হারানো ঠিকুজি
বালিকার করপুটে বাদামের দানাগুলো ফেলে
বাদামের খোসার মতো বালক
উড়ে চলে গেছে
অদৃশ্যে-আড়ালে
তারপর হিমায়িত মহাদেশে
নেচে ওঠে পরিযায়ী পাখিদের বিষ্ঠার কুবাস
সুমি কালিতে কে কবে এঁকেছিল কার নামধাম
তুষার পুষ্পের কুচিতে আজ নেই
হারানো ঠিকুজি
স্মৃতির জাবেদা
গুপ্ত লিপিকলা ফেলে গেছে মায়া
আজও মাঝরাতে শাসিয়ে যায় কিছু ভৌতিক ছায়া
করতালি
হাত তো একটাই
বাজাবে কিভাবে বলো করতালি
বাজলেও তা হবে
এক অমীমাংসিত জোড়াতালি
মধ্যরাতের আকাশ
মধ্যরাতের আকাশ
তোমার মুখের মতো অবিচল রোমান্টিক
যদি ছাদে বসতে পায়ে রেখে পা
এককাপ চা সরু বিষ্টিতে বিভাগ করতে
মগজে মগজ দিয়ে গুনতে হৃদস্পন্দন
মধ্যরাতের আকাশ
তোমার হৃদপিণ্ডের মতো তুমুল নিশ্চুপ
যদি আলমিরাতে কাপড়চোপড়ের ফাঁকে
সন্তর্পণে মেলে দিতে দু’টো চোখ
ন্যাপথালিনের মতো ছিলাম খুব কাছেই
মধ্যরাতের আকাশ
যাতনাপুষ্পের শব্দহীন এক বিচ্ছুরণ
যদি দ্বিধাগ্রস্ত করাঙুলে দিতে গ্লু-প্রলেপ
নাইটকুইন ফোটে মধ্যরাতে
ঝরে যায় কেউ দেখে অথচ কেউ দেখে না
হেরে যাই অনিচ্ছায়
একসময় স্বেচ্ছায় হেরে যেতাম এখন অনিচ্ছায়
হা সময় চিলেকোঠায় আজ এতবেশি অগ্নুৎপাত
ফিরে চলে যাই মাথা নিচু করে খুব মাথা নিচু করে
ক্রন্দনহীন বলয়ের নাভিমূলে নিশ্চুপ অভিমানে
ভালো এবং খারাপ লাগার অনুভব সারির ভেতর
বুনে রাখি ক্লীবতার যাবতীয় মীমাংসার গুপ্তবীজ
যে যাকে নিয়ে আপ্লুত হয়ে আছে থাকুক তারা আদরে
জনান্তিকে বনসাই করে রাখি অংকুরিত প্রৌঢ়মন
সান্ধ্য বিউগল ডাক দিয়ে চলে গেছে বহু বহুক্ষণ
আমিও ফিরেছি একা অপ্রেমে অনাকাঙ্ক্ষিত অবেলায়
মনে হয় মৃত্যুর পূর্বে হালকা হয়ে যাওয়াই ভালো
তুলোর বীচির মতো শব্দহীন হাওয়ায় হাওয়ায়
অনন্তের রথে এখন একাকী চুপচাপ অভিযান
কেনো মনে হয় কেউ ছিলো ছিলো নাকি কস্মিনকালেও
আঁকশির মতো একদিন কে ছিলো ভীষণ কাছাকাছি
একদার প্রস্ফুটিত নীলচোখে নীলতাঁবু নীলাকাশ
হা বালখিল্য আকাঙ্ক্ষা স্বপ্নের মতিচ্ছন্ন কর্তিত লেজ
সাপাবাতাসের তোলপাড়, ছিন্নভিন্ন শিলাবজ্রবৃষ্টি
ঠিকুজি বাবুজি বসে থাকো পৃথিবীর লঙ্ঘিত ভূগোলে
সব খুইয়েছো হে জুয়ারি ফিরে যাও খিলখিল পথে
হতে পারে
হতে পারে স্বপ্নটি দেখিনি আমি—দেখিয়েছে অন্যকেউ
ত্রিভুজে গড়া চতুর্ভুজের বসতবাড়ির ছাদে বসে
পিঠে পিঠ ঘষে অথবা পায়ে পা রেখে হালকা বৃষ্টিতে
পান করছি আকাঙ্ক্ষা—বিস্মৃতির টুংটাং মৃদু অভিসারে
হতে পারে এসব পা-পিঠ ঘষাঘষি হলো ধারাপাত
বিদ্যালয় গমনপথে ফোটা প্রেমশিক্ষার মৌলপাঠ
বৃষ্টিদানা কিংবা বিড়ালছানার মতো পা’র চারপাশে
পাখোয়াজ ভঙ্গিমায় খেল গেছে হৃদয়চুরির খেলা
হতে পারে বিভ্রান্তির নীলপেয়ালা উপুড় হয়েছিল
অথচ সনাতন আকাশ ছিল না অভিন্ন নীলমাঠ
কিংবা বর্ষার করতল ভর্তি হয়নি কেতকী-কদমে
দীর্ঘ আশ্বাস ছাড়া আকাঙ্ক্ষা নিঃসৃত করেছে দীর্ঘশ্বাস
হতে পারে তেন্তালাশই হবে জীবনের বিমূর্ত নাম
আকাঙ্ক্ষা এবং প্রাপ্তিরেখা চিরকাল ভারসাম্যবিহীন
পেয়ালার ফুটোপথে ঝরে যাবে সবটুকু সবুজ চা
ছিটকে পড়বে চতুর্ভুজের অন্তর্গত ত্রিভুজগুলো