ইচ্ছে করে
মুখে মধুর ভাষা ছিল
মনে অনেক আশা ছিল
বুকেও ভালোবাসা ছিল
আমার সোনার বাংলাদেশে
রঙবেরঙের ফুল ফোটাতে।
কিন্তু আশায় গুড়েবালি
সারাবাংলা জুড়ে বালি
কোথাও দোআঁশ মাটি নেই
মানুষও সব খাঁটি নেই
মিছিল মিটিং দলাদলির
গোলমালে যায় মূল ফোটাতে।
বোমা ফাটায় গুলি ছোড়ে
নিত্যি নতুন বুলি ছোড়ে
ঢিল-পাটকেল-গ্রেনেড ছোড়ে
—ব্যস্ত থাকে ভুল ফোটাতে।
এসব দেখে যাচ্ছি ক্ষেপে
এখন থেকে মেপে মেপে
কিছু লোকের সারা গায়ে
ইচ্ছে করে হুল ফোটাতে।
সোনার দেশটা কোথায়
নৌকাতে পাল টানানো হয়েছে
চলছে নতুন হাওয়াতে
হাল ধরা মাঝি খুব খুশি আজ
ফের হাতে হাল পাওয়াতে।
গুন টানে যারা তাদের দু কাঁধে
গুরুদায়িত্ব যাওয়াতে
দাঁড়ের মাঝিরা বেকার হয়েছে
সব লুটেপুটে খাওয়াতে।
ঘরের লোকেরা বিরোধী এখন
এক সুরে গান গাওয়াতে
আসল বিরোধী হলো ঘর হারা
দাবির অধিক চাওয়াতে।
মাঝে আমাদের জটিল জীবন
পুড়ছি গরম তাওয়াতে
জানি না সোনার দেশটা কোথায়
কে নেয় ধাওয়াতে ধাওয়াতে।
নিজদলে পরবাসী
নিজদলে পরবাসী
থাকা যার ভাগ্যে
তাকে আর বলবে কে
জী হুজুর, আজ্ঞে?
বিপক্ষে কথা বলে
পত্রিকা, টিভিও—
ইদানীং বাঁকা পথে
চলে তার বিবিও।
বড় এক পদে থাকা
সে-পদের মান কী?
মামলাও ঝুলে আছে
যায় শেষে জান কি?
অনুগত অনুচরও
তার কথা শুনছেন?
দলনেতা একা একা
কী প্রহর গুনছেন!
জননিরাপত্তা
বেড়ে গেছে খুন-ছিনতাই
গণতন্ত্রের দিন, তাই
চিহ্নিত লোক চিনেও, গলায়
যাচ্ছে না বাঁধা ঘণ্টা।
শান্তি কোথায়? দেখছি কেবল
উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
আতঙ্কে বের হই রাস্তায়
নিরীহ লোকেরা ঘরে গুলি খায়
ঘরের ভেতরে ধর-মাথা হয়
ধারালো ছুরিতে ভিন্ন।
সব সন্ত্রাসী হচ্ছে না কেন
চিরতরে নিশ্চিহ্ন?
বড় উদ্বেগ—জানি না কী করে
টিকে রবে জাতিসত্তা!
এই জনগণ মরি কিনা বাঁচি
কই জননিরাপত্তা?
বেঁচে থাকার হর্ষ নে
সবকিছু আজ নিচ্ছে কেড়ে
উৎপীড়ন আর ধর্ষণে
চোখ বুজে রই মুখ বুজে সই
তুলো গুজে কান ঢেকে রই
পাই নে আওয়াজ ঘর্ষণে।
চাষের জমি হচ্ছে পতিত
উন্নতি নেই কর্ষণে
বন্যা আসে কারা হাসে
চোখের জলেই জীবন ভাসে
কী হবে আর বর্ষণে!
সব মুশকিল আসান হবে
ভেলকি বাবার দর্শনে
সেই আশাতে নিজকে বলি
আর কী দিবি জলাঞ্জলি
বেঁচে থাকার হর্ষ নে।