকে। লুবনা পড়িমরি করে দৌড়ে গেলে রাসিক বললো, এই তোয়ালে দিয়ে ঘামের গন্ধ বের হচ্ছে, তুমি তো এমন ঘামো না।
লুবনা মুখ এগিয়ে বললো, তাহলি কার ঘামের গন্ধ?
—মনে হচ্ছে কোনো পুরুষ লোকের।
—ছি ছি। এখানে পুরুষ লোক আসবি কোত্থেকে? তাহলি তোমার ঘাম। এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে?
—আমার ঘাম হবে কিভাবে? আমি তো মুখ ধয়ে মুখে তোয়ালেটা লাগাতেই গন্ধটা পেলাম। ধোয়া মুখে ঘামের গন্ধ থাকে না কি?
—তা হলি তোয়ালে নিজেই ঘেমেছে। এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে?
লুবনার রসিকতায় খুব মজা পায় রাসিক। তাছাড়া এখানে পুরুষলোক সে ছাড়া আর আসবেই বা কে? সে জানে ঢাকাতে লুবনার তেমন কোন আত্মীয়-স্বজনও নেই। লুবনা একটা সেলফোনও ব্যবহার করে না। রাসিক বাসায় থাকলে সে রাসিকের ফোন দিয়ে মা-বাবার সঙ্গে অল্প-বিস্তর কথা বলে। তার মতো এত সাদাসিধে সরল মেয়ে এ যুগে কমই দেখা যায়। সুতরাং রাসিক আর কথা বাড়ায় না। লুবনাকে জাপটে ধরে এনে বিছানায় ফেলে দেয়। তাদের জড়াজড়ি দুটি শিশুর খেলা যেন। লুবনা হেসে গড়াগড়ি যায় রাসিকের ভালোবাসা পেয়ে। দুজনের হাসির সঙ্গে মিশে দরজায় ঠকঠক শব্দ হয়। রাসিক লুবনার দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালে লুবনা শাড়ির আঁচল কাঁধে তুলতে তুলতে বলে, বোধহয় রাশেদা এসেছে। রাশেদাকে লুবনা তার গ্রামের বাড়ি থেকে এনেছে। মেয়েটির মা নেই। মা মারা যাওয়ার পর বাবা আরেকটা বিয়ে করেছে। রাশেদা তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করতে পেরেছিল। এরপর দ্বিতীয় মায়ের নির্যাতনে আর স্কুলে যেতে পারেনি। এখন এই ১৬ বছর বয়সে এ বাসায় এসে কাজের সুযোগ পেয়ে তার বেশ ভালো লাগছে। একথা জানিয়েছে লুবনাকে। লুবনা দরজা খুলে জিজ্ঞেস করল, কী বলতে এসেছিস?
কাঁচুমাচু হয়ে রাশেদা বললো, খালুজানকে নাস্তা দিতি হবি কি না, তাই জানতি আসিছি।
—হ্যাঁ, তুই নাস্তা রেডি কর, রাসিককে বলতিছি।
রাসিক তোয়ালের গন্ধটি একরকম ভুলে গিয়েছিল। কয়েকদিন পর আবার একই রকম গন্ধ তার নাকে লাগলো। সেদিনের মতো আবারও চিৎকার করে লুবনাকে ডাকলো। লুবনা মিষ্টি হেসে বললো, তোমার নাকেই সমস্যা আছে কি না বুঝতি পারছি নে। এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে? তুমি বরং নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে নাকটা দেখাও। আমি তো কোনো গন্ধ পাই নে।
—তাহলে আমি কি এই ঘামের গন্ধ ভাড়া করে এনেছি না কি?
—কিচ্ছু বলা যায় না। কার মুখে মুখ ঘষে আসো তা কি জানি? আমি রাশেদাকে ডাকি দেখি ও কোনো গন্ধ পায় কি না।
—থাক থাক, অত প্রমাণ লাগবে না। বিশ্রী একটা ঘামের গন্ধ হয়তো হাওয়ায় ভেসেও আসতে পারে হাই উইন্ডো দিয়ে।
—তুমি কি সন্দেহ করতেছো?
