জেব্রা
নিষ্ঠুর হাওয়ার মাঝে ফিরে এলে ফের
জেব্রাদিবসের ডাকে;
এলে আলপনা এঁকে এঁকে আকন্দ বনের পাশে।
আর আমাদের লাজুক নাবিক কৃষ্ণধূসর গায়ে
এলো নুনের অহমিকা ঘিরে,
দ্রাঘিমাংশের নিয়তি জড়ানো পায়ে।
অথচ ব্রিজের বাতাসে এলোমেলো তুমি
উপহারে উদ্ভ্রান্ত ব্রোঞ্জের বারতায়
নিয়েছো রসায়ন ঘনত্ব ভালোবেসে—
হুট করে চোখের কালিতে তাকে
তবুও ক্রন্দনে আবির্ভূত হলে আজ গভীর গুঞ্জনে।
এত যে মৃগমাংসের আনাগোনা
তির ছুড়ে শিকারি রয়েছে ঘুমে। অতিথি আতঙ্কে।
কে দেবে পরিত্রাণ! বলো আজ নৈশ কোলাহলে?
অদ্ভুতুড়ে
চাঁদের মতো শুভচিহ্ন আঁকা
গ্রামের পথ বিস্তারিত বাঁকা
ভয় পেয়ো না, জয়কে ধরো ছেঁকে
হাঁটতে থাকো অন্তরাকে এঁকে।
সামনে দিঘি, শানবাঁধানো ঘাট
সমবাহুর চিহ্ন টানো। বাট,
এবার দ্যাখো কালো নূপুর হয়ে
নৃত্যে তুমি যাচ্ছো ক্ষয়ে-ক্ষয়ে।
মনকে করো পুরো দেহের তালা
আর বাহুকে গর্বে গলার মালা
এক কেশরে থাকে অনেক ফুল
তুমিই জানো চুল ছিলো না ভুল।
কবির হাতে স্পর্শটুকু প্রিয়া
যেমন রাখে পিঞ্জরাতে হিয়া
গুপ্ত গানে সুপ্ত সদা সুরে
কেমন গ্রাম? লাগে অদ্ভুতুড়ে।
শান্তাহার
এসেছো গ্রামের পুত্র, দ্বিধাহীন
যত বৃষ্টি তত বুনোপথ ধরে
এই দিনে বিরহ যখন, বিবাহ পতন হলে।
তবু প্রতিবেশী, মন তো তোমার বিষে ভরা
এত-এত বাঁক কত-না গৃহের মায়া ভুলে
উড়বে যখন শত পত্রে;
পরদেশি পত্রিকা হাতে হাতে
ঘুমের মধ্যে নকল নায়িকা-আঁকা দিনে।
যত সাদা চক, তত তার মানে
চরিত্র না জেনে, গুপ্ত রেখার টানে
আঁকো তো আলোর ছায়া ঢেলে;
যুদ্ধ বিরতি রাতে তবুও পত্র ডাকে
ততদিনে অস্ত্র আর বিপ্লবে বিপ্লবে…
সীমান্ত এক্সপ্রেস
ঘুম আসে না। রাত্রি যায়।
ধীর গতিতে। আশ্বিনের।
ট্রেন চলে যায়। যাত্রীদের।
চোখ মেলেছি। এই তো ঢের।
দেখার ছিলো। এইটুকু।
রক্তে ভেজা। একটি লাশ।
মাতাল বটে। বলছে কেউ।
বোতাম খোলা। ভাদ্র মাস।
এই গরমে। গণ্য হোক।
কার বাবা সে। ভাইটি কার।
পুলিশ-থানা। শান্ত সব।
চাকুর পেটে। দিচ্ছে ধার।
কাপঝাঁপ
জানো তো নিশ্চয়, সংস্কৃত দর্শন থেকে এসেছে দেখা।
তো, সে দেখছে আমাদের, আমরা দেখছি তাকে।
এই দেখা প্রতিটি বিন্দু-বিসর্গ ভেদ করে,
যোগীর যাতনাকে যোগ করে।
তারপরও ধমক আসে, বর্ধিত স্বরে প্রশ্ন আসে—
এই তোমরা কে হে!
এই শুনে, আমি করবো আমতা আমতা
তুমি জ্বলবে তেলে, মিথ্যের মতো বলবে—আমরা মানুষ।
বেগুন হাতে আশকারা পাওয়া পিচ্চি সেই এলিয়েন
এই শুনে, হামের মতো ঘন-ঘন হাসবে মিটিমিটি।
বলবে—অজানা উজবুক, জানোনা বুধবারে ঘাটে বসতে নেই?
যতোসব হেলেঞ্চা শাক! নন্দন-খাওয়া নচ্ছার
এক্কেবারে কাপঝাঁপ! হেমায়েতপুর কোথাকার!