দ্য ডিভাইন সেক্স নামটা দেখেই কেন জানি ভালো লেগে যায়। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিই চলচ্চিত্রটি দেখার। পেনড্রাইভে করে বন্ধুর কাছ থেকে নিয়েও আসি। কিন্তু হেন করি তেন করি, চলচ্চিত্রটি আর দেখা হয়ে ওঠে না। এভাবেই পার হয় বেশ কয়েকদিন।
একদিন কম্পিউটার বন্ধ করার ঠিক আগ মুহূর্তে চলচ্চিত্রটি প্লে করি। সময়স্বল্পতার কারণে কেবল ধারণা নেওয়ার জন্য কিছুটা টেনে টেনে দেখতে থাকি। একটু স্থির হতেই দেখি—সঙ্গমে পুরুষ সঙ্গীর বীর্যপাত ঘটলেও তার নারী সঙ্গীনী মিলনের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। আরেকটু টেনে দিতেই—সঙ্গমে তৃপ্ত না হওয়া সেই নারীর খোলা পিঠ ডি-ফোকাসে রেখে অ্যাস্ট্রেতে গুঁজে রাখা সিগারেট থেকে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। বুঝতে কষ্ট হয় না ডি-ফোকাসে থাকা সেই নারীও যেন সিগারেটের মতোই পুড়ছে। তাড়া থাকার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেই মুহূর্তে কম্পিউটার বন্ধ করতে বাধ্য হলেও সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখি, যে করেই হোক চলচ্চিত্রটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেখতেই হবে।
রাতে ঘরে ফিরে প্রথমেই দেখতে বসি দ্য ডিভাইন সেক্স। নির্মাতা শিবেন্দু গুহ বিশ্বাস প্রথম দৃশ্যেই রেখেছেন সঙ্গমের দৃশ্য। এতে পুরুষ সঙ্গী রনোর সিমেন পাস হয়ে গেলেও, সঙ্গমে আরও কিছুটা সময় কামনা করে নন্দিনী। নন্দিনীর চাহিদা পূরণ না হলেও পরেরদিন বিভিন্ন কাজের অজুহাত দেখিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে রনো। পরদিন কলকাতা যাওয়ার পথে গাড়ি খারাপ হয়ে গেলে পাশের এক আখড়াই আশ্রয় নেয় তারা। রাতের বেলা আখড়ার এক ঘরের জানালায় আড়ি পেতে বাউলের এক শিষ্য ও তার সাধনসঙ্গীর উত্তুঙ্গ সঙ্গম দেখে রনো। তখনই সে প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করে নন্দিনীর কষ্টটাকে। পরে নন্দিনীর কাছে ক্ষমাও চায় সে। এই হলো মোটাদাগে ডিভাইন সেক্স।r
এতে খানিকটা বিব্রতও হন ইন্দ্র
২৬ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে পুরো একটা কাহিনি; খারাপ না। আদি, মধ্য, অন্তঃ সবই আছে। এছাড়া ডিভাইন সেক্স-এর শুরু এবং বাউলদের আখড়ার সেই যৌন-দৃশ্য শেষাবধি দর্শককে একটা ঘোরের মধ্যেই রাখে। দৈর্ঘ্য কমের কারণে তাড়াতাড়ি শেষ হলেও, দর্শকের মাথায় এর রেশ যে দীর্ঘক্ষণ থাকবে, সেটা হলফ করেই বলা যায়। এছাড়া এটি প্রশ্নও তুলবে কিছু বিষয় সম্পর্কে।
