রুচিশীল পাঠকমাত্রই নানামাত্রিক। কেউ বুঁদ হয়ে থাকেন সাহিত্যে, কেউ স্বস্তি খোঁজেন দর্শনে; বিজ্ঞান, পুরাণ, ধর্ম, প্রত্নতত্ত্ব, অর্থনীতি, সমাজ, রাষ্ট্রনীতি, ভূগোল; একেকটি বিষয়ের প্রতি এক-এক জনের আকর্ষণ স্বতন্ত্র; কেউ ইতিহাসপ্রেমী। আবার, অনেক পাঠকই নির্বিচারী; যেকোনো বিষয়েরই তিনি নিবিষ্ট পাঠক। অনেকের পছন্দ একাধিক বিষয়। তবে, বিশেষ করে ইতিহাসবিষয়ক রচনার প্রতি যাদের আগ্রহ দুর্নিবার, ‘চিতলমারীর ইতিহাস’ তাদের পাঠাভিজ্ঞতা নতুন মাত্রা সংযোজন করবে নিঃসন্দেহে।
প্রথমেই বলে নিতে হয়, চিতলমারী বাগেরহাট জেলার উত্তর-পূর্বাংশে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এই উপজেলার প্রাচীণ ও সুবিস্তৃত ইতিহাসের সন্ধানে সমুদ্র সেচে মুক্তো আহরণের মতো দুঃসাধ্য কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করেছেন আলোচ্য গ্রন্থের ইতিহাসকার বেনজীর আহম্মদ টিপু। নব্যপ্রস্তর যুগে চন্দ্রদ্বীপ বা বাকলার অধীন এই অঞ্চল তথা চিতলমারী আজ বৈচিত্র্যময় সময়ের বাঁক পরিবর্তনের উজ্জ্বল সাক্ষী স্বরূপ। পেরিপাস ও টলেমির ঐতিহাসিক সূত্র ধরে লেখক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, গুপ্ত, পাল, চন্দ্র, ও সেন প্রভৃতি হিন্দু ও বৌদ্ধ রাজবংশের শাসন পেরিয়ে সুলতানি শাসনামলে খলিফাতাবাদের অন্তর্ভুক্ত হয় বর্তমান চিতলমারী। এরপর মোগল আমলে এই অঞ্চলের কিছু অংশ তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলার অধীনে আসে। পরবর্তী সময়ে কোম্পানি আমল, বৃটিশ ও পাকিস্তানিদের শাসনামল শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে খুলনা জেলার অর্ন্তগত হয়। পরে পর্যায়ক্রমে বাগেরহাট থানা, মহকুমা ও জেলার অধীনে এসে ১৯৮১ সালে চিতলমারী স্বতন্ত্র থানা এবং ১৯৮৩ সালে উপজেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বইটি শুরু হয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া চিতলমারীর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিরল কিছু আলোকচিত্র উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে। এর পরই মূল গ্রন্থকাণ্ড, যা মোট আটটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত হয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে রয়েছে চিতলমারী ‘উপজেলা পরিচিতি, থানা সৃষ্টির ইতিহাস’। এখানে সন্নিবেশিত হয়েছে ১৩টি উপ-অধ্যায়: সীমানা ও আয়তন, জলবায়ু, নামকরণ, ঐতিহাসিক পরিচয়, থানা সৃষ্টির ইতিকথা, নির্বাহী অফিসারদের নাম ও কার্যকাল, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, চিতলমারীর জনপদ, গ্রামের নাম ও সংখ্যা, গ্রামের নামকরণের ইতিবৃত্ত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং মারী ও মন্বন্তরে চিতলমারী। চিতলমারীর নামকরণের পেছনের বেশ কিছু জনশ্রুতি এবং ১৯৯১ সালের আদমসুমারি রিপোর্টে সংযোজিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য কিংবদন্তি এমন, ‘বৃটিশ আমলে চিত্রা, মধুমতি আর বলেশ্বরের মোহনা দিয়ে ভোঁ বাজিয়ে ছুটে যেত যাত্রীবাহী জাহাজ। নদীও ছিল প্রবল স্রোতময়। …একদিন কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে একটি বৃটিশ জাহাজ তলিয়ে যায় মোহনার অতল গভীরে।…ডুবন্ত জাহাজের মধ্যে জন্মে পর্যাপ্ত চিতল মাছ। এ অঞ্চলের মানুষ এই মাছ মারার স্থান হিসেবে চিহ্নিত করে জায়গাটিকে। নামকরণ হয় চিতলমারীর চর বা বাঁক অথবা খাল। পরবর্তী সময়ে শুধু চিতলমারী।’(পৃ: ২৪)
