সন্ত্রস্ত কবিতা
বহুদিন পর খাতা খুলে দেখি কবিতারা গেছে উড়ে
কোন্ ভয়ে যেন তারারাও নেই, চলে গেছে বহু দূরে,
অমানুষের হাতে মরছে মানুষ হরহামেশাই যেথা
মুক্তচিন্তার মূল্যবোধ হায় সেখানে আদিখ্যেতা,
স্বাধীনতা, তার মানে খোঁজা—মৃত্যু যেখানে জল
সুবোধ বাঁচে পালিয়ে সেখানে—সাথে নিশ্চয় সুনির্মল!
মানুষ স্বভাবে লজ্জিত হায় সারমেয়র দল যত
সেরা জীব হয়ে মারছ স্বজাত অবিরাম-অবিরত,
ভ্রষ্ট নীতির চর্চা চলছে—চলবে আর কতকাল—
রাত হয়েছে গভীর অনেক, আসবে কবে সকাল!
নষ্ট হাওয়া কত আর কষ্ট দেবে, আসবে না কি ঝড়
শান্তির বাণী আসবে কবে, সাম্যের নির্ঝর!
এ তো নয় কবিতা
সত্যিই তুমি কি চিনেছ আমায়
না কি চিনেও না চেনার মিছে অভিনয়
অথবা,
ইচ্ছার বিরুদ্ধে পথচলা তোমার,
বলে আমার দুঃসময়!
পারবে না জানি তুমি রাখতে দূরে
খুব বেশিদিন আমায়,
আসবে আলো হাসবে সকাল
বলবে কথা সময়!
রবির কিরণে ঝলমলিয়ে
উঠবে যখন সবই,
ফিরে পাবে না ফেলে আসা দিন
হবে নির্বাক ছবি!
কবিতার দীর্ঘশ্বাস
মেঘহীন এক শারদ সন্ধ্যায় তুমি এসেছিলে
চিরচেনা সে বকুল তলে আলো আঁধারে,
নম্র শিশিরের শব্দের মতো তোমার পদধ্বনি
চকিত পেছন ফিরে দেখি, তুমি দাঁড়িয়ে—
সময়ের চারপাশে বদলে যাওয়া গায়ের গন্ধ!
আমায় বললে—ভয় পেয়েছ প্রেমী
স্বভাবসিদ্ধ হাসিতে পাশ কাটালাম—
তুমি বসতে চাইলে পাশে,
বললাম—
সাম্যের বকুল তলে যে কেউই বসতে পারে!
তুমি আবার আমায় প্রশ্ন করলে—
তুমি কেমন আছ, এখনো একা কেন!
উত্তরে কী বলবো, ভেবে পাচ্ছিলাম না,
অথচ সবাই আমাকে বলে আমি নাকি কথাই খুব পটু,
কী জানি জগদ্দল পাথরের মতো কথার ভার—
কণ্ঠনালীতে শত কষ্টের নির্ঝর আমার!
কোনো এক অজানা সময়ে ডেকে ওঠা একলা একা—
পাখির মতো নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি,
সেই হাত সেই পা কিন্তু হৃদয়ের কোণে কী যেন নেই!
দূর থেকে ভেসে আসে শিউলির সুবাস—
হরিতকি ডালে বাতাসের গুনগুন গান,
আমলকী বনে জোছনার আলো ঝিলমিল
অমরত্বের লোভে স্বকীয়তা হারায় রাতের নিস্তব্ধতা!
হঠাৎ উৎসুক আমি খুঁজতে থাকি তোমায়—
কোথায় হারালে তুমি, দীর্ঘশ্বাস ভেসে বেড়ায়—
আকাশের নিচে, তোমার—না কি আমার!