দৈর্ঘ্য বিচারে এ রকমই আরেকটা চলচ্চিত্র অহল্যা; মাত্র ১৪ মিনিটের। পুলিশ কর্মকর্তা ইন্দ্র সেন, তার চেয়ে আরেকটু কম বয়সী অহল্যা আর অহল্যার স্বামী গৌতম সাধুকে নিয়ে গড়ে উঠেছে অহল্যার কাহিনি। দৈর্ঘ্য কম হলেও ডিভাইন সেক্স-এর সঙ্গে তুলনা না করেও বলা যায়, অহল্যাতেও একটা সম্পূর্ণ কাহিনি আছে।
নিরুদ্দেশ হওয়া অর্জুন রায়কে খুঁজতে গৌতম সাধুর বাড়িতে আসেন পুলিশ কর্মকর্তা ইন্দ্র। কলিংবেলের শব্দে দরজা খুলে দেন অহল্যা। অহল্যাকে দেখে ইন্দ্র যেন কিছুক্ষণের জন্য থ হয়ে যান। এরপর সেখানে আসেন বৃদ্ধ সাধু। সাধুর উপস্থিতিতেও বারবার কামুক দৃষ্টিতে অহল্যাকে দেখতে থাকেন ইন্দ্র। অহল্যার রূপ দেখে বৃদ্ধ সাধুর মেয়ে বলে মনে হলেও, পরক্ষণেই জানা যায় তিনি আসলে সাধুর স্ত্রী। এতে খানিকটা বিব্রতও হন ইন্দ্র।
এদিকে, নিরুদ্দেশ হওয়া অর্জুনের কথা জানতে চাইলে জাদুর পাথরের কথা শোনায় গৌতম সাধু। তার জাদুর পাথরের ব্যবহারে অর্জুন নাকি অন্যবেশ ধারণ করে গা ঢাকা দিয়েছে। যদিও তার সেই গল্প ইন্দ্রর বিশ্বাস হয় না। সেই পাথরের ঘটনাকে পরীক্ষা করতে গিয়েই অহল্যার যৌনাবেদনের টোপে পড়ে যান তিনি। অন্য পুতুলগুলোর মতো তিনিও ম্যান্টেলপিসে সাজানো সেই মূর্তিগুলোর একজনে পরিণত হন।
দুই.
এবারে আসি ডিভাইন সেক্স-এর আলোচনায়। সঙ্গমে রনোর সিমেন পাস হলেও, নন্দিনী যে তখনো তৃপ্ত নয়, সেটা বোঝা যায় নন্দিনীর ‘রনো, থামলে কেনো?’ প্রশ্নের মধ্য দিয়ে। কিন্তু এ সময় রনোকে বলতে শোনা যায়, ‘প্লিজ আর না।’ নন্দিনীকে আবার বলতে শোনা যায়, ‘নিজেরটা হলেই হলো, না?’ প্রত্যুত্তরে রনো সাফ জানায়, ‘ইটস্ ন্যাচারাল।’ নন্দিনী অবশ্য সেই কথারও পাল্টা জবাব দেয়, ‘ইটস্ নট ন্যাচারাল।’ তাদের এই তর্কে কে ঠিক আর কে বেঠিক সে প্রসঙ্গ এমনিতেই খোলাসা হবে। তার আগে জানিয়ে রাখি, এই নন্দিনী-রনো সম্পর্কে।
রনোর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে
আখড়ায় বাউল যখন নন্দিনীর কাছে জানতে চায়, তাদের বিয়ে হয়েছে ক’বছর আগে। উত্তর দিতে গড়িমসি করা দেখেই বাউল সাধু ধরে ফেলেন তারা সহবাস মানে একসঙ্গে থাকলেও বিয়ে-টিয়ে করেনি। বিয়ে না করা নিয়ে অবশ্য সাধুর কোনো মাথাব্যথাও নেই। তার মতে একসঙ্গে থাকাটাই আসল। সেখানে মনের সঙ্গে মনের মিলনটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু একসঙ্গে থাকলেও তাদের মধ্যে যে প্রেমময় সম্পর্ক তৈরি হয়নি, তা হলফ করেই বলা যায়। বাউল সাধু যেমন বলছেন, ‘কাম জয় হলে তবেই তো আসে আসল প্রেম।’ কিন্তু রনো-নন্দিনীর সম্পর্কের মধ্যে তো কামকে জয় করে প্রেমের ধাপে পৌঁছতে দেখি না। আর সম্পর্ক মানে তো কেবল একসঙ্গে থাকা নয়; সম্পর্ক হলো বোঝাপড়া, ভালোবাসা, সমঝোতা। যার কোনোটিই রনো-নন্দিনীর মধ্যে দেখা যায় না। বিপরীতে স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয় সম্পর্কের দূরত্বটা।
