বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম শাখা হচ্ছে কবিতা। একসময় মহাকাব্যের যুগ ছিল। এখন এক লাইনের কবিতার যুগ। কবিতার এই দীর্ঘ পরিক্রমায় অনেক বাঁকবদল ঘটেছে। কবিতার গঠনগত পরিবর্তনও এসেছে। কবিতার নানাবিধ চরিত্রের ভিড়ে কখনো কখনো কবিতার চেয়ে অ-কবিতার আনাগোনাই বেশি দেখা গেছে। যদিও তা কালের চাকায় পিষ্ট হয়ে গেছে। তবে, যেগুলো সত্যিকারের কবিতা; সেগুলো এখনো টিকে আছে স্বমহিমায়। চর্যাপদ থেকে বর্তমানের এক লাইনের কবিতার মধ্যেও কিছু কবিতা পাঠককে আলোড়িত করেছে। ভবিষ্যতেও করবে।
সহজ করে বলতে গেলে, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জীবনানন্দ দাশের পরবর্তী যুগেও কবিতা সৃষ্টি হয়েছে। তাদেরই উত্তরসূরি জন্ম নিয়েছে কালে কালে। তাদের প্রভাব বা পদাঙ্ক বিরাজমান বর্তমান কবিদের মধ্যেও। সেসবের ছায়া-প্রশ্রয়ে সনামে খ্যাত হয়েছেন বা হচ্ছেন কেউ কেউ। আমার বিশ্বাস, কবি জাকির জাফরানও সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবেন আপন মহিমায়।
আমরা জানি, আধুনিক কবিতায় অনেকেই সনেট লিখেছেন বা লিখছেন। বাংলাদেশে আল মাহমুদের ‘সোনালি কাবিন’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘পরানের গহীন ভিতর’ ও রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহর ‘মানুষের মানচিত্র’ পড়ার পর অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। তারপর আরও আরও অনেক কবির সৃষ্টির পথ পাড়ি দিয়ে দেখা মিললো কবি জাকির জাফরানের ‘জ্যোৎস্নাসম্প্রদায়’-এর।
একটু পেছনে তাকালে দেখতে পাই, জাকির জাফরানের এই পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ছয়টি। এগুলো হলো—সমুদ্র পৃষ্ঠা (২০০৭), নদী এক জন্মান্ধ আয়না (২০১৪), অপহৃত সূর্যাস্তমণ্ডলী (২০১৫), অন্ধের জানালা (২০২০), নির্বাচিত কবিতা (২০২০) ও জ্যোৎস্নাসম্প্রদায় (২০২০)। তার বইয়ের নামকরণেই কবির আধুনিকতা ও রুচিবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রতিটি বইয়েই প্রকৃতির নিবিড় সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয়। পাশাপাশি ইতিহাস, ঐতিহ্য, মিথ, পুরাণ, দর্শন, সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মবাদ ফুটে ওঠে। মানুষ ও প্রকৃতি হয়ে ওঠে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
শব্দে-ছন্দে-অলঙ্কারে তিনি তুলে আনেন মানুষের গভীর বেদনা, হতাশা, স্বপ্ন ও সম্ভাবনার গল্প। তার ৭২ পৃষ্ঠার বইয়ে ৬৬টি সনেট আছে। সনেটগুলো পড়লে মনে পড়বে ইংরেজ কবি কোলরিজের কথা। তিনি বলেছিলেন, ‘সনেট হলো সেই কবিতা, যার মধ্যে একান্ত অনুভূতিগুলোর প্রকাশ পায়।’ তার বিশাল ক্যানভাসের জ্যোৎস্নাসম্প্রদায় বাংলার আনাচে-কানাচে যেন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। তাই বলা যায়, মানুষের জীবন-জীবিকা, আচার-আচরণ, সুখ-দুঃখ, প্রেম-কাম, বিরহ-মিলন, সৃষ্টি-ধ্বংস, কৃষি-প্রকৃতি, মিথ-পুরাণ ও ইতিহাস-ঐতিহ্য মিলিয়ে জ্যোৎস্নাসম্প্রদায় বাংলা সাহিত্যে এক অমর কীর্তি হয়ে থাকবে। কেননা তার কবিতায় পাঠক যেন এক মহাকাব্যিক দৃশ্যপট দেখতে পান।
প্রতিবাদের ভাষা উচ্চকিত হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। যেন বিপ্লবের আভাষ পাই। সুকৌশলে তিনি জাগরণের কথাও বলেছেন। কবি যে সময় সচেতন, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
তিনি কবিতায় সহজ, সরল, প্রাঞ্জল, বোধগম্য ও শ্রুতিমধুর ভাষা ব্যবহার করেছেন। তিনি যে বৃহৎ আকারে কবিতা লিখতে পারেন, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন পারঙ্গমতার সঙ্গেই। তাই তো কবি নীরবে-নিভৃতে লিখে রেখেছেন প্রেম, প্রকৃতি আর মানুষের কথা। তার কবিতায় কৃষিকাজের প্রসঙ্গ এসেছে এভাবে:
১. বেহালার ব্যথা এল, দোচালা ধানের ঘরে এসে
২. সোনালু ধানের শিষ ছিঁড়ে আজ বানাই মুকুট
৩. কৃষি-বিধুনিত একদিন। একদিন চোখ বুজে
বোনের ছায়ায়। একদিন সজনী গাছের তলে।
৪. জ্যোৎস্নারাতে কত ধানকল হাহাকার করে ওঠে!