—আরে না না। কী যে বলো।
কিছুদিন পর আবারও তোয়ালেটাতে এমন গন্ধ পাওয়ায় সিদ্ধান্ত হলো নতুন তোয়ালে কেনা হবে। নতুন তোয়ালেটির রঙও অন্যরকম হলো। হালকা গোলাপি। আগেরটা ছিল নীল আর খয়েরি মেশানো। গোলাপি তোয়ালেটি রাখার পর দীর্ঘ দিন বেশ ভালোই কাটল। কোনো গন্ধ-টন্ধ নেই। রাসিক একটু রসিকতা করেই একদিন বললো, আসলে আগের তোয়ালেটির মধ্যেই ভেজাল ছিল, মাঝে মাঝে নিজ থেকেই গন্ধ বের হয়ে যেত। লুবনা হেসে বললো, তাই হবে হয়তো। তোয়ালের মধ্যি রহস্য থাকতি পারে তা আগে বুঝিনি।
কিন্তু গোলাপি তোয়ালেতেও একদিন সেই ঘামের গন্ধ পাওয়া গেলো। রাসিক এবার সন্দেহের মাত্রা বাড়িয়ে দিলো। চিৎকার করে বললো, এই গন্ধ কোনো পুরুষ লোকের তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সে ঘর থেকে তোয়ালে হাতে বের হয়ে রাশেদাকে ডাকলো। রাশেদা এমনই একটি মেয়ে, অনেক কিছু জেনেও না জানার ভান করে থাকে। রাসিক জিজ্ঞেস করলো, আমি অফিসে গেলে বাসায় কোনো লোক আসে না কি জানিস?
—না, আপনি ছাড়া কেউ আসে না।
—আরে, আমি তো বাড়ির লোক। বাইরের লোক আসে কি না, জানতে চাচ্ছি।
—বাইরের লোক আসে না, তয় নিচ তলা থিকা দারোয়ান বদরুল আসে বাজার করার জন্যি।
—আজ এসেছিল?
—আসছিল। কাঁচা মরিচ আর তেল কিইনা দিয়া গেছে।
—দাঁড়া, কাঁচা মরিচ আর তেল তোদের দুজনের ঐটার মধ্যে…
পিঁয়াজের চেয়ে ঝাঁঝিয়ে উঠল লুবনা, কী বললা তুমি? ভদ্র ভাষায় কথা বলো।
—নিচে থেকে এসে ভদ্র ভাষায় কথা বলছি।
—নিচে কোথায় যাচ্ছ?
—কাঁচা-মরিচ আর তেল কিনতে।
দ্রুত দরজা খুলে বের হয় রাসিক। লিফট রেখে ৫ তলা থেকে সিঁড়ি ভেঙে একরকম দৌড়ে নিচে নামে। বদরুল আয়েস করে বিড়ি টানছিল। রাসিককে দেখে দ্রুত বিড়ি ফেলে দেয়। ঠিক দ্রুতই সালাম দেয়।
—সেলামালাইকুম স্যার।
সালামের জবাব না দিয়ে রাসিক বদরুলের মুখের কাছে নাক নিয়ে শুঁকতে থাকে। বদরুল ইতস্তত বোধ করে মুখ এদিকে-ওদিকে ঘোরায়, একি করতেছেন স্যার?
—চুপ থাক? রাসিকের ধমক খেয়ে বদরুল আরও ঘামতে থাকে।
রাসিক একবার বদরুলের মুখ ও বুক শোঁকে, একবার তোয়ালে শোঁকে। একবার মুখ, একবার তোয়ালে। একবার বুক, একবার তোয়ালে। মুখ, তোয়ালে, বুক। বুক মুখ তোয়ালে। তোয়ালে-মুখ, মুখ-তোয়ালে। এরপর বদরুলের কলার চেপে ধরে লিফটে ওঠায়। বসার ঘরে এনে হইচই করতে থাকে রাসিক, এসব কতদিন ধরে চলছে শুনি?
বদরুল বলতে থাকে, আমি কিছু জানি না স্যার, আমি কিছু জানি না।
—তা হলে জানেটা কে শুনি? ওই হারামিটা জানে?
লুবনার উদ্দেশে বলায় লুবনা ক্ষিপ্ত হয়, আমি কী জানি?
বদরুল বলে, ম্যাডাম আপনি তো আমারে ডাইকা বাজার-টাজার করান।
—বাজার করাই বলে কি তুমি আমার বাথরুমে ঢুকে তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছবা? এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে? তোমারে আমি কতবার নিষেধ করছি ওই তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছবা না, তুমি শোনছো আমার কথা?
