তুমি ভেড়া হতে ভালোবাসো
কুঁজো হয়ে বলো সংখ্যালঘু
এই শব্দে আমার বড় আপত্তি গো সোনা
এইভাবে রাজনীতি হয় না মাসিমা!
(সংখ্যালঘু)
আমার মতে, শব্দকে উরুতলার লোমকুপে পাউডার দেওয়ার মতো সুঘ্রাণে আন্দোলিত করতে পারার নাম কবিতা। কেউ মানুক আর না মানুক আমি কবিতাকে এমনটাই ভাবতে পছন্দ করি। কবিতার একটা আবেদন থাকে। আবেদনহীন কবিতাগুলো বেশিক্ষণ স্থায়ীত্বের আসনে বসতে পারে না। কবিতার জাগতিক ভুবন হলো মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটে সময়ের স্তূতি। অথবা বিভিন্ন রসদের মিশ্রনে একটা অবস্থান তৈরি করা। যে কবিতা কালে কালে শতকের আস্তরভেদ করে টিকে ছিল, সে কবিতাগুলো আমাদের নিয়ে যায় স্বপ্নের কাছে। আমরা তখন হয়ে উঠি শব্দের চর্চাকারী। কথা বলছিলাম ‘পৃথিবী পাপের পালকি’র কবি পলিয়ার ওয়াহিদের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের’ কবিতা নিয়ে। চলুন, আরও কিছু কবিতা পাঠ করা যাক:
তবু কেউ কেউ পোষে বেশ্যার বিড়াল
বাংলাদেশ-এর তলপেটে
ছিনাল রমনী তারা খাচ্ছে জিভ চেটে!
(ভাত ও চুমুর বিজ্ঞাপন)
রফিক আজাদ স্মরণে এ যেন তারই পুনরুক্তি।সবদিকে কবি দেখতে পান ক্ষয়। সবখানেই যেন অধঃপতন। কোনোভাবেই যেন তা ঠেকানো সম্ভব নয়। অথচ চোখের সামনে তা ঘটে যাচ্ছে অহরহ।
শিশুদের চোখে কুয়াশার মতোন চশমা
যেন অন্ধকার ভবিষ্যতের ইশারা!মোড়ে মোড়ে ওষুধের ডিসপেনস্যারি
প্রায়ই অরোগী সুস্থতাকে ভেঙচি কাটে
ডেনিস দুধের বিজ্ঞাপনে করপোরেট মা
সন্তানের শারীরিক মেধা নিয়ে প্রশংসা করে!
(কমরেড)
এই যে আমাদের সামনে অশনিসংকেত। মনে পড়ছে সত্যজিতের সেই সিনেমার কথা। কী ভয়াল সময়! কী আমাদের ভবিষ্যৎ? কতদূর গেলো মানুষ? কীই বা উন্নতি হলো আমাদের? বরং কবি তুলে ধরেছেন মাতৃভূমির ক্ষয়িষ্ণু চিত্রল হরিণের শিকার। এর চেয়ে সুন্দর আর সত্য কাব্য কী হতে পারে কমরেড?
আমি সূর্যমুখী ফুল
কারো কথায় পিছন ফিরে
ক্যান বা দেখবো ভুল
ভুলের পথে যারাই থাকুক
ধুতরো ফুলের দেশে
দেশপ্রেমে থাকবো কেবল
আমি ডুবে ভেসে!
গভীর নদীর ইলিশ হলাম
উজানে সঞ্চার
দ্যাখো—পথে পথে ছড়িয়েছে
ছায়া অন্ধকার!
