ভ্রমণ তো অনেকেই করেন; কিন্তু লিপিবদ্ধ করেন ক’জন? আবার ভ্রমণকাহিনি যে সাহিত্য, সেটাই বা জানেন ক’জন? ফলে ভ্রমণকাহিনি কোনটি প্রথম, সেটি নিয়ে আর আলোচনা হয় না। অথচ ভ্রমণকাহিনির তালিকা যেমন দীর্ঘ, তেমনি গুণে-মানে বাংলা ভ্রমণসাহিত্য অনেক সমৃদ্ধও। আমার জানামতে, ভ্রমণকাহিনির অন্যতম পুরোধা অন্নদা শংকর রায়। তিনি বলেছিলেন, ‘ভ্রমণ থেকেই হয় ভ্রমণ কাহিনী। কিন্তু ভ্রমণকারীদের সকলের হাত দিয়ে নয়।’ অন্নদাশঙ্করের এই কথা এক চিলতেও অতিরঞ্জিত নয়। কারণ সবাই ভ্রমণ করতে পারে, কিন্তু ভ্রমণকাহিনি লিখতে পারে না।
মূলত যে ভ্রমণরচনা আকর্ষণীয়, পাঠযোগ্য, গভীর পর্যবেক্ষণধর্মী, প্রকৃতি অবলোকনে অনন্য, এমনকী বারবার পড়ার কৌতূহল জাগিয়ে তোলে, সেটাই প্রকৃত ভ্রমণসাহিত্য। চরিত্র ও কাহিনি-বর্ণনা যদি মুখ্য হয়ে ওঠে, তাহলে তা হয়ে ওঠে ভ্রমণ-উপন্যাস। প্রবোধ সান্যালের ‘মহাপ্রস্থানের পথে’, অবধূতের ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’ তেমন ভ্রমণ-উপন্যাস। এই প্রসঙ্গে বলা চলে, উপন্যাসের নামকরণে ‘ভ্রমণ’ কথাটি বহুল-ব্যবহৃত। যেমন—জোনাথন সুইফটের ‘গালিভার্স ট্রাভেলস’, স্টিভেনসনের ‘ট্রাভেলস উইথ এ ডাংকি’, বানিয়ানের ‘পিলগ্রিমস প্রগ্রেস’, গ্রাহাম গ্রিনের ‘ট্রাভেলস উইথ মাই আন্ট’ প্রভৃতি।
ভ্রমণসাহিত্য প্রসঙ্গে ড. মোহাম্মদ আলী খান বলেছেন, ‘ঘরকুনো বাঙালি ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়েছে পৃথিবীর সবক’টি মহাদেশে, সে প্রতিনিয়ত পাড়ি দিচ্ছে কত দেশ-মহাদেশ-অরণ্য-পর্বত-সাগর-মহাসাগর-নদী-উপত্যকা। লেখা হচ্ছে একের পর এক ভ্রমণ কাহিনী ও তা প্রকাশিত হচ্ছে, বাংলা ভ্রমণ সাহিত্য হচ্ছে সমৃদ্ধ ও সমাদৃত।’
সবশেষে গিয়ে হয়তো মনে হবে ‘শেষ হয়েও হলো না শেষ।’ যেহেতু ‘রহস্যময় আদম পাহাড়ে’র প্রত্যেক পরিচ্ছদের একটি করে শিরোনাম রয়েছে।
উপন্যাস, গল্প বা নাটকের সার্থক আত্মপ্রকাশের আগেই বাংলা ভ্রমণকাহিনি পাঠককূলকে স্পর্শ করেছে। তাই গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটকের মতো ভ্রমণকাহিনিও সাহিত্যের একটি শাখা। সাহিত্যে এর গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। একটি আদর্শ ভ্রমণকাহিনিও পাঠককে আকৃষ্ট করতে পারে। স্থানের বিবরণ, দর্শন, রোমাঞ্চ পাঠককে ভ্রমণ না করেও ভ্রমণের সাধ এনে দিতে পারে। তেমনই একটি ভ্রমণবিষয়ক বই ‘রহস্যময় আদম পাহাড়’। যার কাহিনি বর্ণনা করেছেন লেখক ও সাংবাদিক উদয় হাকিম। বইয়ের নাম শুনেই কেমন নড়েচড়ে বসতে ইচ্ছে হয়। নামের মতোই বইয়ের সাবলীল বর্ণনা পাঠককে নিয়ে যায় রহস্যঘেরা এক জগতে। যেখানে লেখকের সঙ্গে পাঠকও ভ্রমণ করতে বাধ্য হন।
