প্রত্যাবর্তন
হাকালুকির বিল থেকে যেই পাখিটি উড়ে গেল
তার পালকে জেগে উঠেছিল আমার নাম
তার কিচিরমিচির ধ্বনিতে ছিল আমার নাম
তার শার্শির মধ্যে গেঁথে রেখেছিল আমার নাম
পাখিটি উড়তে গেলে ঝরে যায় কিছু তৃষার পালক
পাখিটি ডাকতে গেলে তার কণ্ঠ শ্রী হারায়
পাখি তবু উড়ে
পাখি তবু গান গায়
পলে পলে এই পাখিটি শূন্যে হারায়
অনেকদিন পর একটি সারস পাখির দেখা মেলে
নখের ভেতর আগলে রেখে বিগত ক্ষুধা
বুক টানটান করে হাঁটছে বিস্তীর্ণ লেখাবিলে…
হাতগুলো
হাতগুলো যখন নড়ে উঠবে
তখন হয়তো আমাদের কিছুই করার থাকবে না
চেয়ে চেয়ে দেখে যাব
হাতগুলো কিভাবে পাহাড় তুলে ধরে
হাতগুলো কিভাবে নদী বহন করে
হাতগুলো কিভাবে রাত্রি যাপন করে
হাতগুলো কিভাবে দিনের আলোয় উজ্জল হয়ে ওঠে
এক সময় হাতগুলো তার স্পর্ধাসীমা অতিক্রম করলে
আমাদের জবান হয়ে যাবে অদৃশ্য পিরামিড
আর মাস্তুলের চেয়ে ভারী কোনো প্রাচীন ধাতব বস্তু
ভয় হয়, হাতগুলো না আবার বে-কন্ট্রোল হয়ে যায়
নিয়তি আমার সাথে কুতকুত খেলে
যেখানে অস্তমিত হয় প্রেমের সূর্য
সেখানে উদয় আমার নিয়তি আলো
এ আলো বড়োই ষোড়শী তির্যক
ইংরেজিপাঠ ভুল করা ছাত্রের মতো
আকণ্ঠ অস্থির
ঝরে যাওয়া ফুলের মতো কর্দমাক্ত
আর বে-সৌরভ
কচ্ছপ হয়ে নদীপাড়ে উষ্ণতা খুঁজি
সেখানেও হামলে পড়ে বাদামী আলো
এ আলো ইশারা দেয় অচেনা পথের
তাহাজ্জুদগুজারিস মুসল্লি মতো
এই পথে আমিও ফানাফিল্লা হই
যখন একটু অবসাদগ্রস্ত হই
কে যেনো সরিয়ে নেয় মাথার বালিশ
মায়াবিনী রাঁধুনি
আমার বউ খুব একটা ভালো রান্না করে বলব না
তবে মাঝে-মধ্যে আলুভর্তা করলা-ভাজি
ডাল আর মলা মাছের টানাইল তরকারি
খুব মজা করে রাঁধে
তরকারির স্বাদে যতোটা না ভোজন রসিক হই
তার চে’ মস্লার ব্যবহারে বেশি চমৎকৃত হই
বউ আমার মিষ্টির কদর জানে
বড়ো মায়া করে পাতে তুলে দেয় মোরব্বার টুকরা
আর মিষ্টির রসে আমি খোদার আরশ দেখতে পাই
সে বড়ো মায়াবিনী রাঁধুনি
ঝালের আন্দাজ খুব ভালো তার
আমার চুলের গোড়া সে ভিজতে দেয় না