দাদুন
দোয়েল পাখির মধুর ডাকে
করে আনচান মন
দাদুন আমার দূর দেশে
হাসে সারাক্ষণ
শাপলা ফোটা ওই দিঘিতে
কাটবি সাঁতার আয়
মাছরাঙা পাখিটা যে
মাছ নিয়ে যায়।
বাবুইপাখি বাঁধে বাসা
তালপাতার ডগায়
ঝড় এলেও পড়ে না সে
রাখো ধরে মাথায়
চড়ুই পাখি কিচির-মিচির
মিষ্টি ডেকে যায়
আয় রে দাদুন আয় রে ঘরে
পরাণ জ্বলে যায়।
চৈত্র
চৈত্র মাসের খরায় পুড়ে
মাঠের কচি ধান
কৃষক তাকায় আকাশ পানে
নেইকো তাদের ভাণ!
আয় লো বৃষ্টি আয় লো আয়
জলদি করে আয়
মাঠের ফসল পুড়ে গেলো
অঙ্গ জ্বলে যায়।
আমরা কৃষক আমরা দুঃখী
দুঃখের সীমা নাই
রোদে পুড়ি জ্বলে মরি
দেখার কেউ নাই
ধান-পাট-রবি শস্য যত
শক্তমাটি খুঁড়ে
আমরা ফলাই সোনার ফসল
থাকি ঘর কুঁড়ে
দালান কোঠা আছে যাদের
তাদের বলো ধনী
মাটি খুঁড়ে ফলাই ফসল
হলাম আমরা ঋণী
চৈত্র মাসের রোদে ঝরে
নোনা নোনা ঘাম
শক্ত মাটি চিৎকার করে
এবার তোরা থাম।
প্রাণের কড়ি
প্রাণের কড়ি প্রাণের কড়ি
প্রাণরঙা নাও
এ শহর ছেড়ে তুমি
কোন শহরে যাও?
এ শহরের নিয়ন বাতি
জ্বলে অবিরাম
তুমি ছাড়া সেই বাতির
নেই যে কোনো দাম!
এ শহরের ভিড়বাট্টায়
হাজার লোকের মুখ
সে সব মুখে অচেনা ছাপ
নেই যেকোনো সুখ
এ শহরের লোকের ভেতর
ভাণবনিতার জোয়ার
জোয়ার জলে চাই না ভাসতে
তুমিহীনা আর
এ শহরের দালানকোঠা
নিষ্ঠুর বেদরদি
তার ভেতর মানুষ যেন
মরাকটাল নদী!
এ শহরের বিলাসী মন
রাত-বিরেতে ছুটে
ফুটুসফাটুস বুলেট এসে
নরম হৃদয় টুটে!
এ শহরের রঙমহলে
রাজকীয় বালা
রঙিন নেশায় চূর হয়ে
মেটায় মনের জ্বালা!
এ শহরের অলিগলি
অলিখিত জমি
জবরদখল করে বলে
লিখে নিলাম আমি!
প্রাণের কড়ি প্রাণের কড়ি
কোথায় তুমি যাও
আমি ছাড়া এমন সুহৃদ
কেমনে তুমি পাও?