(আমি সূর্যমুখী ফুল)
আবার তিনি গান গেয়েছেন। ভুলে গেছেন হতাশার কথা। সুন্দরের কল্পনাবিলাসী কবি রচনা করেন মধুর আর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ; তৈরি করেন স্বপ্নের সেতু।
আজও তেঁতুলপাতার মিহি আবেদনে সাড়া পড়ে যায় পাড়াময়। মধ্যরাতের কবিতার আসর আজও কবিয়ালের ভার বহন করলেও দিনভর সাহিত্য আড্ডাগুলো শব্দকে কবিতা বানাতে জোগান দিতে পারে না, না পারে সাহসের তরী ভাসাতে। এত কিছুর মাঝেও কিছু কিছু কই মাছের প্রাণ থেকে বেরিয়ে আসে কিছু জৈষ্ঠের শামুক থেকে ঝিনুক মালা। ভাগ্য সবার সুপ্রসন্ন হয় না। ঝিনুকের মতো হতে গিয়ে অনেকে হারিয়ে গেছে জৈষ্ঠের দাবদাহে।
কবিতার প্রাণ নিয়ে কথা বলতে গেলে আমরা হয়ে যায় চেতনার ফেরিওয়ালা। চেতনার শাড়ির আঁচল আর কবিতার বাহাদুরি এক ঘরে কোনো কালে বসবাস করতে দেখিনি। কিন্তু যখন কবিতা পাঠের নিমগ্নতায় হারিয়ে যাই, চৈতন্যপুরীর দেশে তখন কিছু বাক্য কবিকে দাঁড় করিয়ে দেয় ওই পাহাড়ের কাছে। কবির ভাষায়
একটা মাটির ব্যাংক কিনি মহোদয়
জমা করি দেশপ্রেম অতি মহাশয়
কুমারীর জন্য যেই কাঁচুলি কিনেছি
তা নাকি হয়েছে ছোট!
(বহুমূত্র দেশপ্রেম)
‘সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের’ কবিতাগুলো সুখপাঠ্য, সাহসী। কবিরা সবকালে দ্রোহের সঙ্গে সত্যের শাদা দ্যুতিকে নিজের আবরণ মনে করে স্বাচ্ছন্দ্যে গ্রহণ করেন। এটা না হলে তখন কবিরা হয়ে যায় পা চাটা, তেলবাজ অথবা একচক্ষু।
কবির দেখা তখনই সত্য, যখন আপামর মানুষের মনের কথা হয়ে যায়। আর তখন কবির শব্দরা জড়ো হয় মানবতার আদল খোলে শান্তির সুশীতল বাতাসের সামিয়ানার নিচে। ‘জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও পবিত্র’—এ কথার সত্যতায় কবিরাও এগিয়ে থাকে। কবির ভাষা তাই হয়ে ওঠে বারুদের মতো:
আমাদের স্বাধীনতা পুরনো পত্রিকা
সের দরে হলো কি দালালি?
আমাদের দেশপ্রেম সবুজ ও লাল
কেন তবে নির্যাতনে শুধুই জ্বালালি?’
(স্বাধীনতা একটা ভূতের গল্প)
কবির দেশপ্রেম নিয়ে আমাকে আবার ভাবতে হচ্ছে। এত দেশপ্রেমের স্লোগানে কবির সন্দেহ হয়। তাই বুকের পাটা শক্ত কবিদের কোনো কালে কোনো প্রয়োজনে নীতিহীনতার কাছে মাথা নত হতে দেখা যায়নি।
চেতনা যখন হলো—ক্ষমতার গুটি
একা-দোকা দেশপ্রেম মরে গুঁটিসুটিদেশজুড়ে ধোঁকাবাঝি করছো মশাই
ধর্মকে ঢুকায়ে মুখে—হয়েছো কসাই
(দেশপ্রেম ধোঁকা)
এ কবিতা পড়ে বোধহয় ‘সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের’ কাব্যগ্রন্থটি বিশ কোটি জনগণের মুখের ভাষাও বটে। কারণ আমরা যখন সবাই একটা অস্থিরতা টের পাচ্ছি কিন্তু প্রকাশ করতে পারছি না। বা প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি, সে সময় আগুনের মতো সাহস নিয়ে সত্যের গান গেয়ে উঠলো এক তরুণপ্রাণ। কী তার কবিতার ভাষা, কী তার কবিতার উপমা। যেমনি সত্য উচ্চরণে উচ্চকণ্ঠ, তেমনি প্রেমের মহিমায় দারুণ। কোথায় পান এত তেজ? রোদের দিকে পিঠ দিয়ে যেন দাঁড়িয়ে আছে তার কবিতা। যুদ্ধের ময়দানে যেন তাঁবু ফেলে মশাল জ্বালবে তার কবিতা।
কবি দেশপ্রেমে বিভোর। দেশের অধঃপতন হোক এটা অনেকে হয়তো চায় না। আমাদের এ কবি দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতির মেরুদণ্ডহীনতা দেখে আঙুল তুলতে বাধ্য হয়েছে। তা ইশারা মাত্র। রক্তচক্ষু নয়! আল মাহমুদের ভাষায় কবি স্বপ্নদ্রষ্টা। এ কবিও স্বপ্নের চারা রোপণে সিদ্ধহস্ত। তিনি বলে ফেলেন ভেতরের কথা। অকপটে, ভনিতাহীন। কবির ভাষায়—
কোথাও দেখছি না তো নতুন বীজের আভা
শুদ্ধবীজ ছাড়া বল কীভাবে মিলবে চারা?