এ প্রসঙ্গে অবশ্য ড. জিনিয়া রহমান বলেছেন, ‘ভ্রমণ না করেও আপনি ভ্রমণ করতে পারেন ভ্রমণ সাহিত্য পড়ে। জনপ্রিয় কিছু ভ্রমণ সাহিত্য পড়ে আপনি পৃথিবীর একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে আসার স্বাদ পেতে পারেন। কল্পনায় ঘুরে বেড়াতে পারেন আমাজনের গহীন জঙ্গলে, একটা তারা ভরা আকাশের নীচে সাহারা মরুভূমিতে, এন্টার্কটিকার সীল মাছ গুলোর সাথে বা কোন আকাশ চুম্বী পাহাড় পর্বতে।’
উদয় হাকিমের ‘রহস্যময় আদম পাহাড়’ পড়ে আমার তেমনটিই মনে হয়েছে। পড়তে পড়তে আমিই যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম আদম পাহাড়ের আনাচেকানাচে। আমি যেন পিছু পিছু হাঁটছিলাম লেখকের। ছুঁয়ে দেখছিলাম ঝরনার জল। পাথরের কাঠিন্য যেন আমাকেও মজবুত হতে সাহায্য করছে। বইয়ের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় তার জীবন্ত বর্ণনা, ভাষার সারল্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। পাহাড়ি পথ, বয়ে চলা নদী, বৃষ্টির মতো ঝরনার শব্দ, পাহাড়ি শিশু, ক্রিকেট খেলা, দোকানপাট চোখের সামনে যেন জ্বলজ্বল করছে। একজন প্রকৃত লেখকের গুণ বা বৈশিষ্ট্য এমনটিই হওয়া দরকার।
বইকে লেখক আঠারো পরিচ্ছদে ভাগ করেছেন। প্রত্যেক পরিচ্ছদই মনে হবে স্বতন্ত্র। আবার শেষে গিয়ে একটি পূর্বোক্ত বা শেষোক্ত টান বা মিল খুঁজে পাবেন পাঠক। তার নিষ্কণ্টক বর্ণনাভঙ্গি পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা। সবশেষে গিয়ে হয়তো মনে হবে ‘শেষ হয়েও হলো না শেষ।’ যেহেতু ‘রহস্যময় আদম পাহাড়ে’র প্রত্যেক পরিচ্ছদের একটি করে শিরোনাম রয়েছে। সেই শিরোনামই পাঠকে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী করে তুলবে। যেমন-
১. আদম পাহাড়ে যাত্রা
২. অ্যাডামস পিকের পথে
৩. দুর্গম পাহাড়ে ওঠার আগে রেকি
৪. আদম কেন অ্যাডামস পিকে নেমেছিলেন?
৫. মধ্যরাতে অচেনা পাহাড়ে
৬. শেষরাতে পাহাড় চূড়ায়
৭. সামিট করার মুহূর্তে ব্যাড লাক!
৮. আদম পাহাড়ে যেতে হবে পূর্ণিমা রাতে!
৯. আদমের পায়ের ছাপ নিয়ে ভ্রান্তিবিলাস!
১০. চোখের সামনে উদ্ভাসিত অ্যাডামস পিক!
১১. নামার পথ কখন শেষ হবে?