চিতলমারীর বিভিন্ন গ্রামের নামের পেছনে কী ইতিবৃত্ত লুকিয়ে রয়েছে, লেখক এই অধ্যায়ে খুব সরস ভাষায় তা উপস্থাপন করেছেন। যেমন, ‘একদা বিশাল ভয়াল নালুয়া নদীবক্ষে জেগে ওঠা একটি চরে জনৈক লতিফ নামক সাহসী ব্যক্তি সর্বপ্রথম বসতি স্থাপন করেন। লতিফের নামানুসারে চরটির নাম হয় চরলতিফ। পরে প্রজন্মান্তরে লোক-উচ্চারণে ক্রমান্বয়ে বিকৃতিসাধনের ফলে গ্রামের নাম হয় চরলতিফ > চরলাটিফ > চরলাটিম > চরলাটিমা। অনেকে চরলাটিমাকে ‘লাইটমার চর’ বলে থাকে’ (পৃ: ৪১)। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গ্রামের নামের ভাষাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণও করে দেখিয়েছেন লেখক।
দ্বিতীয় অধ্যায় ভূমির গঠন, বিল-বাওড়, নদ-নদীর বিবরণ ও ভূমিব্যবস্থা। এ অধ্যায়টিও ১২টি উপ-অধ্যায়ে বিভক্ত। এ পরিচ্ছদ-অন্তর্গত একদা প্রমত্তা (৩ থেকে ৮ কিমি চওড়া), অধুনা মৃত বলেশ^র নদীর বর্ণনা পড়তে গিয়ে চোখ ছলছল করে উঠবে যে-কারও। গ্রন্থের লেখক বলেশ^রের করুণ পরিণতিতে শোককাতর এ অঞ্চলের মরমি কবি জ্ঞানেন্দ্রনাথ রায়ের কবিতার চরণ উদ্ধৃত করেছেন। কবি আর্তনাদ করেছেন এই বলে, ‘হে নদী বলেশ^র, হায়! এ কী তোর দৃশ্য!/ হাজা মজা ক্ষীণ ধারা, সবহারা নিঃস্ব!/ আজ এ গোধূলি বেলা এসে তোর কূলে/ মনে হয় অন্য কোথাও এসেছি ভুলে’ (পৃ: ৫৫)।
তৃতীয় অধ্যায়ের শিরোনাম: জনবিন্যাস, নৃতাত্ত্বিক পরিচয়, জনসম্প্রদায়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিত্ব। ১০টি উপ-অধ্যায়ে বিন্যস্ত এই অধ্যায়ের শেষ উপ-অধ্যায় ‘ব্রহ্মগাতীর বিষ্ণুমূর্তি’ বিশেষ অভিনিবেশের দাবি রাখে। লেকের বক্তব্য, ‘১৩৬৮ বঙ্গাব্দ মোতাবেক ১৯৬১ সালের প্রবল ঝড়ে ব্রহ্মগাতী গ্রামের ঠাকুর বাড়ির শতাব্দীপ্রাচীন একটি কড়াই গাছ মূলসহ উপড়ে গেলে শেকড়-বাকড়ের মাটির তলা থেকে বের হয়ে পড়ে একটি কষ্টিপাথরের বিষ্ণুমূর্তি। মূর্তির হস্তে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম। …মূর্তি প্রাপ্তিকালে ১৯৬১ সালে খড়মখালী গ্রামের অমর নাথ হালদার জীবিত ছিলেন। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৫ বছার। কৃষ্ণদাস রানার সঙ্গে মূর্তী দেখতে যাবার পথে স্মৃতি তর্পণ করে তিনি বলেছিলেন যে, ছেলেবেলায় ঠাকুরমার কোলে চড়ে তিনি এ স্থানে পূজা দিতে এসেছেন’ (পৃ:৮২)। এ অধ্যায়ে চিতলমারী অঞ্চলে বসবাস কারী নমশূদ্র, মুসলমান ও ঋষি সম্প্রদায়ের নৃতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে অত্যন্ত নিবিষ্টতার সঙ্গে।