৫. তুমি স্মৃতি-শিহরিত বীজতলা-যখন তোমার
৬. ধানের আড়ালে, রাতে, চুমুকেই নবান্ন ভাবে সে
৭. দুরন্ত পায়রা, তাকে নখ দিয়ে কৃষিকে জাগাও
৮. কৃষির অনন্ত ফাঁদ পাতা আছে কি না দেখে আসি
৯. পতিত জমির স্তনে করো আজ শস্যের আবাদ
১০. কৃষির সমস্ত ব্যথা তবে চন্দ্রালোকে বৃদ্ধি পাবে
১১. নিজেকেও ভেবেছ বুঝি অনন্ত কৃষির কোনো ঘর
১২. তুমি চারা, তুমি বৃক্ষ, তুমি অন্তহীন বীজখলা
১৩. ক্ষয়িষ্ণু পাথর থেকেও আমি জন্ম দেবো ধানগাছ
১৪. কৃষিমাতা, ভালোবেসে যারা গেছে দূর দ্রাঘিমায়
১৫. ধান-ভানা ধেইধেই শব্দে কাঁপে আর্যের কলিজা
১৬. কৃষির বেদনা নিয়ে চেয়ে আছি মেদিনীর দিকে
১৭. আমি খনা, তোমার ভবিষ্যে দেখি কৃষির রোদন
১৮. তাকে দাও মূলধন, বীজের ব্যবস্থা করো তার
১৯. দালালের ধান ভেঙে আমি তোমাকেই খাওয়াব
২০. আমি তো সন্ন্যাসী, আমার তো কৃষকের পায়ের নিচে
ধানের গেরিলা হয়ে জেগে থাকবার কথা ছিল।
২১. কেন এই ধানক্ষেত দিবানিশি চোখ বুজে আছে!
২২. শালিধান নিয়ে, আসে নিত্যদিন বীজ ও বলদ
২৩. তোমার সরিষা ক্ষেতে বেড়ে ওঠে হলুদ বঞ্চনা
২৫. মূলত ধানের মতো তুমি, মূলত বৃষ্টির মতো।
২৬. ধানগাছ গর্ভবতী হলো, আজ ক্ষীর রাঁধো বউ
২৭. ধানের ধরনে তুমি একদিন গর্ভবতী হবে
২৮. কিষাণির জরায়ুতে আমি হব ধানের যমজ
২৯. কিছু ধান ভাইরাল হবে আজ দাবি-দাওয়া নিয়ে
৩০. ক্ষেতের আইল দেখে ভাবি, লিকলিকে আঁকাবাঁকা
৩১. ক্ষেতের আইলে বসে তাকে ডাকি ভাটিয়ালি সুরে
৩২. কৃষকের লাল বউ ভোরে ধানের জননী হবে?
৩৩. উঠানে বিছানো ধান খেয়ে যায় লাল এক ঘোড়া
৩৪. যে তুমি কৃষির নও সে তুমি শিশির মানে বোঝ?
৩৫. এই ধান-ভানা নারী যেন খরস্রোতা মহাকাল।
এছাড়া, অসংখ্য চরণে কৃষক, কৃষাণি, শস্য বারবার উঠে এসেছে। উপমার চমৎকারিত্বে প্রতিটি চরণই বিশেষ অর্থ বহন করেছে। কৃষিনির্ভর বাংলার এক চিরকালীন চিত্রকল্প এঁকেছেন তিনি। তাতে লুকায়িত আছে কৃষকের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা। বর্ণিত আছে বঞ্চনার ইতিহাস। প্রতিবাদের ভাষা উচ্চকিত হয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। যেন বিপ্লবের আভাষ পাই। সুকৌশলে তিনি জাগরণের কথাও বলেছেন। কবি যে সময় সচেতন, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এমনকী কৃষিনির্ভর গ্রামবাংলার পাশাপাশি প্রেম ও প্রকৃতি এসেছে আপন মহিমায়। ভালোবাসার নিবিড় বন্ধন রচনা করেছেন প্রতিটি সর্গে বা পর্বে। কবি বলেছেন:
১. কে ছিল প্রথম নারী খোঁপায় যে গুঁজেছিল ফুল!
