মার্লে
ঝড় ও জঙ্গলের ভেতর হাঁটতে গিয়া এই অন্ধরাতে মনে হবে ধ্রুপদ মন্দির যেন, উত্থিত শিশ্নের দাপটে বাঁচে না
তাও নগ্নপ্রায় ধ্যানস্থ এক পুরোহিত—অসুস্থ মাকে দেখতে আসা ধর্মান্তরিত মধুসূদনকে তার পিতা বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার মতন অস্থিরতা ছড়াচ্ছে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হাতে।
কামভাব
এমনভাবে রাত জাগে যেন একশত তিন ডিগ্রি জ্বর—দূর থেকে দেখি—কার সঙ্গমযোগ্য শরীরে কে তোলে তবলার তাল। মাতাল কে এমন, রথ ও লটকনের লোভে ঘোরে যে ব্রাহ্মন্দী শহর? পুরাতন লঞ্চঘাটে একদা যার পড়েছিল শব দূর থেকে তারেও দেখি, দেখি—মেঘনায় ভাসতে থাকা নৌকার তল কী ছলনায় ভাঙে নতুন পানির রতি!
হুবহু
বরং প্রকট হও আরও—অতিদূর থেকে ঋতুগন্ধের মতন। সাড়া দাও মা গঙ্গা, কুমারপুত্র ভীষ্মের ডাকে। হুবহু কাঁধে রাখ হাত, ঝন ঝন করে বাজুক নগ্নহস্তের কঙ্কণ। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ুক কয়েক ফোঁটা অশ্রু, অন্তিমযাত্রার দাহে দেহে বয়ে যাও করুণার শ্রাবণ
সঙ্গমনৃত্য
এই নৃত্যে সমস্তই রণ, বিনাশকালে বিপরীত দেহে রক্তের মিহি দাঁগ ও ছোবল—চমৎকার চমকায় বিদ্যুৎ আবেশে।
নোন তার মায়ের স্পর্শে গলে যায়, গন্ধগৌরবে যোনিফুল এইসব মোরগের ঝুঁটির মতন নড়ে ওঠে—রাতভর ঘুমন্ত পুরুষের পাশে সরীসৃপ কী সব মুদ্রায় নাচে বুঝি না—জীবনজুড়ে যাবতীয় না পাওয়াটুকুই বুঝি লাশকাটা ঘরে ছিন্ন-ভিন্ন দেহ মুণ্ডহীন ময়ূর নাচে।
দেহভঙ্গিমা
পালে হাওয়া লেগে দিক ভুলে বিদিকে যায় বেহুলার ভেলা
ক্রমশ দীর্ঘ হয় ভ্রমণ, তার স্তন বেয়ে নেমে আসে এই সন্ধ্যা
বন্যহাঁস ঘরে ফিরবে, বন্যশূকর ঘরে ফিরবে এইসব আশা
করি না—ঘুণপোকা খেয়ে যাবে শরীর, এই যা কামনা
পাখিসঙ্গম শেষে চুপচাপ ঝরে যায় বৃক্ষের হলুদ পাতা
দারুকলমির ফাঁপা কাণ্ডের ভেতর কী সব কষ,
ঝোপে গোখরোর বাসা—তার পাশে আমি প্রথম দেখেছি দৈহিক নির্জনতা,
মৌচাক ছেড়ে যাওয়া মৌমাছির দেহ বিচ্ছেদে জ্বলে যাওয়া দেহভঙ্গিমা।