চিত্রনাট্য
তোমাকে চুরি করে এই এতদিন পর আজও অবিরাম
ছুটে চলেছি আমি। যেন কাল হতে কালান্তরে;
প্রতিটি স্মৃতির স্পর্শ ছুঁয়ে ছুঁয়ে
জেগে থাকা সকল রাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে,
একটানা বিদ্ঘুটে অসভ্য এই ছুটে চলা।
শুধু গত শতাব্দীতে সেই যে গ্রহের পর্যবেক্ষক দল এলো
ভূমির সারল্য খুঁজে পেতে
আর কি ট্রাফিক-জ্যাম আমাদের এই কালীবাড়ি মোড়ে!
শুধু সেই হেতু সামান্য বিরতি মনে পড়ে।
মাঝে কত দৃশ্য স্থাপিত হলো, কত ভূগোল ভেসে গেলো
কতবার লুণ্ঠিত হলো চাঁদের রঙ
অথচ কণামাত্র কিচ্ছুটি জানলে না তুমি।
বড় অপরাধ জাগে—এই যে জম-অন্ধকারেও
আগাগোড়া মুখস্থ চিত্রটি তোমার
হঠাৎ বড় মনোলোভা হয়ে ওঠে।
আহা! একুশ শতকের নির্বাচিত নায়ক আমি
‘ঘুমন্ত নায়িকা চুরি করে, নায়কের অবিরাম ছুটে চলা’
নির্দেশনায়—আদেশের মতো, কেবল এই বাক্য স্পষ্ট লেখা থাকে;
অভিনব সেই চিত্রনাট্যের প্রতিটি পাতায় পাতায়।
পতিসর
ইন্দ্রিয়—তুমি চলো আগে
আহত কোষের কলঙ্কে ভর ক’রে
যে নদী বিলুপ্ত হায়!
কিতাবে সাক্ষ্য আছে সে গেছে মরে।
রাখো রাখো পুঞ্জিত হাওয়া
কথা রাখো বিশুদ্ধ ও জরুরি
জন্মের ব্যথা বলো না মৃত্যুকে
অহেতুক রক্তে রাঙাবে ছুরি।
এই তিথি নিমজ্জিত
ফাগুনে আগুন-লাগা পলাশের প্রাণে
জলে তাকে যুক্ত করো
ধরো গান, ঢালো—রবীন্দ্রবিকিরণে।
আঁকো তাকে মজ্জাগত
রাখো বেঁধে মূল লোহার ডাণ্ডাতে
হে কটু ইন্দ্রজাল
সে যেন থাকে পৃথিবীর সব দুধে-ভাতে।
শিমুলের বড় বোন
পায়ে চলা পথ
ট্রেন থেকে নেমে, ধরো আমি যাত্রী
যাচ্ছি একা, দূরে—
দেখি তুমি তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
আমি তো চিনি না
এরূপ ঘটনা দেখি নাই আগে
থোকা-থোকা ফুল
ফুটে আছে পাহাড়ের একভাগে।
বাকি বন শুষ্ক
পাতা আর ছাতা এখানে-সেখানে
বসন্ত-বর্ষায়
থাকে তারা নিত্য শাসনে-শোষণে।
গৃহটি তাদের
নেমে গেছে দূর ঢাল বরাবর
দুয়ারে দাঁড়িয়ে
স্বাগতম—আমাকে ভেবেছে বর।
যাবো তো সমুদ্রে
একি কাণ্ড! তথা—আনিতে লবণ
তুমি তো পলাশ
জানি জানি—শিমুলের বড় বোন।