মেঘ বালিকা
মেঘ বালিকা তোমার চোখে
কে এঁকেছে কাজল অমন
তাই কি তুমি ইচ্ছেমতো
যেথায় খুশি করছো গমন?
আহা, আহা মেঘমেয়ে গো
তুমি কি আজ বাদলপরী
এই যে দেখি গোমরা স্বভাব
আবার ছড়াও রোদের জরি!
মেঘ পাহাড়ের কোন আঙিনায়
বসত তোমার বলতে পারো
দেশ থেকে যাও দেশান্তরে
হও না কি তাই বন্ধু কারও?
বলছি তোমায়, একটু না হয়
পায়ে বাঁধো ছন্দনূপুর
তোমার সাথেই সখ্যসুখে
কাটবে খুকুর একলা দুপুর
গাইবে সুখে মনুমাঝি
ভাটির গানের পড়বে সাড়া
স্রোতের টানে পাল তোলা নাও
চলবে ছুটে বাঁধনহারা
জাংলা ভরা কুমড়োলতা
সাজ করবে সবুজবেশে
পুকুরজুড়ে শাপলাকুঁড়ি
স্বপ্ন মেখে উঠবে হেসে
ব্যাঙেরছানা গাইবে সুরে
মা ডাহুকি নাচবে সুখে
মেঘ বালিকা! শান্তিধারা
দাও ছড়িয়ে দেশের বুকে।
আর তো কিছুই
মেঘরোদ্দুর গাছের ছায়ায়
পুতুল খেলে তিন্নি
ভাবটা এমন, খুব যেন সে
মস্ত বড় গিন্নি
বেড়ালছানা সাজে বসে
প”রে নানান গয়না
জর্দা সেমাই রান্না করে
টুনটুনি ও ময়না
দূরে বসে জোড়াশালিক
হাসে কতই ছন্দে
দোয়েল,ঘুঘুর মনটা খারাপ
কাটছে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
চড়ুই টিয়া মিষ্টি খাবে
খুব ধরেছে বায়না
সা রে গা মা গাচ্ছে একা
দুষ্ট মেয়ে রায়না
রাঙাবুবু ভীষণ খুশি
গানের তালে নাচছে
কুমোরপাড়ার লক্ষ্মী মাসী
বউবাজারে যাচ্ছে
কিনবে সে যে রাঙা শাড়ি
রেশমিচুড়ি আয়না
এসব পেলেই হয় খুশি সে
আরতো কিছুই চায় না।
বৃষ্টি
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর
ইচ্ছে দুপুর ভাসে
মেঘ মেয়েরা বুকের ভেতর
ছন্দে সুরে হাসে
মিষ্টি খুকি ছবি আঁকে
ভেজে কদমপাতা
বুড়োদাদু চিন্তামগন
খুলে খেরোখাতা।
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর
ভেজে শালিকছানা
টুনটুনিটা বন্দি ঘরে
বাইরে যাওয়া মানা
শাপলা পুকুর জল টলোমল
পাটের ক্ষেতে দোলা
পথ ভুলে ওই পথের মাঝে
একলা কাঁদে ভোলা।
বৃষ্টি পড়ে টাপুরটুপুর
ঘুমপরী নেয় আড়ি
রায়তামনির পুতুল সোনার
মনটা ভীষণ ভারী
কিষাণ ছেলে মেঘে ভিজে
যায় যে দূরের হাটে
গাঁয়ের বধূ স্বপ্ন বোনে
সবুজ ভরা মাঠে।