উড়ুমন
চুপি-চুপি যাচ্ছে হেঁটে অসম দুপুর
বিষণ্ণতা মুহূর্তকে পরাচ্ছে নূপুর
ভাবছোটা কী? পাথর হয়ে জানলা ধরে একা!
চোখের ভেতর হাসছে তোমার একলা সমুদ্দুর।
চাও যদি আজ কিছু বিষাদ দিতে পারো আকাশটাকে ঋণ
তরল সুখে মলিন মুখে তোমায় দেবে বৃষ্টিমুখর দিন
নীল শাড়িতে ভিজতে এসো পাঠিয়ে দেব হৃদয় ছোঁয়া সুর।।
বই কবিতার খুলতে পারো দুলতে পারো উদাসি ভাবনায়
মন হারালেই বিষাদগুলো স্বচ্ছ ধুলো তোমার আঙিনায়
দুপুর ঠেলে বিকেল এলে পাঠিয়ে দেব হৃদয় ছোঁয়া সুর।
আড়াল
আমার চোখে আকাশ রেখে মেঘ হয়ে যাও তুমি
নাপাওয়াটা জুড়ে এলেই স্বচ্ছ জলাভূমি
ব্যথাটা বেশ টনক হচ্ছে মনটা ভীষণ ঘোলা
স্বপ্নঘরে চুরি গেছে এখন শুধু আশার দুয়ার খোলা।
পুরোনো দিঠিতে বর্ষা চিঠিতে লিখেছে আসার খবর
শাপলা ফুলের যাপন আনবে সাথে রঙচটা দিন
দুই চোখে আর উঁকি দেবে নাতো কখনও নতুন ভোর।
বাতাসে আসছে কান্নার ঢেউ শতশত চোখ চুমি
আমার চোখে আকাশ রেখে মেঘ হয়ে যাও তুমি।
চোখের ধূসর ছুতোয় যখন সব আশা হারালো
বুকের ভিতর চিটচিটে ভাব হৃদয়টা প্রাণহীন
তুমি আর কিছু নও শুধু ছিলে মনের একটু আলো।
মোচড়ে ভাঙছে বুকের পাজর চোখে ছমছম মৌসুমি
আমার চোখে আকাশ রেখে মেঘ হয়ে যাও তুমি।
ফিকে মন
তোর মনে বয় সিক্ত বাতাস তিক্ত গানের সুর
চোখ জুড়ে তোর বিষাদ মাখা সচল সমুদ্দুর।
পাতা ওড়ার শব্দে কাঁপে তোর মনেরই চাওয়া
তোর ভিতরে দুঃখের মুক্তি মেঘের আসা- যাওয়া।
বিরান হাওয়ায় ঘুম উড়ে যায় নীল ঘুঙুর পায় তোর চোখে সন্ধ্যায়
রাত্রি এলে এক জোনাকীর গল্প বলে ঘুম রাঙাবো আয়।
সব আঁধারেই আলোর প্রাণে যায় রে কিছু পাওয়া
পাতা ওড়ার শব্দে কাঁপে তোর মনেরই চাওয়া।
রঙের দেশে তুই যে আমার তেতুলসোনা মন হাওয়ানো গান
দিনের কেশে রামধনু তুই মনের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া বান
তোর আঁখি জল সবটুকু হোক আমার বুকেই হাওয়া
দেখ না রে তুই পর্দা তুলে আমার বুকেই পাওয়া।
রঙ
একটা পাখি উড়ে উড়ে দুপুরটাকে ডানায় করে বিকেল করে দিলো
ঘোরের ঘ্রাণে তান উঠিয়ে একটা মেয়ে আমায় ঘিরে দৃষ্টি ধরে নিলো ।।
বিষাদ মুকুর কাটছে পুকুর
বাজছে নূপুর বাদামী রং অন্ধকারের ডাকে
ভাবছি পাথর পারে বসে
ব্যথার বাঁধন যাচ্ছে কষে ধীর পায়ে আমাকে।।
হঠাৎ তাতে ছন্দপতন আলোর মতন বিজলি চমকিলো
ঘোরের ঘ্রাণে তান উঠিয়ে একটা মেয়ে আমায় ঘিরে দৃষ্টি ধরে নিলো ।
হাওয়ার ভিতর ডুবে যাওয়া
দুই মুঠো সুখ ফিরে পাওয়া বৃষ্টির সন্ধ্যায়
দুঃখটাকে ভেঙে দিয়ে
স্বপ্নটাকে সাথে নিয়ে গাছ হতে মন চায়।।
দৌড়ে আসেন জীবন বাবু সঙ্গে আনেন চিলও
একটা পাখি উড়ে উড়ে দুপুরটাকে ডানায় করে বিকেল করে দিলো।
উদাসপাখি
সখি, তোমার আনমনা ক্ষণ দূর বসন্তে এলে
একটা ফুলের চোখ পাঠাবো কুড়োনো বিকেলে।
মধু মেখে সুর মেশানো দেবো পাতার বাঁশি
মনের তরী দুলতে দেবো কিছু তরল হাঁসি।
নিভে যাওয়া প্রেমিক তোমার কোথায় তাকে পেলে?
তোমার মনে গজে ওঠা পড়ন্ত সেই ছেলে !
যার নীরবে রং বদল হয় লাল থেকে আকাশি।
যাহার মাঝে জ্বলে আছে নিমপাতা রং আশী।
জল রাঙা প্রেম পুষছো তুমি লাল পাঁজরের খামে
তার চোখে কী তোমায় ভেবে বিস্ময়ে ঢেউ ভাঙে?
নাকী, তার ভেতরে আকোসা রং ঝুলছে ছলের ফাঁশি !
যার নীরবে রং বদল হয় লাল থেকে আকাশি।
ছায়া
অন্ধকারে হারিয়েছে সূচ খচিত স্বপ্নগুলো তোর
যাপন ঘিরে তোর জীবনে রাত খুঁজছে শুকনো পাতার ভোর ।।
চকচকে তোর ওই দুচোখে তরুণ শোকে ঝরছে এখন ভুল
চোখের কালোয় এতটা তুই চুমু ছুঁই-ছুঁই বাঁধন ছেঁড়া কূল।।
আকাশে তোর চাঁদনি রাতে জোসনা হাতে ঝরে শুধু ঘোর
যাপন ঘিরে তোর জীবনে রাত খুঁজছে শুকনো পাতার ভোর।
জানিস না তুই(?) চলতে গেলে থমকে এলে বাড়ে পিছুটান —
আপাতত একলা থাকিস সঙ্গে রাখিস রবি ঠাকুরের গান ।।
পথের সাথী খুঁজতে হলে রূপ-মহলে গুণিস না প্রহর
যাপন ঘিরে তোর জীবনে রাত খুঁজছে শুকনো পাতার ভোর