মঞ্চ
উঁচু চেয়ারে অভিনব হত্যাকারীই বসবেন
প্রধান অতিথি হবেন কৌশলী গোপন দালাল
সভাপতিত্ব করবেন খুনি-শয়তানের মিষ্টি মুখ
বোকচোদ বয়ানের প্রটোকল দেবেন
বাজার ফর্দির মতো কতিপয় কিছু অফিসার
আর করতালির মজুদে উপস্থিত হবো
তুমি আমি তারছেঁড়া অবুঝ আ-বাল!
চাষাবাদ
পুরনো ধানেক্ষের আলে আমার প্রেমিকার চিঠি ফেলে এসেছি
রোদে শুকিয়ে এখন তা জোছনারঙে সোনাধানে ছড়িয়ে গেছে
আমার বুক-উঠোনের সবটুকু জমি চাষাবাদ করে ঘরে যে ফসল
তুলেছি তার শ্রদ্ধায়, আমার আত্মা নত হয়ে প্রার্থনায় পড়ে আছে
তিন যুগ, তখন আমার বয়স কুড়ি। বুকপকেটে পুরো রোদ নিয়ে
সেই প্রথম হেঁটে গেছি আমি চিরচেনা ষোলো বয়সী এক চাঁদ চোখের
সুগভীর ছায়াতলে! কেউ দেখেনি—হৃদয়ের তাপে উড়তে থাকা
একখণ্ড জোছনার ঢেউ, নদী ও প্লাবন বেয়ে পৌষের শীত
দুইজোড়া চোখের রোদে যে আকাশ এঁকেছিল, ৫৬ বছর বয়সেও
তার দৈর্ঘ্য-প্রস্থ কমেনি একবিন্দু। আমার বুক আকাশের শত বর্গমাইল
জুড়ে এখনও তার কুসুমিত মুখ দ্যুতি মেলে আকাশ ছুঁয়ে যায়
এপার-ওপার নত্রের গোপন মিলনে প্রতিদিন তার নামে বিশুদ্ধ হই
ধ্যানস্থ পৃথিবীর সকল দরজা খুলে প্রিয় একজোড়া চোখ যখন
কল্পনা করি তখন আমি আর আমি থাকি না
প্রসারিত আকাশ হয়ে যাই শীতল দুপুরে দুঝাপটা রোদ হয়ে
আমার শরীরের বিন্দুতে বিন্দুতে জন্ম নিতে থাকে—সে নামের
সোনালি বৃ, যেগুলোর যত্ন নিতে নিতেএখন আমি খাঁটি চাষি
ফসল ফলাই রওশনপুরের বিস্তীর্ণ ভূমিতে
রাস
শরীর-
মাংসের যন্ত্রণা!
নিজের মুখেই চিবিয়ে খাই
হাড়গোড়
জমানো সূর্যের সিঁড়ি
কংকাল
দেখে চিনতে পারি
ওটা আমার বেশ্যাতে জন্মানো
জারজ!
যেরকম তোমার
তোমাদের
জারজেরা
বরফে
আড়ালে
ঘুম ভাঙলে তুমিও দেখ
হা করে গিলছে
তোমার
ক্ষুর্ধাত
কঙ্কালের
মুখ!
এরপরও কী বলবে
মানুষ হিসেবে
মানুষের নাম
রাস হতে পারতো না?
বিষয়টি হয়ে ওঠার
পাচঁশ কোটি বছরের দ্রাঘিমায় আমি এক মানুষজন্ম!
ঘাসফুলের শস্যনরমে অনতমুখ আমার
. পৃথিবীর সমান বয়সী!
ছায়ারোদ মিছিল সাজিয়ে
একগুচ্ছ মানুষ
. পাতাপোশাকের আদরে
. জলঘাস মাটির কুসুমে
. তিরতির বেড়ে ওঠা
. নক্ষত্র অসীমে
. চিন্তায়
. মুগ্ধতায়
. সৃষ্টিতে
. মানুষকে মানুষ হতে
. শিখতে
. বুঝতে
বন্য-জীবনের আকাশ ডিঙিয়ে
আজকের এই আমি-তুমি
জল ঝড় তুষারপাতের বিজয়ী সাক্ষী!
. যার নাম মানুষ
. যাকে মানুষ হয়ে উঠতে হয়েছে!
কবি
প্লিজ—এই আলোটুকু সরান। শব্দ করে ডাকবেন না সাউন্ডস্লিপ ঘুমোতে দিন; খা-খা অন্ধকার ভেতরে আসুক; শামুকের খোলস ভেঙে—থরে থরে সাজানো হচ্ছে জলকঙ্কালের ফুল! ফলন্ত ফসলের মওসুম রেখে প্রতিরাতে আকাশের তারা দেখি খুঁজি, দূরে—বহুদূরে কোন্ তারায় বিশুদ্ধতা লুকিয়ে আছে!
আমার মূত্যু হলে একডালি তুচ্ছতা আর কলঙ্কের ফুলে ঢেকে দিও! ভেঙে দিও বুকের খাঁচা। নয়তো বুক থেকে একটি বৃ গজাবে, সারারাত সেখানে কেঁদে কেঁদে পাখি বসবে। আমি কবরে শুয়ে পাখিদের কান্না শুনতে পারবো না। মূত্যুর পর না হয় আমার লাশ পানিতে ভাসিয়ে দিও—সমুদ্রের তলদেশে ছোট ছোট পোকা আর মাছেদের মুখে জলপরী আর মায়ের গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে থাকবো হাজার বছর। জানো তো— কবিরা কেবল মূত্যুতেই স্বস্তি পায়! বিগত দিনের ঝড় অগ্ন্যৎপাত শেষে আত্মকে মহাসড়কে ভাসায়—তার আনন্দ থেকে, তার পুনর্জন্মের ঘূর্ণনে আবার সে ফিরে আসে-আবার সে চলে যায় নক্ষত্র সহস্রে…