১২. নেশার ঘোরে নামছিলাম
১৩. ফিরে ফিরে দেখছিলাম অপরূপ অ্যাডামস পিক
১৪. রহস্যেঘেরা অ্যাডামস ব্রিজ
১৫. ওনাবাতুনা- পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমুদ্রসৈকত
১৬. ওনাবাতুনা- পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমুদ্রসৈকত-২
১৭. গল ফোর্ট: শ্রীলঙ্কার আকর্ষণের কেন্দ্রস্থল
১৮. গল ফোর্ট : ঐতিহাসিক ব্যতিক্রমী দুর্গ।
অর্থাৎ এসব শিরোনাম দেখেই পড়তে যেন লোভ হয়। আর একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করে আর উঠতে মন চাইবে না। বলতে গেলে, দৃষ্টিশক্তি তো সবারই আছে। তবে দেখে এমন নিখুত বর্ণনা করার শক্তি সবার নেই। ফলে ‘রহস্যময় আদম পাহাড়’ সারাজীবন ভ্রমণপিপাসুদের তৃষ্ণা মেটাবে।
এখন তবে আলোচনার স্বার্থে জেনে নেই—আদম পাহাড় কী? লেখক বলেছেন, ‘আদম পাহাড়। অ্যাডামস পিক। আদম (আ.)-কে যেখানে নামানো হয়েছিল সেটাই অ্যাডামস পিক। শ্রীলঙ্কার ওই পাহাড়টি এখন রীতিমতো বিখ্যাত জায়গা।’ আদম পাহাড়ে নাকি আদমের পায়ের ছাপ রয়েছে। সেই পায়ের ছাপ দেখতেই হয়তো মানুষ এত কষ্ট করে যায় সেখানে। এছাড়া পাশেই আছে আদম সেতু। যে সেতু দিয়ে পার হয়েছিলেন আদম (আ.)। মূলত আদম পাহাড় শ্রীলঙ্কার মাঝামাঝি একটি জায়গা।
যেখানে সহজে খাবার পাওয়া যায়। বলে রাখা ভালো, এসব দেখতে আদম পাহাড় ভ্রমণে লেখকের সঙ্গী ছিলেন তার সহকর্মী ফিরোজ আলম আর মিলটন আহমেদ।
লেখকের ভাষায়, ‘রাজধানী কলম্বো থেকে অ্যাডামস পিকের দূরত্ব প্রায় ১৫০ কিলোমিটার। চারদিকে পাহাড় ঘেরা, পর্বতশ্রেণি বলা চলে। আদমের পায়ের ছাপ দেখার জন্যই অ্যাডামস পিক বা আদম পাহাড়ের চূড়ায় যান সবাই।’ এখন প্রশ্ন হতে পারে, আদমের পায়ের ছাপ কেমন? এ প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া যায় এভাবে, ‘এটি আসলে পাথরের উপর এক ধরনের অঙ্কন! কঠিন শিলার উপর আবছা কিছু দাগ। লোকজন সেটাকে পায়ের ছাপ মনে করেন। ওই ছাপটি অনেক বড়। দৈর্ঘ্য ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি (কেউ বলে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি), প্রস্থে ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। আদম (আ.) নাকি ৬০ গজ লম্বা ছিলেন। অর্থাৎ ১৮০ ফুট। কেউ অবশ্য বলেন ৬০ ফুট লম্বা ছিলেন।’