চতুর্থ অধ্যায়: যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেলিফোন, মোবাইল, বিদ্যুতায়ন, ডাকব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা। এ অধ্যায়ে সংযুক্ত হয়েছে ১৭ টি উপ-অধ্যায়। যোগাযোগ প্রযুক্তির সর্বশেষ সংযোজন মোবাইল ফোন নিয়ে লেখক যেভাবে আলোচনা শুরু করেছেন, ঐতিহাসিক মূল্যের বাইরেও এর সাহিত্যমূল্য অপরিসীম। তিনি লিখেছেন, ‘চিতলমারী উপজেলার যে অজ পাড়াগায়ে আজও পর্যন্ত বৈদ্যুতিক বাল্ব তার আলোকচ্ছটা নিয়ে উদ্ভাসিত হতে পারেনি, সেই কালশিরা গ্রামের কোনো আটপৌরে গৃহবধূকে দেখা যাবে, তারকা-খচিত রাতের অন্ধকার প্রাঙ্গনে দাঁড়িয়ে নিয়নবাতি ঝলকিত সুদূর রাজধানী শহর অথবা মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ প্রবাসী আপনজনের সাথে একান্ত আলাপে মগ্ন’ (পৃ: ৯০)।
পঞ্চম অধ্যায়ের শিরোনাম: শিক্ষাব্যবস্থা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা ও খেলাধুলা। ১৬টি উপ-অধ্যায়ে বিশ্লিষ্ট এই অধ্যায়টি থেকে এই অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, সম্প্রীতি, মেধা, মনন, রুচি, প্রবণতা, প্রত্যাশা, গণমানস ও চেতনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। চিতলমারীতে প্রথম মঞ্চনাটক অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘটনাটি বেশ মনযোগ আকর্ষী: ‘চিতলমারীতে আধুনিক নাটক মঞ্চায়নের জন্য কোনো স্থায়ী মঞ্চ ছিল না। নাট্যকর্মীদের কোনো প্রশিক্ষণ-প্রতিষ্ঠান ছিল না। ছিল না বিন্দুমাত্র বাস্তব অভিজ্ঞতা। এ রকম পরিস্থিতিতে ১৯৭৯ সালে রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী পালন উপলক্ষে “শহীদ মানিক স্মৃতি সংঘে”র উদ্যোগে চিতলমারী হাইস্কুলের তৎকালীন বিজ্ঞাান ভবনের উদোম বারান্দায় মঞ্চ নির্মাণ করে রবীন্দ্রনাথের “মাস্টার মাশায়” ছোটগল্পের নাট্যরূপ মঞ্চস্থ হয়। নাট্যরূপ দান করেন এ গ্রন্থের লেখক বেনজীর আহম্মদ টিপু। চিতলমারীর মঞ্চনাটকের ইতিহসে এটি ছিল প্রথম সফল আধুনিক মঞ্চ নাট্যাভিনয়’ (পৃ: ১৩৭)।
ষষ্ঠ অধ্যায়ের শিরোনাম কর্মসংস্থান ও পেশা, কৃষি, পশুসম্পদ, হস্তশিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য। শিরোনাম দেখেই বোঝা যায়, এই অধ্যায়ের মূল প্রতিপাদ্য। তবে এখানেও তুলে ধরেছেন অনেক ভুলতে বসা ইতিহাস। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের দ্বিতীয়বার চিতলমারীতে আসার ঘটনাটি চমকপ্রদ; ‘‘…ভারানীর খালের ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটুকু ছিল ততৎকালের প্রতাপশালী হিন্দু সমাজপতি অমরেন্দ্রনাথ হালদারের জমির উপর। জনস্বার্থে নিজে জমির উপর দিয়ে তিনি রাস্তা করতে দিয়েছিলেন। ঝাঁমেলা বাঁধে ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ওই ব্রিজটি করতে গেলে। …তিনি বাগেরহাট দেওয়ানি আদালতে মামলা ঠুকে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এলেন। কাজ বন্ধ হয়ে গেল। সব জেনে মীমাংসা করতে এলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি অমর নাথের কাছে ব্রিজের জন্যে ভূমি চাইলে তিনি তা একটি শর্তে দিতে রাজি হলেন। ভূমিদানের কথা ব্রিজের উপরে সাইনবোর্ডে লিখে দিতে হবে। বঙ্কিম বাবু সম্মত হয়ে নিজ হাতে কাগজে এই বাক্যটি লিখলেন, ‘অমর নাথের অমর কীর্তি ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডে ভূমি দান।” (পৃ: ১৭৫)
