বাঁচাও সুন্দরবন
উদাস করা বনের হাওয়ায় নেই মোটে আর সুর
কাঁদছে বসে যে পাখিটা গাইত সুমধুর।
কাঁদছে নদী, বৃক্ষরাজি, চলছে আলোড়ন
কাঁপছে ভয়ে সুন্দরী গাছ পুরো সুন্দরবন।
মৃত্যুভয়ে কাঁদছে হরিণ, বাঘের মায়ের মাসি
টুটিয়ে গেছে সুচতুর ওই শেয়াল মামার হাসি।
বনের সকল পশুপাখির নেই তো কেউ আর সুখে
লাফালাফি বন্ধ এখন বানর আছে দুখে।
মৌমাছি দল পুষ্প ছেড়ে ঘাপটি মেরে আছে
মৌয়াল ভয়ে যায় না মোটে মৌচাকেরই কাছে।
সবার মনে ভয়-শঙ্কা কখন কী যে হয়
মসনদে আজ যারা তারা এত্তটা নির্দয়!
এমন কথা ভাবতে গিয়ে কাঁদছে বনের টিয়ে
দেশটা জুড়ে গাছ লাগাবে ছোট্ট শিশু দিয়ে
ইচ্ছে এমন কত্ত ছিল কেওড়া গাছের মনে
পোড়াচ্ছে তা হঠকারিতায় এখন ক্ষণে ক্ষণে।
আচ্ছা বাবা, চাই বিদ্যুৎ; আমরাও চাই করো
প্ল্যানটা করো অন্যখানে, ভাবো; যেমন ধরো—
সুন্দরবনের মৃত্যু হলে বাঁচবে কি আর তুমি?
এই দেশেরই মরবে সবাই মরবে বনভূমি।
আমরা কারো চাই না মরণ একসাথে চাই বাঁচা
সংযত হও, দাও সরিয়ে মৃত্যুপ্ল্যানের খাঁচা।
সালতামামি
সারা বছর পাইনি দেখা শেষবেলাতে তুমি
এসেই হঠাৎ কানের কাছে বাজাচ্ছ ঝুমঝুমি!
তাকিয়ে দেখো আকাশ এখন ঝিমিয়ে পড়া পাখি
আমি কি আর তোমার মতো কাজল চোখে মাখি?
ডাকছে পাখি ডাকছে আহা, বছরজুড়েই ডাকে
ভাবতে পারো নেই অজুহাত কিংবা সর্দি নাকে।
নতুন বছর নতুন প্রভাত একই রকম ভাষা
ওর মনে নেই নতুন করে প্রাচুর্যেরই আশা।
তাকিয়ে দেখো গাছের পাতা এই সময়েই ঝরে
ঋতুর বদল; সাজবে নতুন পাতায় থরেথরে
তুমিই কেবল ওলোটপালট; যখন তখন থিতু
বছর শেষের বেলায় এসে বদলাতে চাও ঋতু!
ঠুলি পরে থাকা আমার নয়তো স্বভাবজাত
এই কথাটা তোমার জন্য—ভগ্নি এবং ভ্রাত;
পেরিয়ে গেলেও বছরটা ঠিক বদলাব না আমি
আবোলতাবোল কথাকথির এটাই সালতামামি।