তবে, আদম পাহাড়ের ইতিহাস নিয়ে নানা রকম ঘোলাটে তথ্য রয়েছে। কোনটা ঠিক, বোঝার উপায় নেই। বলা হয়, ১৮৫১ সালে আরবের সোলায়মান নামে এক পর্যটকের চোখে এ পদচিহ্ন প্রথম ধরা পড়ে। তবে ১৫০৫ সালে পর্তুগিজ এক পর্যটক এ চূড়ার নাম দেন ‘পিকুডি অব আদম’। অর্থাৎ ‘আদম চূড়া’। তার আগে স্থানীয় ভাষায় এর নাম ছিল ‘সামান্থাকুটা’। যার অর্থ ‘ভোরের উদীয়মান সূর্য’। ওই উঁচু জায়গা থেকে সবার আগে সূর্য দেখা যায় বলে এমনটা বলা হয়। কিংবা সূর্য সবার আগে শ্রীলঙ্কায় এ পাহাড়কে সাক্ষাৎ দেয়—এ জন্যই হয়তো এ রকম নামকরণ হতে পারে।
আসলে আদম পাহাড় নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা রয়েছে। সব বিষয়েই লেখক আলোকপাত করেছেন। বইটি পড়ে মনে হচ্ছে, আদম পাহাড় ভ্রমণ ছাড়াও এর প্রকৃত ইতিহাস জানতে লেখককে অনেক পড়তে হয়েছে। বিভিন্ন ধর্মের বৃত্তান্তও তার আয়ত্তে আনতে হয়েছে। ভ্রমণ করতে করতে লেখক নিজেও কিছু প্রশ্ন করেছেন। যার সমাধান হয়তো কেউ দিতে পারবে না। এমনকী লেখক তো নয়ই। ধর্মীয় সেসব অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে আলোচনার চেয়ে শ্রীলঙ্কার এ অঞ্চলের প্রকৃতি, বাতাস, জল, পাথর, বানর বা হনুমান নিয়ে আলোচনা করাই শ্রেয়। লেখক মূলত সেটাই করেছেন। ভ্রমণকাহিনিকে ভ্রমণের মতোই উপস্থাপন করেছেন।
আদম পাহাড়ে উঠতে হয় রাতের অন্ধকারে। তাই শুরু করতে হয় মাঝরাত থেকে। কারণ উঠতে উঠতে ভোরের সূর্যোদয় দেখা যায়। প্রায় ঘণ্টা তিনেকের বেশি সময় লাগে উঠতে। তবে ওপরে ওঠা মোটেও সহজ কাজ নয়। শারীরিক এবং মানসিক শক্তি দরকার। কারণ রাতের অন্ধকারে ঘন জঙ্গল, গাছপালা- সব মিলিয়ে অজানা একটা পরিবেশ। তবে রাতের বেলা কোন ভয়ঙ্কর জীবজন্তু চোখে পড়ে না এখানে। তাছাড়া ভয়ঙ্কর কিছু নেইও মনে হয়। তবে শান্তশিষ্ট কিছু বানর আছে। তারা উঁচু ভূমিতে নয়; থাকে লোকালয়ে। যেখানে সহজে খাবার পাওয়া যায়। বলে রাখা ভালো, এসব দেখতে আদম পাহাড় ভ্রমণে লেখকের সঙ্গী ছিলেন তার সহকর্মী ফিরোজ আলম আর মিলটন আহমেদ। তাদের সঙ্গও লেখককে উজ্জীবিত করেছে। কেননা একা একা ভ্রমণ কখনো মজার হয় না। সেটা পাহাড়ে ওঠা-নামা সম্পর্কে লেখকের বর্ণনাতেই অনুমান করা যায়। লেখক বলেন, ‘ওঠার সময় যেমন কষ্টে বুক ফেঁটে যাচ্ছিলো, নামার সময় তার বিপরীত। মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ঠেলে ঠেলে নামাচ্ছিলো। যেন সেই দৌড়!’
