॥এক॥
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে॥
তব, পূণ্য-কিরণ দিয়ে যাক্, মোর
মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।
মলিন মর্ম মুছায়ে।
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে॥
লক্ষ্যশূন্য লক্ষ বাসনা ছুটিছে গভীর আঁধারে,
জানি না কখন ডুবে যাবে কোন্ অকুল-গরল-পাথারে!
প্রভু, বিশ্ব-বিপদহন্তা,
তুমি দাঁড়াও, রুধিয়া পন্থা;
তব, শ্রীচরণ তলে নিয়ে এস, মোর মত্ত-বাসনা গুছায়ে!
মলিন মর্ম মুছায়ে।
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে॥
আছ, অনল-অনিলে, চিরনভোনীলে, ভূধরসলিলে, গহনে;
আছ, বিটপীলতায়, জলদের গায়, শশীতারকায় তপনে।
আমি, নয়নে বসন বাঁধিয়া,
ব’সে, আঁধারে মরিগো কাঁদিয়া;
আমি, দেখি নাই কিছু, বুঝি নাই কিছু,
দাও হে দেখায়ে বুঝায়ে।
মলিন মর্ম মুছায়ে॥
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে।
তব, পুণ্য-কিরণ দিয়ে যাক, মোর
মোহ-কালিমা ঘুচায়ে।
মলিন মর্ম মুছায়ে।
তুমি, নির্মল কর, মঙ্গল করে মলিন মর্ম মুছায়ে॥
॥দুই॥
মায়ের দেওয়া মোটা কাপড়
মাথায় তুলে নে রে ভাই;
দীন-দুঃখিনী মা যে তোদের
তার বেশি আর সাধ্য নাই|
ঐ মোটা সূতোর সঙ্গে, মায়ের
অপার স্নেহ দেখতে পাই;
আমরা, এমনি পাষাণ, তাই ফেলে ঐ
পরের দোরে ভিক্ষা চাই।
ঐ দুঃখী মায়ের ঘরে, তোদের
সবার প্রচুর অন্ন নাই;
তবু, তাই বেচে কাচ, সাবান মোজা,
কিনে কল্লি ঘর বোঝাই|
আয়রে আমরা মায়ের নামে
এই প্রতিজ্ঞা করব ভাই;
পরের জিনিষ কিনব না, যদি
মায়ের ঘরের জিনিষ পাই।
॥তিন॥
কবে, তৃষিত এ মরু ছাড়িয়া যাইব
তোমারি রসাল নন্দনে;
কবে, তাপিত এ চিত করিব শীতল
তোমারি করুণা চন্দনে!
কবে, তোমাতে হয়ে যাব, আমার আমিহারা,
তোমারি নাম নিতে নয়নে বইবে ধারা,
এ দেহ শিহরিবে, ব্যাকুল হবে প্রাণ
বিপুল পুলক-স্পন্দনে!
কবে, ভবের সুখ দুখ চরণে দলিয়া,
যাত্রা করিব গো, শ্রীহরি বলিয়া,
চরণ টলিবে না, হৃদয় গলিবে না,
কাহারো আকুল ক্রন্দনে।