ডাক
তোমার অন্তর্গত শিকারি সত্তা আমাকে ডেকে এনেছে
এই ক্রুর শহরে। যার গলিতে গলিত রোদের ধারা
আর গন্ধে ভরে আছে বেডরুম—ইট দেখে পা ফেলতে
শেখা মানুষেরা ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেলে গেছে।
তোমার আদ্যাক্ষর পার হয়ে দ্বিতীয় ধ্বনির দিকে
চলে গেছে ফোর হুইলারগুলো। সেই অতিক্রমণ
থেকে আমিও এসেছিলাম—চোখ ভরার লোভে
জৌলুস আর ভালো মানুষি অট্টালিকায় ভ্রমণের
আকাঙ্ক্ষায়।
পরিত্যক্ত হওয়ার কিছু আগে তুমি ডাক দিলে।
শীতল প্রণয়ের দিনগুলো
মধ্যরাতে ঘুমিয়ে আছি। বাতাসে রাত্রিসাজ হিম
দূর থেকে, বহু শতাব্দী দূর থেকে স্বপ্নরা পরিযায়ী
এবং অনেক ঘুমের প্রসারণ হলে কুয়াশার ঘোর
কেটে ভেসে আসে আকাশের নিচে উদ্বায়ী ফেরি
যেন শঙ্খ বাজছে, মানুষ জাগছে স্থির বৃক্ষসবুজ
উৎফুল্ল পাখিদের নিদ্রায়।
মাৎস্যন্যায়: শহর অথবা গ্রাম
তুমি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবার, স্বল্পতম সময়ে
ছাদ থেকে তাকিয়েছো নিচে।
আরো নিচে একটি ফড়িং উড়বে বলে ডানায়
ভর দিয়ে কাঁপছে
আমাদের বড় ভয়, যদি রাত হয়ে যায়
যদি নেমে আসে নীল আলো, যদি তুমি
দৃষ্টিপাত করো ভবিষ্যতের সমান্তরাল
এক শহর আছে যার ভেতরে একটি আস্ত গ্রাম চুপ মেরে আছে।
সেই গ্রামের সর্বত্র তুমিই ক্রিয়াশীল—সুন্দর পায়রা উড়ে যায় আকাশের দিকে।
কী সুন্দর মেঘ পাশে পাশে ওড়ে! এটা কি শরৎকাল? আকাশের কি ঋতু থাকে;
আকাশ কি ফসলের ঘ্রাণ, দিঘির জল আর দোয়েলের ঘর?
দ্রুত গজিয়ে উঠছে ধানগাছ। পানি আসছে। থৈ থৈ পানি, স্রোতভর্তি প্রজাপতির রেনু।
লাল শাপলা থেকে প্রতিফলিত জলকণা মিশে যাচ্ছে প্রতিবাদী কংক্রিটে, জলছাদে
তুমি আসছ, আসছ।
রাত শেষ হয়ে যাওয়ার ভয় নিয়ে তুমি শুধুই আসছ, এই ছাদের মোহনায়।