মনে হচ্ছে, মাদকেই ভাসছে স্বদেশ
যখন অদ্ভুত মনে হলো, অনেক চূড়ায় উঠে গেছ;
হাত-পা ছুড়তে থাকা শিশুর মতো
ছচটফট ইচ্ছেগুলো, মনের বিচ্ছেদে উড়ে যাচ্ছ।
জ্যামিতির ক্লাসে ব্লাকবোর্ড লেখা মুছতেই টের পেলে
পেটের অসুখে বুকজ্বালা করছে লবণ জলে—
স্বচ্ছ গ্লাস ভর্তি পিঁপড়ে যখন বাঁচার সাঁতার কাটছে,
দাঁতে- দাঁত চেপে জলেরও ভীষণ থৈ থৈ কান্না পাচ্ছে;
গুলির সিসায় ফুটছে আওয়াজ,
ফায়ার…ফায়ার হচ্ছে—
কার্তুজের খালি খোসা তড়পায়…আর্তনাদ;
মনে হয়, মানুষের আয়ূ বাড়ছে মৃত্যুর চেয়ে দ্রুত,
পিতার লাশের পাশে সৈনিক মাছির ভনভন
গুলির শব্দের মতো—
বাবাভক্ত মেয়ের কান্নায় বাংলাদেশ ভিজে যাচ্ছে—শোকে!
মনে হচ্ছে, মাদকেই ভাসছে স্বদেশ, রাষ্ট্রবৃষ্টি বিউগল ফোঁকে।
পঁচিশে বৈশাখ
আজ সারাদিন চোখেমুখে সূর্যোদয়, অপরাহ্ন;
সূর্যাস্ত হলেন—রবীন্দ্রনাথ!
গোধূলির গনগনে পোড়ানো ধাতুতে পঙ্ক্তিগুলো
পোড়ায় কবিকে,
কিছু খসড়া লেখাও কামড়ে ধরছে
বাঘের থাবায়…
বুকের ভেতর ফিনকি বইছে কাব্যঘেরা
রক্তজবায়।
টাটকা রোদের তেপান্তরে ওড়ে,
তৃষ্ণা ভরা, কী লিখলো রে—
ভেঙে যাই ক্রোধে! নষ্ট হতে ইচ্ছে করে;
রবীন্দ্রনাথ পুড়তে পুড়তে, এই শহরে একলাই আমি উন্মাদ না কি?
—পাগল প্রলাপ বকে, ‘ঠাকুর ঘরে কে রে?’
টুপটাপ ব্লিডিং হচ্ছে
আগলে রাখলে ওম টের পাই, বিটুমিন গলে গলে পড়া উষ্ণ ঝড়োহাওয়া;
পালাচ্ছে রাস্তার ধুলোবালি,
টুপটাপ ব্লিডিং হচ্ছে গোপন বৃষ্টির জলে,
নদীর কিনার ভেঙে পড়ছে নৌকার পাটাতনজুড়ে
শুয়ে আছে সিলভার রঙের অসুস্থ চাঁদ
হাত থেকে পড়ে ভেঙে যাচ্ছে ব্যস্ত ঘড়ি ও সময়।
তবু…একটা পাহাড় আবেগের চেয়ে উঁচু হয়ে উঠছে অকাশ;
লাউযের ডগার মতোন লকলকে এক পসলা কফির ধোঁয়া
উড়ে যাচ্ছে..
আলিঙ্গনে জড়ানো মুগডালের মতো নিরিবিলি ক্ষেত।