বিশুদ্ধ জমিনের অভাব!সবদিকে হিংস্র লাভা
জুলুম বেড়েছে তাই ঝরে আকাশের তারা!
(মড়কে আক্রান্ত বীজ)
একজন কবি নিতান্তই কবি নয়। কবিরা হয় আদর্শ ও নীতিবোধের ধারক বাহক। যদি কবি হয়ে যায় সমাজের আয়না—ধর্মের অনুষঙ্গের জোছনা সৃষ্টিকারি, তাহলে আমরা পাঠক মাত্রই কবিকে সুররিয়ালিজমের প্রস্তাবকও ভাবতে পারি। বেহায়া সময়ের বেনিয়াকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেছেন চমৎকার ঢঙে তার কয়েকটি কবিতায়। কবির ভাষায়:
নারীকে নারীর সাজে লাগে তো মধুর
হোক সে স্বাধীনকামী কুসুম বধূর
চিন্তায়-মননে, মধু— হোক না উদার
চুল খাটো করে কেন সাজো নর-ধার?
(শৌর্যবতী)
অথবা,
কোনো কোনো ভিড়ে মানুষ আলাদা করা মুশকিল!
রুচির অভাবে পড়ে তপড়াচ্ছে;— বাংলা কবিতাও
অথচ শোরুমে চড়িমূল্যে বিক্রি হচ্ছে মধ্যবিত্তীয় রুচি!
অপুষ্ট উরান, চোখ কচলাতে গিয়ে দেখি—
লাল হ’লো তার মাই!
(রুচি)
অথবা,
যেমন ছিলাম আমি তেমনই আছি
যুদ্ধের রক্তিম লালে কীভাবে যে বাঁচি
(দেশপ্রেম ঠুহ)
অথবা,
মনের দোয়াতে ভরা মাটির আতর
তাই দেখে শত্রু শ্রেণি হয়েছে কাতর
ভেতরে বিছানো হিরে, ক্ষমার জাজিম
কখনো আগুন আমি আলিফ ও মীম!
