গণতন্ত্র
আমরা এখন ফুল বিছানো ভুলের পথেই হাঁটি
নিজের দিকে না তাকিয়ে অন্য কাউকে ঘাঁটি
আমরা এখন মহাসড়ক দু’দিকে ফোর লেন
চলতে গিয়ে সব ভুলে যাই এটার কী বুঝলেন?
আমরা এখন নিয়ন আলো, রঙিন চশমা ছাড়া
আঁধার রাতে অনেক দেখি, বাধার পথে খাড়া
তাড়াহুড়া যতই করি পুরোটা রাজপথ
ভুলে গেছি স্বাধীনতার প্রকৃত শপথ
আমরা এখন রঙিন ফুলে খুঁজে বেড়াই ওম
বুঝতে চাই না শাদার ভেতর কতটা সম্ভ্রম
দিগভ্রান্ত সন্ধ্যা এখন অন্ধগলির মোড়
ভক্তি শ্রদ্ধা ভুলে দেখি, পুরোটা প্রস্তর!
আমরা এখন ধূপখোলা মাঠ, ললিপপের লাঠি
সবার মাথায় আঘাত করতে নেতারই পা চাটি
আমরা এখন ঊর্ধ্বমুখী নেতার প্রিয় চামচা
উপঢৌকন পকেট ভর্তি লাগবে নতুন গামছা।
সোনালি অসুখ
তোমার চোখে গোলকধাঁধা সপ্ত ডিঙা রাত,
আমার বুকে রক্ত ঝরা কাঁটারই আঘাত
আঁধার ভরা চৌরঙ্গী’র বেনারসি মাঠ
মুঠোভর্তি ঘুম উড়ে যায় খোলে না কপাট
আমার ঘরে জোনাকিরাত উঁকি মারে যেই
ভালোবাসার বুনো হাওয়া হারায় অরণ্যেই
কাকের ঠোঁটে প্রেম-বসন্ত, কোকিলা দেয় উঁকি
পানপাত্র উপুড় করা কেউ নেবে না ঝুঁকি
তুমুল ঝড়ে বয়সী গাছ ভেঙে পড়ার ভয়ে
নুইয়ে পড়ে আবার দাঁড়ায় সব ব্যথাকে সয়ে
বোয়ালমাছের পেটে ব্যাথা খলশে মাছের লাফ
এগুলো সব কথার কথা আজগুবি প্রলাপ।
তোমার বুকের ঝকঝকে মেঘ আমার ঘরের ছাদে
ঝরতে গিয়ে না ঝরে সে জানায় অপবাদে।
সবাই খোঁজে আম্রপালি কাঁচামিঠা সুখ
আমি তখন পাই না খুঁজে সোনালি অসুখ
মনীষা তোমাকে-৪৮
শ্মশানে যাবো না, কবরেও না; হাওয়ায় উড়বো শুধু
স্মৃতির ফসিল মিলেমিশে একা, দেখবে দু’চোখে ধু ধু
আকাশমনির পিচ্ছিল মন, আমার মনের মতো
দুঃখকে সে ফুঁ দিয়ে ওড়ায়, কষ্ট বাড়ে যত
সূর্যমুখীর প্রাঞ্জল হাসি দেখে না অস্তাচল
আমার ভেতর নেচে ওঠে শুধু, আমারই কোলাহল
শ্বাসমূল দিয়ে ম্যানগ্রোভ হাসে, কাঁঠালচাঁপা গন্ধে
হারায়ে খুঁজি, খুঁজতে হারাই; মননের দ্বিধা-দ্বন্দ্বে
তোমার পৃথিবী ঘুণপোকা কাঁটে, আমার উটের গ্রীবা
পান শেষে টান আদান-প্রদান, এমন স্বপ্ন দিবা
নিতে পারি যত, দিতে পারি আরও বেশি
চোখ তুলে চাও আমাকে বাঁচাও, মনীষা যে এলোকেশী
আমার মনীষা চায় না কিছুই, তবু তার অভিমান
পৃথিবী জানুক মনীষা আমার, প্রেমের সংবিধান।