এই অভিজাত এলাকায় পাগলিটা যে কোত্থেকে এলো? সকালে গরুর মাংস ঝুরি, তেল ছাড়া পরোটা আর সবজি খেতে খেতেই নাফিস সাহেব স্ত্রীকে বলছিলেন।
ডলি হাসতে হাসতেই বলে, এলাকা অভিজাত পাগলিও অভিজাত। চোখগুলো কী সুন্দর! আর নাকটাও খাড়া। কাপড়ও তেমন অপরিষ্কার না। নাশতা শেষ করেই নাফিস সাহেব ডলিকে বলে, তোমার ড্রাইভারকে তো ছুটি দিয়েছ। আমি ড্রাইভার পাঠিয়ে দেবো। মেয়েকে স্কুল থেকে নিয়ে এসো।
বের হওয়ার সময় ডলিকে ডেকে কপালে একটা চুমু দিয়ে বলে, বাই হানি। ভালো থেকো সুইট হার্ট। গাড়িতে ড্রাইভার ছেড়ে দিয়েছে ‘বেশি কিছু আশা করা ভুল’। নাফিস সাহেব একমনে ভেবে চলছেন, বউটা দিনে দিনে একটা আটার বস্তা হয়ে গেছে। আবার প্রতিরাতে সোহাগ চায় চুতমারানি। কিছু কইতেও পারি না। এই বাসি পাউরুটি আর খাইতে ইচ্ছা করে না। কিন্তু কীই-বা করার আছে? শ্বশুরের টাকায়ই সব ব্যবসা, সম্পত্তি, সমাজের লোক যে মান-মর্যাদা দেয়; সব! মাগী যদি একটু ব্যায়াম করতো! বিয়ার সময় তো মোটামুটি সুন্দরীই ছিল। সারাদিন জি বাংলা দ্যাখবে আর বিরিয়ানি খাবে পেত্তেকদিন। শালী খাওয়া আর ঘুম ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না। ঠিক এমন সময় পাগলি এসে নাফিস সাহেবের গাড়ির পাশে দাঁড়ায় আর মুচকি হেসে টাকা চায়। নাফিস তাকিয়ে দেখে আসলেই পাগলির চোখ মারাত্মক সুন্দর।
রাত আটটায় নাফিস সাহেব বাসায় ফিরলে ডলি গলা ধরে বলে, এই আমরা আর মলিরা মিলে চলো হাওয়া মুভি দেইখা আসি। এই সিনেমা নাকি অনেক সুন্দর!
নাফিস সাহেব রসিকতা করে বলেন, যেতে পারি যদি আমার সুন্দরী শ্যালিকাকে আমার পাশে বসতে দাও।
ছেলেটা যখনই তাকায়, তখন তারচোখ দেখে নাফিস সাহেবের শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল রক্ত নেমে যায়।
আর মনে মনে বলে, সালার এই মলি শালীও বেশি সততা চোদায়। কতদিন কত ইঙ্গিত দিলাম, ডায়মন্ড আংটি, বিদেশে যাওয়া কত লোভ দেখালাম কোনো লাভ হয় না! আরে শালী! দুলাভাইয়ের সঙ্গে দুয়েক রাত শুইলে কী অয়? ডাক্তারীর অহংকার দেখায়! কোন ডাক্তারদের লাগাইয়া বেড়ায় কে জানে? আরে তোর মুটকি বইনডারে নিয়া যে সংসার করি তুই তো একটু পুষিয়ে দিতে পারিস! নাহ! মলির কথা মনে হলেই বুকের ভেতর চিনচিন করে ওঠে। শালীর পাছা আর বুক দুইটাই দারুণ।
ইদানীং রাত এগারোটা বাজলেই নাফিস সাহেব নিচে হাঁটতে চলে যান। ডলি বিছানায় কিছুক্ষণ ছটফট করে ঘুমিয়ে যায়। নাফিস সাহেবের চেহারায় আজকাল প্রশান্তি খেলে যায়। বউকে ইদানীং ফুল, চকলেট উপহার দেয়।
হঠাৎ করে একদিন ডলি বলে, কোন কুকুর, কোন বেজন্মা এই কাজ করলো কে জানে? নাফিস সাহেব নির্লিপ্তভাবে বলেন, কী হয়েছে বউ? ডলি বলে পাগলির এত উঁচু পেট হইছে! নাফিস সাহেব বলে, ছি! ছি! পাগলির কাছে কোন কুকুর যায়?
হঠাৎ করেই উধাও হয়ে যায় পাগলি। অভিজাত এলাকার সূর্য নিয়ম করে উদিত হয়, অস্তও যায়। এলাকার রোশনাই আরও বাড়ে। এলাকার লোকজন পাগলির কথা ভুলেই যায়। প্রায় বছর সাতেক পর ওই এলাকার প্রায় সঙ্গে অবস্থিত বস্তি থেকে আসে এক নতুন বুয়া। সঙ্গে আসে একটা পাঁচ বছর বয়সী ছেলে। নাফিস সাহেব আজও নাশতার টেবিলে। ডলি জিজ্ঞেস করে, বুয়া তোমার ছেলে? বুয়া বলে, হ খালাম্মা আমারই। এক পাগলির পোলা অইছিল। আমাগো পোলাপান ছেল না। আমার স্বামী কয়, হুন গো নাসিমা। এই পোলাডা আমরা নিই পালিপুষি। খালাগো মুরগী, বড় মাছ ছাড়া ভাত খায় না। আমার স্বামী কয় ও রইছে বস্তিতে কিন্তু মাগার ওর রক্ত তো অভিজাত।
নাফিস সাহেব নাসিমার হাতে হাজার পাঁচেক টাকা দিয়ে বলেন, ওকে স্কুলে ভর্তি করে দিও।
ছেলেটা যখনই তাকায়, তখন তারচোখ দেখে নাফিস সাহেবের শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল রক্ত নেমে যায়। ঘামতে ঘামতে দেখে ওর কানের লতি।