(মাটির আতর)
এসব কবিতা পাঠের পর পাঠককে আর নতুন করে আঙুল তুলে দেখানোর কিছু থাকে না।কবির যে চিৎকার তা সবাই বোঝে কিন্তু কানে তোলে না। কারণ কবি বলে যান ভবিষ্যতের কথা। আর আমরা থাকি বর্তমান নিয়ে। ফলে কবির ভাষার সঙ্গে আমাদের পরিচয় সে ভাবে ঘটে না। তিনি এগিয়ে গিয়ে সামনের কথা বলেন। পেছনের লোক তা বোঝে না। বুঝলেও অবহেলা করে দূরে সরিয়ে রাখে।
কবিরা সাধারণত সারা বিশ্বের, আপমর জনতার। তারপরও কবির বসবাসরত দেশটাই আপন ভুবন। কবি যে দেশের পরিবেশে বেড়ে ওঠো সে দেশের অনাচার, অসঙ্গতি অনিয়ম কবির চোখে পড়বেই। চোখে পড়া মানে কবির কালো রক্ত দ্রোহের বারতা বহন করেই চলে সম্মুখের দিকে। কবির নিজস্ব বয়ান শক্তি কবিকে দাঁড় করায় পাঠকের কাছে। এ সময়ের কবিদের শব্দ আর বাক্যের দুর্বোধ্যতা কবিতাকে যখন জটিলকার চটুলতায় নিয়ে যায় তখন পাঠকমাত্রই বোধগম্যের খেই হারিয়ে বোবা হয়ে যায় কবিতার মর্মার্থ উপলব্ধি করতে গিয়ে। তারপরও কিছু কবি মিথ-উপমায়-অনুপ্রাসে কবিতাকে পাঠকের কাছে করে তোলেন সর্বগ্রাহ্য। তখনই কবি পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নেয় সাবলীলভাবে। তেমনই কিছু সুখপাঠ্য সচেতনতার কবিতা আছে কবি পলিয়ার ওয়াহিদের ‘সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের’ পাতায় পাতায়।
বিস্ময়ের জায়গা হলো কবি নিজেই ঘুমন্ত সিংহের রূপ ধারণ করে সময়ের অযাচিত বিষয়গুলো বলতে বলতে আগুনের খোলায় ছিটিয়ে দিলেন জলের ফোঁটা। যে ফোঁটায় ছ্যাঁৎ ছ্যাঁৎ করে আগুনের স্ফুলিঙ্গ তৈরি করে ভবিষ্যতের সতর্কতা জানান দেয়। ফলে তার কবিতার পাঠকরা তাকে সামাপ্রদায়িক ভাবকে শুরু করলেও আমি মনে করি এ কবি বলতে গিয়ে ‘সত্যের মতো বদমাশ’কে ছুঁতে সাহস করেছেন।
কিন্তু পাঠক মাত্রই কবিকে অন্যচোখে ভাবতে পারেন নিশ্চিত। তবে বলতে কোনো দ্বিধা নেই—কবি উত্তরা বাতাসের হাতে বেড়ে ওঠা। উত্তরা মেঘের শক্তিময়তায় দক্ষিণের কালোছায়া লণ্ডভণ্ড হয়ে মিশে যায় বিপরীত মেরুর কাছে। কবির ভাগ্য সুপ্রসন্ন যে উত্তরের চিন্তাশক্তি কবিকে নিয়ে যেতে পারে জবাবদিহিতাময় স্বপ্নের কাননে। কবিরা যখন ডান হাতে বেইজ লাগাতে পছন্দ করবে, তখন কবির বাণী হয়ে যাবে মোজেজাময় শক্তির উৎস। তখন শান্তির পায়রা লুটে পড়বে কবির পদনীড়ে।
কবির কবিতায় ভেসে বেড়ানো কিছু সত্যের দ্যুতিতে এখন চোখ দেবো:
সুরাইয়া মেয়েকে পড়াচ্ছে—ভূগোল
বলছে—পৃথিবী পাতলা ডালের মতোন ঝুলানো
এবং সুস্বাদু! আর ছেলেকে মুখস্ত করাচ্ছে
‘দেশপ্রেম’ হলো—জোর করে চাপানো দায়িত্বের ঝোলা!
(গৃহবিষয়ক)
আবার,
মনে রাখতে হবে—গণতন্ত্রের মুখোশ পরে
যারা অভিনয়ে নেমেছে
তাদের কাছে সুন্দরবনের বাঘ
ও ঐতিহ্যের আলাদা আইডেনটিটি নেই!
(অবৈধ সময়)
অথবা,
পাবলিক টয়লেটের বদলে
মাথাগুঁজে দাঁড়িয়েছে পিঠকুঁজো বিদ্যাপীঠ
জ্ঞানের ময়লা ভরে বিজাতীয় ডাস্টবিন
(কমরেড)
অথবা
কেবল মুত্যুর ফুলে বেঁচে থাকা যায়— এ কথা জানেন
আমাদের সংক্ষিপ্ত জীবন
তবুও কাদের হাতে দ্যাখো—উঠে গেছে চিনাবাদামের চাষ
আখের রসের অভাবে জন্ডিসে ভুগছে তাবৎ শহর!
