ভ্রমণ করতে সবারই ভালো লাগে। কেউ কেউ তা আবার লিখে রাখতে ভালোবাসেন। তবে কোথাও ঘুরতে গিয়ে তা লিপিবদ্ধ করে রাখতে কিছু নিয়ম জেনে রাখাও জরুরি। কেননা সেখানে কীভাবে গেলেন, কী কী দেখলেন, সেখানকার সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, জীবনযাপন সম্পর্কে জেনে নিতে হয়। সেসব কাহিনি আকারে তুলে ধরাই ভ্রমণকাহিনির মূল লক্ষ্য। এসব বৈশিষ্ট্য যথাযথভাবে থাকলে ভ্রমণকাহিনিও সার্থক হয়ে ওঠে। আবার যে কেউ যখন-তখন ভ্রমণ করতে পারেন। কখনো কখনো প্রয়োজনীয় কাজের ফাঁকেও ভ্রমণ করা হয়ে থাকে। বিদেশ ভ্রমণ অনেকটা তেমনই। এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো।
তবে কবি-লেখকরা পর্যটক হিসেবে কোনো জায়গা বা দেশে গেলে সেখানকার মানুষ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন। সেসব কথা, তথ্য বা অভিজ্ঞতা লেখায় যথাযথভাবে তুলে ধরেন। তবেই সেটি ভ্রমণকাহিনি হিসেবে বিবেচ্য হয়। ভ্রমণকাহিনি সাহিত্যের অন্যতম একটি শক্তিশালী শাখা। বাংলা সাহিত্যে ভ্রমণকাহিনির সংখ্যা অনেক। সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত ‘দেশে বিদেশে’ বইকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ভ্রমণকাহিনি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জাপান-যাত্রী’, ‘পারস্যে’, ‘রাশিয়ার চিঠি’ ইত্যাদি ভ্রমণকাহিনি পাঠকের কাছে বেশ সমাদৃত। সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পালামৌ’ ভ্রমণকাহিনিও অনেকের কাছে পরিচিত।
কবি-লেখকরা নিজের দেখা মজার সব ঘটনা দারুণভাবে ভ্রমণকাহিনিতে উপস্থাপন করেন। এ কারণে ভ্রমণকাহিনি সুখপাঠ্য, পাঠকের কাছেও দারুণ উপভোগ্য। একজন মানুষের পক্ষে বিশাল এই দুনিয়ার অনেক কিছুই দেখা সম্ভব হয় না, সব কিছু জানাও সম্ভব নয়। এ অবস্থায় ভ্রমণকাহিনি পড়ে অনুসন্ধিৎসু পাঠকের মন কিছুটা হলেও পরিতৃপ্ত হয়; জানা হয় অজানাকে। তেমনই অজানাকে জানাতে পাঠকের সামনে নান্দনিক একটি ভ্রমণকাহিনি উপস্থাপন করেছেন ফারুক সুমন।
ফারুক সুমন কবি ও গদ্যশিল্পী। তবে পেশায় বাংলা বিষয়ের শিক্ষক। ফারুক সুমনের এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলো হলো—‘অচঞ্চল জলের ভিতর নিরাকার বসে’, ‘আঙুলের ডগায় সূর্যোদয়’ও ‘বিচঞ্চল বৃষ্টিবিহার’। গবেষণা-প্রবন্ধগ্রন্থগুলো হলো—‘শামসুর রাহমানের কবিতা: নগর-চেতনা ও নাগরিক অনুষঙ্গ’, ‘শিল্পের করতালি’ও ‘শামসুর রাহমানের কাব্যস্বর’। ‘ভ্রমণে অবাক অবগাহন’ তার প্রথম ভ্রমণগদ্য। তিনি কবিতার জন্য ভ্রমণ করেছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। ২০১৯ সালে ‘সাউথ এশিয়ান লিটারেচার ফেস্টিভালে’ যোগ দিতে তিনি গিয়েছিলেন দিল্লি। সম্মেলনে যোগ দিয়েই ক্ষান্ত হননি কবি। ঘুরে ঘুরে দেখেছেন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের জন্য তিনি পাঁচদিন অবস্থান করেছেন ভারতে। সেই সময়ের স্মৃতি জানিয়েছেন লেখার মাধ্যমে। মলাটবদ্ধ সেই ভ্রমণকাহিনির নামই ‘ভ্রমণে অবাক অবগাহন’।
