আয়ুর চিনিদানা
একটি আনন্দিত মুখের ছবি তুলতে হাসি জমাচ্ছি!
রিভোটিল রাত! চোখ ফসকে উড়ে যায় ঘুমের নগর
চশমার বাঁকা লেন্সে সমুদ্রের অনুবাদ দেখতে এসে
টিকটিকির লেজের শৈশবে গলে পড়ে
কাচা মাংসের গন্ধ!
লাফায় দৌঁড়ায়
জমা থাকে না তৃতীয় উদয়ের শেষ রেণুটুকু
শীতের-খাবার মজুদে পিঁপিলিকাগুলো গর্তের ভেতর
শুধু আমাকে টানে
তুলে খায় পিপাসিত আয়ুর চিনিদানা
তারপরও! হেসেলের বৃষ্টি খুঁড়ে একটু একটু গোছাতে থাকি
তারাভর্তি ঘাসের অক্ষর
আয়না ভেঙে যে মুখ আজও অচেনা!
ঘোষণা
বাড়ি বদল হয়নি, জীবন বদল হয়েছে।
শূন্যের তারে সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে দেখি
আগন্তুক এক ঘুণপোকা
মহাকাব্যের সব খেয়ে গেছে
ঝুলে আছে দৃষ্টিব্যূহ কংকাল
আফিম আগুনের ঘন অন্ধকার ধুয়ে
তাকিয়ে দেখি—ওটা আমি!
ওটা আমার শরীর-রজনীতে
গজানো শিকড়!
নিরানব্বই কোটি অভিকর্ষজ ত্বরণের
ভাঁজে ভাঁজে রাত পুড়িয়ে
কিভাবে দণ্ডিত গাছ হয়েছি!
সেই বর্ণনায় ভাসছে
ভেজা চুলের আরাধ্য কুসুম
আর নিচে, রাজপথে, মাইকে
ঘোষণা চলছে একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি!
মৃত্যুর চোখ
এইবার মৃত্যুর চোখ ঘুরিয়ে দেব মৃত্যুর দিকে
মৃত্যু মরে যাবে হেমলকের সূর্যতরুণ কাপের তরলে
থরথর করে কাঁপতে থাকবে মৃত্যু!
আর আমি সূর্যের পরিধি মেপে
রায়েরবাজার বধ্যভূমির অতল থেকে তুলে আনব
মৃত্যুর প্রতি অঢেল করুণা
অমরত্বের গান
সংকেত
হিংসার গলি দিয়ে চলে যাওয়া আমাদের এই সম্পর্কের সুতোই
মহাকালের ইঁদুর বেঁধে
কুয়াশার ফসিলে হেঁটে চলছে দিগন্তের সংলাপ!
বেহুঁশ মাতালে হুরহরীদের হুলস্থূলে দিন ছোট হয়ে যায়
ঘাসগ্রামহৃদয়ে নামে অন্ধকার
কেন্দ্রমুখি এক আকাশ শ্রাবণ-প্লাবনে বিন্দুসম প্রার্থনার আকাশটি
পুড়ে ছাই হয়ে আছে
পাসওয়ার্ড পড়া মানুষের মন ও মগজে
এখন অবিরাম মুদ্রিত হয় চাওয়া— না পাওয়ার ফসফরাস সংকেত!
ক্যালকুলেশন
তোমার সামনে একটি গ্লাস, অর্ধেক সুখের—অর্ধেক দুখের
এখন ভাবো, গ্লাসের কোন্ অংশের খরচ তুমি বেশি করছ
কেননা— মানুষ হেরে যেতে যেতে একদিন জয়ী হয়
জয়ী হতে হতে আবার হেরে যায়
এইবার বলো, গ্লাসের কোন্ অংশ তুমি তুলে রাখছ
শেষ জীবনের জন্য
শর্তহীন
আজ আমার সমস্ত স্বপ্ন নিলামে উঠবে
দরদাম হাঁকতে পারেন—যে কেউ
শর্তহীন এক বুক বিশুদ্ধ জোছনায়
জন্মসূত্রের নীলমেঘ
সুদূর দরজা ঘেঁষে যে বিষ অমৃত হলো
যে যাত্রা মহা-মহাকর্ষের দিকে
গ্রহ থেকে আরও দূর—অন্ধকারে
বিজলি ছড়াল
তীব্রতর সেই শূন্যের বিকিরণে
বিম্বিত মাটির ভেতর শিকড় ছড়ানো
আমি এক মানুষজন্ম!
মানুষ
মানুষ স্বভাবতই শিকারি
এখন মানুষ একা— কৌশলী
এই কৌশলী পৃথিবীতে যারা অকৌশলী
তারা মৃত!
জীবনের বন-জঙ্গল
শরীরের মাটি —উর্বর
যে কোন কথারগাছ লাগাতে পারো
নিম করোলা গাছই শুধু লাগিও না ,কিছু
পেঁপে ডালিমও লাগিও
না হলে এক তেঁতো স্বাদে
জীবন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে
তোমরা তো জানো
খেজুুরের ফোটা ফোটা রসে
সর্ম্পক
গড়ে ওঠে
বাজপাখিও
উৎ পেতে থাকে
তাই
বিশ্বাসবতী কিছু মিঠা গাছ লাগাও!
মঞ্চ
উঁচু চেয়ারে অভিনব হত্যাকারীই বসবেন
প্রধান অতিথি হবেন কৌশলি গোপন দালাল!
আর সভাপতিত্ব করবেন খুনিশয়তানের মিষ্টি মুখ
বোকচোদ বয়ানের পোটোকল দেবেন
বাজার ফর্দির মতো ঝুলানো কতিপয় অফিসার!
আর করতালির মজুদে উপস্থিত হবো
তুমি আমি তারছেঁড়া বাধ্য আ-বাল!
চুমু
আমার চুমুর ওপর
নিষেধাক্কা জারি করেছে জাতিসংঘ
আমার প্রেমিকার পরিবারের শান্তি নাকি
বিঘ্নিত হচ্ছে!
গোপন
গোয়েন্দা
তৎপরতায়
আমার
ও আমার চুমুর গতিবিধিকে
ফ্রিজআপ করতে
উর্দিপড়া সশস্ত্র
দশহাজার সৈন্য পাঠিয়েছে
অথচ জাতিসংঘ জানে না
কেবল একটি চুমুই পারে
পৃথিবীর সকল রক্তপাত বন্ধ করতে!