পাগল
তাহাকে রোজ দেখি দাঁড়িয়া থাকিতে মোড়ে
মাঝে মাঝে কথা কন কখনো আস্তে; জোরে!
পাগল ভাবিয়া তাহার ঘেঁষে না কাছে তো কেহ
আহা লোকটা! রৌদ্রে পুড়িতেছে মন আর দেহ!
মোড়ে তাহারে দেখি কলমের আঁচড়ে সে
ভরিয়া তুলিতেছে খাতা রাজারই বেশে।
কাছে ঘেঁষিলে কেহ মুচকি হাসিয়া কহেন-
‘অমানুষের বাচ্চা হালায় দূরে গিয়ে বহেন’।
তাহাকে দেখিয়া রাখি ঘেঁষি না তো কাছে
আদার ব্যাপারি হয়ে যাওয়ারটার কী-ইবা আছে।
অদূরেই বসিয়া থেকে দেখি কাণ্ড তাহার
লোকটা আসলে কে তা খুঁজিয়া পাওয়া যে ভার!
ভাবিলাম, হতে পারে গোয়েন্দা বা টিকটিকি
পাগল নয় যে মোটে তা-ও বুঝেছি ঠিকঠিকই।
আসলে সে ছিল দাগী মাদকেরই দালাল
পাগলেরই বেশ ধরে করিত সে হালাল।
হায় হায়, আমরা তো তার চেয়ে কম না
ঘাতকের বেশে থেকে বলি আমি যম না!
হা-হা-হা-হা-হাহ-হা, পাগলেরই বেশে
নিজেকে মারছি নিজে সব মেরে শেষে!
তুমি অধম বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন
দাদা ডাকিলেন। বলিলেন- শোন, শোন, ওহে, শঙ্কর
খবরটা কি? বল তো শুনি, তোর প্যাঁচানো অঙ্কর!
ফলাফল বুঝি এখনো পাসনি হাতে, নারে?
সংখ্যাগুলো নিশ্চয় মিলিছে গঙ্গায়, আঁধারে!
ভাবিস কী রে? পাশেই আছি; দে কলম আর খাতা
আর যা শুনে, নিয়ে আয় তোর বাবার নতুন ছাতা।
রোদটা কী যে কড়কড়ে আজ তেষ্টা পেল রে জলের
মাকে বলবি, জলটা যেন হয় হাতচাপা কলের।
বলবি আরও, খেতে চেয়েছে দাদা মণ্ডা-মিঠাই
তিলের নাড়ু, মুড়ি-মুরকি আরও যতসব পিঠাই।
ঠিক ঠিক বলিস, নইলে বন্ধ অঙ্কের জটা খোলা
এত বল্লাম, তুই হাঁদারাম, ভীষণ আত্মভোলা!
আমাদেরই দাদা, মানে গঙ্গারামধর ঠাকুর
পরের ওপর পোদ্দার মানে গাছটা হলো পাকুর!!