আমরা কম-বেশি সবাই জানি ভ্রমণ প্রসঙ্গে সেন্ট অগাস্টিন বলেছেন, ‘পৃথিবী একটা বই। যারা ভ্রমণ করে না; তারা বইটি পড়তে পারে না।’ পাঠকের সৌভাগ্য এই যে, ফারুক সুমন ভ্রমণ করেছেন। তার সেই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছেন পাঠকের সঙ্গে। তাই পরোক্ষভাবে পাঠকেরও ভ্রমণের অভিজ্ঞতা হয়ে গেল। ‘দুধের স্বাদ অন্তত ঘোলে মিটলো।’ তবে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভ্রমণকাহিনিও সাহিত্যের পাঠকনন্দিত একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।
ভ্রমণবিষয়ক বইটি পড়ে আমরা জানতে পারি, ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর দিল্লিতে শুরু হয় আন্তর্জাতিক এ সাহিত্য সম্মেলন। ২০ অক্টোবর শেষ হয় সম্মেলনটি। এতে সার্কভুক্ত দেশ তথা বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের কবি-সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন। সেই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের একজন কবি হিসেবে আমিন্ত্রত হন ভ্রমণে অবাক অবগাহনের লেখক ফারুক সুমন।
ভ্রমণের সেইসব আদি-অন্ত তুলে ধরেন কলমের মাধ্যমে। এই ভ্রমণকাহিনির কিছু অংশ প্রথমদিকে (২০২০ সালে) ‘কবিতার পথে পথে’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেছে সাহিত্যের ওয়েবম্যাগ ‘চিন্তাসূত্র’। চিন্তাসূত্র লেখাটির দশ পর্ব প্রকাশ করেছিল। পরে বই আকারে প্রকাশিত হয়। ভ্রমণকাহিনির পাশাপাশি বইটিতে সত্তরটিরও বেশি ভ্রমণ সংশ্লিষ্ট ছবি স্থান পেয়েছে। যা বইটির কলেবর বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি শ্রী বৃদ্ধিও করেছে। বলতে গেলে ভ্রমণের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ নূরুল হক বইটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘তার গদ্যের ভাষা ঝরঝরে। বর্ণনা ইতিহাস আশ্রিত। নিজের বিস্ময়বোধ গোপন করে ইতিহাসের নানা পর্বের কথা তুলে ধরেছেন এতে। আর বিভিন্ন ঐতিহাসিক-সাংস্কৃতিক স্থাপনার বর্ণনা করার ফাঁকে ফাঁকে প্রকাশ করেছেন নিজের মুগ্ধতার কথাও।’ তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে গেলে, ফারুক সুমন ভ্রমণকাহিনি বলার সময় পাঠককেও সঙ্গী করে নিয়েছেন।
আলোচনার বিষয়বস্তু, সময় ও অতিথিদের নাম সংযুক্ত থাকায় ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে পরিগণিত হতে বাধ্য। এইসব তথ্য-উপাত্ত অনেক বছর পর গবেষকদের উপকৃত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
ফারুক সুমন ঢাকার মিরপুরের বাসা থেকে বের হওয়া থেকে শুরু করে ভ্রমণের শেষ অবধি বর্ণনা করেছেন খুব সুনিপুণভাবে। লেখক বলেছেন, ’১৬ অক্টোবর ২০১৯ বিকেল ৪টায় বাসা থেকে বের হলাম। মিরপুর ১০ থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশে আমাদের ভ্রমণের শুভসুচনা।’ এরপর সম্মেলনে যোগ দেওয়ার ফাঁকে ফাঁকে তিনি কলকাতার নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু বিমানবন্দর, দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, হোটেল সপ্তগিরি, হোটেল কিয়ান, দিল্লির কুতুবমিনার, লোটাস টেম্পল, দিল্লি হাট, পালিকা বাজার, কনট প্লেস, লোদী গার্ডেন, ইন্ডিয়া গেট, তাজমহল, যমুনার তীর, দিওয়ানে খাস, অনুপ তালাও, সেলিম চিশতির দরগা ও বুলন্দ দরজা পরিদর্শন করেছেন।
