সামনে পবিত্র ঈদুল আজহা। সামর্থবানরা কোরবানির পশু (গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি) কেনার কথা ভাবছেন নিশ্চয়ই। সবার মনে একটা বিষয় উঁকি মারে, সুস্থ-সবল পশু কিভাবে চিনব? বর্তমানে অনেকেই স্টেরয়েড ব্যবহার করে কোরবানির পশুকে মোটাতাজা করে বিক্রি করে। এতে প্রতারিত হন ক্রেতারা। ক্রেতারা যেন প্রতারণার শিকার না হন—সেজন্য বিশেষজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কিছু বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দিলে সহজেই চেনা যাবে সুস্থ-সবল পশু।
যেভাবে চিনবেন
পশুর চোখ উজ্জ্বল ও তুলনামূলক বড় আকৃতির হবে। অবসরে জাবর কাটবে (পান চিবানোর মতো)। কান নাড়াবে, লেজ দিয়ে মাছি তাড়াবে। বিরক্ত করলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সহজেই রেগে যাবে। গোবর স্বাভাবিক থাকবে, পাতলা পায়খানার মতো হবে না। দেখতে প্রাণবন্ত, চামড়া ঝকঝকে দেখাবে। নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা মনে হবে, সামনে খাবার এগিয়ে ধরলে জিহ্বা দিয়ে তাড়াতাড়ি টেনে নিতে চাইবে। অপরদিকে অসুস্থ্য পশু ভালোভাবে খেতে চাইবে না।
দূর-দূরান্ত থেকে যানবাহনের মাধ্যমে বা হাঁটিয়ে পশু বিক্রি করতে নিয়ে আসা হয়। এই দীর্ঘ যাত্রার কারণে পশুকে বেশ ধকল সহ্য করতে হয়। পশু বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই অনেক সময় শুয়ে পড়ে এবং সহজে উঠতে চায় না। তার মানে এই নয় যে, প্রাণিটি খুবই অসুস্থ। এসময় পশুকে বিরক্ত না করে পর্যাপ্ত (প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা) বিশ্রামের সুযোগ দেওয়া উচিত এবং খাবারের সুব্যবস্থা করতে হবে। সামনে ঘাস জাতীয় খাবার ও পানি রাখা যেতে পারে, প্রয়োজনে সে গ্রহণ করবে।
যেসব পশু স্টেরয়েড বা মোটাতাজাকরণের ওষুধ প্রয়োগ করে বিক্রি করা হয়, সেগুলোর শরীরে পানি জমে ফুলে ওঠে। পানির প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে। লেজ দিয়ে মাছিও খুব একটা তাড়াতে দেখা যায় না। খাবারও তুলনামূলকভাবে কম খায়। আঙুল দিয়ে শরীরের মাংসল অংশে চাপ দিলে আঙুল পশুর শরীরে দেবে যাবে এবং সহজে পর্যাপ্ত পানির উপস্থিতি টের পাওয়া যাবে।
কোরবানির জন্য দেশে গরু, মহিষ, ছাগল প্রভৃতি পশু বা প্রাণির চাহিদা ব্যাপক। আগে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও অনেক পশু আমদানি করা হতো।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, কোরবানির চাহিদা মোতাবেক দেশে এখন পর্যাপ্তসংখ্যক পশু বা প্রাণি রয়েছে। পশু ক্রয় থেকে শুরু করে মাংস খাওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে সর্বক্ষেত্রে। রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেশি হলে প্রাণি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।