স্বপ্ন ভঙ্গ
এক কিশোরীর দু’চোখজুড়ে
স্বপ্ন ছিল কত
মেঘের মতো আকাশটাতে
ভাসতো অবিরত।
ভর দুপুরে ছুটে যেত
প্রজাপতির পিছু
শাসনবারণ রোদ ও বৃষ্টি
মানতো না সে কিছু।
বাতাস হয়ে বইতো সে
ধানের ক্ষেতের গায়ে
রিনিক ঝিনিক ছন্দে নুপুর
বাজতো দুটি পায়ে।
আনন্দতে হেসেখেলে
কাটছিল দিন তারও
পোড়া কপাল সইলো না
এত সুখের ভারও।
বধূ সেজে যেতে হলো
ছেড়ে নিজের বাড়ি
সেই কিশোরী হঠাৎ যেন
হয়ে গেলো নারী।
আপন ছেড়ে পরের বাড়ি
হতে হলো বন্দি
শাসন নামের বেড়ি পরে
নিত্য করে সন্ধি।
হারিয়ে যায় উচ্ছলতা
হারায় নিজের সাধটা
দেখতে বারণ রাতের আকাশ
জোসনা ঝরা চাঁদটা।
দুই সই
শিউলী এবং দোলনচাঁপা
পাতায় দুজন সই
শিউলি বলে চলনা দোলন
মনের কথা কই।
দোলন বলে তাই যদি হয়
দুঃখ যাব ভুলে
বলব যত কথা আছে
মনের দুয়ার খুলে।
দখিন বাতাস এসে যখন
গায় এলিয়ে পড়ে
ভোরের আলো ফোঁটার ক্ষণেই
প্রাণটা যে যায় ঝরে।
দোলন বলে ওই সুদূরে
এক যে ছিল কবি
ছন্দে তালে পাতায় পাতায়
আঁকতো কত ছবি।
সেই সুখের পরশ মেখে
গান গেয়ে যায় পাখি
পাপড়ি গুলি সুরের নেশায়
মেলে যে দেয় আঁখি।
সেই সে কবি অঁচিন পথে
হারায় অবশেষে
পেছন ফিরে দেখে না বুক
রক্তে গেছে ভেসে।
বন্দি পাখি
সব পথই যে বন্ধ করে
বুকে দিলে কাঁটাতার
ঝরিয়ে বুকের তাজা রক্ত
হতে চাই সেই কাটা পার।
অভিসম্পাত দিয়েছ যা
জানি তা প্রেমের ছল
প্রণামে আজ এনেছি তাই
দুই চোখ ভরে অথই ঢল।
তোমার বুকের প্রান্তরে হব
স্বেচ্ছাবন্দি পাখি
মুক্তির স্বাদ চাই না পেতে
নিভে গেলেও আঁখি।