ঢাকা থেকে তার সফরসঙ্গী হয়েছিলেন কবি কামরুল হাসান ও সেঁজুতি বড়ুয়া। ভারতে গিয়ে যুক্ত হয়েছিলেন সেলিনা হোসেন, মুহম্মদ নূরুল হুদা, মাইনুল ইসলাম মানিক, আশিক বিন রহিম, খালেদ উদ-দীন, সৌম্য সালেক প্রমুখ কবি-সাহিত্যিকগণ। লেখক জানান, সে বছর ‘সার্ক লিটারেচার অ্যাওয়ার্ড’ পান তিন জন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাও ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে যোগ দেওয়া কবিরা অনুষ্ঠানের বিভিন্ন সময়ে স্বরচিত কবিতা পাঠ ও বক্তব্য দান করেন। লেখক ভ্রমণকাহিনির ভেতরে ওইসব কবি-লেখদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিও তুলে ধরেছেন। সুযোগ বুঝে উপস্থাপন করেছেন পূর্ণাঙ্গ কবিতাও। যা বইটিকে বহুমাত্রিক করে তুলেছে।
ত্রিশটি পরিচ্ছেদে ফারুক সুমন তার ভ্রমণের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছেন। প্রত্যেক পরিচ্ছেদের শুরুতে আবার বিভিন্ন মনীষী, কবি-সাহিত্যিকের উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন। তারা হলেন—ইবনে বতুতা, মার্ক টোয়েন, জালাল উদ্দিন রুমী, গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, সেন্ট অগাস্টিন, হয়রত আলী (রা.), জীবনানন্দ দাশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নির্মলেন্দু গুণ, মির্জা গালিব, ওমর খৈয়াম, খালেদ হোসাইন, আল্লামা ইকবাল, অজিত দত্ত, বিনয় মজুমদার, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, অন্নদাশঙ্কর রায় ও জয় গোস্বামী। ভ্রমণ সম্পর্কে মার্ক টোয়েনের একটি উদ্ধৃতি রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে—‘আজ থেকে বিশ বছর পর অপনি এই ভেবে হতাশ হবেন যে, আপনার পক্ষে যা যা করা সম্ভব ছিল তা করতে পারেননি। তাই নিরাপদ আবাস ছেড়ে বেরিয়ে পড়ুন। আবিষ্কারের জন্য যাত্রা করুন, স্বপ্ন দেখুন আর শেষমেষ আবিষ্কার করুন।’ কবি জালাল উদ্দিন রুমির উদ্ধৃতিটি এরকম, ‘আমরা শূন্য থেকে ঘুরতে ঘুরতে এসেছি, যেমনটা তারারা আকাশে ছড়িয়ে থাকে। তারারা মিলে একটি বৃত্তের সৃষ্টি করে এবং তার মাঝে আমরা নাচতে থাকি।’
লেখক সম্মেলনের বিরতিতে যেখানেই ঘুরতে গেছেন, সেখানকার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরেছেন। যা পাঠককে অনেকটা উপকৃত করবে। বলতে গেলে ভ্রমণের কোনো কিছুই তিনি এড়িয়ে যাননি। কখনো কখনো কিছু কিছু মজার ঘটনাও শেয়ার করেছেন। বিমানবন্দরে বিড়ম্বনা, আতিথেয়তা সব কিছুই পাঠককে আকৃষ্ট করবে। পাশাপাশি ভ্রমণে অবাক অবগাহন পড়ে পর্যটকরা তাদের ভ্রমণের দিক-নির্দেশনাও পেতে পারেন। মোটকথা ভ্রমণের প্রাথমিক টুকিটাকি বিষয় জেনে নিতে পারবেন।
ফারুক সুমনের রচনার শিল্পগুণ প্রশংসার দাবি রাখে। তার শব্দচয়ন, বাক্যগঠন, সাবলীল বর্ণনা পাঠককে সহজেই আকৃষ্ট করতে সক্ষম। রাশভারি কোনো কথাবার্তা নয়; একেবারে প্রাণের স্পন্দন মিশে আছে প্রতিটি চরণে। ভ্রমণকাহিনিতে লেখকের ভাষা নিম্নরূপ, ‘নাহ এটা বড় কোনো শপিংমল নয়। বাইরে বড় অক্ষরে লেখা ‘দিল্লি হাট’ বা ‘ইন্ডিয়ান হ্যান্ডিক্রাফটস অ্যাম্পোরিয়াম’ জাতীয় কিছু। আমাদের দেশের ‘আড়ং’-এর মতো বড় কোনো আউটলেট হবে হয়তো। প্রবেশমুখে দরজার দু’পাশে কেশরওয়ালা দুটি সিংহের মূর্তি। পেতলের তৈরি। মানুষের বিলাসিতা দেখানোর নানা উপকরণের বিপুল সমাহার। অর্থসম্পন্ন ‘মালদার’ কেউ ভুলবশত প্রবেশ করলেও খালি হাতে বের হওয়া অসম্ভব। কারণ চোখধাঁধানো লোভনীয় এতসব সৌখিন জিনিস এখানে থরেবিথরে সাজানো আছে। আমি এই ছোট্টজীবনে এরকম জৌলুসপূর্ণ বাহারি দোকান কমই দেখেছি।’ বর্ণনায় এমন স্পষ্টতা আপনি খুব কমই পাবেন। সে হিসেবে এটিকে একটি সার্থক রচনা বলা যেতেই পারে। বরং না বললে সেটা হবে পরশ্রীকাতরতা।