কারণ, নন্দিনী যখন বলে ওঠে, ‘ইটস্ নট ন্যাচারাল।’ ঠিক সেই মুহূর্তে রনোকে বলতে শোনা যায়, ‘তার মানে অন্য পুরুষ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা আছে দেখছি।’ রনোর এই উক্তিতে পরিষ্কার বোঝা যায়—নন্দিনীর সন্তুষ্টি-তৃপ্তি নিয়ে তার মাথাব্যাথা তো নেই-ই, উল্টো তাকে আঘাত করে কথা বলতেও ছাড়ে না সে। কিন্তু রনোর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটে বাউলদের আখড়ায় গিয়ে।
কলকাতা যাওয়ার পথে গাড়ি খারাপ হলে, হোটেলের খোঁজে পাশেই বাউলদের আখড়াই গিয়ে হাজির হয় রনো-নন্দিনী। তাদের কাছেই জানতে পারে—আশেপাশে কোথাও হোটেল নেই। অগত্যা তাদের অনুরোধে আখড়াতেই রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। রাতের বেলা সবাই একত্রে বসে আলাপকালে বাউল সাধুর কাছে শোনে, ‘একে অপরের পরম ভালোবাসায়, আদরে উত্তুঙ্গ সঙ্গম সম্ভব।’ প্রথমে এটাকে ডিসগাস্টিং, ইম্পসিবল বললেও, আখড়ার এক ঘরের জানালায় আড়ি পেতে বাউলের এক শিষ্য ও তার সাধন সঙ্গীর উত্তুঙ্গ সঙ্গম দেখে রনো। তখনই সে প্রথমবারের মতো উপলব্ধি করে নন্দিনীর কষ্ট।
তিন.
ইদানিং একটা বিষয় খুব ভালো করে খেয়াল করছি। গরমে কোনো কাপড় পরবো, শীতে চুলের স্টাইল কেমন হবে, কখন সানস্ক্রিন ক্রিম মেখে বের হতে হবে, কোন খাবার খাব, কী করব আর কী করব না—ইত্যাদি ইত্যাদির দিকনির্দেশনা দিচ্ছে গণমাধ্যম। না চাইলেও ওই গণমাধ্যমই আবার নিত্য-প্রয়োজনীয় নয় এমন জিনিসপত্রের হাজারটা ফর্দ নিয়ে আমাদের কাছে হাজির হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে সেই জিনিসগুলো আমাদের প্রয়োজনীয় হোক বা না হোক, সেগুলোর প্রতি একধরনের আকর্ষণ তৈরি হচ্ছে। পরে হয়তো সেই পণ্যসেবা আমরা কিনেও ফেলি।
অহল্যাতেও দেখি দরজা খুলে দেওয়ার পর থেকে সবসময় ইন্দ্র অহল্যার প্রতি একধরনের আকর্ষণ অনুভব করে। গৌতম সাধুর কাছে অর্জুনের কথা জানতে চাইলে তিনি ইন্দ্রর মনে ধাঁধা ঢুকিয়ে দেন। জাদুর পাথর হাতে তাকে গৌতমের বেশে পাঠান অহল্যার কাছে। অহল্যার ঘরে গিয়ে ইন্দ্র নিজেকে গৌতমের রূপে দেখতে পায়। বদলে যাওয়া সেই সুরতটাকে সুযোগ হিসেবে দারুনভাবে কাজে লাগিয়ে কামে লিপ্ত হয় ইন্দ্র। ফলে অহল্যার যৌনাবেদনের টোপে ইন্দ্রও অন্য পুতুলগুলোর মতোই ‘জীবন্ত’ মূর্তি বনে যায়।
মডেলদের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়
