ভালোবাসা ঘাতকের চেয়েও বেশি কিছু
বিষাক্ত বাতাস এসে অকস্মাৎ
আমাকে জড়িয়ে ওড়ে বেলুনের মতো,
আমার আমি যে কীভাবে হাঁপিয়ে উঠি!
ভালোবাসা ঘাতকের চেয়েও অনেক বেশি কিছু।
কঠিন মাটিতে বুক ভাঙে-
সেখানে তো উর্বরতা ছিল
সবুজ জমিন পুড়ে যায়—স্বপ্নরা যে শকুন সারথি
মনের মরমি ঢেকে যায় ব্যথার পাথরে,
চেতনার কোষে
কখন যে নিজেই চালাই নিজেকে শাণিত ছুরি!
বুকের পবিত্র জমিনে লিখেছি সরল কবিতা
সেসব এখন ছেঁড়া পাণ্ডুলিপি;
সরল মাটিকে সরল জেনেছি চিরকাল—
সেখানে এখন কি সুন্দর মরণঘাতী চুম্বন।
গড়াই নদীও কেঁদে ওঠে
ভালোবাসা ঘাতকের চেয়েও অনেক বেশি হিংস্র্র।
বুক ভরে শীতল বাতাস নেবো বলে
এঁকেছি যে রঙধনু স্বপ্নবীজ;
নিষ্ঠুর পাথর ভেঙে ভেঙেছি জীবন
জীবনের নতুন জীবন দেবো বলে;
ভাবিনি কখনো—
ভালোবাসা ঘাতকের চেয়েও ভয়ঙ্কর হস্তারক।
সরল কৃষকের স্বপ্নবীজ
তোমাকে কিভাবে বলি দারুণ একটা তৃষ্ণা
মেঘের পালকে এসে নেমেছে ভোরের রোদে;
বৈশাখে পুড়েছে মন মনের নদীতে সখি তুমি
বুকের কুসুমে ঘ্রাণ নিয়ে একা জাগো নিশিভূমি।
আমি তো চেয়েছি রাধা পরাণে গড়াই নদী
চরণে তোমার এক দূরের দোয়েল চুমুর নূপুর
পরায় আগুন বুকে। পলিমাটি যৌবনা শরীরে
সরল কৃষক বোনে সাধন সঙ্গীতে স্বপ্নবীজ।
তোমাকে কিভাবে বলি রাতের পালকে নেমে
তৃষ্ণারা—ছাদের কোণে সন্ধ্যাভাঙা পুষ্পঘ্রাণে;
অবাধ্য বৈশাখী বৃষ্টি তুমি। ব্যাকুল পিপাসা পায়
নবযৌবন রাধিকা বুকে সুখনদী গোপন যমুনা।
অন্তঃসত্ত্বা পলিমাটি
কথার ভেলায় স্রোতের শাণিত তোড়ে খালবিল পথ ভেঙে
শহর বন্দর পেরিয়ে অজানা কোনো ভিন গাঁয়ে
যৌবনা মেঘের রঙধনু আজন্ম অতৃপ্ততা
ভীষণ আবেগে ছুটেছিলো পাগলাটে এক লাল ঘোড়া।
সবুজ জমিন সীমারেখা—প্রাচীর বন্দি কুমারি দেউল
আবেগের শাণিত ছুরিতে বিক্ষত কল্পনা কারুকাজ
হিসেবের জীবন মনের চারকোণ—আবেগের বুনোফুল
সুন্দরে যতোই ফুটুক—খোঁপায় পরে না রমণী।
কথার প্রবল তোড়ে কথা ছিল ভেসে যাবো বেহিসেবি
আপন নন্দিত নগরে দূরের অচিন সত্তায়; আঁধারের
পথ নেই—কাঁটাতার বেড়া নেই—দ্বিধার আগুন নেই;
পেয়ে যাবে মায়াবি জমিন ফসলের চাষে তামাটে কৃষক।
পদ্মার বেহুঁশ আবেগে যে ভেঙে যায় সব বাঁধ
ভেসে যায় বিবাদী বর্ষায় পুকুর ও নদী ঘরবাড়ি সব;
জীবন হারানো আর্তনাদে ফিরে আসে অন্তঃসত্ত্বা পলিমাটি
আবাদী যৌবনে; তখন দড়িতে বাঁধা আবেগের লাল ঘোড়া।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত নবীনের কবিতা