বইটিতে কবিতা, ভ্রমণ, ইতিহাস, গল্প, বাস্তবতা—সব মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। কখনো রোমাঞ্চকর পরিবেশ। আবার কখনো বিড়ম্বনাও দেখা দেয়। কখনো সবাই মেতে ওঠেন হাসি-উল্লাসে। লেখক কাহিনির শুরুতেই বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন বিমানবন্দরে। সেই গল্পটা না হয় কিঞ্চিৎ লেখকের কাছেই শুনি—‘আবারও অপেক্ষা। দাঁড়িয়ে আছি। এমন সময় ইন্ডিয়া এয়ারলাইন্সের একজন বিমানবালাকে হেঁটে যেতে দেখলাম। কিছুটা মুখচেনা। ঢাকা থেকে কলকাতা আসার সময় তিনি আমাদের বিমানে ছিলেন। সুন্দরী বিমানবালার দিকে অন্য অনেকের মতো তখন আমিও ঘনঘন তাকিয়েছিলাম। তিনিও আমার সেই আগ্রহ উপচেপড়া দৃষ্টির কথা ভুলে যাননি বোধ হয়। দৌড়ে গিয়ে বিস্তারিত সমস্যার কথা বললাম। ‘হ্যাঁ, আপনাকে আমি দেখেছি। মনে আছে আমার।’ তার এই কথায় আমার শুকিয়ে যাওয়া কলিজায় কিছুটা হলেও রহমতের বারিবর্ষণ হয়েছে। ওহ শান্তি। কিন্তু হায়, মুহূর্তে আশার বাসা ভেঙে গেলো। তিনিও আমাকে তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। আমিও নাছোড়বান্দা। আবার অনুরোধ করি। এবার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন ‘আসুন’। সঙ্গে নিয়ে সেই অফিসারের কাছে গেলেন। নিজ হাতে মুচলেকা দিয়ে আমাদের উদ্ধার করলেন। হায়রে বিড়ম্বনা! পরিশেষে তাকে অজস্র ধন্যবাদ জানাতে ভুলিনি। বললেন, ‘এভাবে বাইরে যাওয়ার নিয়ম নেই।’ আমরা শুকনো হাসি দিয়ে মাথা নাড়লাম। তিনি চলে গেলেন।’ বইটিতে উল্লেখিত এমন কিছু ঘটনা আপনাকে সত্যিই আপ্লুত করবে।
বইয়ের পরিশিষ্টে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র, অনুষ্ঠানসূচি, পঠিত কবিতার ইংরেজি অনুবাদ, অতিথিদের ইংরেজি বক্তব্য ও পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে। শেষের দিকটাকে মোটামুটি একটি অনুষ্ঠানের সার্বিক প্রতিবেদনও বলা যেতে পারে। অনেকটা সাংগঠনিক কাঠামো দেওয়া হয়েছে। আলোচনার বিষয়বস্তু, সময় ও অতিথিদের নাম সংযুক্ত থাকায় ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে পরিগণিত হতে বাধ্য। এইসব তথ্য-উপাত্ত অনেক বছর পর গবেষকদের উপকৃত করবে বলে আমার বিশ্বাস।
কেননা ফারুক সুমন মনে করেন, আমাদের স্বল্পায়ুর জীবনে পৃথিবী নামক বইয়ের অনেক অজানা বিস্ময় অদেখাই থেকে যায়। নানা ধরনের সীমাবদ্ধতায় ভ্রমণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে আমরা চাইলে পৃথিবী নামক বইয়ের খোঁজ কিছুটা হলেও পেতে পারি ভ্রমণবিষয়ক বই পড়ে। তাই বলা যায়, ‘ভ্রমণে অবাক অবগাহন’ বইটি পড়ে পাঠক অবাক অবগাহনের সুযোগ পাবেন। আমি বইটির বহুল পাঠ ও প্রচার কামনা করছি। আশা করি ফারুক সুমনের এই সরস রচনা আপনার বিরক্তির কারণ হবে না—এ কথা নিশ্চিত করে বলতে পারি।
ভ্রমণে অবাক অবগাহন
ফারুক সুমন
প্রকাশক: দেশ পাবলিকেশন্স
প্রচ্ছদ: রাজীব দত্ত
প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২১
মূল্য: ৪০০ টাকা