হিজলার নীল বিদ্রোহের ইতিহাস দিয়ে শুরু হয়েছে সপ্তম অধ্যায়, ‘রাজনীতিতে চিতলমারী’। এর পর থেকে শুধু মুক্তিযুদ্ধের অংশটি বাদ রেখে সর্ব-সম্প্রতি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে চিতলমারীবাসীর ভূমিকা ও চিতলমারীর বিভন্ন এলাকায় দানা বেঁধে ওঠা আন্দোলনের ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে এই অধ্যায়ে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সম্পর্কেও বিস্তৃত বর্ণনা রয়েছে। এই জনপদে সম্প্রীতির স্বচ্ছ ও সফেদ চিত্রপটে যে দুটি দাঙ্গা ও লুট কলঙ্কের কালিমা লেপে দিয়েছিল, তা-ও ইতিহাসকার বর্ণনা করেছেন নির্মোহ ভঙ্গিতে। এসব আন্দোলন, দাঙ্গা ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যক্ষ বয়ান এবং পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ সংযুক্ত হওয়ায় এ সমস্ত ইতিহাস জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
গ্রন্থটির শেষ অধ্যায়ের শিরোনাম ‘মুক্তিযুদ্ধে চিতলমারী’। মুক্তিযুদ্ধকালীন এই অঞ্চলের অনেক অনুন্মোচিত ঘটনার সন্নিবেশ ঘটেছে এই অধ্যায়ে। লেখক নিজেই তাঁর দেখা দুই নাম-পরিচয়হীন শহীদের বীরত্বের বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, ‘বাবুগঞ্জ বাজারের কাছে পথের পাশে মোটা একটি শিরীষ গাছের আড়াল থেকে হঠাৎ বেরিয়ে আসে বল্লম ও রামদা হাতে দুজন অকুতোভয় বাঙালি। একজন পঁচিশ-ত্রিশ বছরের টগবগে তরুণ, অন্যজন মধ্য বয়সের। তাঁরা মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকসেনাদের ওপর। দুজন পাকসেনাকে সামান্য অহত করতেও সক্ষম হয় তাঁরা। পাকসেনারা তাদের ধরে ফেলে। বাবুগঞ্জ খোয়াঘাটে এ দুজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তাদের মাথা কেটে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়।’(পৃ: ২৩২)
টানা দশ বছর ধরে নিরন্তর পরিশ্রমের ফসল ‘চিতলমারীর ইতিহাস’। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি পর্যাপ্ত পঠন-পাঠনে নিজেকে ঋদ্ধ করেছেন, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন। অনেক তথ্য সংগ্রহ ও যাচাইয়ের জন্য সমস্ত এলাকা ঘুরে বেড়িয়েছেন, কথা বলেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তথ্যদাতাদের সঙ্গে। জাতীয় তো বটেই, চিতলমারী অঞ্চলের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে, এমন কিছুই এড়িয়ে যাননি লেখক। একজন নিপুণ ইতিহাসকার হিসেবে তাঁর দৃষ্টি পড়েনি এমন বিষয় খুঁজে বের করা সত্যিই দুরূহ। তাঁর শক্তিশালী আতশি কাচের নিচে স্পষ্ট উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে ছোট্ট এক জনপদ; চিতলমারী। এক কথায় বলতে গেলে, ‘চিতলমারীর ইতিহাস’ তথ্যের এক পরিপূর্ণ ভান্ডার। এরূপ ছোট্ট আলোচনায় যথার্থভাবে বইটির পরিচিতি তুলে ধরাও দুঃসাধ্য ব্যাপার।
গ্রন্থটি শুধু আঞ্চলিক নয়, বরং জাতীয় ইতিহাসেরও গুরুপূর্ণ উৎস হিসেবে বিবেচিত হবে, নিঃসন্দেহে। এই গ্রন্থটির অনুসরণে যদি প্রত্যেকটি উপজেলার ইতিহাসকারেরা নিজ নিজ অঞ্চলের ইতিহাস রচনায় এগিয়ে আসেন সাগ্রহে, তাহলে সমৃদ্ধ হবে গোটা জাতি, সমৃদ্ধ হবে আমাদের উত্তর প্রজন্ম। লেখকের প্রতি কৃতজ্ঞতা।
চিতলমারীর ইতিহাস
লেখক ও প্রকাশক: বেনজীর আহম্মদ টিপু
পরিবেশক: আদিল ব্রাদার্স
প্রথম প্রকাশ: ২০১০
পৃষ্ঠা: ২৮৬, মূল্য: ২৫০ টাকা।