১.
তুমি কি অঞ্জনা ধর! সপ্তসুর , একা ও একাকী
কোন সুত্রে বাঁধা বন্ধু কই থাকো ঠিকানা কোথায়
জেনেই দুহাতে তব চুপিসারে পরিয়েছি রাখি
কই থাকো অলিগলি, নিরানন্দে কোন বুনো গাঁয়
এখন অচেনা বটে, পারিযায়ী মহিয়সী যোদ্ধা
খাও দাও চলো ফিরো মুগ্ধতায় নিজের ভিতর
একা ও একাকী নারী মহানন্দা পটিয়সী বোদ্ধা
রজনী গহীনে কিম্বা দিবালোকে নিভৃতে নিথর
জীবন অসম যুদ্ধ কুরুক্ষেত্র তবু থেমে নেই
পৃথিবী নিষ্ঠুর বটে রক্তচক্ষু মৃত্তিকার গ্রহ
যদি খসে নীহারিকা উল্কাবাণ এই নিখিলেই
জীবনের পলে পলে জ্বলে উঠে সহিংস নিগ্রহ
আমার অঞ্জনা তুমি আর নয় একা ও একাকী
সেই ভালো একাকিত্বে দুইজন করি মাখামাখি
২.
আমি ফিরেফিরে আসি চুপিচুপি একাকী একান্তে
আমি ফের ফিরে যাই পুনর্বার সেই অন্ধকারে
হিজল তমাল আর কৃষ্ণচূড়া শ্যামলীম প্রান্তে
যেখানে তোমাকে দেখি অনুভবে গাঢ় বাঁশ ঝাড়ে
বসে থাকো সাবলীল সদানন্দে কোমলা কুসুম
মনুষ্য গড়ার কাজে অকৃত্রিম তৃপ্ত তৃণমূলে
তোমার দুচোখে ভাসে স্বপ্নছায়া নিশিথে নিঝুম
ধরণীর খরা কেটে ভরে দাও পূর্ণিমার ফুলে।
বেউথা বন্দর আর ধলেশ্বরী কালীগঙ্গা পাড়
দুপুরের নাভিমূলে জ্বলে ওঠা জৈষ্ঠ্যের প্রদাহ
দৈব দুর্বিপাকে পোড়ে দেহমন, অনল অঙ্গার
তোমার অমর প্রেম সুশীতল স্নিগ্ধ হিমবাহ
তোমার তুলনা তুমি কান্তিমান আমি কোন ছার
পুড়ে পুড়ে ছারখার, তবু আমি তোমাতে উজাড়
৩.
তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো, অনন্তর ঘুমিয়েছে ধরা
তোমার শিয়রে একা শোকাহত বসে আছি আমি
এই কথা বলে গেছে ভ্রাম্যমাণ ডাক হরকরা
ক্ষমা করো চঞ্চলতা প্রিয়তমা সব পাগলামী
কাব্যের রাখাল আমি গাঁয়ে গঞ্জে থাকি কোলাহলে
তুমিতো সুনন্দা সখী নীলপদ্ম আমি নিশাচর
অজান্তে বিভ্রমে আর ঘুর্ণিপাকে ঘৃণ্য ঘোলাজলে
স্নান সারি কবি এক ক্লান্তপ্রাণ প্রতিটি প্রহর।
এই দেশ এই মাটি সবুজাভ সুজলা সুফলা
উর্বর জমিন তুমি বীরভোগ্যা চিরায়ত চাষে
আমিতো বিশুষ্ক ভূমি পড়ে আছি পাষাণ ত্রিফলা
নিকষ নিষ্ঠুর এই, সেই আমি পাণ্ডুর ফ্যাকাসে
ক্ষমা করো ক্ষমা করো প্রিয়তমা বলি করজোড়ে
ক্ষমার অযোগ্য নূরু নিরাসক্ত, মিনতি এ ভোরে।।