উপন্যাস জীবনের কথা বলে। সময়ের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে পাঠকের সামনে। দীর্ঘ বলয়ে জীবন ও জগতের যাবতীয় অনুভূতি ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেন ঔপন্যাসিকগণ। সাহিত্যে আধুনিকতার জন্মলগ্ন থেকে লেখকগণ গল্প বলতে চেষ্টা করে গেছেন। বিভিন্ন আঙ্গিকে সেসব গল্প-কাহিনি পাঠক হৃদয়ে ঝড় তুলেছে। বঙ্কিমের কপালকুণ্ডলা, শরতের দেবদাস, রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি, মানিকের পদ্মা নদীর মাঝি, ওয়ালীউল্লাহর লালসালু, হুমায়ূনের শঙ্খনীল কারাগারসহ বেশকিছু উপন্যাস নানা মাত্রিক আবেদন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তাদের দেখানো পথে হেঁটে চলেছেন সমকালীন ঔপন্যাসিকগণ। এখনো নানা রঙে, নানা ঢঙে উপন্যাসের জমিন বুনতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন একদল কথাশিল্পী। কালের বিচারে তা কতটুকু টেকসই হবে, সে হিসাব না হয় পরেই করা যাবে। সে হিসাব বাদ দিলে এই সময়ে যাদের লেখা উপন্যাস আমাকে আকৃষ্ট করেছে, তাদের মধ্যে রনজু রাইমও একজন প্রতিশ্রুতিশীল কথাকার।
লেখার আগে লেখক সম্পর্কে ধারণা দিতে গেলে অন্তত এটুকু বলে রাখা ভালো, রনজু রাইম কবি ও কথাশিল্পী। তার জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার তালজাঙ্গা গ্রামে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পেশায় অধ্যাপক। ছাত্রজীবন থেকেই সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আজকের কাগজ, লালসবুজ, আজকের সভ্যতার সাব এডিটর, যুগান্তর, ভোরের কাগজ, আমাদের সময়, মানবকণ্ঠ, পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকমের সাহিত্য সম্পাদক, সকালের খবর, মানবকণ্ঠ, পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকমের ফিচার এডিটর, আমাদের সময়ের অ্যাসোসিয়েট এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তার কাব্যগ্রন্থ চিত্রল প্রতিবেদন, দেবতাগণ, বারভণিতার দেশ, তালিবান পাঠকের প্রশংসা লাভ করে। প্রবচনগ্রন্থ অপ্রিয় বচন, বাণীপুত্র, গদ্যগ্রন্থ কবিতার বাঁক ও অন্যান্য, শিশুতোষ গ্রন্থ শ্রেয় এখন পড়তে পারে, তিড়িং বিড়িং ঘাসফড়িং, সাক্ষাৎকারগ্রন্থ আলাপে-আড্ডায় পাঠক সমাজে আলোচনার জন্ম দেয়। তার সম্পাদনাগ্রন্থ কবিতাসংক্রান্তি, কবিতাআশ্রম, বহুরৈখিক আবু হাসান শাহরিয়ার ও প্রামাণ্য পীর হাবিবুর রহমান বাংলা সাহিত্যে আঁকরগ্রন্থ হিসেবে টিকে থাকবে। তার কবিতার সঙ্গে পরিচয় থাকলেও উপন্যাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ এই প্রথম। উপন্যাসটির নাম ‘দেবদূতের সঙ্গে দিনযাপন’। যতটুকু জানি, এটি তার প্রথম এবং একমাত্র উপন্যাস। উপন্যাসটি বর্ণনাত্মক। লেখক উত্তম পুরুষে কাহিনি বলে গেছেন। লেখকের সঙ্গী দেবদূত। দেবদূতের সঙ্গে কাটানো মুহূর্ত ও অনুভূতি তুলে ধরেছেন লেখক। লেখক ও দেবদূতই কাহিনিকে টেনে নিয়ে গেছেন শেষ অবধি। তাদের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রিকশাওয়ালা শাহেদ।