২. তোমার কোমরে কত মেঠোপথ দুলে দুলে ওঠে!
৩. রাত্রিগুলো ছুঁতে চায় কুপি-জ্বলা নিখিল আকাশ।
৪. প্রিয়তম অন্ধ হয়ে যেন দেখি শরতের মুখ
৫. সুপারির নীল স্তনে চুমু ফেলে উড়ে গেছে পাখি।
৬. বসন্ত প্রথমে এসে তোমাকেই চুমু খায় যদি
৭. অতঃপর বুক থেকে খুলে দাও খেজুর-কলস
৮. নারী এক নিস্তরঙ্গ জলাশয়, তাতে সব ছায়া—
৯. এ নারী ঘরের কোণে খুঁজে পায় হারানো আকাশ
১০. অর্ধেক রাতের নীলে নারীরা আকন্দ হয়ে ফোটে।
শুধু তা-ই নয়, বলতে গেলে কী নেই জাকির জাফরানের এ কাব্যগ্রন্থে? পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠাজুড়ে দেখতে পাওয়া যায় ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাহিত্য, আন্দোলন, সংগ্রাম, বিপ্লব, মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি। পলাশী থেকে বাংলাদেশ, চর্যাপদ থেকে আধুনিক কবিতা কী নেই এতে? হস্তশিল্প, কুটির শিল্প, নকশী কাঁথা, স্থাপত্যশৈলী গভীর মমতায় তুলে ধরেছেন কবিতার পঙক্তিতে। এমনকি তিনি মিথ ও পুরানের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তার কবিতায় কেবল দৃশ্যপট, চিত্রকল্প, উপমা, অলংকরণ, কৃষি, প্রকৃতি, প্রেম ও কামই মূখ্য নয়। মিথ ও পূর্বপুরুষের ইতিহাসও মুখ্য হয়ে উঠেছে। তিনি সেটাই দেখিয়েছেন।
কেটে যাক বাংলা কবিতার দুর্দিন। পরবর্তী সৃষ্টিকর্মের জন্য কবিতে অগ্রিম শুভ কামনা জানিয়ে রাখছি।
কবি ও প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ নূরুল হকের ভাষায় বলতে হয়, ‘তিনি অপ্রস্তুত কবিযশপ্রার্থী নন। তার কবিতায় রয়েছে প্রচুর জীবনাভিজ্ঞতার ছাপ, কল্পনার স্ফুরণ। শব্দে, বিষয়ে, ছন্দে, অলঙ্কারে, প্রকাশশৈলীতে তিনি হয়ে উঠেছেন তার সময়ের অন্য দশ কবির চেয়ে আলাদা।’ তাই জাকির জাফরানের কবিতা পাঠ শেষে যে বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়, সেগুলো মোটামুটি এমন হতে পারে:
ক. শব্দচয়ন, বাক্যগঠন ও প্রয়োগে যত্নশীল
খ. ছন্দ বিনির্মাণে স্বাধীন
গ. অলঙ্কার প্রয়োগে কল্পনার আশ্রয়
ঘ. ব্যক্তিগত অনুভূতি ছাড়াও সমাজ ও রাষ্ট্রকে অনুষঙ্গ করা
ঙ. প্রতিবাদ ও বিদ্রূপ লক্ষণীয়
চ. সময় ও রাজনীতি সচেতন
ছ. কবিতার আদলে গল্পের প্লট নির্মাণ
জ. ইতিহাস-সংস্কৃতিকে ধারন
ঝ. মানবিক বোধকে জাগ্রত করা।
যেহেতু তার লেখায় ইতিহাস থেকে পাই হিউয়েন সাঙ, আলেকজান্ডার, মীর জাফর, মিরন, প্রীতিলতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ইবনে বতুতা, হাজী শরীয়তুল্লাহ, হাজী মোহাম্মদ মোহসিন, ফকির মজনু শাহ, রাবেয়া বসরী, বাদশাহ আকবর, মাস্টারদা সূর্যসেন ও ক্ষুদিরাম বসুকে। সাহিত্যে পাই কাহ্নপা, মহাকবি হাফিজ, মহাকবি বাল্মিকী, প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, জীবনানন্দ দাশ, এস এম সুলতান, শামসুর রাহমান, সৈয়দ শামসুল হক ও রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহকে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঠাকুমার ঝুলি, বেহুলা, বনলতা সেন, গীতাঞ্জলী, সোনালি কাবিন, কাজলা দিদি ও পরানের গহীন ভিতর। গ্রামীণ সংস্কৃতির অনুষঙ্গ হিসেবে পাই পটচিত্র, পটুয়াগীতি, বাউল, গম্ভীরা ও কীর্তন।
তাই সমালোচকরা মনে করেন, তাকে শুধু কবি বলা যাবে না। তিনি আপাদমস্তক গুণী কবি। আমাদের চারপাশে যখন প্রচুর কবি-অকবি, একই সঙ্গে বাংলা কবিতার সবলতা এবং দুর্বলতাকে আড়ম্বরের সাথে উপস্থাপন করছে; তখন আমাদের আশার গন্তব্য খুঁজে পাই জাকির জাফরানের মাঝে। এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, তার কবিতা পাঠকের অভ্যস্ততাকে আহত করবে না বরং আস্বাদনের আনন্দ দিতে পারবে। তার কবিতার ধরন নিম্নরূপ—
১.
