শরৎ শ্যামল মায়া ॥ স.ম. শামসুল আলম
শরৎ হাসে গাঙের কাশে
হাওয়ায় দুলে দুলে
ছয়টি ঋতুর এই ঋতুটি
স্বপ্ন ছড়ায় মুঠি মুঠি
হাজার ফুলে ফুলে।
হিমঝুরি আর মিনজিরি ফুল
গগনশিরিষ ফোটে
শেফালি বা ছাতিম মাতে
হালকা সাদা-কুয়াশাতে
দুর্বা নেচে ওঠে।
আকাশ ভাসায় মেঘের ডিঙি
ধানের ক্ষেতে ছায়া
বর্ষামেয়ে বিদায় দিয়ে
আসে নতুন সুবাস নিয়ে
শরৎ-শ্যামল মায়া।
শরৎ এলো ॥ শুভাশিস দাশ
বর্ষা বিদায়, আসলো শরৎ
নদীপারের কাশে,
ঝিলের জলে রবির আলোয়
পদ্ম-শালুক হাসে!
নীল নীল নীল আকাশ দূরে
পেঁজা তুলোর মেঘে
মায়ের ও মুখ কে আঁকিলো
আয় তোরা যা দেখে!
এই তো এলো খুশির পরব
শারদ এ উৎসব,
মিলন-প্রীতির এমন দিনে
দ্বেষ দূরে যাক সব!
শরৎ ॥ তৈমুর খান
ইচ্ছেগুলো জলে নামবে
ইচ্ছেগুলো সাঁতারপাখি
মেঘ বিয়ানো স্বপ্নডানা
পদ্ম ফুটছে, বৃষ্টিভ্রমর
রং চিনেছে নতুন ভোর
জেগে উঠছি আমরা সবাই
পুজোর গন্ধ মাখছে ঘাম
শরৎ এলো শিশিরপাড়ায়
প্রেমে পড়ছে হলুদ পাখি
পথের বাঁকে চোরা টান
ফিরছে একা কাঠবেড়ালি
ধূসর ক্ষেতে সন্ধ্যানারী
জিভ দেখাচ্ছে, ভ্রূভঙ্গি
ধানের শিষে শীতের গান
এক পলকেই মুগ্ধ ছোবল
জেগে উঠলো কাতর পড়শি
নদীতীরে নিঃশব্দ গাছ
ওড়না খুলছে কৃষ্ণবাঁশি
নিচে চঞ্চল রাধাজল
হাসি মেলছে, হাসির ঝিলিক
বুক জুড়ে তার কোমল আকাশ
নীলাভ মসৃণ সঙ্গম
ছড়িয়ে দিচ্ছে ভাষা-বিভাস।
রহস্যের নীলে ॥ মধুমিতা বিশ্বাস
আজ শরতের আকাশপারে পেঁজাপেঁজা মেঘ
ঝুঁকে আছে ধরে যেন প্রাণেরই আবেগ।
ত্রিভুজ রঙে রাঙিয়ে মাঠ দুঃখ দ্রবিভূত
হৃদয়পুরে আগলে রাখে ধারণাসম্ভূত।
মীমাংসাহীন রহস্যে রাত নীলে ভিজে যায়
হঠাৎ বুঝি যায় উড়ে যায় গানের পাখি হায়!
বিকাল বেলার হাওয়া এসে শিখিয়ে দেয় খেলা
চোখের পাতায় বাড়তে থাকে প্রতীক্ষারই বেলা।