আর সিদ্দিক ভাইয়ের বন্ধু সেলিমের যে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, তার বয়সের ব্যবধান পঁয়ত্রিশ কি চল্লিশ। অর্থাৎ নিজের মেয়ের বয়সী। তাই তো প্রেমিকা নীলার ঠোঁটে চুমু খেতে গিয়ে নিজের মেয়ে ‘মারিয়া’র নাম ধরে চিৎকার করে ওঠে সেলিম।
এবার তাহলে মূল কথায় আসা যাক, উপন্যাসটি পাঠে মনে হতে পারে, আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই একজন করে দেবদূত থাকে। গল্পে আমরা যে দেবদূতকে দেখি, তিনি সবার চেয়ে আলাদা। অনেকটা হুমায়ূন আহমেদের হিমু বা মিসির আলির মতো। দেবদূতকে কথায়, কাজে, দৃষ্টিতে, অনুভূতিতে স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। উপন্যাসে এই দেবদূত আসলে কে? দেবদূত কি আসলেই মানুষ? নাকি লেখকের কল্পনার পুরুষ। কিংবা আত্মার প্রতিচ্ছবি? পড়তে গিয়ে পাঠকের মনে এই প্রশ্ন আসতেই পারে। লেখক এমন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘দেবদূত আসলে অচেনা কেউ নয়—আমাদেরই অভিন্ন সত্তা—শুভবোধ। যাপিত জীবনে সাধারণ মানুষের প্রতি আমাদের যে ত্রুটিপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি, সম্পর্কের অসঙ্গতি—দেবদূতের সঙ্গে চলতে ফিরতে আমার তার কাছ থেকে নিই শুদ্ধতার পাঠ।’ (ভূমিকা)
যদিও উপন্যাসের শুরুতেই লেখক আমাদের সঙ্গে দেবদূতের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। কাহিনির শুরুটা এমন—’ছুটির বিকালগুলোতে সে আর আমি রিকশার হুড ফেলে হাওয়া খেতে বেরিয়ে পড়ি। সে মানে দেবদূত, আমি তাকে এই নামেই ডাকি। এটা তার আসল নাম নয়, প্রতীকী নাম। তার কোনও আচরণই আর-দশটা মানুষের মতো নয়। না ভাবনায়, না বিশ্বাসে।’ (পৃষ্ঠা ৭) লেখক অন্যত্র বলেছেন, ‘দেবদূত তো আসলে দেবদূত নয়, এই নামের আড়ালে অন্য কেউ।’ (পৃষ্ঠা-৬২) তবে উপন্যাসের পরতে পরতে বাঁক বদল ঘটেছে এ কথা বলতেই হবে। রাজনীতি থেকে শুরু করে যৌনতা—কোনো কিছুই বাদ যায়নি। উঠে এসেছে শিক্ষাব্যবস্থার কথা। রাজনৈতিক আদর্শ, মানবিক মূল্যবোধ, জাগতিক হতাশা মানুষকে দেবদূতের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। উঠে এসেছে বাম রাজনীতির বিবর্তন। লেখকের ভাষায়, ‘কিছুদিনের মধ্যে দেখলাম ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক দেয়াল লিখনে, পোস্টারে, ব্যানারে দীন ইসলাম হয়ে গেল লেনিন ইসলাম।’ (পৃষ্ঠা ১৭) আবার বলেছেন, ‘গ্রামের সেই কৃষকপুত্র দীন ইসলাম কী করে নাম পাল্টে লেনিন ইসলাম হল—কীভাবে জড়োসড়ো মৃদুভাষী গ্রাম্য ছেলেটি স্মার্ট বাকপটু হয়ে উঠল—এর সবই আমাদের জানা।’ (পৃষ্ঠা ১৮) এছাড়া প্রবীণদের আড্ডায় উঠে আসে বিশ্ব রাজনীতি। লেখকের ভাষায়, ‘জো বাইডেনের কাছে ডোনাল ট্রাম্প যে এবার হারবে এটা এই আড্ডার অনেকেই বলে আসছিল।’ (পৃষ্ঠা ৩৫) ফলে বোঝাই যায়, লেখক একাধারে শিল্প-সংস্কৃতি, মানবিকতা, অর্থনীতি ও রাজনীতি সচেতন। একজন লেখককে এসব ব্যাপারে সচেতন তো হতেই হবে। তা না হলে তার আদর্শ, স্বপ্ন, প্রতিবাদের স্ফূলিঙ্গ পাঠকের কাছে পৌঁছবে কীভাবে?
