মায়ের শাসন ছাড়াই
বোশেখ মেলার দিনগুলো সব
কাটত পশুহাটে
কাটত বেলা রৌদ্রে পোড়া
পাঁচশো বিঘার মাঠে।
ভোকাট্টা ভো উড়ত ঘুড়ি
রোদের আকাশজুড়ে
পুড়ত হৃদয় সঙ্গোপনে
রোদের সমুদ্দুরে।
চাইত না মন ফিরতে ঘরে
ছিল না তার তাড়া
ঘরটা ছিল শূন্য মরু
মা ছাড়া, মা ছাড়া।
ছোট্টবেলার মতো আজো
মায়ের শাসন ছাড়াই
খাঁ খাঁ রোদে আনমনে রোজ
চোখের জলে হারাই।
দস্যিটার জন্য
ভিজছে না দস্যিটা
ভিজছে না আর
ভিজবার জন্য মা
দিচ্ছে না মার।
টুপটাপ বৃষ্টি যে
একটানা ঝরছে
বৃষ্টিতে খোকনের
কথা মনে পড়ছে।
সারাদিন বৃষ্টিতে
ভিজে একাকার
ভিজছে তো ভিজছেই
নেই দেখা তার।
ফিরলে মা দস্যিকে
বকা দিত যেই
কাঁদবে কি দুষ্টুটা
হেসে ফেলবেই।
শালিকের সংসার
শালিক দুটো
খড়ের কুটো
ঠোঁটে পুরে
আসল উড়ে।
পাতার ফাঁকে
বুনতে থাকে
ঘরটা আপন।
নেই তো কাঁপন-
বুকের ভেতর,
সন্ধ্যা কি ভোর
ইচ্ছে হলে
আসবে চলে।
করবে দুজন
সুখের কুজন।
বৈশাখী ঝড়
কিলিক কিলিক মেঘের ঝিলিক
মেঘ হয়ে যায় রুদ্র
আকাশপুরে ফুঁসে ওঠে
মেঘেরই সমুদ্র।
চমকে রাখাল থমকে দাঁড়ায়
সুর থেমে যায় বাঁশির
বুক কাঁপে তার, শব্দ শুনে
মেঘের হাসাহাসির।
বৈশাখী ঝড় হঠাৎ তখন
দিল ভীষণ তাড়া
বাথান ভরা গরুগুলো
হলো দিশেহারা।
আড়ি
টাট্টুঘোড়া, লাটাই, ঘুড়ি
এবং কাঠের টিয়ে
থাক পড়ে থাক, খেলব না আর
পুতুল পুতুল বিয়ে।
আর কোনোদিন ধরব নাকো
বায়না মেলায় যাবার
শুনব না তো কোনো কথা
মায়ের এবং বাবার।
আড়ি আড়ি ভীষণ আড়ি
রইল আড়ি লেখা
সবার সাথে আড়ি আমি
থাকব একা একা।