আমাদের শত্রু
আমাদের শত্রু তো আমরাই,
সবারই পছন্দ দামরাই।
গায়ে তার মোটা কালো চামড়া,
পাজি চেনে শুধু খাস কামরা।
অন্তরে জ্বালা আর মুখে তার তালা ,
মানুষটা সৎ আর অতি ভোলা-ভালা।
করে যদি প্রতিবাদ জোটে না তো ভাত,
আজ্ঞার দাশ সে যে তুরুপের তাস,
সারাবেলা ফুসফাস, সাব্বাশ-সাব্বাশ!
লোকে তাকে দেখে বলে, সে তো খাঁটি চামচা,
অপরের নিন্দাই তার রোজ নামচা।
যদি কাজ করে কেউ দেয় শুধু বাধা,
আরামেই থাকে শুধু বলদ ও গাধা।
দুনিয়ায় ভরা ভাই সহস্র চামারে,
করে শুধু আমি আমি, আর করে আমারে।
‘আমাদের’ শব্দটা মানে না যে কিছুতে,
চিত্তের ছুটে চলা বিত্তের পিছুতে।
ইচ্ছে –জমিন
আমার চাওয়া –পাওয়ার স্বপ্নভুমি
এখন তোমার ইচ্ছে জমিন খানি
তোমার ইচ্ছায় বৃষ্টি নামে মাঠে
অনিচ্ছাতে দুঃখী অভিমানী।
চাইলে তুমি হবে সোনার চাষ
অনিচ্ছাতে জন্মাবে সব ঘাস।
চৈত্র শেষে –বোশেখ আসে যদি
আমার খরা আমার সর্বনাশ।
চাইলে তুমি আষাঢ়-শ্রাবণ হবে
ইচ্ছে হলে চলবে লাঙল বুকে,
বর্গাচাষি শুধবে সকল ঋণ
তুমি চাইলে আঘাত দিও ঝুঁকে।
সাবধানে পা ফেলতে পারো, পা
তোমার ইচ্ছে ভূমির নিচে আমি
আমার চাওয়া পাওয়ার স্বপ্ন মৃত
এখন তুমি অনেক বড় দামি।
শুধুই স্বার্থের জন্য
আমি বোকা বলেই চালাক তুমি,
আমি ঠকি বলেই জিতে যাও
বদলেও নাও তোমার জীবন চাকা
উল্টো হাওয়ায় বাইতে পারো নাও।
আমি নিচু বলেই উঁচু জাতের তুমি
অভুক্ত রই তোমার জন্য তাই
তোমার অভাব হয় না ভাতের কভু।
তাই তো তোমার সুখেই আমি নাই।
আমার হিসাব কাঁচা বলেই তুমি
যোগ-বিয়োগে অনেক বেশি পাকা,
আমি একা বলেই তোমার পারিপাশে
অনেক মানুষ, অনেক বন্ধু রাখা…
আমার আকাশ শনির দশায় ঢাকা
তোমার এখন তুঙ্গে বৃহস্পতি
আমার জীবন ছিন্নভিন্ন তাই
তুমি পেলে দুরন্ত সব গতি…
শিক্ষার বাজার
অনেক আগেই সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ
চিনিয়েছিলেন ধর্মেরই আলখেল্লা।
লাল সালুতে আজও ঢাকা মাজার
নব্য মজিদ বসায় শিক্ষা-বাজার।
শিক্ষা এখন বিকোয় বাজার হাটে,
শিক্ষার্থীরা খেলতে যায় না মাঠে।
জমিলারা এখন ভীষণ চুপ,
মজিদদেরই সংসারে দিন কাটে।
আমার যে বোন রাতের রাস্তাঘাটে,
দেহ বেচে জীবন বাঁচায় নাটে
ভোগবাদীদের বিলিয়ে দেয় রতি
সেও করে না তোমার মতো ক্ষতি!