আর ঠিক এভাবেই যেন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, শ্রীলঙ্কা সফর, আদম পাহাড়, আদম সেতু, দুর্গ ও সৈকত—সব কিছুই মোহনীয় হয়ে ওঠে উদয় হাকিমের কলমের জাদুতে।
বইটি পড়তে পড়তে মনে হলো—উদয় হাকিমের বর্ণনা পাহাড়ি ঝরনার মতোই কলকল করে এগিয়ে যায়। ঝরনার জলের মতোই স্বচ্ছ ও টলটলে। লেখকের বর্ণনা ঠিক এ রকম, ‘গাড়ি যাচ্ছিল পূর্ব-দক্ষিণ কোণে। যতই ভেতরে যাচ্ছিলাম ততই জঙ্গল আরো গভীর হচ্ছিল। ধীরে ধীরে টিলা থেকে পাহাড়ে প্রবেশ করছিলাম। দুপাশে ঘন অরণ্য। আবার কখনো এক পাশে পাহাড়, আরেক পাশে খাঁদ। ধীরে ধীরে জনমানবের চিহ্ন কমে আসছিল। রাস্তায় ছিল বিপজ্জনক বাঁক। রাস্তার পাশ দিয়ে নেমে যাচ্ছিল ঝর্ণা। জলের কূলকূল ধ্বনি, পাখির ডাক, ঘণ অরণ্য- সব মিলিয়ে দারুণ অ্যাডভেঞ্চার।’ কোনো কিছুই যেন তার চোখ এড়ায় না। কোনো শব্দই যেন দুর্বোধ্য নয়। ভ্রমণকাহিনি যেন এভাবেই লিখতে হয়। তা কাহিনি বর্ণনায়, শব্দচয়নে, বাক্যগঠনে, উপমা প্রয়োগে যথাযথভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
বইটিতে আদম পাহাড় ছাড়াও শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক ব্যতিক্রমী দুর্গ ‘গল ফোর্ট’ ও পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমুদ্রসৈকত ‘ওনাবাতুনা’র বর্ণনা রয়েছে। গল দুর্গ সম্পর্কে লেখক বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কার গল দুর্গ সেই তুলনায় অন্যরকম। সেখানে জমিদার বা রাজাবাদশাহ কেউ থাকতেন না। দখলদারদের একজন প্রতিনিধি থাকতেন। সে-ও বাণিজ্য প্রতিনিধি। একভাগে স্থল থাকায় উত্তর দিকটা কিছুটা বেশি সুরক্ষিত ছিল। যাতে স্থল হামলা সহজেই মোকাবিলা করা যায়। এছাড়া তিন দিকে জল থাকায় পাহারা দিতে সুবিধে হতো। খালি চোখে অথবা দূরবিনে সব দৃশ্যমান হতো।’ ইতিহাসে বর্ণিত অন্যসব দুর্গের চেয়ে এটি বিভিন্ন কারণেই ব্যতিক্রম। তা হয়তো বইটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। এছাড়া ওনাবাতুনা সম্পর্কে লেখক জানান, ‘অন্য সমুদ্রসৈকতের চেয়ে এর কিছুটা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। দূরে দেখা যাচ্ছিলো বিশাল পাথরের খন্ড। সেখানে ঢেউগুলো বাড়ি খাচ্ছে। সাদা ফেনার মতো জলগুলো ঝলসে উঠছে। নৌকা বা জাহাজ সেখানে ভেড়া মুশকিল। পাথরে আটকে বা জোরে আঘাতে ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই হালকা স্পিডবোট চলে বেশি।’ ফলে এ কথা স্পষ্ট যে, বিশ্বজুড়ে এই আলাদা বৈশিষ্ট্যের জন্যই খ্যাতি আছে ওনাবাতুনা সমুদ্রসৈকতের।
আর ঠিক এভাবেই যেন ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, শ্রীলঙ্কা সফর, আদম পাহাড়, আদম সেতু, দুর্গ ও সৈকত—সব কিছুই মোহনীয় হয়ে ওঠে উদয় হাকিমের কলমের জাদুতে। তাই তো ‘রহস্যময় আদম পাহাড়’ বাংলা ভ্রমণসাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।
রহস্যময় আদম পাহাড়
উদয় হাকিম
প্রচ্ছদ: বাইজিদ আহমেদ
প্রকাশক: অনিন্দ্য প্রকাশ
প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২০
মূল্য: ৩০০ টাকা