গায়ে যদি মাখা যেত আমলকী বনের সবুজ!
স্বর্ণনিদ্রা থেকে জেগে, শোনো, তোমার শরীর থেকে
গড়িয়ে গড়িয়ে নামা আমলকী খাই আজ রাতে।
জেনেছি শিকারকালে বাঘ এক আদিম রহস্যে
লিপ্ত হয় হরিণের সাথে। নিদ্রিত নারীর পাশে
বিষাদের দাঁত নিয়ে জেগে আছে অগ্নি যে-পুরুষ,
হেলেঞ্চার রসে ডুবে আছে তার অনাঘ্রাত হাত।
(সর্গ-০৬)
২.
ফুল আর খিলি হাতে বসে আছি, অভিষেক দাও।
শখের হাঁড়িতে রাখা বড়ি, সবুজ রুমাল আর
আলপনা আঁকা জলচৌকি, শীতলপাটিতে রাখা
লাজুক কস্তূরী কিছু—তুমি শুধু অভিষেক দাও।
(সর্গ-২১)৩.
দেহের ভিতরে সুপ্ত কোন জায়গাটি বৃন্দাবন
আর কোন অঙ্গের গভীরে আছে প্রেমের মোকাম?
বলো কী প্রকারে এক ময়ূর ঘুমিয়ে আছে মনে
আর ত্রিলোকের সব বেদনা বিবৃত হয়ে আছে
রমণীর কটিদেশে? মনে হয় আমিই ব্রহ্মাণ্ড,
এই ধান-ভানা নারী যেন খরস্রোতা মহাকাল।
(সর্গ-৬৬)
এমন সব চমৎকার অনুভূতি পাবেন তার জ্যোৎস্নাসম্প্রদায় পাঠ করলে। বাকিটা আজ তোলা রইল পাঠকের জন্য। জাকির জাফরানের বইটি পড়লে বাংলা কবিতার প্রতি আপনাদের ইতিবাচক ধারণা জন্ম নেবে বলে আমার বিশ্বাস।
সবশেষে বলতে হয়, জ্যোৎস্নাসম্প্রদায় বইটি সাড়ে ৪ ফর্মার। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী রাজীব দত্ত। ভেতরের প্রতিটি পৃষ্ঠায় সুন্দর শৈল্পিক অলঙ্করণ করেছেন সত্যজিৎ রাজন। সেসব চিত্রের মাধ্যমেও পাঠক কবিতার ভিন্নরকম স্বাদ উপভোগ করবেন। বইটি প্রকাশ করেছে জলধি প্রকাশনী। মলাট মূল্য রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। আর যে কথাটি না বললেই নয়, বইটির মুখবন্ধ লিখে দিয়েছেন দেশের অন্যতম কবি নির্মলেন্দু গুণ। তিনি পাণ্ডুলিপি পাঠ শেষে বলেছেন, ‘জাকির জাফরান শুধুই কবি নন, তিনি খুবই শক্তিশালী একজন কবি। কাব্যগ্রন্থের জন্য নির্বাচিত নাম—‘জ্যোৎস্নাসম্প্রদায়’ তাঁর কল্পনাশক্তির পারদর্শিতাকে প্রকাশ করে।’
কবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমিও বলতে চাই, সংক্ষিপ্ত পরিসরে কবি জাকির জাফরান ও তার সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরা দুঃসাধ্য।
নানাবিধ সীমাবদ্ধতা বা জটিলতার মধ্যেও যতটুকু তুলে ধরা যায়, তা-ই পাঠকের সামনে উপস্থাপন করলাম। একদিন হয়তো দীর্ঘ কলেবরে তাকে নিয়ে বিস্তর আলোচনা করবো, সেই প্রত্যাশায় আজ বিদায় নিচ্ছি। যাওয়ার আগে জাকির জাফরানের ‘জ্যোৎস্নাসম্প্রদায়’-এর বহুল পাঠ ও আলোচনা প্রত্যাশা করছি। কেটে যাক বাংলা কবিতার দুর্দিন। পরবর্তী সৃষ্টিকর্মের জন্য কবিকে অগ্রিম শুভ কামনা জানিয়ে রাখছি।