একটি বিষয় না বললেই নয়, রনজু রাইম যেহেতু কবি; তাই তার উপন্যাসের কাহিনিতে কবি ও কবিতার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। সেটা হয়তো তিনি নিজে একজন কবি বলে। এ জন্যই হয়তো তিনি প্রসঙ্গক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাশ ও আবু হাসান শাহরিয়ারের কবিতার চরণ উদ্ধৃত করেছেন। এটি দোষের কিছু নয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিকও বটে। এটি লেখক সত্তার পাশাপাশি কবি সত্তার বহিপ্রকাশ মাত্র। এ প্রবণতা আজকের নতুন কিছু নয়। উপন্যাসে গান ও কবিতা হরহামেশাই স্থান করে নেয়। তাতে সৌন্দর্যও বিকশিত হয়। তবে কবিতার পাশাপাশি ধর্ম ও রাজনীতির অপব্যবহার উঠে আসে তার গল্পে। লেখকের ভাষায়, ‘দেশের অনেক প্রগতিশীল তাদের সন্তানের নাম রাখার সময় পাক্কা মুসলমান, আরবি ফারসি শব্দ দিয়ে সন্তানের নাম তাঁদের রাখা চাই-ই চাই।’ কিংবা ‘নিজেরা ধর্মের বিধিনিষেধ সঠিকভাবে পালন না করলেও ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি স্বাধীন মত প্রকাশ করে তাহলে মারমুখো হয়।’ (পৃষ্ঠা ৩২) এ প্রসঙ্গ টেনে এনে লেখক পাঠকের মৌলিক বোধে কড়া নাড়ার চেষ্টা করেছেন। পাঠক তাতে কতটুকু সজাগ হবেন, সেটা পাঠকই বিবেচনা করবেন। লেখকের কাজ তো পাঠককে জাগ্রত করার চেষ্টা করে যাওয়া। মানবিক মূল্যবোধের শিক্ষা তুলে ধরা।
এখন না হয় একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। পাঠক হিসেবে আমার এ কথা স্বীকার করতে দ্বিধা নেই যে, উপন্যাসের চরিত্রগুলো ব্যতিক্রম। প্রত্যেকটি চরিত্রই যেন স্বতন্ত্র। লেখক, রাজনীতিক লেনিন ইসলাম, নেতা কমরেড চৌধুরী, দারোয়ান সুলতান, রিকশাওয়ালা শাহেদ, অদ্ভুত দেবদূত, টি-বয় মাজেদ, বাঁশিওয়ালা আলাউদ্দিন, সিদ্দিক ভাই, সেলিম, ভিক্ষুক, তৃতীয় লিঙ্গ রেবা ও বাসনা, সাপুড়ে মেয়েসহ বেশকিছু চরিত্র পাঠককে নাড়া দেবে। যেমন দেবদূত অকারণে মাথা নোয়াতে রাজি নয়। তাই সে নেতার বাড়ির পকেট গেট দিয়ে ঢুকতে সম্মত হয় না। পরে দারোয়ানকে বড় গেটটি খুলে দিতে হয়। এছাড়া বাঁশিওয়ালা আলাউদ্দিন বাঁশি শুনিয়ে কারো কাছ থেকে পয়সা নেয় না। অপরদিকে, সিদ্দিক ভাই উপহার দিয়ে কিছু মানুষকে তার অনুগত করে রাখেন। আর সিদ্দিক ভাইয়ের বন্ধু সেলিমের যে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক, তার বয়সের ব্যবধান পঁয়ত্রিশ কি চল্লিশ। অর্থাৎ নিজের মেয়ের বয়সী। তাই তো প্রেমিকা নীলার ঠোঁটে চুমু খেতে গিয়ে নিজের মেয়ে ‘মারিয়া’র নাম ধরে চিৎকার করে ওঠে সেলিম।
লেখকের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকও রবীন্দ্র সরোবরে একটি বিকেল ও সন্ধ্যা কাটানোর আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে। তাই এ ভ্রমণ, এ অবসর কাটানোর মুহূর্ত অব্যাহত থাকুক।
তাই বলা যায়, রনজু রাইমের উপন্যাসে প্রেম ঠিক ওই অর্থে প্রেম হয়ে ওঠেনি। অপরদিকে আরও দেখতে পাই—দেবদূতের সঙ্গে রেবার সম্পর্ক ছিল গভীর থেকে গভীরতর। তবে রেবা এক সময় নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। নিজের ইচ্ছায়। নিজেরই শারীরিক সমস্যার কারণে। ফলে পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাই তৃতীয় লিঙ্গের বাসনা’র প্রতি দেবদূতের একটা সহমর্মীতা প্রকাশ পেতে। ফলে মনে হয়েছে, পুরো উপন্যাসে প্রেম কখনো শরীরের চাহিদা মেটায়, আবার কখনো শরীরকে ছাপিয়ে আত্মাকে স্পর্শ করে। গুলশান-বনানীর মতো আবাসিক এলাকায় নারীদের উপপত্নী রাখার গল্পও উঠে এসেছে প্রেমের আদলে। যদিও আমি তাকে প্রেম-কামের মোক্ষম উপায় হিসেবে মনে করি। মনের টান তাতে কতটুকুই বা থাকতে পারে, যতটা না শরীরের টান উপলব্ধি হয়।
