ভূত ধরেছে পেঁচাকে
বাঁশের ঝাড়ে তেতুল গাছে
ভূতের ছানা সেথায় আছে।
জোনাক জ্বলে রাতের বেলা
ভূতের সাথে করতে খেলা।
খুব সাহসী জোনাক পোকা
চালাক না তো, ভীষণ বোকা!
নইলে সে কি! ভূতের সাথে-
থাকতে পারে, রাত-বিরাতে।
ভূত-জোনাকী দু’জন মিলে
পেঁচাকে নেয় ভীষণ কিলে।
আঁধার রাতে তাই তো পেঁচা
বিকট সুরে দেয় সে চেঁচা।
চমকে উঠে বললো খোকা
‘পেঁচাটা বেশ বেজায় বোকা
ভূত ধরেছে এবার তবে
দেখতে মজা দারুণ হবে।’
মৎসকুলের হাসি
পুকুর পাড়ে বিড়াল মাসি পুঁটিকে কয় ডেকে
খারাপ লাগে একঘেয়েতে পুকুর জলে থেকে?
তার চে’ বরং ডাঙার মাঝে আসতে পালো উঠে
রোজ এখানে খেলার সাথি অনেকে রয় জুটে।
খেলতে পার আমার সাথে অনেক জানি খেলা
খেলবে যদি আয়রে উঠে করিস না আর হেলা
বলল পুঁটি ‘আসতে পারি কী খেলা আজ হবে?’
বিড়াল বলে- ‘রান্নার খেলা শেখাব তোরে সবে।’
বলছে পুঁটি ‘রাঁধবে কি সে! কী হবে তরকারী,
কোথায় উনুন, হাঁড়ি পাতিল যা লাগে দরকারী?’
তাও জানিসনে শোন তাহলে বিড়াল হেসে কয়
দূর হতে কী শুনতে পাবি? কাছে আসতে হয়।
যেই এসেছে একটু কাছে বিড়াল দিল থাবা-
বলল পুঁটি-‘ও বোকা রাম ধরতে কি আর পাবা!’
পিছলে গিয়ে চুবানি খায় লোভী বাঘের মাসি,
এসব দেখে মৎসকুলের সবার মুখে হাসি।
দেশের প্রতি ভক্তি বাড়ে
এখন আমি অনেক ছোট বয়স হলো সাত
দেখিনি সেই একাত্তুরের ভয়াল কালো রাত
দাদুর কাছে সেসব শুনে শিউরে উঠে গা-
ওরা কি সব মানুষ ছিল? ছিল, পশুর ছা।
কেমন করে মানুষ মারে, কী যে অত্যাচার!
দেশের জন্য জীবন দিল; বর্ণনা দেয় তার
সেসব শুনে আজকে দেখি উঠল কেঁপে পা
মানুষ তো না ওরা আসল, চতুষ্পদের ছা।
নয়টি মাসের, সেই ঘটনা দাদু যখন কয়-
নিজের মনে সাহস নিয়ে উঠছি কেটে ভয়।
ওদের ঘরে বোন ছিলনা, ছিলনা না কি মা!
ওরা তো নয় মানুষ মোটে! জানোয়ারের ছা।
শুনছি যত দেশের কথা, করুণ ইতিহাস-
বিজয় আনে যুদ্ধ করে পুরো নয়টি মাস
সেসব শুনে দেশের প্রতি ভক্তি বাড়ে যা
ভাবছি যারা দেশ বিরোধী রাজকারের ছা।
বিশ্বাস নেই
ফোন করেছে শালিক পাখি, উঠলো বেজে রিং
রিসিভ করে বললো, হ্যালো, বলছি ঘাস ফড়িং।
আলাপ শুনে পাখিটার মন নাচে তা ধিং তা,
কল্পনাতে আঁকছে ছবি, রঙিন মন খাতা।
দেখতে বুঝি নাদুস-নুদুস! সবুজ বরণ রঙ
ভাবছে পাখি আলাপে নয় দেখা হোক বরং।
কেমন করে বলবে সেটা খুঁজছিল চারদিক
একথা যেই বলতে যাবে, শুনতে পেল ঠিক।
ওপাশ হতে ঘাস ফড়িং কয় কে বাবু রে তুই?
ফোন রেখে দে রাত হয়েছে আরাম করে শুই।
ঘুমের ভাবটা বড্ড বেশি তুলল ফড়িং হাই-
শালিক তখন ফোনে বলে, দেখা করতে চাই।
কী বললি তুই, করবি দেখা হবে যখন দিন,
প্রশ্ন করে মনটা কেন্? নাচে তা ধিন ধিন!
শালিক পাখি পায় না ভেবে কী দেবে উত্তর
বলবো দিনে সকল কথা হোক দেখা সত্ত্বর।
দিনের বেলা সবুজ মাঠে শালিক আসে ঠিক
ফড়িং নিয়ে যা ভেবেছে, দেখে ততোধিক।
কিন্তু ফড়িং দেখল যখন, এ শিকারীর জাত
মোটেও নেই বিশ্বাস যে তার এ বড় বজ্জাত।
প্রেম বুনিয়াদ
প্রেম কি বলো ছেলেখেলা নিছক মনের আশা!
প্রেম হলো এক পরিনতি গভীর ভালোবাসা।
মধুর টানে আপন মনে যেমন অলি ছোটে
কুঁড়ি যেমন সময় হলে ফুল হয়ে সে ফোঁটে।
তেমন করে ভালোবাসা আপন হতে আসে
প্রেমের টানে দুটি জীবন থাকে আশে পাশে।
প্রেমের কি আর লগ্ন তিথি থাকে দিবস মাস!
সারা জনম প্রেম বহমান হৃদয়ের নিঃশ্বাস।
ছেলে-মেয়ে ভাবছ যারা বয়স যাদের কুড়ি
প্রেমদিবসে জিতবে তোরা, হারবে বুড়ো বুড়ি!
ভাবনা মিছে সামন পিছে দেখো একটু চেয়ে
ভাবছ যেটা পাচ্ছ কি তা? উল্টোটা যাও পেয়ে।
প্রেম যদি হয় পরীক্ষিত ভাটায় পোড়া মাটি
যায় না কেনা গোলাপ দিয়ে কারণ সেটা খাঁটি।
প্রেমের এখন নড়বড়ে ভিত নেই সেখানে আশা
বুড়ো বুড়ির প্রেম বুনিয়াদ সঠিক অথবা খাসা।