—ম্যাডাম আমি বুকা-শুকা মানুষ, গন্ধ-টন্ধ বুঝি না। আপনি যা কইছেন শুনছি। আপনি আমারে বাঁচান।
—চুপ কর?
লুবনার ধমক খেয়ে বদরুল চুপ করলে রাসিক শান্ত গলায় বলে, হ্যাঁ, সবারই চুপ করা উচিত।
দুই.
রাসিক ফোন করে তার বোন-দুলাভাইকে ডেকে আনলো। বদরুলকে নিচে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ রাসিক বুঝতে পেরেছে সে ধর্ষণের শিকার। তবু সে কেন এ কাজটির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলো সেজন্য শাস্তি পাওয়া উচিত। দুলাভাই-এর চিৎকার চেঁচামেচি ও ভয় দেখানোতে লুবনা নিজেই মুখ খুললো। প্রথম যেদিন তোয়ালেতে গন্ধ পেয়েছিল রাসিক, সেদিনই প্রথম বদরুল এসেছিল ঘরে। সেই থেকে তার আসা ছিল একরকম নিয়মিত। নতুন বউ লুবনা। তার সংসার নিয়ে অতটা খেয়াল থাকার কথা নয়। সেদিন লবণ ছিল না বলে বদরুলকে পাঠিয়ে পাশের মুদি দোকান থেকে লবণ আনিয়েছিল। বদরুল এসে যখন বাইরের দরজার সামনে দাঁড়ায় তখন তার নাক ঘেমে পানি গড়িয়ে পড়ছিল। মুখটাও ঘামে ভেজা। বদরুলের চেহারা যেমন ধবধবে সুন্দর তেমনি দেহের গড়ন। ফরসা মুখে নাকের নিচে একগুচ্ছ কালো মোচ লুবনাকে খুবই আকৃষ্ট করে তোলে। বদরুলকে সে আগেও কতবার দেখেছে, কথা বলেছে। কিন্তু সেদিনের মতো এত সুন্দর লাগেনি কখনো। লুবনা বলল, তুমি এইভাবে ঘামতিছো কেন বদরুল? এসো এসো, ভেতরে এসো—ঘাম মুছে একটু জিরায়া যাও।
বদরুল হাসল হে হে করে। লুবনা তার হাত ধরে একরকম টেনেই ঘরে ঢোকালো। রাশেদা তখন রান্নাঘরে। লুবনা বললো, তোমার ঘাম দেখে একটা কথা মনে পড়ে গেলো বদরুল। আমি যখন কলেজে যেতাম, তখন আমাকে দেখে অনেক ছেলেই এইভাবে ঘামতো, ঠিক তোমার মতো।
বদরুল আবার হাসল হে হে করে। লুবনা বললো, ওই ছেলেরা কেন ঘামতো, তা জানতি চাইলা না?
বদরুল হে হে করেই জানতে চাইল, কেন ম্যাডাম?
—তুমি বুঝি জানো না কেন? কেমন পুরুষ মানুষ তুমি? আসো তোমারে বুঝাই কেন ঘামতো?
এরপর বদরুলকে ডাকিয়ে এনেছে লুবনা। বলেছে, রাসিক তোমার গন্ধ ধরে ফেলিছে, তুমি আর ওই তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছবা না।
বদরুল হে হে করছে। ওর মুখে এই তৃপ্তির হাসি লেগেই থাকে। তারপরও বদরুল ভুল করে মুখ মুছেছে এবং তা টের পায়নি লুবনা। যখন নতুন তোয়ালে কেনা হলো, তখন দুজনেই বেশ সতর্ক ছিল। তবু কখন যে মনের অজান্তে মুখ মোছার কাজটি হয়ে গেলো কেউ বুঝতে পারেনি।
এসব কথা শুনে আপা চোখ কপালে তুললেন। তিনি যত সরল ভেবেছিলেন লুবনাকে, তার চেয়েও সে বেশি সরল। আপা ভেবেছিলেন রাশেদাকে সাক্ষী মানতে হবে, কিন্তু লুবনা নিজেই যথেষ্ট। সব ঘটনা বলার ফাঁকে ফাঁকেই বলল, এইটুকু না হলি আর চলবি কী করে?