সেসব কথা বাদ দিলেও উপন্যাসে উল্লেখিত কিছু বোধ-অনুভূতি আমাদের নাড়া দিয়ে যায়—
১. মানুষেরা কত না গল্প জানে, কত না গল্প করে—যার পনেরো আনাই অর্থহীন। পৃষ্ঠা ১১
২. সবকিছুর মধ্যেই অহংকারের দৌরাত্ম্য। পৃষ্ঠা ১৪
৩. প্রেমের খুব আকাল যাচ্ছে। পৃষ্ঠা ৩৪
৪. সেলিমের কন্যা মারিয়ার আত্মহত্যার শোক। পৃষ্ঠা ৪৪
৫. বাসনা হিজড়ার ঔচিত্যবোধ দেখে বিস্মিত হলাম। পৃষ্ঠা ৫১
৬. রেবা শারীরিক অসঙ্গতি নিয়ে জন্মেছিল। পৃষ্ঠা ৫৭
৭. সভ্যতার নামে নানামুখী অসভ্যতা। পৃষ্ঠা ৫৭
৮. যৌনতা সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের ভুল ধারণা আছে। পৃষ্ঠা ৫৯
৯. হিজড়াদের যৌনাঙ্গ অবিকশিত হলেও তারা সঙ্গমে অসফল নয়। পৃষ্ঠা ৫৯
১০. ভিক্ষা মানেই আত্মসমর্পণ। পৃষ্ঠা ৬৩
এই বোধগুলো আমাদের অস্তিত্বে আঘাত করতে পারে। আরও মানবিক হতে সাহায্য করতে পারে। আমরা হয়তো বিষয়গুলো নিয়ে এভাবে কখনো ভেবে দেখিনি। আমাদের অনুভূতি আগে হয়তো এভাবে নাড়া দেয়নি। যেটা কেবল লেখকের মাধ্যমেই সম্ভব হলো। লেখক শুধু গল্প বলতে চাননি। গল্পের আড়ালে নিরেট বাস্তবতাও ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন। সেই চেষ্টায় কিছু বোধ পাঠকের মধ্যে জাগ্রত করতে সক্ষম হয়েছেন বলে আমি মনে করি।
শুধু তা-ই নয়, তার উপন্যাসের নানামুখী চরিত্রের ভিড়ে বাদ পড়েনি সাপুড়ে মেয়েরাও। গাছতলা থেকে পাঁচতলা, নিচতলা থেকে উপরতলা, চাওয়ালা থেকে বাড়িওয়ালা, রিকশাওয়ালা থেকে বাঁশিওয়ালা—সব ধরনের, সব শ্রেণিপেশার মানুষকে তুলে ধরতে চেষ্টা করেছেন লেখক। তার এই যে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা; তা আসলে বিফলে যাওয়ার মতো নয়। লেখকের ভাষায় বলতে হয়, ‘নীলক্ষেত মোড়ে লম্বা সিগনালে আটকা পড়তেই ঘিরে ধরল একদল সাপুড়ে মেয়ে।’ এই যে এভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চরিত্রগুলোকে বৃহৎ করে তোলার যে প্রবণতা; তা-ই রনজু রাইমকে বিশিষ্টতা দান করবে। তবে এত এত চরিত্রের ভিড়ে উপন্যাসে কিন্তু ‘লেখক’ ও ‘দেবদূত’কেই প্রধান চরিত্র বলে মানতে হবে। কেননা তাদের ঘুরে বেড়ানোর মধ্যেই উঠে এসেছে এতগুলো মানুষ। তাদের দৃষ্টিতেই ধরা পড়েছে বিশাল এ শহরের এত ঘটনা, এত মানুষ, এত কিছু। তাই তো দেখা যায়, যে রিকশায় চড়ে ঘটনার বা উপন্যাসের শুরু হয়েছিল, সেই রিকশায় চড়েই ঘটনার ইতি টেনেছেন লেখক। খোলাসা করে বললে, উপন্যাসের শেষটা এরকম—‘আজ শনিবার, ছুটির দিন। রাস্তা ফাঁকা। শাহেদ রিকশার প্যাডেল চালাচ্ছে দ্রুত। রিকশা তো নয়, যেন পঙ্খিরাজ ঘোড়া। আমি আর বাসনা চললাম নিরুদ্দেশে।’
লেখকের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকও রবীন্দ্র সরোবরে একটি বিকেল ও সন্ধ্যা কাটানোর আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছে। তাই এ ভ্রমণ, এ অবসর কাটানোর মুহূর্ত অব্যাহত থাকুক। রনজু রাইম আমাদের আরও উপন্যাস উপহার দেবেন—এ প্রত্যাশা রেখে আমি তার বইয়ের বহুল পাঠ ও প্রচার কামনা করছি।
দেবদূতের সঙ্গে দিনযাপন
রনজু রাইম
প্রকাশক: জিনিয়াস পাবলিকেশন্স
প্রচ্ছদ: মোস্তাফিজ কারিগর
প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২১
মূল্য: ১৮০ টাকা