আমার গাঁও
আমার বাড়ি গাঁও গেরামে
হেঁটে বেড়াই আল পথে
ভয় করি না রোগ ব্যারামে
মাছ ধরি ভাই খাল হতে।
ধানের চারায় সবুজ হাসে আনন্দে
নীল শাড়িটা পিন্দে গগণ সানন্দে।
বিলের জলে শাপলা ফোটে
নৌকা চালাই খুশিতে
জেলের জালে কাতলা ওঠে
স্বাদ লেগে যায় রুচিতে
দিন আধা দিন পেলেই হলো- স্কুল ছুটি
শালুক তুলে লাল হয়ে যায় চোখ দু’টি।
শরৎ এলেই ওঠোন জুড়ে
জোস্না-কোমল রাত হাসে
শান্ত সুবোধ আকাশ পুরে
রূপালি রঙ চাঁদ ভাসে।
শিশির নামা মধ্যি রাতে গান গেয়ে
পরির রাণীও নেমে আসে চাল বেয়ে।
পাখিদের ডানা পাই
আকাশের সাদা মেঘ উড়ে যায় অবিরাম
সারাদিন কোথা যায় জানা নাই পরিণাম
পাতালের সারাদেশ জুড়ে পায় মিঠা জল
বাতাসের পিঠে তাই উড়ে জল-কণা-দল
মেঘেদের ঠিকানায় যেতে চাই নেবে কেউ
অজানায় হারানোর মজা খুব আসলেও
প্রতিদিন ভাবে মন কত আর পরাধীন
ডানা দুই হলে ঠিক পাখি হই বাঁধাহীন।
দেখে মেঘ ঈশানের নাচে মন অকারণ
আষাঢ়ের ভরা বিল শালুকের প্রয়োজন
আমাকেও ডাকে মেঘ চলে আয় উড়ে যাই
সাতারের আছে জল উড়ালের নেশা নাই।
মেঘেদের অভিমান আমাদের সাথে হয়
কেন সব যেতে চাই; করি তাও অভিনয়
আকাশের ছায়াপথ সারারাত জেগে রয়
আমি চুপ উঠে যাই মানবিক ফেলে ভয়।
সারা দেশ ছবি হয় আমি হই মনো-চাঁদ
পাখিদের ডানা পাই উড়ে যাই ছিঁড়ে ফাঁদ।
বিয়ের সনদ
আশিক যেদিন পাশ করেছে মাধ্যমিক
সেদিন থেকেই দাদুর মাথায় ইচ্ছেঠিক
টুকটুকে লাল বউ আনা হোক পাল্কিতে
মাথার চুলে ফুল হয়ে থাক নীল ফিতে।
বউ খুঁজে হায়! গাও-গেরামে যায় দাদু
খোঁচায় আশিক; দেখাও এবার বউ যাদু
বউ মেলে না বলছে পুলার চাকরি নাই
চাকরি কঠিন অভিজ্ঞতার পাপড়ি নাই।
আমরা সবাই বুদ্ধি সাজাই বউ পেতে
দাদুর কাছে খবর পাঠাই– দূর থেকে
চাকরি যেমন; অভিজ্ঞতার কাগজ চায়
বিয়ের আগেই চায় যদি গো সনদ হায়!
তাইলে দাদু! একটা সহজ কাম করো
ছোট দেইখ্যা একটা কনের বাপ ধরো
অভিজ্ঞতা হওয়ার পরেই আইনো বউ
বুদ্ধি কেমন দিলাম তোমায় হেইডা কও!
দাদু তখন ঝাঁটা হাতেই বললো, ‘আয়’
আমরা ছুটে পালাই দূরে আর কে পায়!
আশিক এবার চোখ পাকিয়ে দেয় ঝাঁড়ি
আমরা সবাই পাগলা হেসে যাই বাড়ি!