আবার শুরুতে ফিরে যাই। অর্জুন রায়কে খুঁজতেই এই বাড়িতে আসেন ইন্দ্র। ভাস্কর গৌতম সাধুর বাড়িতে অর্জুন এসেছিলেন মূলত মডেল হওয়ার জন্য। ইন্দ্র বাড়িতে প্রবেশের সময়ই অর্জুনের মূর্তিটা ম্যান্টেলপিস থেকে নিচে পড়ে যায়। আবার ইন্দ্র যখন দেয়ালের মাঝখানে আটকা পড়ে থাকে, ওই সময় তার খোঁজে আসা ব্যক্তির সামনেও ঘটে একই ঘটনা। পার্থক্য হলো—এবারে ম্যান্টেলপিস থেকে পড়ে যাওয়া মূর্তিটা পুলিশ ইন্দ্রর। তার মানে মূর্তি পড়ে যাওয়া কিংবা আবার কেউ সেই একই ফাঁদে পড়ার পুনরাবৃত্তি ঘটছে, ঘটেছে আবার ঘটবে। গৌতম সাধু অবশ্য মূর্তি পড়ে যাওয়ার বিষয়টার দারুণ এক ব্যাখ্যা দিয়েছেন—নতুন কাউকে দেখলেই বাঁচার আকুতি জানিয়ে রক্ষা পাওয়ার জন্য ছটফট করে এই মূর্তি, আর তখনই এগুলো পড়ে যায়। তবে এই মূর্তির আড়ালে চিৎকার করতে দেখা যায় জীবিত ইন্দ্রকে। ইন্দ্রর তীব্র চিৎকারে ম্যান্টেলপিস থেকে তার মূর্তি যেমন পড়ে, ইন্দ্রর সামনে যে মূর্তি পড়েছিল তার কাহিনিও যে অভিন্ন, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই ইন্দ্র, সাধুর জালে আটকা পড়ে অহল্যার শরীরের মোহে পড়ে; তার সঙ্গে মিলিত হতে গিয়ে। হয়তো অহল্যার সঙ্গে তার মিলন ঘটে, কিন্তু শত চেষ্টা করেও আর ছাড়া পায় না সাধুর ফাঁদ থেকে। ইন্দ্রর তীব্র চিৎকারও আর শুনতে পায় না তারই খোঁজে আসা যুবক! হয়তো সেও আটকা পড়বে সাধুর ফাঁদেই।
কিন্তু এই গৌতম সাধু-ইবা কে, মূর্তি বনে যাওয়ার ঘটনা-ইবা কী, অহল্যাটা কে, আর দেয়ালে আটকানোর ব্যাপারটার ব্যাখ্যাইবা কী? ম্যান্টেলপিসে স্থান পাওয়া দুজনকে তো অন্তত চিনি। পুলিশ কর্মকর্তা ইন্দ্র, আর মডেল অর্জুন। এদের দিয়ে আপাতত বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করা যাক। এই দুজনের মধ্যে অবশ্য অদ্ভুত একটা মিল আছে। সমাজের মধ্যে থেকে আরও কাছ থেকে বললে, আমাদের বাবা, ভাই, ছেলেরাই পুলিশ হয়ে তারাই আসলে রাষ্ট্র ক্ষমতার একক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের টিকে থাকা না থাকার বিষয়টা অনেকাংশে তারাই নির্ধারণ করে। আবার আমরা দেখি এই পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায় পণ্য বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এতে মডেলদের ভূমিকা কোনো অংশে কম নয়। অনেকসময় দেখা যায়, ওই পণ্যটি বিক্রি হয় আসলে নির্দিষ্ট কোনো মডেলের বদৌলতে। অর্জুন সে রকমই একজন। পুঁজির বিকাশে যার অবদান অসামান্য। যদিও সেক্ষেত্রে অর্জুনদের উপস্থাপন করা হয় অনেকটাই পণ্যের আদলে। ফলে অর্জুন-ইন্দ্ররা হয়ে যায় ম্যান্টেলপিসে সাজিয়ে রাখা ওই পুতুলগুলোর মতোই। সেই বিবেচনায় গৌতম সাধুকে কল্পনা করা যায় রাষ্ট্র হিসেবে, কিংবা অন্য কোনো হর্তাকর্তা হিসেবেও ভাবা যেতে পারে। অহল্যা অনেকটাই ‘পণ্যের মতো’, যে নিজের চাকচিক্য দিয়ে অন্যকে আকর্ষণ করে, শেষাবধি তাকে পাবার নেশায় উন্মত্ত করে তোলে।
লালন কোথাও হিন্দু, কোথাও মুসলমান
চার.
গতানুগতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখে অভ্যস্তরাও ডিভাইন সেক্স কিংবা অহল্যা দেখার পর একটা রহস্যের মধ্যে পড়ে যাবে। কতোগুলো বিষয়ে ভাবাবে এগুলো। এত অল্প সময়, তারপরেও যেন সবকিছুই আছে। ডিভাইন সেক্স-এ নির্মাতা শিবেন্দু কাহিনিতে টুইস্ট হিসেবে দুটি যৌন দৃশ্যের পাশাপাশি আবহসঙ্গীত, সঙ্গীতেও নান্দনিকতার ছাপ রেখেছেন। এছাড়া যৌন দৃশ্য দুটিকে নিছক টেনে নিয়ে আসাও বলা যাবে না, সেটা কাহিনির প্রয়োজনেই এসেছে। সঙ্গমের পর রনোর পিঠ থেকে ঘাম গড়িয়ে পড়া, নগ্ন হয়ে ওয়াশরুমে যাওয়া সবই বাস্তবের অনেক কাছাকাছি পৌঁছেছে। কোনোভাবেই ওই যৌন দৃশ্যকে অভিনয় বলে মনে হয়নি। যদিও নন্দিনীর কথা বলার ঢঙটা অভিনয় ছাপিয়ে বাস্তবতাকে সেভাবে ধরতে পারেনি। তারপরেও ওই যৌনদৃশ্যে এবং পরবর্তী সময়ে গাড়ির মধ্যে তার যে এক্সপ্রেশন, সেটা প্রশংসার দাবি রাখে। তবে বাউলদের চুল-দাড়ি নিয়ে বেশ আপত্তি আছে। এগুলো যে নকল, সেটা বুঝতে দর্শকের মোটেও অসুবিধা হয় না। এক্ষেত্রে শিল্প নির্দেশকের সচেতনতা জরুরি ছিল। অহল্যা সম্পর্কে বলতে গেলে কেবল দ্বিরুক্তিই হবে; এককথায় অসাধারণ।
তবে ডিভাইন সেক্স-এর আধেয় নিয়ে কিছু কথা না বললে চরম অন্যায় হবে। ইদানিং এই বিষয়টা ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। সেটা লালন এবং লালনের দর্শন নিয়ে। যে লালন নিজেকে মানুষ হিসেবেই পরিচয় দিতেন; নামের সঙ্গে ফকির শব্দটা যুক্ত করেছেন। সেই লালনকে কোথাও হিন্দু, কোথাও মুসলমান, বিভিন্নখানে বিভিন্নভাবে উপস্থাপন লক্ষ করা যাচ্ছে। এছাড়া কেউ আবার লালন আর নেশাজাতীয় দ্রব্য গাঁজা আর সেক্সকে একাকার করে ফেলছেন। এই ডিভাইন সেক্স দেখার পর যে কারও মনে হতেই পারে—লালন বুঝি কামবাবা। বাউল দর্শনকে এতটা ঠুনকোভাবে উপস্থাপন করা নির্মাতা শিবেন্দু গুহ বিশ্বাসের ঠিক হয়নি।