(আত্মঘাতী)
যে কোন ব্যক্তির কনফিডেন্স থাকা চাই। এটাতে ভর করে তার সামনের গতিপথ। কবি পলিয়ার ওয়াহিদের এ গ্রন্থটির নাম কবিতায় কবির বয়ান ছিল ঠিক এমন—
মৃত্যুর মতো নিশ্চিত জানতাম—আমি কবি!
ফুটন্ত ফুলের মতোন ছিলাম কর্মময়
আমার সময়গুলো—
ঘুমন্ত সিংহের মতো—ননপ্রতিবাদী
কিন্তু আমি চিরকাল খরগোশের মতোন দ্রুত
আর বাতাস এবং পাখির মতো স্বাধীন!
(সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের)
কবিতার ভেতরে তার ভরসা নিজেকে দিয়ে শুরু করতে পছন্দ করেছেন। সৃষ্টির রঙ নিয়ে তার মাথাব্যথা নয়। মাথাব্যথা কর্মের পরিধি নিয়ে। নিজেকে উপমায় এনে কবিতায় আরেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে জানান দিলো যে, কালো আর ধলো বাহিরে কেবল, কর্মই জীবনের তরি। সুন্দরের তকমায় সৃজনের ক্ষমতা সবসময় বেশিই ছিল। কবি সে পথে হাঁটতে সাহসের সমাচার দেখিয়েছেন। কবির আর একটি দৃষ্টতা হচ্ছে উৎসর্গের সামিয়ানায় সে যাদেরকে রেখেছেন তারা সময়, সমাজ, মানবতা ও প্রকৃত দেশের নিবেদিত হিসেবে দেখতে পাই। সে পথে কবি দৃঢ়পায়ে দৃঢ়চিত্তে হাঁটার সাহস বুকে নিয়ে ভিকটোরির আঙুল ধরেছেন কবিতার জমিনে। লাল সবুজের উর্বর মৃত্তিকায়।
কবির দুষণীয় বিষয় ছিল আমাদের তথাকথিত যৌনবাদ, ননুবাদ, চনুবাদ ও উষ্ণতার আবহে কবিতা না বুনে প্রমাণ করলেন যে, এসব ছাড়া কবিতা লিখা যায় এবং কবিতা হয়। এ সময়ের কিছু কবি নারীর গতরের বর্ণনায় সিক্ত হতে পারলেই গর্ববোধ করে এবং সে কবিতাগুলো কিছু সম্পাদক না দেখে অস্ত্রের মতো কাগজে ছাপিয়ে তাদের উৎসাহ দেয়! বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের নারী লেখকরাও মাঝে মাঝে বিব্রতবোধ করে।তবে সেটারও একটা মাত্রা থাকা চায়। প্রকৃতি আর সমাজের আবহ নিয়ে কবিতা বলতে পারা মাঝে আলাদা একটা শক্তি ও আনন্দ আছে। কবি এ জায়গায় নিজেকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন বলে আমার বিশ্বাস।
কবির বেশ কয়েকটি অক্ষর বৃত্তের ছন্দোবদ্ধ কবিতা আছে এ বইটিতে। যেগুলো পাঠে ছন্দের মাত্রা ও অন্ত্যমিল ভালোভাবে চিনতে সাহায্য করেছে। ছন্দেও তার কব্জির জোর তিনি দেখিয়েছেন। কারণ এ সময়ে অনেকেই ছন্দ জানেনই না অথবা জানলেও ব্যবহার বিধিতে তারা কসুরতায় ভরা। কবির ভবিষ্যৎ শব্দের সোহাগে বেড়ে উঠুক আর মানবতার কল্যাণে হয়ে যাক নিরন্তর সাধনার প্রতীক। জয় হোক কবিতার জয় হোক কবির।
সময়গুলো ঘুমন্ত সিংহের
অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি
প্রচ্ছদ: ফারুক মুহাম্মদ
প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি: ২০১৮
দাম: ১৫০ টাকা।