ঘাস ফড়িংয়ের গল্প
সূর্য তখন ওঠেননি ঠিক—আবছা আলোর অল্প ভোরে,
প্রাণের ভেতর দোলেন কে বেশ ঘাস ফড়িংয়ের গল্প করে!
আবার হঠাৎ ওড়েন তিনি গাঙ শালিকের ছদ্মবেশে
উড়তে উড়তে বলেন: দ্যাখো, দিঘিতে নীল পদ্ম ভেসে—
চলছে কোথায়; তা জানি না কিন্তু যে তার মধ্যে থাকা,
একটি ভ্রমর আমি-ই এখন রঙ বেরঙের পদ্যে আঁকা!
সূর্য তখন ওঠেননি ঠিক! আবছা আলোর অল্প ভোরে,
প্রাণের ভেতর দোলেন কে বেশ ঘাস ফড়িংয়ের গল্প করে!
ভোরের ফুল
ফিঙে বললে পায়েস পাতা, তোতা বললে ঘাস;
খুঁজছো কাকে, কোন পুঁথি ভোর? বোন দুটি রাজহাঁস
ডাকছে ডাকুক, নামতা লেখো, রূপকথা ঝিলমিল
চুপ করে কে শুনছে এখন শাপলা না গাঙচিল?
তিরতিরে ঢেউ গানের মতো, ঘুম বললে তাই?
বাবুই, তিতির, শালিক, শ্যামা এখন ফিরে যাই!
নামতা লেখার দিনগুলো বেশ, দেশজুড়ে পর পর
ছবির নেশায় সাজিয়ে রাখে রূপসা নদীর চর!
হাওয়ায় হাওয়ায় শুকসারি গ্রাম, ঝাউ বাগিচা আর
সানাই বাজায় ‘মউশালি ধান’ সাতটি তারার হার!
আরশি পাড়ায় চাঁদের বাড়ি, চাঁদ বুড়ি তার চুল;
ছড়িয়ে দিয়ে ভুবনজুড়ে ফোটায় ভোরের ফুল!
আলো
একটা গোলাপ বললে জাগো, সাতশো গোলাপ জাগে
জল ঝুমাঝুম গান শুনে কই আজ কি ভালো লাগে!
গ্রাম ভুলে যাই, নাম ভুলে যাই, একটি ছোটো সাঁকো—
বলতে থাকে এখন আমায় কবি বলেই ডাকো।
দোলনা ভাষার ফুলঝুরিতে দোলাই মনের চূড়ো
বুকের দাওয়ায় পালক ওড়ায় চুমকি রোদের গুঁড়ো।
একটা আমি আকাশে যাই, একটা গড়াই ঘাসে
বনপথের হাওয়ায় হাওয়ায় কত যে সুর ভাসে!
ফিসফিসিয়ে কেবল বলে একলা কাছে ডেকে,
ছড়িয়ে দিলাম পাতায়-পাতায় রঙগুলো নাও মেখে।
এই যে খুশির ভুবন দিলাম, যেমন খুশি ঘুরো—
বুকের দাওয়ায় পালক ওড়ায় চুমকি রোদের গুঁড়ো।
মেঘনা পাখির চোখের তারায় কোন মায়া যে আছে
খুঁজতে খুঁজতে ফুল ফোটে রোজ শিউলি, টগর গাছে।
রঙতুলিটি দোলায় সাগর, দেশগুলো সব ঘুরে
কখন যেন ঘুমিয়ে পড়ি একলা কুসুম পুরে!
কেউ যেন বেশ বলেন, ও ভাই আর একটা দিন জুড়ো
বুকের দাওয়ায় পালক ওড়ায় চুমকি রোদের গুঁড়ো।
বনময়ূরী, হরিণ নাচে। মেঘ বা দোয়েল আলো
সবাই আপন ভালোবাসায়। সবাই ভীষণ ভালো।
একলা নদী যায় হারিয়ে, দূরে অনেক দূরে
ঝলমলানো রাজার পোশাক ভালোবাসায় মূড়ে,
ঝমঝমানো গানের সে দেশ, মন কেড়ে নেয় পুরো
বুকের দাওয়ায় পালক ওড়ায় চুমকি রোদের গুঁড়ো।