মেঘনা
কবির মতো বলি, আমিও একটা অমলধবল পাপ করতে চাই—
বদ্ধ অন্ধকারে কিঞ্চিৎ আলোর মতো কিছু,
আমিও ছুঁতে চাই তার বয়ে যাওয়া শুদ্ধতায়।
স্থায়ী বসত গড়তে চাই অশোক রাজার মতো।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা পাবে না খুঁজে আমাদের তথ্য,
কেননা তোমাতে বিলিনে কে পাবে কোথায়?
হয়তো আসামের লুসাই পাহাড়ে কিছু পেলেও পেতে পারো,
অথবা আমার শৈশবের দিনগুলো।
অস্ত্রোপচারে কিছু পেলে কি না জানিও।
হিমার প্রতি
আপেলের মতো নয় তোর গড়ন,
কিংবা কাগজি লেবুর মতো পাতলা ফ্যালফ্যালে ঠোঁট নেই।
আছে প্যাডের কাগজ মোড়ানো ঝনঝনানি ব্যক্তিত্ব।
তুই হঠাৎ করে উড়ে এসে জোরে বসা একটি শালিক—
অগ্রহায়ণের নতুন ধানের অপার বিস্ময়,
অথবা ঝরাপাতার একেকটি ক্ষণজন্মের সুখস্মৃতি।
বইয়ের গন্ধে ভোর হয়ে থাকা বই-মাতাল তুই
আমার মতো স্তূপকীটকে ভালোবেসে হৃদয় দিয়ে দেওয়া।
কদমের একেকটি রেণুকে আগলিয়ে রাখা একটি চৌম্বক,
ঠোঁটের কম্পনে ভালোবাসার গভীরতা বুঝিয়ে দেওয়ার সত্তা,
কিংবা টিউশনি শেষে ক্লান্ত দেহে ঝরঝরে হাসিতে ভুবন ভোলানো।
নয়কে নব্বইয়ে নেওয়ার দৃঢ় সংকল্পও তুই।
অগোছালো স্কেচবুকের আত্মকথন
ফুল বলতেই কেঁপে উঠলো তোমার ঠোঁট,
প্রায়ই মুখোমুখি বসি জীর্ণ এই দালানের পাশে।
চোখে খেলা করে বেলীর আবেশ।
আমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকি অজানা প্রাণের পথে।
অথবা অথৈজলের বুকের সলতেটুকুতে,
ঢেউ খেলে, আমাকেও খেলায়,
আর তুমি চেয়ে থাকো বেলি ফুলের চোখে—
তখন অগোছালো কিছুকেও আমার গোছানো মনে হয়।
মনে হয় ওই তো চেয়ে আছে আমারই প্রিয় গ্রাম,
যেখানে কেটেছে আমার পুরো শৈশব।
তুমি ঠাঁই দাঁড়িয়ে অথবা বসে আছ শাপলার পাতা বিছিয়ে।
কোনো আগন্তুক হেঁটে যায় তোমারই পাশ দিয়ে।
প্রেয়সী, পারবে তুমি বিশ্বটাকে নিয়ে হাঁটতে তোমার মাথায় চেপে?
যেখানে পুরো জমিন জুড়ে তোমার শরীরের ঘ্রাণ,
তোমার এক চোখে ফুল নেই জানি—
কিন্তু জল মানায় না,
হেসে উঠো তুমি, জেগে ওঠো।
চলো আমরা দুজন মিলে হয়ে উঠি ক্যাকটাস ফুল,
কিংবা তোমার প্রিয় শিউলি ফুল।
তোমার শরীরজুড়ে আমি বিছিয়ে দেব শিউলির বিছানা,
আমি জলের চোখেই হয়ে উঠবো তোমার প্রিয় ফুল।